নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের মানুষ হয় রাজনৈতিক দল গুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিছে না হয় পরাধীনতার এই দাসত্ব পরিস্থিতি উপভোগ করছে। পরাধীনতা, নিজেদের ব্যাক্তি স্বকাতন্ত্রতা বিসর্জন দেয়ায় কি কোন ক্রেডিট আছে? আমি জানি না। অন্তত আমার কাছে নেই।
বাংলাদেশের রাজনীতি বা আমাদের সাতন্ত্র্যবোধ এখন কি আমাদের হাতে আছে? মূলতঃ এই প্রশ্ন টাই গত কিছু দিন ঘুরে ফিরে আমার মাথায় আসছে। আওয়ামী শাসন এই টার্মের শুরুতেই এই দেশের রাজনীতি অনেক টা ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে বিভিন্ন রকম অধীনতা মুলক চুক্তিতে সাইন করে। এর ফলে আমাদের শাসককুল তাদের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারে কিন্তু হারিয়ে যায় জাতি হিসাবে আমাদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর গৌরব।
রাজনীতি আজকে আর আমাদের হাতে নেই। আমরা যত প্রতিবাদ, যত কান্না, যত চিৎকার করিনা কেন এগুলো আসলে অরণ্যে রোদন ছাড়া আর কিছুই না। আওয়ামীলীগ ঐতিহ্যগত ভাবে ভারতের তাবেদার এনিয়ে আমার কোন অভিযোগ নাই। কারণ জাতির জন্ম লগ্ন থেকে এটা দেখছি। কিন্তু আমার বিএনপি শহীদ জিয়ার আদর্শে গড়া বিএনপি যখন আমাদের কে পর মুখাপেক্ষী করে তুলে তখন আমি কোথায় যাব?
শহীদ জিয়া একটা জাতিকে সাতন্ত্রবোধ দিয়েছে। দিয়েছিল মাথা উঁচু করে বেচে থাকার আভিজাত্য। কিন্তু আমার সে অহংবোধ শেষ হয়ে গেছে। গত এক বছর যেভাবে বিদেশী শক্তির দিকে আমরা আমাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রনের জন্য তাকিয়ে আছি সেটা যে মানুষের মধ্যে সামান্য তম ব্যাক্তিত্ববোধ আছে তার ভালো লাগার কথা না। এখানেই আওয়ামীলীগের স্বার্থকতা। তার দেখানো পরাধীনতার রাস্তায় আমাদের চালিত করেছে।
আজকে সাধারণ মানুষ কোন দলের কোন কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছে না কেউ কি একবারো এর স্বরূপ বা কেন নিচ্ছে না সেটা উদ্ঘাটন করার চেষ্টা করছে? হয়ত করছে কিন্তু যে সব কারণ আসছে সেগুলো অনেক টাই মুল কারণে কে বাইরে রেখে লেস ইম্পর্ট্যান্ট কারণ গুলোকে সামনে নিয়ে আসছে। সেখানে আমাদের মুল নেতৃত্বকে দায়ী করা হচ্ছে যে তারা দলের সাথে বেঈমানী করছে বা টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেছে। এটা একটা কারণ কিন্তু এটা মুল কারণ না। যদি একারণ টাকে সামনে আনেন তবে আমি বলব এই সব নেতাদের আদর্শ বলে কিছু নাই। তারা নেতা হয়েছে শুধু শহীদ জিয়ার নাম বেচে আর মুখে বেগম জিয়া আর তারেক রহমানের স্লোগান দিয়ে। এদের কাছ থেকে এর বেশী কিছু আশা করা যায় না। সময় মত টাকা পয়সা বানিয়ে এখন সবাই সরে পড়ছে। এটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ জনগন এই সব দেখে মারাত্মক হতাশ দ্বিধাগ্রস্থ। এগুলোকে কেউ সামনে আনছে না। দল গত অবস্থানে এখনো দেশের ৬০-৭০% মানুষ বিএনপি সাপোর্ট দেয়। সেই সাপোর্ট টা দেয় কারণ বিএনপি তাদের মাথা উঁচু করে জাতি হিসাবে আলাদা পরিচয় দেবার প্রেরণা জুগিয়েছে। কিন্তু গত কিছু দিনে বিএনপি যেভাবে বিদেশ মুখী অবস্থান নিয়েছে তাতে সাধারণ জনগন অনেকটাই দ্বিধান্বিত। তারা আসলে কাদের দেখছে? এই বিএনপি যে আওয়ায়মীলীগের ছায়া হয়ে যাচ্ছে দিন দিন সেটা কি বিএনপির মাথারা টের পাচ্ছে না?
