নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযোদ্ধা মানিক বিশ্বাস -১ম খন্ড

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪২

আরে ভাইজান আমরা কোথায় যাচ্ছি?

জানি না............................ চুপ থাক।

একটি ট্রাকে চড়ে আমরা যাচ্ছি তো যাচ্ছি, কিছুটা সমতল আবার উচু কোথাও আবার নীচু, আবার অবারিত পাহাড়, এযেন এক বিচিত্র পৃথিবী।

নবীন বয়স আমার, আমিই একমাত্র বয়সে নবীন বাকীরা সবাই বয়সে যৌবন প্রাপ্ত, বড় ভাই, মেঝ ভাই বসে আছে, আমি দুই জনার মাঝে খুবই চাপাচাপি করে বসে আছি, সেদিন সকাল থেকে আকাশ একটু মেগলা তার মাঝে শীত।

আরে চেপে চেপে বস, একটু গরম লাগবে, গাড়ী চলছে তো চলছে কোথায় যাচ্ছে কিছুই বুঝতে পারতেছিনা। তবে কিছুক্ষন পর পা দুটোকে সরাতে চেষ্টা করলাম কিন্তু তাদেরকে সরানো আমার পক্ষে সম্ভব হলো না্। আরে মোর জ্বালা, পাও টি এযেন পাথর হয়ে গেছে। কেঁদে ফেললাম, মেঝ ভাই রাগ করে বলতে লাগলেন, "বালটাকে আনতে চাই নাই, সে তারে আনলোই আনলো" বড় ভাই হেসে ফেললো, তিনি আমাকে বললো কি হয়েছে?

আমি বললাম, মিয়াভাই ......... পা,...............

তিনি আমার পায়ে হাত দিয়ে দেখলেন, ....পা তো ঠান্ডা হয়ে গেছে।

তিনি আমার পাদুটো ধরে নাড়া-চাড়া করলেন এবং একটু একটু তার পার আরো বেশী করে তার হাত দিয়ে ঘষা দিতে একটু বোধ শক্তি ফিরে এলো।



এবার আমার মেঝভাইর পালা......... তিনি বড় ভাইকে ডাকছে নেয়াভাই, আমার জ্বর আসতাছে। আসলে তাকে শীতে কাবু করে ফেলেছে। তিনি ট্রাকের শেষের দিকে, এমন সময় একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি সামনের দিকে এলো এবং বললো বুঝিছি। তোমাকে ও শীতে কাবু করে ফেলেছে।



এই লোকটা আমাদের আত্মীয় না তবে একই পথের সাথী। অর্থাৎ সহমুক্তি যোদ্ধা তার নাম, "জনাব মানিক বিশ্বাস", পরে আমরা তাকে বিশ্বাস ভাই বলেই ডাকেছিলাম।, কিন্তু অনেকে তাকে মানিক বলে ছিলেন। তিনি এক ব্যতিক্রমি মানুষ এবং একে ভারে ভিন্ন তার জীবন ধারা।



আমি অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে দেখেছি তাদের কাজের জবাব দিহিতা দেখেছি, কিন্তু তার কাজ ও তার জবাব দিহিতা অন্য রকম। তাকে কখনও মিথা কথা বলতে শুনিনি, কাউকে রাগ করে কথা বলতে দেখিনি, কখনও তার মুখ থেকে হাসি ফুরাইনি, উজ্জল হাসি, নিজের খাবার অন্যকে দিতে সে কখনও একটুও দেরী করেনি।



অনেক দেরীতে হলেও আমরা শিলাগুড়ি নামক স্থানে পুছলাম তখন দিন না রাত্রি কিছুই আচ করতে পারলাম না। একটা রুমের মধ্যে বারকোশে কয়লার আগুন জ্বলছে, আমার বড়ভাই আমাকে পাজা কোলে করে আগুনের কাছে বসালেন, আধাঘন্টা পরে আমাদের সমনে খাবার চলে আসলো রুটি ও খাশির মাংস পেট পুড়ে খেলাম, তবে মাংস টা খাসির মা ভেড়ার আচ করতে পারলাম না। মনে হয় কতদিন বা মাস পড়ে খেলাম, কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজেই জানি না।



সবাইকে ঘুম থেকে জাগাইয়া আবার খাবারের ব্যবস্থা দেখে যেন অবাক করার মত, এযেন শশুরবাড়ী, খাবার শেষ করার পড় আমাদেরকে যে পোষাক দিল তা গায়ে পড়ে হাটা চলা করা আমার পক্ষে কঠিনই বটে।



