নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিলোয়

আমার সম্পর্কে কিছু লিখব

বিলোয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলিয়াসের বিষয় সরকার গায়ে মাখেনি সালাহ উদ্দিনের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫৬

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর পর অপর নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ হওয়া নিয়েও সরকারি দলের লোকদের হাসি-মশকারা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, নিখোঁজ দুই নেতার পরিবার-স্বজন-শুভাকাক্সক্ষীদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ করা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক জোটের দুই আলোচিত নেতার হাওয়া হয়ে যাওয়ার বিষয়কে হালকাভাবে নেয়া ঠিক হবে না বলে পর্যবেক্ষদের অভিমত।
গত ১০ মার্চ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ২০ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদকে যৌথবাহিনী ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি। তাদের দাবি, ‘মঙ্গলবার রাত ১০টার পর পুলিশ, ডিবি এবং র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০/৩০ জন সদস্য সালাহ উদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।’ সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ১০টার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না, মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সালাউদ্দিন উত্তরার কোনো এক বাসায় ছিলেন। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। ওই বাসার কাজের লোককেও বেঁধে নিয়ে যায় তারা।’ তাকে ওই বাসার কেয়ারটেকার ঘটনাটি জানিয়েছেন বলেও জানান সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী। উল্লেখ্য, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতারের পর চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপিসহ ২০ দলের অন্যতম মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছিলেন সালাহ উদ্দিন। এর আগে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গাড়ি চালকসহ নিখোঁজ হন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী।
সেদিনের পর থেকে আর কোনো খোঁজ মেলেনি তার। ইলিয়াসের স্ত্রী ও সন্তানরা তাকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও সন্ধান মেলেনি তার। এই দুই আলোচিত নেতার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সরকারের লোকদের সিরিয়াস ও আন্তরিক হতে দেখা যায়নি। উল্টো এ নিয়ে নানা প্রকার হাসি-তামাশা ও ঠাট্টা-মশকারা প্রকাশ করতে দেখা যায়। এ নিয়ে পরিবার ও স্বজনরাই শুধু নয়, জনমনেও ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। বিশেষ করে সরকারে থাকা দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যখন এমন আচরণ করেন তখন তাকে হৃদয়হীন মানসিকতার প্রকাশ বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের ‘নিখোঁজ’ হওয়া প্রসঙ্গে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, ‘আট বস্তা ময়লার সঙ্গে তাকেও কোথাও পাচার করে দিয়েছেন কি না তা সে জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন।’ গত শনিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে পেশাজীবী মহাসমাবেশে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাঁর (সালাহ উদ্দীনের) বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আমরা তাঁকে এ্যারেস্ট করার জন্য খুঁজছি। তিনি কোথায়, তার জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন।
সালাহ উদ্দিন আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে বিবৃতি দিচ্ছিলেন। কিন্তু সবাই জানে, তিনি ওখান থেকেই (গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়) বিবৃতি দিয়েছেন। আট বস্তা ময়লার সঙ্গে তাকেও কোথাও পাচার করে দিয়েছেন কি না, সে জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন।’ অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ইলিয়াস আলী ও সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজের ব্যাপারে মন্তব্য করে বলেন, ‘তারা নিজেরাই অজ্ঞাতে চলে গিয়ে বলছেন সরকার গুম করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এরকম তো আমি নিজেই পালিয়ে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে বলে যেতে পারি যে, তোমরা বলো সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশ আমাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে গেছে।’ গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। এইচটি ইমাম বলেন, ‘ইলিয়াছ আলী সীমান্তের ওপারে পার হয়ে গেছেন। কারণ, তিনি যখন নিখোঁজ হন, তার দুইদিন আগেই তার লোকেরা প্রতিপক্ষের দু’জনকে হত্যা করে। তার ওপর আক্রমণ হতে পারে ভেবেই তিনি পালিয়ে রয়েছেন।’
