নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি বললেন ভাই? সিটিং না চিটিং সার্ভিস?

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২০

ঢাকার এয়ার র্পোট থেকে যেতে হবে মতিঝিল। গাড়ীর গায়ে লেখা আছে সিটিং সার্ভিস, সিট খালি ভাই সিট খালী ডাকা ডাকিতে উঠলাম, উঠেই দেখি সিট আছে কিন্তু খালী নাই। কন্টাকটর সাহেবকে ডাক দিয়া বললাম ভাই, সিট তো খালী নাই। তিনি আমাকে বললেন, ভাই সামনে খালি হবে। যেই কথা সেই কাজ অগ্যতা দাড়ানো ছাড়া আর কোন পথ খালি নাই, কথায় আছে। খেয়া নৌকার মাঝির সাথে ঝগড়া করার মানেই নিজের ক্ষতি করা ছাড়া আর কিছুই না। খিলক্ষেত আসার পড় দুইজন নামলো আর আমরা দাড়িয়ে আছি ৬ (ছয়)জন। এক জন ভ্দ্রলোক অত্যান্ত ভদ্রতা রক্ষার করার জন্য বললেন, চাচা বসেন। দেখলাম আমার একটু ভদ্রতা দেখানো দরকার বললাম, না বাবা আপনী বসেন, মনে হয় আপনী অনেক দুর যাবেন। লোকটা বসে পড়লেন। দুটো সিটই পূর্ণ হল আমরা দাড়িয়ে আছি ৪ জন, আবার কমপক্ষে ১০জন লোক খিলক্ষেত থেকে উঠে পড়লো, হুরমুর করে। এখন দেখতেছি, দাড়িয়ে থাকার জন্য যে উপরের পাইপ ধরবো তারও কোন সুযোগ পাচ্ছিনা সিট তো দুরে থাক। বাদুর দোলা হয়ে আমরা কুড়িল ফ্লাইওভার পাড়ি জমালাম।

লোক জন স্বাভাবিক ভাবেই ডাইভার ও কন্টাকটরকে গালাগালি করছে, ছোটখাটো ঝগড়া যে হচ্ছেনা তা কিন্তু ভাবাই যাচ্ছে না। যখন বসুন্দরা পার হলাম তখন আমাকে একটি অল্প বয়সের একটি ছেলে বলতে লাগলেন, অংকেল আপনী বসেন, ছেলেটি উঠে দাড়াতে যত সময় লেগেছে কিন্ত অন্য একটি লোক বসে পড়তে সেইটুকু সময় লাগলো কিনা এটাই ভাবার বিষয়। মুহুর্তের মধ্যে কি ঘটলো বুঝে উঠতে আমার যথেষ্ট সময় লেগেছে, আমি বেকুব হয়ে গেলাম। এখন যে ছেলেছি আমাকে বসতে বললেন, সে এবার ক্ষেপে গেলেন, এবং ঝগড়া আরম্ভ হলো-

-আরে ভাই, আমি তো চাচাকে বসতে বললাম, আর আপনী বসে পড়লেন?
-আমি সিট খালি পাইছি তাই, বসে তো দোসের কিছু দেখছিনা? সিট খালি পাইলে বসা জায়।
-আমি তো নেমে যাইনি, চাচা বুড়ো মানুষ দাড়াইয়া আছে তাই্, একান্ত মানবিক কারণে সিট খালি করলাম আর আপনী এটা কি করলেন।
-আমি তো বেআইনী কিছু করি নাই। আপনী খালি করেছেন আর আমি পূর্ণ করলাম।
-আমি আপনার সাথে ঝগড়া করতে রাজি না। আমার সিটে আমাকে বসতে দিন।
-আমি তো বসে আমি কেন উঠবো? সিটে কি নাম লেখা আছে?
-আপনাকে দুটো থাপ্পর মেরে যদি উঠাইয়া দিই, তখন দেখতে পাবেন, নাম লেখা আছে কিনা। বুঝেছেন............

