নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"তোমার সাথে মিলব আমি ঠিক বেঠিকের বাহিরে\"

লাবিব ফয়সাল

ভালোমানুষ হওয়ার কোন ঝঞ্ঝাট নেই, তাই আমি নিতান্ত ভালোমানুষ...

লাবিব ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জানালার ওপাশে

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৮

একটি পাখির ডাক শুনতে পাচ্ছি। বেশ কর্কশ। বাংলাদেশের কাকগুলো এভাবেই ডাকে। কিন্তু নতুন দেশে পাখিগুলোও যেন অপরিচিত। চিনতে পারছি না। আমার মা বলতেন, কাক নাকি মানুষের কথা বুঝতে পারে। তাই কোন দুঃখের সংবাদে সেও বেদনাভরা কন্ঠে কা কা করতেই থাকে। আর মাথার উপর ঘুর ঘুর করে। কিন্তু এই পাখিটির সাথে আমার তেমন কোন পরিচয় নেই। সে চাইলেই কিন্তু আমার মনের কথা বুঝতে পারার কথা নয়।
কিছুদিন আগে দুবাইয়ের এক লেখক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেমন আছেন? উত্তরে বলেছিল, প্রবাসীরা তো সবসময়ই ভালো থাকে। এই ভালো থাকার কারণ, প্রবাসীরা নাকি সবচেয়ে বড় রোবট। তাদের আবেগ অনুভূতি নেই। আমিও হয়তো তাই হয়েছি। এ জন্যই কাকটিও আমাকে বুঝার আপ্রাণ চেষ্ঠা করে চলেছে। আজ সবকিছুই কেমন রঙিন রঙিন লাগে। মাঝে মাঝে ভাবি আমি কি আসলেই জেগে আছি, নাকি এটাও কোন ভাবনার কারণে রাতে দেখা স্বপ্ন।

ক’দিন আগেইতো পুরান ঢাকার সেই বাড়ির জানালা দিয়ে আকাশ দেখার চেষ্টা করতাম। এখন আকাশেই উড়ি। ইদানিং বাড়ি ভাড়ার জন্য কারো কাছে ধার করতে হয় না আমার। আগের মতো এখন আর ইউনিভার্সিটিতেও হেঁটে যাই না।
পাখিটি অনেক্ষণ হলো তাকিয়ে আছে আমার রুমের দিকে। আমিও দেখছি তাকে। কালো, গলার নিচ দিয়ে একটু সাদা সাদা ভাব। কাকের চেয়ে কিছুটা ছোট। আগে কোন প্রাকৃতিক জিনিসের দিকে তাকিয়েই কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যেতে পারতাম। তাদের সাথে কথাও বলতাম মাঝে মাঝে। পাখিটিকে দেখতে দেখতেই সেই পুরান ঢাকার গলিগুলোর কথা মনে পড়ছে। ছোট ছোট গলি। আমরা থাকতাম ছয় তলা একটা আধ-পুরনো বাড়িতে। ব্যাচেলর হওয়ায় উপরের রুমটাই পেয়েছিলাম। আমি সর্বকনিষ্ঠ হওয়ায় আদরেই থাকতাম অনেক। ছোট ভাই ছিলাম সেখানকার।
রুমের মরিচা পরা গ্রীলগুলো ধরে মাঝে মাঝে কল্পনা করতাম। মাঝে মাঝে কল্পনায় নদী দেখতাম। আবার মাঝে মঝে রাস্তা। তবে হাতে অনেক অনেক টাকা আছে, এটা ভাবতে অনেক ভালো লাগতো। আর সেই টাকা দিয়ে একটা সাদা শার্ট আর জিন্স প্যান্টও কিনেছি কয়েকবার কল্পনাতেই। কিন্তু এখন আর এমন স্বপ্ন দেখি না। কারণ হয়তো সেই টাকাগুলো আমার হাতে সত্যি সত্যি চলে এসেছে। আর চাইলেই মন অনেক কিছুই পায় এখন

কিন্তু কোথায় যেন আবার হারিয়ে যেতে মন চায়। সেই আড্ডাগুলোতে, রাত জাগা পাখির মত রাস্তাগুলোতে। ইচ্ছে করে বুড়িগঙ্গার তীরে বড় বড় ডকইয়ার্ডগুলোতে বসে থাকতে। চোখটা একটু ঝাপসা ঝাপসা হয়ে এসেছে। বুঝতে পারিনি। পাখিটাকেও দেখছিনা আর। চলে গেছে হয়তো। ঘরিটা দেখে চোখের কোণটা মুছতে মুছতেই ক্লাসের জন্য বেড়িয়ে পরলাম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩০

রেজওয়ান করিম বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৫০

লাবিব ফয়সাল বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.