নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুমিনের জন্য মসজিদ

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩

আজ বহু দিন পর আবার আপনাদের নিকট উপস্থিত হযেছি, মুসলমান এর জন্য শান্তির জায়গা মসজিদ নিযে, " মুসলমানের জন্য সব চাইতে খারাব জায়গা হলো বাজার আর উত্তম জায়গা হলো মসজিদ"। আমার একজন প্রিয় ব্যক্তি দেশ-বিদেশ ভ্রমন করেন, প্রায়ই তিনি মিশর ভ্রমন করেন, তিনি আমাকে বেশ কয়েক টা মসজিদের ছবি পাঠিয়েছিলেন, তার মধ্যে এই মসজিদটিও ছিল, তার পর আমার আরম্ভ হলো তার তথ্য ও ইতিহাস খোজা, আমার কাছে ভালই লেগেছে, হয়তো বা আপনাদের কাছেও ভাল লাগবে, এই প্রত্যাশা নিয়ে লিখতে আরম্ভ করলাম।


রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রথমে একটি খেজুর গাছের গুঁড়ির ওপর এবং পরবর্তীতে মসজিদের মিম্বারে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষকে ধর্মীয় হুকুম-আহকাম ও ইসলামের পরিচিতি শিক্ষা দিতেন। পরবর্তী যুগগুলোতেও ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে মসজিদের ব্যবহার অব্যাহত থাকে যা আজও চালু রয়েছে।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে নামাজ আদায় ও ধর্মীয় শিক্ষার পর তৃতীয় যে কাজটি করা হতো তা হচ্ছে, মানুষের সামাজিক সমস্যার সমাধান করা। পবিত্র কুরআনের সূরা হুজুরাতের ১০ নম্বর আয়াতে মুসলমানদেরকে পরস্পরের ভাই বলে আখ্যায়িত করেছেন মহান আল্লাহ। তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পরের ভাই, কাজেই তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে (ঝগড়াঝাটির) মীমাংসা করে দেবে...।” অন্য মানুষের যেকোনো সমস্যার সমাধান করে দেয়ার ওপর ইসলাম যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছে। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, “মানুষের সমস্যার সমাধান করা এবং তাদেরকে সহানুভূতি জানানো এক মাসের নফল রোজা ও এ’তেকাফের চেয়ে উত্তম।”

মানুষ তখনই অপরের সমস্যার সমাধান করতে পারে যখন সে সমস্যাটির কথা জানতে পারে। পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব এবং সহানুভূতির বিষয়টি একটি মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায়কারী মুসল্লিদের মধ্যে সহজেই চোখে পড়ে। নামাজের সময় মুসল্লিরা পরস্পরের খোঁজখবর নেন এবং কখনো কেউ জামায়াতে উপস্থিত না হলে বাকি মুসল্লিরা তার খোঁজ নিতে যান এবং ধর্মীয় ও মানবিক দায়িত্ব হিসেবে সেই ব্যক্তির সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন। অপরের প্রতি সহানুভূতি জানানোকে ইসলাম জরুরি বিষয় বলে মনে করে এবং একে সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার বলে ঘোষণা করে।

আমীরুল মু’মিনিন হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, এক মুমিন আরেক মুমিনের ভাই এবং তারা সবাই এক দেহের অংশ। কাজেই এই দেহের একাংশে ব্যথা লাগলে অন্য অংশ তা অনুভব করে। মুমিনদেরকে তাই পরস্পরের খোঁজ-খবর নিতে হবে এবং এই কাজের জন্য সর্বোত্তম স্থান হচ্ছে মসজিদ। রাসুল করিম (সাঃ) থেকে আরম্ভ হযে সাহাবায়ে কেরামগণও এই নিয়ম চালু রেখেছেন, মসজিদেই মিমাংশার কেন্দ্রস্থল হিসাবে বিবেচনা করা হতো। কিন্ত এখন তেমন দেখা যায় না। এখন মসজিদে ডুকে লেখা দেখতে পাওয়া যায়, দুনিয়াবি কথা বলা যাবে না। কিন্তু যাকে আপনী ঈমাম ভাবেন তিনি প্রকৃত ভা্বে শরিয়তের ফয়সা দেওয়ার কথা, মিমাংশার সঠিক ব্যক্তি। অবশ্যই ঐ ঈমাম সাহেবকে খাটি ঈমানদার ব্যক্তি ও গুনাহ থেকে মুক্ত থাকা বাঞ্চনীয়। ধর্মীয় ব্যবসা থেকে দুরে থাকা জরুরী।