হাটতে চেষ্টা করলাম এবং সবার সাথে বাহির হলাম কিন্তু বাহিরে এসে আমার মলে হলো আরও কিছু কাপরের দরকার ছিল। বাহিরের শুধু বরফ আর বরফ জীবরে এই প্রথম বরফ দেখলাম। একটি লোক গোফওয়ালা তার কাছে জানতে চাইলাম। এই যে দেখা যাচ্ছে তাবু এটা কখন এখনে খাটানো হয়েছে। আমার কিছুটা উর্দ্দু ও হিন্দি জানা ছিল, তিনি আমাকে উত্তর দিল "সুবা সুবা বারা সাল তো হোগিয়া" তার অর্থ যা বোঝালো, বর্তমানে ১২ বছর, একটু ধরে দেখলাম, পচে গেছে, ছিড়ে যাচ্ছে, এতোদিন কেন? হাজারো প্রশ্ন মাথার মধ্যে গুরছে কিন্তু অনেক প্রশ্নের উত্তর তখন না মিললেও পরে ঠিকই উত্তর পেয়ে ছিলাম। কিন্তু তখন বেশী দেরি হয়েগেছে।

আর এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পরো আমি কোন জবাব দিতে পারিনি। কে শুনবে আমার কথা, কে বুঝবে আমার ব্যথা,



উৎসুক, মনে সর্বদাই প্রশ্নের উদভব হয়ে থাকে তাই আমার কোন কাজ হাতে আসেিন তাই সর্বদাই গল্প করার মন চায়, সবাইকে কাগজ কলম দিল সাথে আমাকেও দিল। প্রথমত একটু বিরক্তি বোধ করলাম , তারপর কাগজ কলমের প্রয়োজণীয়তা অনুভব করলাম। এবার ট্রেনিংএর পালা, যদিও আমাকে কোন অস্ত্র্ দিল না, তবে অস্ত্রের ট্রেনিং আমাকে শিক্ষানো হলো। মোটামুটি ভালই লাগে, সবাই যখন অস্ত্র হাতে নিচ্ছে আমার তখন শরীর কেমন যেন একধরনের জ্বালা ধরে গেল। আমার ও অস্ত্র হাতে নিতে বেশ আগ্রহ বোধ করছিলাম। বিশ্রামের সময় বড় ভাইয়ের .৩০৩ রাইফেল হাতে নিয়া নাড়া চাড়া করতে আমার খুবই ভাল লাগতো। এক সপ্তাহ পরে আমাকে কাঠের রাইফেল দেওয়া হলো। তাও ঐ মানিক বিশ্বাস ভাইয়ের পিড়া পিড়ির কারনে তা আমার বুঝতে একটুও বাকি থাকলো না। আমি তাদের সাথে প্যারেড়ে মিলিত হলাম। অস্ত্র পরিচালনা করা তাদের দেখে শিক্ষতেছি ।



মুক্তিযোদ্ধারা প্রায়ই কম শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত বা অশক্ষিতই বলা ;চলে, তবে শিক্ষিত মুক্তিযোদা যে ছিল না এমন কথা কিন্তু আমি ভুলেও বলিনি। তবে বেশীর ভাগই এ রকম ছিল এটাই আমি বুঝাতে চেয়েছি। বেশীর ভাগই ছিল গ্রামের খাটি বাংগালী, তাদের খু্বই নিকটে থেকে দেশ প্রেমের স্বাধ পেয়েছি। তারা যে, তার দেশকে কত ভালবাসে, তাদের মধ্যে যে ভালবাসার কোন খাদ ছিলনা। তার প্রথম ও প্রদান প্রমান আমার সহমুক্তি যোদ্ধা ও আমার প্রশিক্ষনের একান্ত উৎসাহি ব্যক্তি, মুক্তিযোদা মানিক বিশ্বাস। তার কাছ থেকে অনেক কিছুই শিক্ষতে পেরেছি, যাহা অন্য কেউ আমাকে অত উৎসাহ নিয়া আমার দিকে আগাইয়া আসেনি।





চলবে..................................

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৫

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: কন্টিনিউ করেন। পুরোটা শেষ করেন। লেখাটা বই মেলায় প্রকাশ করার ব্যাবস্থা করবো দেখি।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৭

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আচ্ছা, আমি এই সত্য ঘটনা যতদুর আমার মনে আছে ততটাই লেখার চেষ্টা করবে্া ইনস আল্লাহু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.