এইচটি ইমাম সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও ইলিয়াস আলীর উদ্ধারে তাঁর সরকারের ব্যর্থতা স্বীকারের পরিবর্তে এ ধরনের বক্তব্য দেয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয়া স্বাভাবিক বলে অনেকেই মনে করেন। একই সেমিনারে পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। তিনি সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করেন। আইজিপি বলেন, ‘সালাহ উদ্দিন আহমেদ কোথায় রয়েছেন আমরা জানি না। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় আমরাও তাকে খুঁজছি। তবে তাকে পুলিশ বা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেনি।’ ‘সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি’ দাবি করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সালাউদ্দিন আহমেদ কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য তাকে আটক করেননি।
কোথাও লুকিয়ে রেখে সরকারের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে।’ গত বৃহস্পতিবার মিরপুর স্টাফ কলেজে এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। থানায় সালাহ উদ্দিনের পরিবার জিডি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি কেন, এটা বিস্ময়কর। সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে কোনো উত্তর দেননি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে ইলিয়াস আলী গুম হবার পর সরকারি দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ নানা রকম কথাবার্তা বলেন। নিখোঁজের ঘটনার পর ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ইলিয়াস পরিবার। তখন প্রধানমন্ত্রী ‘রাজনীতির উর্ধ্বে মানবতা’ বাক্যটি উল্লেখ করে অচিরেই ইলিয়াসকে ‘জীবিত ও অক্ষত’ অবস্থায় দেশবাসীর কাছে উপস্থিত করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তা আজো বাস্তবায়ন হয়নি, ফেরা হয়নি ইলিয়াসের। অন্যদিকে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে, না-কি তিনি নিজেই গুম হয়েছেন- তা আমার জানা নেই। তবে ইলিয়াস আলীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ র‌্যাবের হেডকোয়ার্টার পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মহীউদ্দীন খান আলমগীর এই মন্তব্য করেন। তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনীতির মাঠকে উত্তপ্ত করার জন্য বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে অপহরণ করার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
২১ এপ্রিল ২০১২ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি এটাকে ইস্যু করে আন্দোলন চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে।’ আন্দোলনের নামে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করা হলে তা বরদাশত করা হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এসব উপহাসমূলক, হাস্যকর অযৌক্তি কথা বলে সরকার পক্ষ ইলিয়াস আলীর উদ্ধার এড়িয়ে গেছেন। ইলিয়াস আলিও উদ্ধার হয়নি। জলজ্যান্ত একজন মানুষ এইভাবে হারিয়ে গেলেন।
ইলিয়াস আলীর পর সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ বিষয়ে দেশের সকল মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করলেও সরকারি মহলের অব্যাহত নেতিবাচক বক্তব্যে জনমনে বিস্ময় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ইলিয়াস আলীর ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছিলো সালাহ উদ্দিন আহমেদের বেলাতেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেখা যাচ্ছে। ভাষ্যকারদের মতে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং একটি রাজনৈতিক জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। আর ইলিয়াস আলী ছিলেন সাবেক বিশিষ্ট ছাত্রনেতা, সাবেক এমপি এবং একটি রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক। এই দুই ব্যক্তিত্বের মতো মানুষ যদি দিনের পর দিন হারিয়ে যায় এবং সরকার তা গায়ে না লাগায় তাহলে সাধারণ মানুষের গতি কী হবে- সে প্রশ্নের জবার দেবার কেউ থাকছে না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: মাহমুদূর রহমান মান্না হাওয়া হয়ে যাবার পর সরকার ভাব ধরেছিল যেন কিছুই জানেনা। কিন্তু দুদিন না পেরুতেই র‍্যাব তাকে থানায় হস্তান্তরিত করে জানিয়ে দিয়েছিল যে মান্না আসলে হাওয়া হয়ে যাননি। কিন্তু এই সময় সামুর দালাল ব্লগাররা সমস্বরে চেচাচ্ছিল এঈ বলে যে, শিবিরের লোকেরা র‍্যাবের পোশাক পরে তাকে অপহরণ করেছে। নিশ্চয়ই সরকারের মনে তখন অন্য কিছু ছিল। সুবিধা না হওয়াতে থানায় হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছে।

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

বিলোয় বলেছেন: কিছু আছে সামুর পেইড ব্লগার, এরা যেভাবে পারে সরকারের অবৈধ কাজ গুলি বৈধ করার চেষ্টা করে

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: কিছু হবেনা, সরকার চুপচাপ থাকবে কি করবেন? কিচু কি করার আছে?

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭

বিলোয় বলেছেন: না কি আর করার আছে? কিছুই করার নাই, দেশটা যে যেভাবে পারে লুটে পুটে খাচ্ছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.