নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিশ্রমের প্রসংশা

১১ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:১৮

গাড়ী বিপুল গতিতে চলছে,
গাড়ীর সমনের সিটে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় বসে আছেন, এবং একটু বাঁকা হয়ে ড্রাইভার রুস্তুমের দিকে, একটু তাকাচ্ছেন,
একটু পরে তিনি তাহার ভাবনা প্রকাশ করলেন, যে,
রুস্তুম তোমার গাড়ীতে তো বেশ টান আছে।
শুনে আমার ভাল লাগলো, এবং তিনি রুস্তুমের খুবই প্রসংশা করলেন, আমার ভালই লাগলো, ভালকে ভাল বলা, খারাপকে খারাপ বলা আমার ছোট বেলা থেকেই স্বভাব, আজ স্যারের মুখে এই প্রসংশা সুনে মনে মনে ভাবলাম, আসলেই তিনি ভাল মানুষ এতে আমার আর কোন সন্দেহ থাকলো না।

তিনি জানতে চাইলেন, এই গাড়ীটা এত সুন্দর থাকলো কি ভাবে?
স্যার গাড়ীর পিছনে খাটতে হয়।

আমাকে সত্য ঘটনা না বলার আর যো ছিল না। সব খুলে বললাম, গাড়ীটা যদি কোথাও খারাপ হয় তবে এই ড্রাইভার রুস্তুম নিজেই তাহা সেরে সুরে আবার চালাবার উপযোগী করে তুলেন, গাড়ীর সকল কাজ বোঝার মত জ্ঞান তার আছে এই পরিক্ষা সে বার বার আমার কাছে দিয়াছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

সিলেট এর অনেকগুলো সাইট এখানে সেখানে, ভাল রাস্তা আবার খারাপ রাস্তা, সব মিলিয়ে একটা যুদ্ধের মতই আমার কাছে মনে হয়, জীবনের সাথে অনেক যুদ্ধ করেছি, তবে আমার এই বর্তমান যুদ্ধটা একটু ভিন্নতর, একটু আনন্দের মতই, সরকারী (অবঃ) চাকুরে থেকে আসা মানুষ, বসে থাকলে অসুস্থ্য হয়ে পরি, তাই বসে থাকা যাবে না, কিছু একটা করতে হবে, এই কারণে চাকুরী করা, আরকি।

মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচারক মহোদয় ঠায় বসে আছেন। গাড়ীর গতি বেশ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটি সাইট থেকে অন্য সাইটে ঘুড়ছি তো ঘুড়ছি এবং কাজ গুলো তদরকি করছি। স্যার নিজেই একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়র তাও আবার বুয়েট এর ছাত্র, কথা ও কাজে তিনি একজন সাবলিল ও সুন্দর মনের মানুষ, তার সাথে ভ্রমন না করলে, বুঝার উপায় নাই যে তিনি কত ভাল মনের মানুষ। মানুষ এত ভাল হতে পারে আগে আমার জানার হয়তো কমতি ছিল। তার সাথে ভ্রমনে আমার সে স্থানটুকু পুরন হলো বলে আমার মনে হয়।

অফিসের কোন অনিয়ম যদি হয়, তবে তা তাহার অগোচরেই হওয়া সম্ভব, না হয় না। এটা আমার আর বুঝতে বাকী থাকলো না। যিনি খুবই কাছ থেকে ভালমন্দ দেখতে শিখেছেন, বুঝতে শিখেছেন, এবং এই কাজের মাধেই যার অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে, তিনি কত ভাল মানুষ হতে পারে, এটা আমার আর চিন্তার জাল বুনার প্রত্যেকটা ছিদ্র পরিক্ষা করার মতো করে নিজেকে ব্যস্ত করে ফেললাম। আমি তার কথা বলার গতি ও চিন্তা বেশ উন্নত। তিনি নিজেকে নিয়া খুব কমই ভাবেন, তিনি ভাবেন তার কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানকে নিয়া, কিভাবে তার লোকগুলো ভাল থাকবে, এটাই তার ভাবনা। তিনি কখনো ক্লান্ত হয় বলে আমার কাছে মনে হয় না।

