নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিবন্ধী সন্তান ও মা

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩১

পড়ন্ত বিকেল বেলায় দাড়িয়ে আছি একটা গাছে নিচে। হাতে কোন কাজ নাই, তাই প্রতিদিন বিকেল বেলাতে একটু হাটতে বাহির হই। আমরা স্বামী-স্ত্রী দু'জনে পাশ্বাপাশ্বি হাটছি, আবার যখন ক্লান্তি বোধ করছি তখন একটু গাছের ছায়ায় দাড়ানো, এবং জীবনের ফেলে আসা দিনগুলো স্বরন করা, দুনিয়া ও আখেরাতের কথা বলা, এভাবে কাটছে সময়। এমন সময় একজন মা তার প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে গাড়ীতে করে গুড়ে বেড়াচ্ছে। এই মা যে অত্যান্ত ধনী পরিবারের সন্তান ও স্ত্রী, এতে কোন সন্ধেহ আমার নাই। যখন তার সন্তানের দিকে তাকালাম, তাতে আমার হৃদয় নামের যন্ত্রটি বিকল হওয়ার পথে চলে দিয়েছিল প্রায়।

আমার স্ত্রীর মুখটাও বির্বন হয়ে গেল। আমার কাছে মনে হলো, তিনি হৃদয়ের ভীতরে চুপষে গিয়াছেন। মুখের মলিনতা তারই প্রমান বহন করে। আমার স্ত্রী বাচ্চাটার কাছে গেল ও তার কি সমস্যা জানতে চাইলেন, তিনি বার বার সেই বাচ্ছাটাকে কোলে নেয়ার চেষ্টা করলেন কিন্তু বাচ্ছাটা শরীরিক কোন রকম বোধ শক্তিই দিতে না পারায় তাকে আর কোলে তুলা হলো না। বাচ্চাটির বাবাও পিছনে আছে, দেখতে মনে হলো রাজ পুরুষ, বাবা ও মায়ের চেহারা ও শারীরিক গঠন, এতোই সুন্দর, যে কেহো মুগ্ধ হবে বৈকি। বাচ্চা ও তার বাবা, মাকে দেখে আমার হৃদয়ের মধ্যে কষ্টের রক্তক্ষরন সুরু হলো, মনে মনে বলছি হে, আল্লাহু এ তোমার কেমন খেলা। এমন সুন্দর বাবা-মা কিন্তু তাদের একটি প্রতিবন্ধী সন্তান, কিন্তু কেন? সমস্ত চিন্তা যেন মাথার চারি দিকে সুধুই আমাকে কষ্ট দিতেছে। অশা্ন্ত মনটাকে কেন যেন মানাতে পারছি, সুধুই পাগলা ঘোড়ার মত একবার এদিকে আরেক বার ওদিকে ভো দৌড় দিতেছে। একবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছি আবার মাটির দিকে, সমস্ত জিজ্ঞাসা যে, সেই একজনারই কাছে। ভেবে কোন কুল কিনারাই পাচ্ছি না। আর বার বার বলছি, হে প্রভূ তুমি আমাকে ক্ষমা করো, এ তোমার কেমন খেলা। মহান প্রভুর খেলার সাধ্য কি আমার আপনার আছে?

আমি যত প্রতিবন্ধী দেখেছি, তাদের বাবা ও মা কিন্তু প্রতিবন্ধী নয়। ৯৫% প্রতিবন্ধীর বাবা-মাই উচ্চ শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের। আমার প্রশ্ন তবে কেন এমন হয়। তবে আমাদের কি কোন ভূল আছে। যার কারনে এই রুপ হয়, হাজারো প্রশ্ন এই মাথায় এসে হাজির হয়। আমার আল্লাহু পবিত্র কোনআনে বলেছেন, "ভাল যা তা সবই আল্লাহুর রহমত এবং খারাপ যাহা তাহা আমাদের হাতের কামাই।" যদি তাই হয় তবে আমাদের কি করনীয়, আমরা কি তা হলে সেই কাজ গুলো করতে পারি না।

আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন দেখেছি, কোন ছেলে মেয়ের বিয়ে হলে। মুরুব্বিরা বার বার বলতে থাকে বর-কনেকে ভাসর ঘরে যেয়ে তার যেন দু'রাকাত নামাজ আদায় করেন, তারা যেন বিভিন্ন নিয়ম কানুন মানেন। বর কনে যেন, সূর্য্য উঠার আগেই ঘুম থেকে উঠে, তারা যেন ফজরের নামার আদায় করেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। বর্তমানে এগুলোর কোন বালাই নাই, সূর্য্য যে কখন উঠে, বর-কনে তা বলতেও পারে কিনা তাতে আমার যথেষ্ট সন্ধেহ আছে। আল্লাহু রাসুলের কথা বললে, ধমন শুনতে হয়। বলে, বেটা বেশী ধার্মিক বা বক ধার্মিক। আমি তর্ক করতে চাই না, বা শুনতেও চাই না। সুধুই বলতে চাই, আমরা কি আল্লাহু ও তার রাসুলের পথে আসতে পারি না?

