নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রমজানের পুরস্কার-ঈদ

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৫

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে ফেরা। আনন্দের দাওয়াত নিয়ে বছর বছর ফিরে ফিরে আসে ঈদ। ফিরিয়ে নিতে আসে আমাদের – আনন্দের ভেতর দিয়ে আনন্দের উৎসের দিকে, ঈদানন্দে ভর করে নিত্যানন্দের সান্নিধ্যে। তিনি নিত্য, তিনি পরম, তিনি বিনে আনন্দ নেই। সকল প্রশংসা তাঁরই।

আমরা আনন্দ চাই। আনন্দের সম্মিলন চাই। এ চাওয়া থেকেই ঈদ। আনন্দের উপলক্ষ হয়ে ঈদ। দুটি ঈদ আসে বছরে— ফিতর ও আযহা। দিনক্ষণ তার বাঁধা, পয়লা শাওয়াল ও দশম যিলহজ্ব। আনন্দের জন্যে দিন তো বেঁধে দেওয়া হলো, কিন্তু আনন্দকে বাঁধবে কে? কেউ না। আনন্দ কি রুটিন মানে? জ্বি না। এমনি এমনি আমরা কেউ আনন্দিত হই না। হই তখন, যখন আনন্দের কিছু ঘটে। পরীক্ষায়-খেলায়-নির্বাচনে জিতলে আনন্দিত হই, হঠাৎ পুরস্কার বা তেমন কিছু পেয়ে গেলে আনন্দিত হই, বড় কাজ সুন্দর করে শেষ করলে আনন্দিত হই। এসব আনন্দের ঘটনা আগে থেকে বাঁধা থাকে না, সময়ও নির্দিষ্ট থাকে না। অতএব আনন্দ অনির্দিষ্ট। কিন্তু ঈদের দিন নির্দিষ্ট। তাহলে কীভাবে মিলন ঘটবে এ দুই বিপরীতের? কী করে আনন্দময় হবে ঈদ, যদি আনন্দের কিছু না ঘটে? না ঘটলে কি ঘটাতে হবে? কিন্তু আনন্দের সঙ্গে তো জবরদস্তি চলে না। সে ঘটে, তাকে ঘটানো যায় না। যা ঘটানো হয় তা ভোগের, আনন্দের নয়। নতুন জামায় শরীর সাজানো যায়, মন নয়। সুন্দর টুপি পরে মাথার শোভা বাড়ানো যায়, চিন্তার যন্ত্রণা তাড়ানো যায় না।

আনন্দের কিছু না ঘটলে কী করে আনন্দময় হবে ঈদ– যৌক্তিক প্রশ্ন, কিন্তু অগভীর। প্রশ্নটা মনে যখন তৈরি হয়েছে, তখন ইসলামের জীবনদর্শন মনে ছিল বলে মনে হয় না। আসুন তাহলে, আমরা একটু গভীরে গিয়ে দেখি আনন্দ কোথায় আছে। মানুষ সাধারণত কীসে আনন্দ পায়, আমরা ওপরে তা বলেছি। আরো কারণ আছে আনন্দের। আমরা তার তালিকা টানব না; সব কারণ বলব সংক্ষেপে, মাত্র দুই শব্দে: সাফল্য ও প্রাপ্তি। আনন্দের সমস্ত কারণই এই দুই শব্দের ভেতরে আছে। এটুকু মনে রেখে এবার সেই জরুরি প্রশ্ন, যার ভেতরে ঢাকা আছে আমাদের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর। তা হলো, ইসলামী জীবনদর্শনের আলোকে মানবজীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য ও প্রাপ্তি কী? এর একমাত্র ও সন্দেহশূন্য উত্তর: সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো পার্থিব জীবনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি। এ উত্তরণ ও অর্জনের ভিত্তি হিসেবে রয়েছে পাঁচটি মূল ইবাদত: ঈমান, নামায, যাকাত, রোযা ও হজ্ব। প্রথম তিনটি দীর্ঘ-ব্যাপ্ত – শেষ দুটি মৌসুমি, বছরে একবার পালনীয়, নির্দিষ্ট কিছুদিন। ইসলাম আনন্দের দুই ঈদকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে এ দুই নির্দিষ্ট সময়ের ইবাদতের সঙ্গে।


রোযা শেষে ঈদুল-ফিতর, হজ্বের পরে ঈদুল-আযহা। রোযা শেখায় নিভৃত আত্মসংযম, হজ্ব দেখায় আল্লাহর পথে ত্যাগ ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের নমুনা। রোযায় টানা একমাস কঠিন আত্মসংযমের পরীক্ষা, হজ্বে প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে কা’বাঘরে গিয়ে ‘হে আল্লাহ, আমি হাজির’ বলে আত্মনিবেদন ও কুরবানি সম্পাদনের পরীক্ষা। দুই ঈদ হলো এ দুই ইবাদতের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার আনন্দোৎসব। সন্দেহ নেই, যারা বলে “নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন এবং আমার মরণ সবই মহাজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যেই”, তাদের কাছে তাদের প্রভুর হুকুম পালনে সফল হওয়ার চেয়ে বড় আনন্দের ঘটনা আর কিছুই হতে পারে না। তাই বাহ্যিকভাবে সবার জন্যে হলেও ঈদের আসল আনন্দ সবাইকে স্পর্শ না-ও করতে পারে। ঈদুল-ফিতরের আনন্দ তাদের জন্যে যারা শরীর ও মন দিয়ে রোযা রেখে রোযার পবিত্রতা ও সংযমের শিক্ষায় জীবনযাপনের অঙ্গীকার করেছে, আর ঈদুল-আযহার আনন্দ-আয়োজন মূলত আল্লাহর ঘরের মুসাফির ও তাঁর উদ্দেশে কুরবানিতে অংশগ্রহণকারীদের সম্মানে। রোযাদার ও হজ্ব-কুরবানি পালনকারীদের জন্যে আল্লাহ বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, ঈদ হলো সেই পুরস্কার মঞ্জুরির দিন। এজন্যেই ঈদের দিনকে বলা হয়েছে ‘ইয়াওম আল-জায়িযাহ’, পুরস্কারদিবস। পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছে, পুরস্কার তাদের জন্যেই। সমর্পণের নিষ্ঠা ও সংযমের কষ্ট যারা স্বীকার করেছে, তাদেরই জন্যে ঈদের সত্যিকারের আনন্দ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.