মসজিদে উপস্থিতির আরেকটি উপকার হচ্ছে, এর মাধ্যমে দান-খয়রাতের সংস্কৃতি শক্তিশালী হয়। মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে এই বিষয়টি খুব বেশি লক্ষ্য করা যায়। সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের সমস্যা সম্পর্কে জানার জন্য মসজিদই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো জায়গা। কারণ, এখানে যে কারো সমস্যার কথা ঘোষণা করা হলে সবাই তা জেনে যেতে পারে। ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই মুসলিম ভাই-বোনদের সাহায্য দেয়ার জন্য মসজিদ ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।

আজ আমরা মিশরের বিখ্যাত আল-হাকিম মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা করব। প্রথম পাঁচ হিজরি শতাব্দিতে মিশর ছিল জ্ঞান বিকাশের অন্যতম কেন্দ্র। এ কারণে জ্ঞানপিপাসু বহু মানুষ এই দেশটির মসজিদগুলোতে ধর্ণা দিত। ফাতেমীয় শাসনামলে নির্মিত আল-হাকিম জামে মসজিদ কায়রোর অন্যতম বৃহৎ ও প্রসিদ্ধ মসজিদ। ৩৮০ হিজরি মোতাবেক ৯৯০ খ্রিস্টাব্দে ফাতেমীয় শাসক আল-আজিজ বিল্লাহ’র নির্দেশে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। আল-আজিজ বিল্লাহ ছিলেন পঞ্চম ফাতেমীয় খলিফা এবং মিশরের অষ্টম সুলতান। তার নির্দেশে কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। তিনি কায়রো এবং আলেক্সান্দ্রিয়া শহরে দু’টি বিশাল পাঠাগার স্থাপন করেন। আল-আজিজ বিল্লাহর মৃত্যুর পর তার ছেলে আল-হাকিমের শাসনামলে ৩৯৩ হিজরি অর্থাৎ ১০০৩ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। আল-আজিজ বিল্লাহ এই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করে দিয়ে গেলেও হাকিমের শাসনামলে এটির উদ্বোধন করা হয় বলে এটি আল-হাকিম মসজিদ নামেই প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।



মসজিদটিকে ‘জামে আল-খুতবা’, ‘জামে আল-আনোয়ার’ এবং কায়রোর বাবাল ফুতুহ গেইটের কাছে অবস্থিত হওয়ার কারণে ‘মসজিদে জামে বাবাল ফুতুহ’ও বলা হয়। শত শত বছরের পুরনো আল-হাকিম মসজিদ ইতিহাসের বহু চড়াই উৎড়াই পার হয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। সুলতান দ্বিতীয় বাইবার্সের শাসনামলে চার প্রসিদ্ধ সুন্নি মাজহাবের ফিকাহ শাস্ত্র পড়ানোর জন্য এই মসজিদে ক্লাস চালু হয়। ১২১২ সালে ক্রুসেডের যুদ্ধের সময় ফরাসিরা আল-হাকিম মসজিদকে তাদের সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে। হিজরি ১৩ শতকের শেষ দিকে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় ১৯ শতকে আল-হাকিম মসজিদে মিশরের প্রথম ইসলামি যাদুঘরের ভিত্তি স্থাপিত হয়।



অষ্টম ফাতেমীয় খলিফা আল-মুসতানসির বিল্লাহ ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত আল-হাকিম মসজিদ কায়রো শহরের উত্তর প্রাচীরের ঠিক বাইরে অবস্থিত ছিল। মুসতানসির বিল্লাহ ৪২৭ হিজরি থেকে ৪৮৭ হিজরি পর্যন্ত মিশর শাসন করেন। তিনি ক্ষমতায় এসে শহরের প্রাচীরটি মসজিদের বাইরে দিয়ে টেনে আনেন যার ফলে এটি মূল শহরের ভেতরে চলে আসে। মসজিদটির নির্মাণশৈলিতে ফাতেমি যুগের নিদর্শন স্পষ্ট চোখে পড়ে। আয়তাকার মসজিদটির চারদিকে রয়েছে প্রশস্ত বারান্দা। আল-হাকিম মসজিদের প্রবেশ পথ ও মিনার তৈরি হয়েছে পাথর দিয়ে। এছাড়া, এর বাকি পুরো অংশ ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।



