নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবই ভাল

সবই ভাল

চলন বিল

সবই ভাল

চলন বিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পটুয়াখালীর হাকিম হাওলাদারঃ এক অদম্য শেরপা

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৫২

হিমালয়ের উচ্চ শৃঙ্গ গুলো যদি কেউ জয় করতে যায়, তাহলে তাকে পাহাড়ের নিচ থেকে শেরপাদের সাহায্য নিতে হয়। ঐ উচ্য পাহাড়ের খাদ বা শীতল আবহাওয়ায় কি করে বাঁচতে হবে- তা শেরপারা ছাড়া কেউ জানেনা। তারপর আপনি যখন কোন পাহাড়ের চুড়ায় উঠে যাবেন, আপনার নাম হয়তো ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে যাবে। কিন্তু, নিছক ভাগ্যকে বরণ করে নিতে হয় শেরপাদের। তাদের নাম আর কেউ মনে রাখেনা।
চলে গেলেন এরকম এক অদম্য শেরপা, আবদুল হাকিম হাওলাদার। পটুয়াখালীর বদরপুরের হাকিম হাওলাদার চাচা, বিএনপির এক অদম্য শেরপা। গতকাল রাতে আলভীর পোস্টে যখন দেখলাম হাকিম হাওলাদার আর নেই, সেই বিষণ্ণ চোখের চাহনির ছবি আমাকে প্রস্নবিদ্ধ করে দিয়েছিল।
৮০ দশকের কথা, হালকা ঘিয়ে রঙের টেট্রনের পাঞ্জাবী, শাদা পাজামা, গলায় সাদা রঙের মধ্যে চৌকা নকশা দেয়া মাফলার, হাতে একটা ব্যাগ, আর ছাতা হাতে কে যেন আমায় ডাকছে " স্যারে বাসায় আছে, কও আমি হাকিম হাওলাদার" ... বিএনপি'র বয়স কত হল, সেই ৩৫-৩৬ বছর আগের হাকিম হাওলাদার প্রতিদিন নিয়ম করে যেন ৫-৬ মাইল হেটে দলের নেতার কাছে আসতেন, দুপুরে কোর্টে গিয়ে গ্রামের মানুষের সাথে কাটাতেন, কোন দিন আসতেন জেলা সভাপতির সাথে একতে দুপুরে বাসায় ভাত খেতে, রাতে আবার সেই ৩ ব্যাটারির টর্চ জেলে হেটে ফিরে যেতেন পটুয়াখালী শহরের উপকণ্ঠে বদরপুর গ্রামে। একটি আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত গ্রামে থেকে বিএনপি সমর্থন করার জন্য জীবনে কত মামলা খেয়েছেন বা জেল খানার কয় গামলা লাবড়া তিনি খেয়েছিলেন, তার হিসাব বোধকরি কেউ জানবে না কোনদিন। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি চলে গেছেন চির না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে, শুধু একটি পদবি দলীয় ভাবে তিনি পেয়েছিলেন, সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি- ৩৬ বছরের বেশী একটি দলকে ভালবাসার জন্য।
আমার চোখে সতত সেই স্মৃতি এখনো ভাসে, পটুয়াখালীর মত মফঃস্বল একটি শহরে হাকিম হাওলাদারের মত বৃদ্ধ যুবক এরশাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছে " এক দফা এক দাবী- এরশাদ তুই কবে যাবি " অথবা ধানের শীষের নির্বাচনী মিছিলে বদরপুরের হাজারো মানুষকে নিয়ে তিনি মিছিলের সামনে " ধানের শীষ... ধানের শীষ"।
হাকিম হাওলাদারের জন্য কাঁদতে নেই, হাকিম হাওলাদাররা কোনদিন মরেনা। আমি দেখতে পাচ্ছি, ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি কিশোর তার বাবার লাশের সামনে দাড়িয়ে অবাক ভাবে দেখছে , হাকিম হাওলাদার তার স্যার এর জন্য বিলাপ করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন, " স্যার কই ফালাইয়া থুইয়া গেলেন... স্যার আপনে চইলা গেলে কার লগে রাজনীতি করমু"
দুঃখ লাগে এই দলটির জন্য, এমন একটি দলের জন্য আমি বা হাকিম হাওলাদার বা আমার মত অনেক বুভুক্ষের জন্য দলের একটু ফুরসত হবেনা, মরহুম আবদুল হাকিম হাওলাদারের জন্য একটি সামান্য শোকবার্তা দলের চেয়ারপার্সন এর পক্ষ থেকে।
হাকিম হাওলাদার চাচা, আপনি ভালো থাকুন। কেউ না জানুক, আমি ও আমরা জানি আপনি প্রেসিডেন্ট জিয়া, বেগম জিয়া বা বিএনপিকে কতোটা ভালবাসতেন...
মহান আল্লাহ্‌, আপনার আত্মাকে বেহেস্তের সম্মানিত স্থানে সম্মানিত করুক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.