সাধারণ মানুষ গুলোর চাওয়া পাওয়া সব কিছু এখন নির্ভর করে বিদেশী প্রভুদের ইচ্ছা অনিচ্ছায়। তাহলে তারা কিসের জন্য রাস্তায় নামবে?
জনগনের জন্য রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের জন্য জনগন নয়। জনগনের জন্য সংবিধান, সংবিধানের জন্য জনগন নয়। অথচ এই সাধারণ বোধ টুকুও আমাদের লোপ পেয়ে গেছে। এই দেশে এখন মৌলিক অধিকার নিয়ে কেউ আর মাথা ঘামায় না নিজের জীবন বাঁচানো নিয়ে সবাই ব্যাস্ত। এই জীবন বাচানোর দাবী যখন মুখ্য অধিকার হয়ে ওঠে তখন সেখানে গনতন্ত্র, ভোটাকধিকার কথাগুলো ওজনদাঁর অন্তঃসার শূন্য বুলি।
বিদেশী প্রভুদের ইচ্ছা অনিচ্ছাকে মুখ্য করতে গিয়ে বিএনপি যেভাবে শুধু হরতাল আর অবরোধ ডেকে নিজের দায়িত্ব সারছে তাতে মানুষের আশা ভরসা যে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে সে দিকে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। আন্দোলন কিন্তু সাধারণ জনগন করছে কারণ এখনো কিছু সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাক্তি সতন্ত্র্য বোধ আছে। অথচ সেই আন্দোলন কে বিএনপি ক্যাশ করতে পারছে না। পারছে না কারণ ওই বিদেশ মুখী অবস্থানের জন্য।
দলের আদর্শহীন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যেভাবে নিজেদের কে বিকিয়ে দিয়েছে তাতে বিএনপির প্রাণ দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া আর দেশ নায়ক তারেক রহমানের মাঝে একটা বিরাট গ্যাপ তৈরী হয়েছে। সেই গ্যাপ এর কারণে দেশ মাতা এখন সাধারণ মানুষের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না কারণ এর আগেও ডাক উনি দিয়েছেন কিন্তু কয়জন সে ডাকে সাড়া দিয়েছে? আবার সাধারণ জনগন দেশমাতার কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম ওই সব আদর্শহীন নেতাদের দ্বারা চালিত হয়ে আজকে তাদের বিশ্বাস করতে পারছে না। এই বিশ্বাস হীনতার চরম মূল্য জাতিকে দিতে হবে বা হচ্ছে।
আমরা আজকে উৎফুল্ল হই জাতিসঙ্গ বা কোন বিদেশী কোন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি যদি বিএনপি নেতৃত্বর সাথে যোগাযোগ করে, কিন্তু ৫, ১০, ২০ হাজার লোকের কোন বড় মিছিল আমাদের কে প্রেরণা যোগায় না। প্রতিদিন বিচার বহির্ভুত হত্যা একটা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামান্য কিছু সুবিধাভোগী মানুষের জন্য এই সব অন্যায় বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে যেভাবে আসছে তাতে সেটাকেই ন্যায় ভেবে মুখ বুজে নিজের জীবন বাঁচাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ছি।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সুযোগ সুবিধা গুলো সীমিত হয়ে পড়ছে, এক মাত্র আন্দোলনে ভ্যারিয়েশান আর দেশ মাতা অথবা দেশ নায়কের সরাসরি নির্দেশ মানুষকে উজ্জীবিত করতে পারে। অন্যথায় আমরা জাতি হিসাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব।
মনের অব্যক্ত যন্ত্রনা অনেকটাই উঠে এসেছে। কোন রাজনৈতিক আন্দোলন গনমানুষের আন্দোলন হিসেবে, গনমানুষের সমপৃক্ততা নিশ্চিত করতে নেতৃবৃন্দকে সম্মোখে থেকে নেতৃত্ব দিতে হয়।নেতৃত্ব যখন মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষাকরে লড়াইয়ে অবর্তীর্ন হয় তখনই কেবল গনমানুষ আন্দোলনে ঝাপিয়ে পরে। কিন্তু বিএনপির সিনিয়র বেশির ভাগনেতৃবৃন্দ কে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।