এক পরজায় হাতা হাতির রুপ নিল। ঝগড়া দেখলাম প্রায় আধা ঘন্টা, বড় ক্লান্ত লাগতেছিল, এমন সময় রাগ আর ধরে রাখতে পারলাম না। এই বার মুখ খুললাম, বেয়াদপ লোকটাকে বললাম আপনীই বসুন, তবে কিছু কথা শুনুন, হয়তো জীবনে কাজে আসতেও পারে, কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। সে রকম হলো। সে বসে আছে আর আমি তাকে বুঝাতে লাগলাম।

এক পর্যায়ে বললাম আপনার বাবার সাথে যদি কেউ এরুপ আচারন করতো তখন আপনী কি করতেন?
ঠিক সেই সময় ঐ নিশ্চুপ ছেলেটি সিটে বসা ছেলেটিকে, জোড়ে একটি লাথি মারলেন, আমার মনে হয় লাথির ওজন এতই ছিল যে, গাড়ীর সিট ভেঙ্গে লোকটা মাঝখানে কাথ হয়ে পড়ে গেল। এখন এলাহী কারবার যে যেভাবে পারছেন, ঠিক সে সেইভাবেই লোকটাকে লাথির পর লাথি মারতে দেখে আমি জোড়ে চিৎকার করলাম।

এবার সবাই থেমে গেলেন,
বুঝাতে চেষ্টা করলাম, আমরা কি এই পৃথিবীতে মারা-মারির জন্য এসেছি। এই লোকটি ময়লা কাপড় চোপড় নিয়ে আমর পার্শ্বেই দাড়িয়ে আছে এবং রাগে ফুলতেছে। কিন্তু কিছুই করার উপায় নাই। গাড়ীর সবাই এই লোকটার বিরুদ্ধাচন করিতেছেন, যে ছেলেটি তাকে মেরেছে সে সম্পূর্ন রুপে কায়দায় ফালাইয়া মাইরছে। এবার যত রাগ পড়লো গিয়া গাড়ীর ষ্টাপদের উপর, এটাই স্বাভাবিক কন্টাকটর কিছু উ্ত্তম-মাধ্যম খেল। ড্রাইভার গাড়ী থামাইয়া দিল।মুহুর্তের মধ্যে কোথায় হাওয়া হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। পাবলিক খেপেছে, কিছুই করার নাই, ড্রাইভার যে কোথায় ভাগলো বুঝতেই পারলাম না। আসলে এজন্য তারাই দায়ী। বেশী লাভের আশায় এই অপকর্মগুলো ড্রাইবার ও হেলপার মিলে করে থাকে। সবাই কন্টাকটরকে পেয়ে বসেছে, ভাড়া ফেরৎ দাও এর পালা, কে কত ফেরৎ নিবে এই মহড়া চলছে। আমি তাদের দলে যোগদান করলাম, উপায় নাই, মতিঝিল তো যেতে হবে। দিতে দিতে এক সময় দেখলাম ওর হাতে আর টাকা নাই, টাকা পরিশোধের কাতারে আমিই শেষ ব্যক্তি, এখনও ১০ জন বাকি আছে, টাকা ভাংতি নাই বলে কোথায় যেন হাওয়া। কি আর করা, বাধ্য হয়ে গাড়ী থেকে নেমে অন্য একটা লোকাল গাড়ীতে গেলাম। অনেক কষ্টে শিষ্টে যুদ্ধ যুদ্ধ করতে করতে মতিঝিলে পৌছলাম।

মাঝে মাঝে ভাবি এই দেশটা কখন সুন্দর ও সাবলিল হবে। আশা করি এই দিন মনে হয় বেশী দুরে নয়। মেট্রো-রেল চালু হলে হয়তো এই বিরম্ভনা দুর হতে পারে। বাসে গাড়ীতে আমরা যারা ভ্রমন করি, তারা এই রকমই কোন না কোন বিরম্ভনা শিক্ষার হই। আমার এই ঘটনাটা লিখে কাউকে ছোট বা লজ্জা দেওয়ার ইচ্ছা নাই ঘটনা সত্যি তাই ঠিক মন থেকে আপনাদেরকে একটু শেয়ার করলাম। এই আর কি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০

মাহমুদা রোজি বলেছেন: আপনার লেখনিতে যেন সম্পূর্ণ চিত্রটি চোখের সামনে দেখলাম। এমন ঘটনার সাক্ষী প্রায়ই হই।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:২৪

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: হ্যাঁ, কিছুই করার নাই, আমরা সবাই অসহায়, সমাজ পরিবর্তন না হলে কিছু্ই করার নাই, তবে আমরা এক একজন করে পবিবর্তীত হলে, পুরো সমাজ হয়তো একদিন পরিবর্তীত হবেই। আমি সেই দিনের অপেক্ষায় থাকবো। আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.