নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদারি

মাদারি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারায়ণগঞ্জে ত্বকি হত্যার মোটিভ ও সম্ভাব্য খুনী

১১ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:০৭

নারায়ণগঞ্জে নেমে সাধারণ মানুষের সাথে আপনি স্রেফ আধাঘন্টা কথা বললেই বুঝতে পারবেন ত্বকি হত্যাকারীর পরিচয় সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ বাসীর কি ধারণা, যদিও সেখানকার পুলিশ/র‌্যাব কিচ্ছু জানেনা! বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা দেশবাসীর মনে এই খুনের পেছনে জামাত শিবিরের দিকেই সন্দেহ যাওয়া স্বাভাবিক হলেও এবং জামাত-শিবির বিভিন্ন খুন-হত্যা চালালেও, রফিউর রাব্বির ছেলে ত্বকি হত্যার ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জবাসীর সন্দেহের তালিকায় কিন্তু জামাত শিবিরের চেয়ে নারায়ণগঞ্জের গডফাদার ওসমান পরিবারই অনেক এগিয়ে আছে, বলা যায় সন্দেহের তালিকায় এক নাম্বারে।



হ্যা, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নাই কোন, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা থেকে তারা শামীম ওসমান, নাসিম ওসমান, নাসিম ওসমানের ছেলে উঠতি গডফাদার আজমির ওসমানের দিকেই অভিযোগের তীর তুলছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে গণজাগরণ মঞ্চ করে রফিউর রাব্বি জামাত শিবিরের জন্য কতটা হুমকী হয়ে উঠেছিলেন জানিনা, কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জের জনগণের পক্ষের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত থেকে, নেতৃত্ব দিয়ে গডফাদার ওসমান পরিবারের আধিপত্য, লুটপাট, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে যে তিনি বিশাল হুমকী হয়ে দাড়িয়েছিলেন সেটা স্পষ্ট।





নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের ভূমি ওসমান পরিবারের অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া, বেসরকারি বাস ভাড়া বাড়ানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ভাড়া কমানো, নারায়ণগঞ্জে বিআরটিসি বাস চালু করা, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে রেল চলাচলের পরিমাণ বাড়ানো, শামীম ওসমানের বিপরীতে সেলিনা হায়াত আইভি’র পক্ষে মেয়র নির্বাচনে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করা ইত্যাদির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে নাগারিক অধিকারের পক্ষে এবং গডফাদার ওসমান পরিবারের আধিপত্যের বিরুদ্ধে রফিউর রাব্বি হয়ে উঠেছিলেন এক মূর্তিমান অনুপ্রেরণা। যেকোন নাগরিক অধিকার আন্দোলনে সামনে থেকে তিনি বার বার প্রমাণ করেছেন জনগণ যদি রুখে দাড়ায় তাহলে গডফাদার যতই শক্তিশালী হউক, তার বিরুদ্ধে জনগণের জয় হবেই। ফলে রফিউর রাব্বিকে যে কোন মূল্যে রুখে দেয়া ওসমান পরিবারের জন্য ভীষণ জরুরী হয়ে পড়ে। রফিউর রাব্বি যেভাবে সারাক্ষণ জনসম্পৃক্ত হয়ে থাকেন তাতে সরাসরি তাকে হত্যা করাটা গডফাদারদের জন্যও কঠিন ছিল, তাই তারা রফিউর রাব্বির নিরীহ শান্ত ছেলেকে বেছে নিয়েছে তাদের আক্রোশ মেটানোর জন্য, রফিউর রাব্বিকে ভেতর থেকে ভেঙে দেয়ার জন্য। সেই সাথে আসন্ন নির্বাচনে কেউ রফিউর রাব্বির মতো ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে কাজ করলে কি ধরণের ভয়ংকর পরিণতি হতে পারে তারও একটা সিগনাল দিয়ে রাখলো গডফাদাররা নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি।



নারায়ণগঞ্জের সকল মানুষই জানেন কলেজ রোডের এক নির্যাতন কেন্দ্র’র কথা যার আশপাশে পুলিশ যাওয়া নিষেধ, যেখান থেকে প্রায়ই নির্যাতিতের চিৎকার ও কান্নার শব্দ আশপাশের মানুষরা শুনতে পান। নারায়ণগঞ্জে এরকম একাধিক নির্যাতন কেন্দ্রের অস্তিত্বের কথা শোনা যায় যা ওসমান পরিবারের বিপক্ষের লোকদের শায়েস্তা করার জন্য ব্যাবহ্রত হয়। ত্বকির লাশ দেখেছে এমন সাধারণ মানুষ এবং তার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের সাথে কথা বলে জানা গেছে ত্বকির গায়েও ছিল নির্যাতনের চিহ্ন- তার একটা অন্ডকোষ নির্যাতনে ফেটে গিয়েছিলো, মুখে ছিলো ঘুষির চিহ্ন, একটা চোখ নির্যাতনে বেরিয়ে এসেছে, পিঠে কিছু জায়গায় আঘাত। শুক্রবার যখন ত্বকির লাশ পাওয়া যায় তখনও তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিলো যার মানে ত্বকি বুধবার নিখোজ হলেও তাকে হত্যা করা হয়েছে আরো পরে, অনেকের ধারণা বৃহস্পতিবার রাতের দিকে, যেকারণে জখমের শুক্রবার সকালেও তাজা ছিল। অর্থাৎ খুন করার আগে তাকে কোথাও অনেক ক্ষণ আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিলো। ত্বকির বাসার সামনেই র‌্যাবের অফিস, বুধবার সন্ধ্যায় নিখোজ হওয়ার পর রফিউর রাব্বি সেখানে গিয়ে লিখিত অভিযোগ করলেও, পুলিশ বা র‌্যাবের পক্ষ থেকে চিহ্নিত নির্যাতন কেন্দ্রগুলোতে কোন অনুসন্ধান চালানো হয়নি। যদি সময় মতো ত্বকিকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হতো তাহলে হয়তো ছেলেটাকে জীবিত অবস্থাতেই পাওয়া যেত- এই আফসোসটা ভীষণ কষ্টদায়ক।



