নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউন্টার নিশাচর

কাউন্টার নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ভূয়া ইতিহাস তৈরী হয় !!!

১৭ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ২:২৯



গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে ধুমপান করে সমালোচনায় এসেছেন। কারণ বাংলাদেশের ফৌজদারী দণ্ডবিধি অনুযায়ী প্রকাশ্যে ধুমপান করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তিনি এই অপরাধ চাপা দিতে এর আগে শেখ মুজিবের সাথে তাঁর ধুমপানের কাহিনী প্রচার করেছেন। এবার তিনি নতুন কাহিনী যোগ করেছেন; বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার সহযোদ্ধা বড় ছেলে হারানোর বেদনার কারণে তিনি ধুমপান করেন!
বাংলাদেশের মানুষ মাত্রই মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে যথেষ্ট স্পর্শকাতর। তাই এহেন কাহিনীতে অনেকেই আপ্লুত। বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হাসান মুরশেদ তার এই কাহিনীতে আপ্লুত হয়ে একটি মরমিয়া স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।[১]
হাসান মুরশেদ সাহেব সিলেটে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বই লিখছেন বলে জানি। উনার মূল ফোকাস জগতজ্যোতি'র গেরিলা বাহিনী এবং সেই বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি নিয়মিত স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। মহসিন আলী সাহেবের এই মর্মান্তিক ইতিহাস উনার বইতে স্থান পাবার আগেই একটু বিশ্লেষণ করে দেখা যাক বাস্তবতা কী?
মুরশেদ সাহেব তার স্ট্যাটাসে যে রেফারেন্স ব্যবহার করেছেন, সেখানে মহসিন আলীর ভাষ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, "নিজের সিগারেট খাওয়ার পেছনে ‘আত্মজ’ হারানোর এক করুণ গল্প যে লুকিয়ে রয়েছে তা প্রকাশ করলেন তিনি।" তারমানে ছেলেটি তাঁর নিজের ঔরশজাত সন্তান, পালকপুত্র নয়। এরপর লেখা হয়েছে, "তার বড় ছেলে ও তিনি এক সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ‘যুদ্ধের শেষদিকে পাঞ্জাবি সেনারা তার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। পাঞ্জাবিরা আমিসহ আমার সঙ্গে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধানের জন্য ছেলেকে নির্যাতন করে। কিন্তু নির্যাতনের পরও ছেলে মুখ খোলেনি। ’
এই বীরত্বের জন্য নিজের ছেলেকে ‘বাপের বেটা’ আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘হিদিন যদি নির্যাতনের ডরে পুয়ায় আমিসহ আমার সঙ্গে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের নাম কইলাইতো তা অইলে আমরা সব খতম অই যাইতাম। তিনি বলেন, নাম না কওয়ার অপরাধে পুয়ারে পাঞ্জাবিরা মারি লাইছে। যদি নাম কইতো তা অইলে আমিসহ ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধারে মারি লাইত পাঞ্জাবিরা। নিজে মরিয়া আমরারে বাঁচাইয়া দিছে। এর বাদে পুয়ার লাগি টেনশন অইতে লাগল। আর টেনশন কমাইবার লাগিয়া সিগারেট খাইতে শুরু যে করলাম, তা ওখনও আছে।’[২]
প্রশ্ন হচ্ছে যুদ্ধের সময় তাহলে উনার বড় ছেলের বয়স কত ছিল? সর্বনিম্ন ১০ ধরে নেই। কারণ ঐ ছেলেকে 'পাঞ্জাবী'রা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্যাতনও করেছে এবং সেই নির্যাতন সহ্য করে তথ্য গোপন করার মত বয়স এর চেয়ে কম দেখালে বিষয়টা আরো খেলো হয়ে যাবে। সন্তানের বয়স যদি ১০ বছর হয় তাহলে পিতার বয়স তখন কত ছিলো?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটের তথ্য অনুযায়ী, "১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ২৩ বছর বয়সে তিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।"[৩] ২৩ বছর বয়সে ১০ বছর বয়সী সন্তানের পিতা হতে হলে জনাব মহসিন আলী নিশ্চই ১২ বছর বয়সে বিয়ে করে ১৩ বছর বয়সে বাবা হয়েছিলেন।
প্রকাশ্যে ধুমপান করার অযুহাত তৈরীর জন্যও যে মুক্তিযুদ্ধকে টেনে আনতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অলীক কাহিনী তৈরী করতে হবে এটা দেখা বাকী ছিল।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ মহসিন আলীর বয়স অনুমান করার জন্য যুগান্তরে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনের লিংকও দেয়া হল।[৪]
-------------------
১/ জনাব হাসান মুরশেদ এর স্ট্যাটাস: Click This Link
ওয়েব আর্কাইভের ব্যাকআপ: Click This Link
২/ হাসান মুরশেদ এর দেয়া রেফারেন্স: Click This Link
ওয়েব আর্কাইভের ব্যাকআপ: Click This Link
৩/ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে সৈয়দ মহসিন আলীর জীবন-বৃত্তান্ত: Click This Link
ওয়েব আর্কাইভের ব্যাকআপ: Click This Link
৪/ যুগান্তরের প্রতিবেদন: Click This Link
ওয়েব আর্কাইভের ব্যাকআপ: Click This Link




