নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউন্টার নিশাচর

কাউন্টার নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্যিকারের দেশপ্রেম দেখতে চান ?

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৩

জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দান থেকে ‘মরণ ফাঁদ ফারাক্কা বাঁধ’ অভিমুখে হাজারো জনতার অংশগ্রহণে লংমার্চ করেন।
ভারতীয় পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ওই দিন বাংলার সর্বস্তরের মানুষের বজ্রকন্ঠ ভারতের শাসকমহলেও কাঁপন ধরিয়ে দেয়। যার রেশ উপমহাদেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পৌঁছে যায়।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারত তার একতরফা নীতির আওতায় গঙ্গা তথা পদ্মায় অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে। সেই বাঁধ বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য আজ মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ১৯৭২-৭৫ সালের আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে এই বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। ৩৮ বছর আগে জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী গঙ্গার ন্যায্য পানির দাবিতে ফারাক্কা অভিমুখে লংর্মাচের আয়োজন করেন। ওই দিন রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান থেকে লংর্মাচের সূচনা হয়। যা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে গিয়ে শেষ হয়। দিনটি ছিল রোববার। ওইদিন সকাল ১০টায় রাজশাহী থেকে শুরু হয় জনতার পদযাত্রা। হাতে ব্যানার আর ফেস্টুন নিয়ে মানুষে মানুষে ভরে যায় রাজশাহীর রাজপথ। ভারতবিরোধী নানা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয় জনপদ। বেলা ২টার দিকে হাজারো মানুষের স্রোত রাজশাহীর গোদাগাড়ী প্রেমতলী গ্রামে পৌঁছায়। সেখানে মধ্যাহ্ন বিরতির পর আবার শুরু হয় যাত্রা। সন্ধ্যা ৬টায় লংমার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জে গিয়ে রাত যাপনের জন্য নবাবগঞ্জ কলেজ মাঠে জমায়েত হয়। সে মাঠেই রাত যাপন করার পরদিন সোমবার সকাল ৮টায় আবার যাত্রা শুরু হয় শিবগঞ্জের কানসাট অভিমুখে। শিবগঞ্জে পৌঁছানোর আগে মহানন্দা নদী পার হতে হয়। নৌকা দিয়ে কৃত্রিম সেতু তৈরি করে মহানন্দা নদী পার হয় মিছিল। অসংখ্য মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে যোগ দেয় এই লংমার্চে। কানসাট হাইস্কুল মাঠে পৌঁছানোর পর সমাবেত জনতার উদ্দেশে মজলুম জননেতা তার জ্বালাময়ী ভাষণ দেন। মওলানা ভাসানী ভারতের উদ্দেশে বলেন, ‘তাদের জানা উচিত বাংলার মানুষ এক আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় পায় না। কারো হুমকিকে পরোয়া করে না। তিনি বলেন, ‘আজ রাজশাহী, চাঁপাইনবাবঞ্জ, কানসাটে যে ইতিহাস শুরু হয়েছে তা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি করবে।
মওলানা ভাসানী এখানেই লংর্মাচের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে লংমার্চ সমাপ্ত হলেও সেদিন জনতার ভয়ে ভীত ভারতীয়রা সীমান্তে প্রচুর সৈন্য মোতায়েন করে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। মাওলানা ভাসানী আজ বেঁচে নেই। কিন্তু নদীর বিপন্ন দশা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী এখন প্রায় পানিহীন অবস্থায় পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই অবস্থা আরো শোচনীয়।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি কম পেয়ে প্রতি বছরই লিখিত-অলিখিতভাবে প্রতিবাদ করে আসলেও এ ব্যাপারে ভারতের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকেও বিষয়টি বারবার উত্থাপন করা হলেও কোন সুফল বয়ে আনতে পারেনি। শুধু আশ্বাসের বাণীই শোনা গেছে। নদ-নদী বিধ্বংসী এমন ব্যাপক কার্যক্রমের দরুণ এবার শুষ্ক মৌসুমের সূচনাতেই বাংলাদেশের পদ্মার বুকে পানির হাহাকার শুরু হয়ে গেছে। গঙ্গা অববাহিকার পানি সংকটে কৃষি, মৎস্য ও পরিবেশসহ সার্বিক অবস্থা বিপর্যস্ত। নদীকেন্দ্রিক সেচ প্রকল্পগুলো গুটিয়ে নিতে হয়েছে। গঙ্গা সেচ প্রকল্পের মতো বড় প্রকল্পে পানির হাহাকার চলছে। এদিকে নতুন কোন প্রকল্প হাতে নিতে সাহস পাচ্ছেনা সংশিষ্ট মহল। নদীর বুকে শত শত চর মরুময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় নদীর বিস্তীর্ণ অববাহিকাজুড়ে কৃষি-সেচ, মৎস্য আহরণ ও নৌ যোগাযোগই বিপর্যস্ত হয়নি, সার্বিক প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হয়েছে। মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রার উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.