তৃণমূলের কিছু সাহসী কর্মীরা হয়ত জীবন বাজীরেখে কিছু চেষ্টা করছে কিন্তু তা নেতৃবৃন্দের যথাযথ দিকনির্দেশনার অভাবে ব্যাপকতা পাচ্ছেনা। সেই সাথে যোগ হয়েছে মিডিয়া কভারেজের তীব্র অভাব।হায়রে বিএনপি, এতবড় দল হয়েও, এতবার দেশ শাসন করেও মিডিয়া কি জিনিস বুজলনা।বিএনপি যদি মিডিয়ার যথাযত ব্যবহার করতে পারত,মিডিয়া যদি নিদেনপক্ষে আংশিক সত্যটাও প্রকাশ করত, আগুনেপোড়া মানুষগুলোর সাথে ক্রশফায়ােরর নামে নির্বিচার মানুষ হত্যার দৃশ্য,তাদের পরিবারের আহাজারি ফোকাস করত তাহলে আন্দোলন নির্ধিদ্বায় বিদ্যুৎ স্ফূলিংগের মত সারাদেশে ছড়িয়ে পরত।এটা ঠিক বিএনপি আন্দোলনের রেজাল্টের দিকে নাতাকিয়ে বিদেশী শক্তির দিকে তাকিয়ে আছে।শহীদ জিয়ার আদর্শের জাতীয়তাবাদীরা আপোষকামীতার চোরাবালিতে আটকে যাচ্ছে কি? কিন্তু এত আত্নত্যাগ, এত হত্যা, এত রক্তপাত, এত জেলজুলুম অত্যাচার, এদেশের স্বাধীনতা সার্ভভৌমত্ব,ভোটের অধিকার এগুলো কি সবই বৃথা যাবে? না অবশ্যই না, কোন কিছুই বৃথা যবেনা, বৃথা যেতে দেওয়া হবেনা।যে দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া,জিনি সকল চাওয়া পাওয়ার লোভলালসার ঊর্দ্বে উঠে এদেশের আপামর জনসাধারনের সাহসের বাতিঘর হিসেবে মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন নিশ্চুই সেই দেশ মাতার আপোষহীন লড়াকু নেতৃত্বে সকল বিভ্রান্তি, ভয়ভীতি, জেলযুলুম, অত্যাচার জয় করে আমাদের ভোট ও ভাতের অধীকার,আমাদের সীনাটান করে মাথা উচুকরে বেচেঁ থাকার অধীকার এইরাষ্ট্রঘাতী আওয়ামী অপশক্তির চিরতরে পতনের মধ্যদিয়ে আমারই আদায় করে নিব আমাদের বেঁচে থাকার অস্তিত্বের প্রয়োজনে।
জঙ্গী জঙ্গী করে যেভাবে দেশটাকে জঙ্গী বানানোর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে এর দায় কিন্তু দেশের নেতাদের ওপর দিয়ে যাবে না যাবে সাধারণ মানুষের ওপর। আজকে বিশ দলীয় ঐক্য জোটের কোন নিউজ কোন মিডিয়ায় প্রচার করা হয় না কারণ তাতে আন্দোলন উজ্জীবিত হবে অথচ জঙ্গী বা কাল্পনিক জঙ্গীদের সব খবর দিনের পর যেভাবে ফলাও করে প্রচার হচ্ছে তাতে কি জঙ্গিবাদ উৎসাহিত হচ্ছে না?
কিছুদিন পূর্বেও যেখানে জাতীয় দৈনিক গুলোর জনমত জরিপে দেশের ৬০ ভাগ মানুষের পক্ষে ছিল সরকার পতনের হরতাল অবরোধ, সেখানে এখন আরটিএনএন এর প্রতিবেদনে দেশের ৭৮ ভাগ মানুষ সরকার পতনে অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে তাদের মতামত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সরকার পতনে শুরু হওয়া বিরোধী জোটের আন্দোলনের পরে, জাতীয় দৈনইকের জনমত জরিপে ৬০% মানুষ লাগাতার হরতাল অবরোধে তাদের সমর্থন জানালেও ৮৫% মানুষ আরো শক্ত কর্মসূচির পক্ষে ছিলেন। বর্তমানে আরটিটিএন এর প্রতিবেদনে তা ১৮ ভাগ বেড়ে অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে ৭৮ % এ এসে দ্বারিয়েছে এবং ৯৫ ভাগ মানুষ মনে করেন, সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন বলবত রাখা উচিত।
দৃষ্টি আকর্ষণের বিষয় হলো, সর্বচ্চ সংখ্যক মানুষ এও মনে করেন বি.এন.পির কেন্দ্রীয় নেতারা এই অসহযোগ আন্দোলনে শামিল হলেই ২০ দলীয় জোটের এ আন্দলন সফল করা সম্ভব।
এখন এটাই স্পষ্ট যে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হবার পরেও আর চুপ করে বসে না থেকে, অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারকে শেষ ধাক্কাটা দিয়ে গিরি খাদের গহিনে পতিত করা এখন সময়ের দাবি.
©somewhere in net ltd.