নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"তোমার সাথে মিলব আমি ঠিক বেঠিকের বাহিরে\"

লাবিব ফয়সাল

ভালোমানুষ হওয়ার কোন ঝঞ্ঝাট নেই, তাই আমি নিতান্ত ভালোমানুষ...

লাবিব ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি হল যদি

২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৮


১৪ সালের ডিসেম্বর মাস। তারিখটা একুশ হবে। বাড়ি থেকে বড় একটি কাঁধের ব্যাগ আর কিছু বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এলাম। পুরাণ ঢাকা এর আগে কখনো আসা হয়নি। অস্থায়ী ঠান্ডা বরফ পানি আর পান দোকান্দারদের জিজ্ঞাসা করে অনেক কষ্টে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে খুঁজে বের করলাম।
একজন দুর সম্পর্কের আত্নিয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখালেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে আসার সময় ভেবেছিলাম এত বড় না হোক রাতের আকাশ দেখার মত কিছুটা জায়গাতো থাকবেই। কিন্তু আমার আত্নিয় এক মিনিট চৌত্রিশ সেকেন্ডেই তার বিশ্ববিদ্যালয় দেখানোর কাজ শেষ করলেন। আমি নতুন করে শুরুর স্বপ্নটাও সাথেই এনেছিলাম। ভাবলাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি গলিই হয়তো একদিন স্বপ্নের রাস্থা দেখিয়ে দেবে।

দেখতে দেখতে ছয়মাস চলে গেল। এখন ডিপার্টমেন্টের জন্য বরাদ্দকৃত তিনটি রুমেই আমার পড়াশুনা। ক্লাশের বিরতি হলে দাঁড়িয়ে থাকি শিক্ষকদের জন্য বানানো কাচের অস্থায়ী রুমের পাশে। যেখানে মাঝে মাঝেই ম্যাম বের হয়ে বলেন এখানে টকিং নট এলাউড। এভাবেই মানিয়ে যেতে থাকলো আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। তবে দিন কয়েকেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম এই জগন্নাথের। অনেক রাত কেটেছে কলা অনুশধের সামনের বেড়ি বাধা কাঁঠাল তলায়, পাশের শহীদ মিনারে আবার কখনো নতুন ভবনের শিড়িতে। কি যেন ভেবে বসেই থাকতাম। দেখতাম আমার মত অনেকেই বসে থাকে। তারাও কি নিয়ে যেন ভাবে।

মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় কিছু জায়গায় বেশ টান অনুভব করতে শুরু করলাম। একটু ফাকা সময় পেলেই স্বপ্নগুলোকে তাড়িয়ে প্রতিদিনের চলার খরচের কথা মনে হতে শুরু করতো।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল না থাকায় আমাদের থাকতে হত পুরাণ ঢাকার বাড়িগুলোতে।একটু ভূমিকম্প হলেই টিভি চ্যানেলগুলোতে যেগুলো। ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি হিসেবে খবরে আসতো।
জবির ২২ হাজার ছাত্র-ছাত্রিই ঠিক একই ভাবে থাকতো। থাকার খরচ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অধিকাংশকেই টিউশনির উপর নির্ভর করতে হত। টিউশনি এখানে তাই সোনার হরিণ। অনেক পরিচিত আছে যারা, দিনে ক্লাস করে আর রাতে ইসলামপুরের কাপড় দোকানের দাড়য়ানের কাজ করেন।
আমি জগন্নাথে ছয়মাসের মাথায় স্কলারশিপে ইউরোপ চলে এসি।কিন্তু এখনো সেই জবির পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনে পড়ুয়া দাড়োয়ানগুলোর কথা মনে পরে।ভাবি, যদি এদের হলের একটা ব্যাবস্থা হয়ে যেত, তাহলে কাপড় দোকানের দাড়োয়ানটি দেশের দাড়োয়ান হওয়ার স্বপ্ন বুনতে পারতো।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: বিদেশে যেয়েও একসময়ের সহপাঠীদের জন্যে চিন্তা করছেন দেখে ভাললাগল।

লেখাটা ভাল হয়েছে।

ভাল থাকুন। সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.