(লেখকঃ অধ্যাপক একেএম ওয়াহিদুজ্জামান, ভূগোল ও পরিবেশ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় )

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: এইসাথে ব্লগার নিঝুম মজুমদারের হাস্যকর সব স্ট্যাটাস আর জাবি শিক্ষক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের বাঁশ মার স্ট্যাটাস না দেখলে পুরা মজা পাওয়া যাবেনা। নিচে দেখুন নিঝুমদা'র পশ্চাদ্দেশ বাঁচানোর স্ট্যাটাস
https://www.facebook.com/nijhoom.majumdar/posts/843096665779035
আর এখানে দেখবেন সেই পশ্চাদ্দেশে ওয়াহিদুজ্জানের মিলিটারী বুটের লাথি
এইসাথে ব্লগার নিঝুম মজুমদারের হাস্যকর সব স্ট্যাটাস আর জাবি শিক্ষক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের বাঁশ মার স্ট্যাটাস না দেখলে পুরা মজা পাওয়া যাবেনা। নিচে দেখুন নিঝুমের পশ্চাৎ
https://www.facebook.com/nijhoom.majumdar/posts/843096665779035
আর এখানে দেখবেন সেই পশ্চাদ্দেশে ওয়াহিদুজ্জানের মিলিটারী বুটের লাথি

১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৪৬

কাউন্টার নিশাচর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ১৭ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:২০

মৃত্যুর পথযাত্রী বলেছেন: নতুন করে বলার কিছু নাই ,আওয়ামীলীগ is Always আওয়ামীলীগ

১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৪৫

কাউন্টার নিশাচর বলেছেন: আগে আওয়ামীদের কুত্তার সাথে তুলনা করতাম। পরে বুঝলাম এতে অপমান হয়।

না না হাম্বাদের অপমানের কথা বলছি না, ওই কুত্তাটার অপমান হয়।

৩| ১৭ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:১৫

ফাহাদ ইবনে মুরতাযা বলেছেন: নিঝুমের পোস্টে যে আরিফের কথা লেখা আছে তাকে আমি চিনি, চট্টগ্রামে কিছুদিন একসাথে অনার্সে পড়েছিলাম, প্রথম শ্রেণীর ফাটকাবাজ,আর তারে কিনা নিঝুম "সোনা" জ্ঞান করতেসে, ঠিকই আসে, রতনে রতন চিনে!!

১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৪৮

কাউন্টার নিশাচর বলেছেন: হুম ঠিক।

৪| ১৮ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: একটা লোক কথখানি খারাপ হইলে তার চেহারায় এমন খবিশের রিফ্লেকশন আসে...

১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৪৩

কাউন্টার নিশাচর বলেছেন: আপনি নিজেও তো আরেক আওয়ামী লীগ। আপনি এসব কথা বলছেন কেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.