নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনাম শিক্ষা নীতি

৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:১২

আমি আমার শততম লেখায় প্রবেশ করলাম, আর এই লেখাটি আমার চোখে দেখা একটি বাস্থত চিত্র। যদিও এই গল্পে লেখা নাম দুইটি সঠিক না। কিন্তু চিত্রটি যে সঠিক তাতে কোন সন্দেহ নাই । আমি দুইটি পরিবারের জীবন ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যবধান তুলে ধরার চেষ্ট করেছি মাত্র।

আমাদের সমাজে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে শিক্ষার পাশা পাশি শিক্ষা বানিজ্য হয়ে থাকে, যার যাতা করে পিষ্ট হচ্ছে আমাদের মত সাধারন পরিবার গুলো । সহজে বুঝে উঠা খুবই কঠিন, আবার অনেক মেধা এই বানিজ্যের যাতা কলে পড়ে নিঃশেষ হযে গেছে, তার কোন হিসাব কেউ রাখে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এহেন কর্মকান্ড একটু তুলে ধরার প্রায়স মাত্র।

এখানে মনে রাখতে হবে যে, "শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড"

আমি দুইটি পরিবারের গল্প থেকে এই শিক্ষার বর্তমান হালচাল অবগত হতে চাই।

একজন সরকারী অফিসার এবং অন্য জন চাষী, আমরা দেখবো তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও জীবন ব্যবস্থা ও সামাজিক অবস্থান।
জনাব আবদুল আলী তিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা তাহার চারজন সন্তান এবং জনাব জমির উদ্দিন তারও চারজন সন্তান বটে।
তাহারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের স্থানে মোটামুটি ভাল অবস্থানে আছেন। তবে তাহাদের সন্তানরা সবাই লেখা পড়া করেন,

প্রথমে আসি জনাব জমির উদ্দিনের পরিবার নিয়া বড় সন্তান মেয়ে, মেঝো সন্তান ছেলে এবং তৃতীয় সন্তান মেয়ে, শেষ ও ছোট মেয়ে, সবাই স্কুলগামী, বড় মেয়ে এইচ এস সি, দ্বিতীয় ছেলে নবম শ্রেনী, তৃতীয় মেয়ে সপ্তম শ্রেনীতে এবং ছোট মেয়ে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে। তিনি তাহার সন্তানদের লেখা পড়া করাতে হিমসিম খাচ্ছেন। তাহাদের পড়ার খরচ, জামা-কাপড়, চিকিৎসা, সব কিছুই তাকে তাহার জমির চাষের আয় থেকে পরিচালনা করতে একদম নাভি শ্বাস প্রায়। তাই তিনি তাহার সন্তানদের সচ্ছলতার জন্য এবং একটু ভালভাবে চালানোর জন্য স্কুলের হেড মাষ্টার স্যারের কাছে গেলেন যে একটা সন্তান বিনা বেতনে পড়ানো যায় কিনা, কিন্তু বিধি বাম তাহার তৃতীয় মেয়েটা একটু নরমাল ছাত্রী বটে তাই তাকে বিনা বেতনে পড়ানো যাবে না।প্রধান শিক্ষক ও স্কুল কমিটি সিদ্ধান্ত দিলেন। কিন্তু তাহার ছেলেটি এ+ পাবার মত ছাত্র কিন্তু মেয়েটি একটু দুর্বল টাইপের, কিন্তু প্রাইভেট মাষ্টার দিয়া তাকে পড়াবার মত এত টাকা বা বাড়তি টাকা তার নাই, ঠিক একটা অজুহাত দাড় কড়ালেন "এখানে প্রকাশ থাকে যে দুই জন সহদর ভাই বোন যদি একই স্কুলে পড়াশুনা করলে তাদের দুইজনের মধ্যে যে সন্তানটি কনিষ্ঠ সে ঐ বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে পড়াশুনার সুযোগ পাবে।" কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান এমন অজুহাত সৃষ্টি করেন।যাতে ঐ পরিবার কোন রকম যেন কোন ভাবেই আইনের আওতায় না আসে সে রকম অজুহাত সৃষ্টি করবেন। এই হলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার নিয়ম নীতি যা দেখে জাতীয় মানবতাও লজ্জা পায়।

আমি কাউকে ছোট বা লজ্জা দেওয়ার জন্য লিখলাম না। এটা একটা বাস্তব চিত্র মাত্র । আমার জানা মতে ঐ পরিবারের বড় সন্তান বড় দুইটি দুই বছর পড় একই কলেজে পড়াশুনা করিতেছিল। কিন্তু তারা দুই ভাই বোনই মেধাবী এস এস সি ও এইচ এস সি'তে এ+ পেয়েছেন। কিন্তু তাহাকে কোন বৃত্তি দেওয়া হলো না। কিন্তু ভাল কলেজে মানে সরকারী কলেজে পড়াবার কোন সুযোগ তারা পেলো না।কারন তিনি কৃষক সরকারী প্রতিষ্ঠান সবই শহরে যেখানে তাদের সন্তানদের লেখা পড়া করানোর মত অর্থ বা সমর্থ কোনটাই তাদের নাই। অর্থাৎ জনাব জমির উদ্দিন বঞ্চিত হলো শিক্ষা ব্যবস্থার সরকারী সুযোগ থেকে, গ্রামের সমাজ ব্যবস্থার যাতাকলে, নি:শেষ হয়ে গেল প্রায়। সন্তানদের লেখা পড়া করাতে গিয়া তাহার স্ত্রীর চিকিৎসার টাকার আর জোগার করতে পারলেন না। এক সময় তাহার দুইটি সন্তানই ডাক্তার হলেন কিন্তু তাহার স্ত্রী তৎক্ষনে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে গমন করেছেন্।