কায়রোর আল-হাকিম মসজিদের বাইরের প্রাচীরে রয়েছে সাতটি মূল ফটক। এটির উত্তর পার্শ্বের ঠিক মাঝখানে রয়েছে মূল ফটক। এ ছাড়া, বাকি তিন পার্শ্বে দু’টি করে ফটক রয়েছে এ মসজিদের। এসব ফটক দিয়ে প্রাচীরের ভেতরে প্রবেশ করার পর মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশের জন্য পাবেন তিনটি দরজা। এসব দরজা মসজিদের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। আল-হাকিম মসজিদের মূল ফটকটি এটির প্রাচীরের চেয়ে ছয় মিটার উঁচু। সামনে থেকে দেখলে অনেকটা কোনো দূর্গের প্রবেশ পথের মতো মনে হবে। প্রবেশ পথের ভেতরের মুখে রয়েছে একটি গোল আকৃতি বিশিষ্ট নামফলক। সেখানে মসজিদের নির্মাণকারী ও নির্মাণের তারিখ লেখা রয়েছে। মসজিদের এই মূল ফটকের সামনে দশম হিজরির গোড়ার দিকে ‘কুরকামাস’ নামের একটি স্মৃতিস্তম্ভ ছিল যা পরবর্তীতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বে রয়েছে সবচেয়ে বড় বারান্দা। আল-হাকিম মসজিদের মেহরাবটি অর্ধ-বৃত্তাকার ভিত্তির ওপর অত্যন্ত মনোরম শৈল্পিক কারুকাজ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটিতে ইটের নির্মিত তিনটি গম্বুজ রয়েছে। এগুলোর একটি মেহরাবের ঠিক উপরে এবং বাকি দু’টি মসজিদের দুই কোণে অবস্থিত। প্রথম দিকে এই গম্বুজগুলো বর্গাকৃতি থাকলেও পরবর্তীতে এগুলোকে অষ্টকোণাকৃতি করা হয়।



আল-হাকিম মসজিদের মূল ফটকের কাছে রয়েছে পাথরের তৈরি বিশাল দু’টি মিনার। রাসূলুল্লাহ (সা.)’র জীবদ্দশায় নির্মিত কোনো মসজিদে মিনার ছিল না। মুয়াবিয়ার খেলাফতকালে ৪৫ হিজরি মোতাবেক ৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম মিনার নির্মিত হয়। সে সময়কার ইরাকের গভর্নর জিয়াদ ইবনে উবাই এই মিনার নির্মাণ করেন। মিনারের ভিত্তি সাধারণত বর্গাকৃতির হয় এবং এর উপরে নির্মিত হয় মিনারের মূল কাঠামো। এই মূল কাঠামোটি হয় মোচাকৃতির এবং এর শীর্ষে থাকে মিনারের মূল অংশ। শীর্ষের এই অংশটি চতুর্কোণ বা অষ্টকোণ বিশিষ্ট হয়ে থাকে। আল-হাকিম মসজিদের উত্তর দিকের মিনারটি ২৩ মিটার এবং পশ্চিম পার্শ্বের মিনারটি ২৪ মিটার উঁচুা
মিরাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রথমে একটি খেজুর গাছের গুঁড়ির ওপর এবং পরবর্তীতে মসজিদের মিম্বারে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষকে ধর্মীয় হুকুম-আহকাম ও ইসলামের পরিচিতি শিক্ষা দিতেন। পরবর্তী যুগগুলোতেও ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে মসজিদের ব্যবহার অব্যাহত থাকে যা আজও চালু রয়েছে।

ভাল কিছু জানার আগ্রহ, মানুষকে অনুপ্রানিত করে, তা থেকেই জ্ঞানের পরিধি প্রসারিত হয়। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আমি চাই আমাদের সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হউক, এই পৃথিবীতে আমরা সবাই শান্তিতে বসবাস করতে চাই। এই লেখা পড়ে যদি কেউ সামান্যতম উপকৃত হয়, তাতেই নিজেকে ধন্য বলে মনে করবো্। বাংলাদেশেও সুন্দর সুন্দর মসজিদ আছে, তবে কেন এরদোগান এতো ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট তা আমার যদিও আগে জানা ছিল, না তবে বর্তমানে মিশর সম্পর্কে পড়াশুনা করার পর বুঝতে পারলাম । ঠিকই মিশর আমাদের চাইতে অনেক অংশে এগিয়ে আছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১০

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, যদি অন্য কাউকে শেয়ার করেন তবে সে হযতো একবার পড়বে, তাতে তার ঈমান একটু হলেও নাড়া দিতে পারে, হতে পারে, তার ঈমান সঠিক রাস্তায় চলে আসতে পারে, আপনার সর্বময় মঙ্গল কামনা করছি। আমিন।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৮

মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: সুন্দর

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১১

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আল্লাহু আপনার নেক হায়াৎ দান করুন।

৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভালো পোস্ট। নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়লে মানসিক শান্তিও পাওয়া যায়...

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আপনী সম্পূর্ন সঠিক চিন্তাটাই করেছেন। একমাত্র মসজিদই হলো শান্তির জায়গা, তবে আপনার গৃহকে কবর বানাবেন না। নফল ও সুন্নত নামাজ অবশ্যই গৃহে আদায় করার জন্য অনুরোধ করবো। আমিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.