নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউন্টার নিশাচর

কাউন্টার নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসাম্প্রদায়িক(!) দল আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি-নেতা-কমীদের দ্বারা শুধুমাত্র গত মাসে (জানুয়ারী ২০১৬) সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের কয়েকটা

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৪

১। জানুয়ারী-৮ : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী দবিরুল কর্তৃক ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল। বালিয়াডাঙ্গীতে জমি দখলকে কেন্দ্র করে গত ১৯ জুন সাংসদের ছেলের নেতৃত্বে অন্তত ৩০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা করে। হামলার পর অকুলচন্দ্র পরিবার নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন ভাকারাম সিংসহ ৮/১০ জন, সন্ত্রাসীরা কয়েকজন নারীকেও মারধর করে।
২। জানুয়ারি-১৮ : ফেনী জেলার সোনাগাজি উপজেলায় চরদরবেশ ইউনিয়নের সেনেরখিল গ্রামের পাল বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে যুবলীগ কর্মীরা। এ সময় বাড়ির লোকজন বাধা দিতে গেলে তিনজনকে নেতাকর্মীরা পিটিয়ে আহত করে। ওই এলাকার প্রায় পরিবারকেই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জিম্মি করে রেখেছে। ওই এলাকার প্রতিটি সংখ্যালঘু পরিবার শঙ্কা আর নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছে।
৩। জানুয়ারি-২০ঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে তাঁদের সামনেই এক সংখ্যালঘু গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ছোট ভাই। বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সংখ্যালঘু ওই গৃহবধূকে বেশ কিছু দিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো একই গ্রামের মনু মিয়া। কিন্তু লোক-লজ্জার ভয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলেন নি।
গত ১৪ জানুয়ারি স্বামী ও সন্তান মেলায় চলে যান। এ-সুযোগে মনু ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। স্বামীকে অবহিত করলে তিনি স্থানীয় মুরুব্বীদের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। ১৬ জানুয়ারি সালিশে মনু নিজের অপরাধ স্বীকার করায় তাকে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরদিন সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ১৭ জানুয়রি তার ভাই উস্তার মিয়া জোরপূর্বক তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ওইদিনই মধ্যরাতে মনুসহ ২/৩ জন আবারও ওই গৃহবধূর বাড়িতে যায়। সিঁধকেটে ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে গৃহবধূর স্বামীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে দুর্বৃত্তরা। পরে স্বামী ও সন্তানের সামনেই তাকে আবারও ধর্ষণ করে।
৪। জানুয়ারি-২৫ঃ ঢাকার পাশে মানিকগঞ্জ-১ আসনের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়। এমপি এবং এমপির চাচা তায়েবুর রহমান টিপু মিলে এলাকায় গড়ে তুলেছেন চাঁদাবাজ এবং দখলদার বাহিনী। আর এই বাহিনী রাতের আঁধারে জবরদখল করছে মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট এবং সহায়-সম্পত্তি। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল হিসেবে চিহ্নিত আওয়ামী লীগের এই এমপির ভয়ে রাত জেগে ঘরের মেয়ে সদস্যদের নিয়েও পাহারা দিচ্ছেন সেখানকার স্থানীয় সংখ্যালঘুরা। এমপি, স্থানীর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এসে হুমকি দিয়ে গেছে তাদের বাড়িঘর এবং দোকানপাট দখল করে নেবে বলে।
৫। জানুয়ারি-৩০ঃ পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাখাঁরিকাঠী গ্রামের ২০ টি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারকে তাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে ভারত চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোসারেফ হোসেন খান। শুধু হুমকি নয়, ইতোমধ্যে ঐ সকল হিন্দু পরিবারের বাড়ির পাশের খালি জায়গায় কয়েকটি মুসলমান পরিবারকে টং ঘর তুলে দিয়ে সংখ্যালঘুদের প্রায় ৭ একর জমি দখল করেছে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এই নেতা।
৬। জানুয়ারি-৩০ঃ ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে যশোরের ঋষিপল্লীতে বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা ঘটিয়েছে সেখানকার স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
৭। জানুয়ারি-২ঃ বাকেরগঞ্জের কবাইতে সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি এক সংখ্যালঘু পরিবার। নারীপ্রধান এই পরিবারটির উপর অত্যাচার করে এলাকা ছাড়া করার পরে তাঁদের জমি দখলের চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা।