তুতীয় সন্তানটি এল এল বি পাশ করে আইন বিভাগের ১ম শ্রেনীর কর্মকর্তা, এবং ছোট সন্তানটি ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন কিন্তু তাহার আর সন্তানদের এই সৌভাগ্যের সোপানে বসা, দেখার সৌভাগ্য আর হোল না। এই মহান ব্যক্তিটি হাড় খাটুনি খাটতে খাটতে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হাজির হয়ে গেছেন।সন্তানরা তাকে খুবই সেবা যত্ন করেছেন। তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, কিন্তু নিয়তির উপর তাকে ছেড়ে দিতে হলো কিছুই করার আর নাই তার জন্য।

তাহার ডাক্তার সন্তানরা তাহাকে যথেষ্ট চেষ্টা করার পরও তাকে আর পৃথিবীর আলো বাতাসের মধ্যে রাখা সম্ভব হলো না।

আমাদের সমাজ ব্যবস্থা যদি একটু সঠিক গতিতে চলতো হয়তো এই জমির উদ্দিন হয়তো অত তারাতারি পৃথিবী ত্যাগ করতে হতো না। বিশেষ করে, তার জীবনে কিছু হলেও চিকিৎসা ও মানসিক সুস্থতা পেতেন। তাদের চিকিৎসার অভাবে এমনি ভাবে কঠিন পরিনতি হতো কিনা তা আমার জানা নাই। পাঠকবৃন্ধ এই চিন্তার ভার আপনাদের উপর রইল।

আমার কোন অভিযোগ বা অভিমান একটুও নাই।

আমি এবার জানাবো সেই ব্যাংকে চাকুরী জীবি জনাব আব্দুল আলীর কথা-

তার চার সন্তানরা কি ভাবে লেখা পড়া করলো, বড় সন্তান জিলা স্কুলে ভর্তি হলো, দুই বৎসর পরে ২য় সন্তানটিও জিলা স্কুলে ভর্তি হলো, সেখানে একটি সন্তান সম্পূর্ন বিনা বেতনে পড়াশুনা করলো, তৃতীয় সন্তানটি মেয়ে সরকারী সরকারী বলিকা বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে এবং চতুর্থ সন্তানটি জিলা স্কুল থেকে যদিও কিছু দিন সুযোগ সুবিধা পেয়ে এসেছে, তাই এই ক্ষেত্রে দেখতে পাই আলী সাহেবের পরিবার তেমন কোন বেগ পেতেই হয়নি তাদের সন্তানদের কে লেখা পড়া শিখাতে। এখানে বলা বাহুল্য সরকারী স্কুল গুলোতে নামে মাত্র বেতন নেয়া হয়ে থাকে।

এই পরিবারটি যেমন লেখাপড়ার সকল সরকারী সুযোগ সুবিধাটা ভোগ করতে পেরেছে, এবং জিলা স্কুল সরকারী এখানে বেতন কম ও পড়াশুনার মানও ভাল। আব্দুল আলী পরিবার কে কোন রকম ঝামেলা ছাড়া পড়াশুনা করতে পেরেছে। এই যে শিক্ষার বৈশম্য আমাদের মাঝে পরিলক্ষিত হয় । যাহা কোন সরকারই দুর করতে পাববে বলে আমার মনে হয় না।

আমার একটা ধারনা ছিল আমাদের বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রীর এই সম্পর্কে বাস্তব ধারনা আছে, কারন তিনি ছাত্র অবস্থায় "ছাত্র ইউনিয়ন" করতো । তিনি হয়তো এই সমাজ ব্যবস্থা পালটাতে চেষ্টা করবেন। তবে তিনি যে পরিবর্তন করেনি একথা আমি বলবো না। আশানুরুপ ফল আমরা পাইনি এক কথা কিন্তু সত্য। এই রকম ঘটনা সুধুই এক বা দুই দিন বা বৎসরের ঘটে না, যা ঘটতে সময় লাগে বিশ বা ত্রিশ বৎসর তাই এই রকমের ঘটনা গুলো আমাদের সমনে আসে না। এই দীর্ঘ্যস্থায়ী সমাধান আমাদের করো না কারো উদ্যেগ দিতে হবে। তবেই এই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন আসবে বটে।

আমাদের জানার বা বুঝার আগেই ঘটে যায় অনেক ঘটনা, আমরা কয়টা ঘটনা দেখি বা শুনি, হাতে গুনে কয়েকটা ঘটনা মাত্র পেপার পত্রিকায় প্রকাশ পায়, বাকি ঘটনা সমূহ থেকে যায় আমাদের চোখের অন্তরালে।

আমার অনেক বন্ধুই আছে, যারা হাই স্কুল পর্যন্ত ঘড়ায় নাই তার আগেই ঝড়ে পড়ে গেছে। অজার উদ্যেশে পাড়ি জমিয়েছে। আজ যখন তাদের সাথে দেখা হয়, কেউ রিক্সা চালায় আবার কেউ জজ, তাই আমাদের শিক্ষা নীতিটা একটু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, যাতে সবাই একটু হলেও শিক্ষার সুযোগ পায়। তবেই সৃষ্টি হবে সোনার বাংলা। এই আশায় চেয়ে রইলাম ভবিষতের দিকে....................


চলবে..........................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.