ত্বকির লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের খালের যে জায়গাটায় পাওয়া গেছে সেখানে এর আগেও এরকম ভাবে নির্যাতিত ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া গেছে, ওই স্থানে এরকম লাশ পাওয়া গেলে সবাই বুঝে নেয় লাশটা ওসমান পরিবারের কোন একটা নির্যাতন কেন্দ্র থেকে ডাম্প করা হয়েছে। এর আগে নাট্যকর্মী দিদারুল আলম চঞ্চল ও ব্যবসায়ী আশিকের লাশও এইরকম ভাবে পাওয়া গেছে। আর ত্বকি যেহেতু ওসমান পরিবারের বাড়া ভাতে ছাই দেয়া নাগরিক আন্দোলনের নেতা ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নারায়ণগঞ্জের মানুষের কাছে হত্যার মোটিভ ও হত্যাকারীর পরিচয় সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ থাকেনি। কিন্তু সাধারণমানুষ মনে করলেই তো হবে না, এরজন্য যথাযথ প্রমাণ চাই, প্রমাণ যোগাড়ের জন্য যথাযথ অনুসন্ধান তৎপরতাও প্রয়োজন। কিন্তু গডফাদারদের ক্ষমতার দৌড় বহুদূর বিস্তৃত হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন প্রকৃত খুনীদের গ্রেফতার করবে এরকম কোন লক্ষণ এখনও দেখা যায় নি।



কিন্তু নারায়ণগঞ্জবাসী জানে, রফিউর মতো মানুষের সন্তানকে খুন করে যদি পার পেয়ে যায় গডফাদাররা, তাহলে সাধারণ মানুষের আর কোন দাড়ানোর জায়গা থাকবে না, কোন আন্দোলন সংগ্রাম করার উপায় থাকবে না নারায়ণগঞ্জে। তাই ত্বকি হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবী নিয়ে এবার তারা মরিয়া হয়েই নেমেছেন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:২৯

দিদিমা বলেছেন: জামাত শিবিরের নাম ভাঙিয়ে হত্যাকারিরা পার পেয়ে যাবে এটা যেন কিছুতেই না হয়।

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭

হৃদয় বাংলাদেশ বলেছেন: সব কিছুই পরিস্কার কিন্তু সম্ভাব্য খুনী "ঐ পরিবার"এর বিরুদ্ধে কোনো বাহিনীর কিছুই করার ক্ষমতা নাই।

৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬

২০১৩ বলেছেন: সবাই সমস্বরে জামাত শিবির , জামাত শিবির বলে জিকির করুক আর খুনি খুন করেই যাক।

৪| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১০

M R Rana বলেছেন: হত্যাকারী যেই হোক ... বিচার চাই।

৫| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১

সালটু বলেছেন: হত্যাকারী যেই হোক ... বিচার চাই- আম জনতা

হত্যাকারী যেই হোক ... তাকে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা। ধরে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হবে- সরকার ।

আর কতকাল এভাবে চলবে।

৬| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৬

রাজাধিরাজ বলেছেন: এই সরকারের আমলে এর বিচার জীবনেও হবে না.......

৭| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১

সালটু বলেছেন: কোন সরকারের আমলেও হবেনা। কারন রাজনিতিকরা ভাই ভাই। অকাম কুকাম যাই করুক কোন বিচার নাই। খুনের দণ্ড প্রাপ্ত আসামী কে খালাস করার নজির আছে শুধু রাজনিতিক পরিচয় আছে বলে।

৮| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৩

পরবাসী একজন বলেছেন: এই পোস্ট স্টিকি করা উচিত

৯| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৩২

লিন্‌কিন পার্ক বলেছেন: :( :( :(

১০| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

রোবোট বলেছেন: শামীম ওসমানরা যুগ যুগের হারামী। প্রয়োজনে শেখ হাসিনাকে আক্রমণ করতেও দ্বিধা করবেনা। এটা যত তাড়াতাড়ি বোঝা যায় ততই মংগল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.