আমরা দেখেছি, যখন কোন মেয়ে গর্ভবতী হয, তখন তার মুরুব্বিরা সব সময় খেয়াল রাখতো, এটা করা যাবে না, ও টা করা যাবে না। গর্ভে সন্তান নিয়ে নামাজ পড়, তবে সন্তান নামাজি হবে, সন্তান গর্ভে নিয়ে কোন কিছু চুরি করে খেয়ো না, তবে সন্তান চোর হবে। আজ গ্রহন লেগেছে, বসে থাকা যাবে না হাটাহাটি করো, কোন কিছু খাওয়া যাবে না। এই রকম অনুশাসনের মধ্যে চলতে হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে এই সমস্ত কেউ মানে না বা শোনেও না। যদি মুরুব্বিরা মুখ ফসকে বলেও ফেলে তবে ধোমক সুনতে হয়, এরকমও আমি দেখেছি। ধর্মীয অনুশাসনগুলো মানতে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না। আমি মানি এখন বিজ্ঞানের যুগ, মনে রাখতে হবে বিজ্ঞান এসেছে পবিত্র কোরআন থেকে, তাই বিজ্ঞান মানার আগে কোরআন মানাকি জরুরী নয়?

আমার মতে একজন মা-বাবার তার সন্তানের জন্য বেশী দোয়া করা উচিৎ। যখন সন্তান গর্ভে থাকে আল্লাহুর কাছে বেশী বেশী তার জন্য দোয়া করো, আল্লাহু কাউকেও খারাপ কিছু দান করেন না। হয়তো দোয়া করলে, আল্লাহুর দয়া হতে পারেন। তিনি তাহাকে সমস্ত বিপদ আপাদ ও বদনসীবি থেকে ফানা দিতে পারেন। সু-সন্তান দান করতে পারেন।

তবে আমি একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছি। আমার দু'টো ভাতিজি, প্রায়ই খুব জেদ করতো এবং কলা আনলে তার জোড়া কলা খাওয়ার জন্য কাড়াকাড়ি করতো। আমার স্ত্রী প্রায়ই তাদেরকে নিষেধ করতো এমন করো না, জোড়া ফল খেতে নাই, তবে জোড়া সন্তান হয়। কে শোনে কার কথা, কারন তারা উচ্চ শিক্ষিত তাদের এগুলো মানতে নেই। হাজারো কথা শুনাতো। এই গুলো আগেকার কথা বর্তমানে এই কথা গুলো কেউ মানে না বা শোনে না। উপায় না পাইয়া এক সময় আমার স্ত্রীকে বলে ফেলতে বাধ্য হলেম, যে ওরা যে ভাবে থাকতে ও চলতে ভাল মনে করে তাই করুক। বাধা দেওয়ার কোন প্রয়োজন নাই। যেই কথা সেই কাজ, মেয়েরা বড় হয়েছে, বিয়ে দিতে হবে, পাত্র খুজতে আরম্ভ করলাম, একটির বিয়ে দিলাম, জামাই ডাক্তার, দুই বৎসর পরে গর্ভে সন্তান আসলো আমরা সবাই খুবই খুশি, ডাক্তার দেখালাম , তিনি রির্পোট দিলেন, জোড়া সন্তানের মা হতে চলেছেন। আমার স্ত্রী রাগারাগি করতেছিল, মেয়েদেরকে বলতাম জোড়া ফল খেওনা। এভাবে এই সমস্যা হতো? আমি বুঝাতে চেষ্টা করলাম, যে সবই আল্লাহুর ইচ্ছা, এটা নিয়ে ভেব না। কিন্তু দুঃখের বিষয় দু'টো সন্তানই মৃত হয়েছে। আমরা সবাই কষ্ট পেয়েছি। অন্য মেয়েটা তার দুই বৎসর পর বিয়ে দিলেম, তার দু'টো সন্তান হলো একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে, তারা ভাল আছে এবং বেছে আছে। এর পর হতে আর কোন মেয়েকে জোড়া ফল খেতে দেওয়া হয় না। এব্যাপারে আমার কোন ধারনাই ছিলনা। যদি ও কোন এক সময় এই কথার প্রতি আমার তেমন কোন বিশ্বাস ছিল না। কিন্তু যা ঘটতে দেখলাম তাতে তো বিশ্বাস করতেই হবে।

এমনি করে হাজারো নিয়ম কানুন আছে যে গুলো না মানার কারনে আমাদের মাঝে নেমে আছে হাজারো সমস্যা। আসল কথা হলো, আমাদের প্রত্যেকে ইসলামের পথে আসাটা খুবই জরুরী, যৌবনে এবাদৎ করতে হবে। পবিত্র কোরআন শরীফ পড়তে হবে, তৎ অনুশারে জীবন গঠন করতে হবে। নবী করিম (সাঃ) বলে গেছেন, "তোমাদের জন্য পবিত্র কোরআন ও আমার সুন্নাহ রেখে যাচ্ছি, যদি তোমরা এগুলো আকড়াইয়া ধরে রাখ, তবে তোমরা কখনো পথ ভ্রষ্ট হবে না।" পরিশেষে আমি বলতে চাই, আসুন, ইসলাম এর ছায়া তলে, আল্লাহুর রহমতের ছায়া তলে, আশা করি কেউ নিরাশ হবেন না। আল্লাহু রাব্বুল আলামিন যেন কাউকে এই ভাবে প্রতিবন্ধি সন্তান দান না করেন।

(আমি কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য এই লেখা প্রকাশ করিনি, সুধুই আল্লাহুর উপর ঈমান মজবুদ করার জন্য এই লেখা প্রকাশ করা, আমিন)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.