তিনি আমাকে বার বার বলতে দেখেছি, "আপনী এই বয়সে এত পরিশ্রম করেন" আসলে এটাকি আমার জন্য প্রসংশা না আমাকে চাকুরী থেকে বাদ দেওয়ার পায়তারা বুঝতে পারলাম না। তবে বুঝলাম....... না, এটা মোটামুটি আমার প্রসংশা। কিন্তু বিধি হলো বাম, এই প্রসংশা আমার জন্য বিপদই বটে, হায়রে দুনিয়া, এই প্রসংশা আমার জন্য হলো বিপদ, ইঞ্জিনিয়র সম্প্রদায় বলতে আরম্ভ করলো, তিনিই সকল কাজ করেন, আমরা কি আঙ্গুল চুষি? আসলে, এখানে বুঝার একটু ভূল মাত্র, আমি একটি চাবি মাত্র, কিন্তু আসল কাজটা তো করেন ইঞ্জিনিয়র ও অন্য সকল কর্মকর্তারা, আমার সহপার্টি বা সহকর্মীরা, এবং নীচ থেকে উপর পর্যন্ত সকল কর্মকর্তা কর্মচারি সঠিকভাবে কাজ করে বিধায় আমি এমডি স্যারের কাছে প্রসংশিত হলাম, এতে কোন সন্দেহর কোন অবকাশ নাই। আর প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের ধরন গুলো সাধারনত এরকমই হয়। কাজ কিন্তু কর্মচারীরা করে থাকেন আর প্রসংশা পায় কর্মকর্তারা। তবে আমি আমার এই প্রসংশা সবার মাঝে ভাগ করে দিলাম। আমি মনে করি এই প্রসংশা সুধুই আমার না, এই প্রসংশা প্রকৃত অধিকারী সিলেট জোনের প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা, যারা আমার সাথে সম্পৃক্ত আছেন। আমি তাদের সবাইকে আমার ভালবাসার বন্দনে আবদ্ধ করে রাখতে চাই।

আমাদের এই জোনের একজন কর্মচারীর মেয়ের বিয়ে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করিলে, তাহাকে আমার এই জোনের প্রত্যেকটি কর্মকর্তা কর্মচারীরা অতি আনন্দের সাথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমি ভাবতে পারছিলাম না, এদের মাঝে কমুউনিটি দেখে আমি অভিভুত হয়েছিলাম। সে দিন আমি আনন্দ অনুভব করে ছিলাম এবং ইচ্ছা প্রকাশ করে ছিলাম, এই প্রতিষ্ঠানে অনেক দিন চাকুরী করবো। বলার অপেক্ষা রাখে না, এখানের সবাই মোটামুটি উচ্চ শিক্ষিত।

আমার সমস্ত চিন্তা এসে থেমে জায়, রুস্তুমের পরিশ্রমের কাছে, আমরা ৫ (পাঁচ) জন অফিসার মোটামুটি তাকে কাজের উপরেই রাখি কিন্তু সে একটুও বিরক্ত বোধ করে না। বা ডিউটিতে অনিহা প্রকাশ করে না। এটা তার একটা বড় গুন।

গাড়ীটিকে যখনই গেরেজে কাজের জন্য নিয়া যাই তিনিই বেশীর ভাগ সময় নিজেই কাজ গুলো করার চেষ্টা করেন। প্রকাশ থাকে যে, গেরেজে আমরা কিন্তু বিল পরিশোধ করি কিন্তু তিনি ওদের উপর ভরসা করতে পারে না, তাই নিজেই কাজগুলো করার চেষ্টা করে থাকেন। প্রতিটি নাট-ব্লোট ঠিকভাবে লাগলো কিনা, তা পরিক্ষা করতে ভূল করেন না। তার এই পরিশ্রম একদিন হয়তো তাকে সম্মানের আসনে বসাবে এতে কোন সন্দেহ নাই। তার এই ঘামের কতটা মূল্য আমরা দেব তা আমি জানি না। তবে তিনি যে, অনেক ভাল স্থানে অবস্থান করবেন, তাতে আমার কোন সন্দেহ থাকলো না।

তার একটা বড় গুন, যেখানেই আজান হবে, তিনি জানতে চাইবেন, নামাজের জন্য কোথায় দাড়াতে হবে, কারণ তিনি নিজেই নামাজ আদায় করেন, এটা আমাকে আসলেই প্রশংসা করতে বাধ্য করেছে। মানুষ ভাল এবং মন্দ দু'টো দিকই থাকে তবে আমি সুধুই ভাল দিকটা গ্রহন করবো, তার খারাপ দিকটা না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.