৮। জানুয়ারি-৩ঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ছোট দৌলতপুর গ্রামে কালী মন্দির ও খড়ের স্তুপে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে করে মন্দিরের ৩০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। চাঁদা না পেয়ে আমাদের তথাকথিত দুর্বৃত্তরা প্রথমে সুধিন চন্দ্র শীল নামে একজন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে, পরে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে।
৯। জানুয়ারি-৭ঃ সাতক্ষীরায় একটি সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা। জায়গাজমি অবৈধভাবে দখলের জন্য উদ্দেশ্যকৃত ভাবে এই হামলাটি করা হয়েছে।
১০। জানুয়ারি-৯ঃ অপহরণ করা হয়েছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কলেজ ছাত্রী সুমি রানী মজুমদারকে। সোহাগ নামে একজন বখাটে যুবক কলেজ যাওয়ার পথে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে সুমি তা প্রতাখ্যান করে। পরে সুমির অভিভাবক ছেলেটির পরিবারকে অবহিত করলে ছেলেটি সুমিকে অপহরণ করে। সুমির মা বিষয়টি থানায় জানালে বিভিন্নভাবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় পরে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সহায়তায় মামলা নিলেও প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করা আসামীদের কাউকেই গ্রেপ্তাই করে নি পুলিশ।
১১। জানুয়ারি-১০ঃ একটি পুকুর থেকে লক্ষাধিক টাকার মাছ চুরি করার দায়ে নুর আমিন নামক একজন ব্যক্তির নামে থানায় মামলা করতে গেলে এবং এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে নুর আমিনের দলবল নিয়ে প্রদীপকে মারধর করে। এমনকি নুর আমিনের ত্রাসের কারণে পুকুরের মালিক আম্বিকা সাধু ও তার পরিবার ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন যাপন করছেন।
১২। জানুয়ারি-১১ঃ নওগাঁয় এক আদিবাসী খৃষ্টানকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। শুক্রবার একসাথে মাঠে কাজ করেছেন লুইচ-জোগিতা দম্পতি। জোগিতা কাজ সেরে স্বামীর আগে বাড়ি ফিরেন। কিন্তু তার স্বামী লুইচ সরেনের আর বাড়ি ফেরা হলো না। তার পোড়া লাশ পাওয়া গেলো পরের দিন পার্শ্ববর্তী একটি গ্রাম জাবড়ীপাড়া থেকে। জোগিতা জানেন না তার স্বামীকে কেন পুড়িয়ে মারা হলো। তবে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায় দেশের উত্তরাঞ্চলের আদিবাসীরা জমির জন্য প্রায়ই অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন। তাদের জমি জোর করে দখল করে ভূমি সন্ত্রাসীরা।
১৩। জানুয়ারি-১৫ঃ চাঁদা না পেয়ে তাপস ভৌমিক নামের নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছেলেকে গলায় ছুরি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
১৪। জানুয়ারি-২৬ঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আছিমে এক সংখ্যালঘু পরিবারের জমি ও দোকানপাট থেকে উচ্ছেদের জন্য ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে সন্ত্রাসীরা। ভুক্তভোগী অমল চন্দ্র দে সরকার মামলা করায় পুনরায় আছিম বাজারে তার বাড়িঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
১৫। জানুয়ারি-২৮ঃ নারায়ণগঞ্জ শহরের পালপাড়া এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের দরিদ্র এক পরিবারের বাড়ি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৬। জানুয়ারি-২৯ঃ নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর এলাকায় এক খ্রিস্টান দম্পতিকে হত্যার চেষ্টা।
১৭। জানুয়ারি-৩০ঃ ফরিদপুরের সালথায় জুয়া খেলায় বাধা দেয়ায় এক সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার বিকালে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণনদী গ্রামের সুবোধ কুণ্ডুর বাড়িতে এই হামলা করা হয়। এ-সময় হামলা ঠেকাতে এলে সুবোধ কুণ্ডু ও তার স্ত্রী স্বরসতী কুণ্ডুকে পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা।
১৮। জানুয়ারি-৩১ঃ গৌর নদীতে কালি মন্দিরে দুর্বৃত্তরা(!) আগুন লাগিয়ে দিলে মন্দিরের কিছু অংশের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
১৯। জানুয়ারি-৩১ঃ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় শুক্রবার রাতে একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুরকারী ইসমাইল হোসেনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে উপস্থিত জনতা।
মুর্তিমান আতঙ্ক নিয়ে বেঁচে আছে দেশের অনেক জেলাতেই অনেক সংখ্যালঘু পরিবার। কখনও মেয়েদের উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ, কখনও গর্ভের শিশুকে লাথি মেরে হত্যা, কখনও পুরো পরিবারশুদ্ধ আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলার মত জঘন্য অপরাধ করে নিঃশেষ করে ফেলা হচ্ছে তাঁদের।
(ব্লগার ধনা বড়ুয়ার ব্লগ থেকে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.