নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"তোমার সাথে মিলব আমি ঠিক বেঠিকের বাহিরে\"

লাবিব ফয়সাল

ভালোমানুষ হওয়ার কোন ঝঞ্ঝাট নেই, তাই আমি নিতান্ত ভালোমানুষ...

লাবিব ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক কামারুজ্জামান ভাই

৩০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:০০




কবীর নামেই পরিচিত তিনি। এটা বেশ ছোট আর শ্রুতিমধুর কিনা।তবে আমার জন্য কামারুজ্জামান নামে ডাকা ছিল তার নির্ধারণ করা। নামের পরে ভাই যোগ করে ডাকতাম কামরুজ্জামান ভাই।আমাদের বাড়িতেও তিনি এই নামটিতেই পরিচিত ছিলেন।

তার সাথে প্রথম দেখা অষ্টম শ্রেণির মাঝামাঝি সময়। এর পরে অধিকাংশ সময়ি একসাথে থাকা হত।শীতের সকালে কুয়াশার সাথে যুদ্ধ করে দুজন হাটতে হাটতে প্রতিদিন যেতাম টং এর ভাপা পিঠার দোকানে। কথা ছিল দুজনে মিলেই বিল পরিশোধ করার।কিন্তু তা সবসময় কথাতেই আটকা ছিল।ফাকা পকেটটাকে আরো ফাকা করতে একটুও চিন্তা করতেন না তিনি।

কিন্তু বন্ধুর মত মানুষটি যে প্রয়োজনে কঠোর হতে পারে, তা প্রথম দেখেছিলাম আমার মাধ্যমিক পরিক্ষার সময়। আমার ফাঁকিবাজির কথা জানতে পেরে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন,পরিক্ষার আগে বাড়িতে আর থাকা যাবে না। আমার সাথে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
ভাইয়ার এমন আপোষহীন অবস্থান আমার পুচকু হ্রদয়ে এতটাই বিদারক করেছিল যে মাঝে মাঝে অনেক কঠোর কঠোর সিদ্ধান্ত বাধ্য হয়েই চলে এসেছিল আমার কাছে।কিন্তু ভাইয়া সামনে এসে মুচকি হাসিটা দেয়ার সাথে সাথেই সকল জমানো সিদ্ধান্ত আমাকে একলা করে পালিয়ে যেত।

এর পরে অনেক কম সময় লেগেছিল আমার জীবনের পয়েন্টগুলোতে টার্ন নিতে। পুরো উপজেলায় হাতে গোনা মাত্র তিনজন গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিল সে বছর। তিন জনের একজন হিসেবে আমিও নাম লিখিয়েছিলাম অনেকগুলো সংবর্ধনার ক্রেস্টে।সেই দিনগুলোতেই প্রথম তাকে জড়িয়ে ধরে শুখের কান্নার শুরু হয়েছিল আমার জীবনে।

এর পরে সময় অনেকগুলো দিন পার করেছে।হিসেবে প্রায় কয়েক বছরতো হবেই।এই দিনগুলোতে কাউকে ছাড়াই অনেক কিছুইতো করা হয়েছিল।
মাধ্যমিকের সেই ফলাফল দিয়ে খুব সহজেই ভর্তি হলাম দেশের সবচেয়ে ভালো কলেজে।উচ্চ মাধ্যমিকেও ফলাফলের ধারাবাহিকতা নিয়েই জগন্নাথ আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ভালো ভাবেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ এলো।
জগন্নাথেই শুরু হলো আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।

কিন্তু বছরের মাঝামাঝি সময় সরকারী বৃত্তি নিয়ে বিদেশ বাড়িতে চলে আসতে হলো।

এয়ারপোর্ট থেকেই জীবন নিজেকে চালিয়ে নিতে শুরু করলো তার থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম করেই। অনেক মানুষ বন্ধু হলো।আমার কষ্টের ভার নেয়ার বাহন হলো। আকাশ থেকে কিছু স্বপ্ন এলো বোনার জন্য।

কিন্তু যেই কামরুজ্জামানগুলো নিজের স্বপ্নগুলিকে শিকেয় তুলে আমাদের মত স্বার্থপরকে অবিরত স্বপ্ন দেখিয়ে গিয়েছিলেন,তাদের সাথে আর শেষ দেখাটাও কারতে দেয়নি কিছু নিষ্ঠুর বাস্তবতা।এতে তাদের অবশ্য কিছুই যায় আসে না।তারাতো তাদের কাজ করেই চলেছেন।এখনোতো কত মানুষকেই স্বপ্নের জন্য তৈরি করে চলেছেন।

হয়তো আজকেও নতুন কোন অপরিচিত ছেলেকে চায়ের দাওয়াতে বলে যাচ্ছেন জীবন গড়ার কিছু টুকিটাকি।হয়তো এভাবে বলবেন আরো অনেক বছর।হয়তো কামরুজ্জামানেরা এভাবেই বলে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.