নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদিহা মৌ

মাদিহা মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্ন দেখার দিন [রিপোষ্ট]

২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১৪

একবছর আগে লেখা অনেকের মতে হাস্যকর এই লেখাটা এখন কতটা সত্য!



সাবের হোসেন, বিসিবির সভাপতি।
সাধারণ জণগণের ইচ্ছায়, তাদের প্রবল আগ্রহের কারণে তিনি নাজমুল হাসান পাপনের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। যদিও বোর্ডের ওপর একটা ক্ষোভ থাকায় বিসিবিতে জয়েন করতে চাননি তিনি। কিন্ত জণগণের তীব্র ভালোবাসার কাছে পরাস্ত হয়েছে সাবের হোসেনের ক্ষোভ।

গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল । এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে গিয়েছিলেন তিনি । দায়িত্ব থেকে নয়, ভালোবাসা থেকে। শুধু তিনি নন, এয়ারপোর্টে মানুষের ঢল নেমেছিল। ঢাকার অলিগলি থেকে অসংখ্য ক্রিকেটখোর ছুটে গিয়েছিল টাইগারদের ভালোবাসা দিয়ে বরন করতে।

প্রথমে তো ছেলেদের মুখের দিকে তাকানোই যাচ্ছিল না। পরে এয়ারপোর্টের বাইরে এত মানুষ দেখে মুখে হাসি ফুটেছিল ওদের। মাশরাফি তো কেঁদেই ফেলেছিল। মুখে হাসি, চোখে পানি। এ যেন অভিনব এক দৃশ্য!

বিশ্বকাপে ভারত বাংলাদেশের সাথে যা করেছে, তার উপযুক্ত একটা জবাব খুঁজছেন তিনি। ভারতের মত নির্লজ্জ দেশ বলেই ওদের সাথে এই ধরণের চোট্টামি করতে পেরেছে। ICC কে পুরোপুরি নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছে তারা। কেন রোহিত শার্মার ক্যাচ আউটটা 'নো' বল বলে চালিয়ে দেয়া হলো? রিভিউ নেয়ার পরও নিশ্চিত এলবিডব্লিউ আউট নাকচ করে দেয়ার কারণ কী? সীমানায় পা ফেলে ক্যাচ ধরার পরও কেন মাহমুদুল্লাহকে আউট দেয়া হলো? যেটা নিশ্চিত ছয় হবে? এত্তগুলো কেন'র উত্তর হলো, ভারত বাংলাদেশকে হারানোর সব উপকরণ তৈরি রেখেছিল মেলবোর্ণে।

বাংলাদেশ এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেনি। কারণ তাদের হাত পা আইসিসির কাছে বাঁধা।
কদিন ধরে এটা নিয়ে ভাবছেন তিনি। মুখ বুজে অন্যায় মেনে নেয়ার বান্দা সাবের হোসেন নন। আইসিসি যেহেতু ভারতের পাচাটা কুকুর হয়ে গেছে, তবে আইসিসি ছেড়ে দেয়াই কি যুক্তিযুক্ত নয়?

নন-টেস্ট খেলুড়ে আর জিম্বাবুয়েকে নিয়ে অতি একটা গোপন মিটিং ডাকলেন তিনি। তার চিন্তাভাবনাকে বাস্তব রুপ দিতে আফগানিস্তান, আরব আমিরাত, নেপাল, হংকং, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া, বারমুডা, কানাডা আর কেনিয়া থেকে তাদের ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টরা উড়ে এলেন বাংলাদেশে। দীর্ঘ সময় আলোচনা করে সিদ্ধান্তে এলেন যে নতুন একটা ক্রিকেট কাউন্সিল গঠন করাটাই ওদের ক্রিকেটের জন্য ভালো। সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পেরে ওইদিনের বৈঠক শেষ হলো ।

পরদিন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বারোটা দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি বৃন্দ যার যার দেশে ফিরে গেল। এবং পরের সপ্তাহে বাংলাদেশ আইসিসি ত্যাগ করার ঘোষণা দিল।

বাংলাদেশ আইসিসি ত্যাগ করার পর ওয়ার্ড মিডিয়া জুড়ে তোলপাড় শুরু হলো। অবশেষে আইসিসির অন্যান্য টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর বিখ্যাত বিখ্যাত ক্রিকেটারেরা স্বীকার করতে বাধ্য হলো, বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের সাথে সত্যিই অবিচার করা হয়েছে।
আগুনে কেরোসিন ঢালতে যেন দুইদিন পর জিম্বাবুয়ে আইসিসি ত্যাগ করার ঘোষণা দিলো। বিশজুড়ে এবার কানাঘুষা শুরু হলো, জিম্বাবুয়ে কেন আইসিসি ছেড়ে দিলো?

এমন উত্তেজক পরিস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি যোগাযোগ করলেন সাবের হোসেনের সাথে। তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাওয়ার অনুরোধ করলেন। একটু ভেবে নিয়ে সাবের হোসেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়ার জন্য তৈরি হলেন।

সব শুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজও সাবের হোসেনের সাথে একমত হলো। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজে অবস্থানকালেই দেশটি আইসিসি ত্যাগ করলো। এবং নতুন একটা ক্রিকেট কাউন্সিল গঠনের ঘোষণা দিলো । যার নাম দেয়া হলো ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কাউন্সিল (wcc)।

পনেরোটি দেশের সভাপতিদের ভোটে ব্রায়ান লারাকে wcc এর প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হলো।

তারপর আর wcc কে ফিরে তাকাতে হয়নি। তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। সদস্য দেশগুলি ত্রিদেশীয় সিরিজ, হোম সিরিজ খেলে যাচ্ছে পুরোদমে। কেউ বেশি সুযোগ পাচ্ছে, কেউ কম সুযোগ পাচ্ছে বা কারোর মাঠ বেশি বড়, কারোর মাঠ ছোট - এরকমটা হচ্ছে না কোথাও। খেলা হচ্ছে পুরোপুরি নিরপেক্ষ ভাবে । কারো খেলায় কোন অনৈতিকতা হচ্ছে না। আম্পায়ার নির্বাচন করা হচ্ছে সদস্য দেশগুলোর সবচেয়ে সৎ ক্রিকেটারদের। যেহেতু বাংলাদেশ আইসিসির সদস্যভুক্ত নয়, বাংলাদেশকে আইসিসির নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয় না। অনেক বিচার বিবেচনা করে আশরাফুলকে আবার দলে ডেকে নেওয়া হল।

WCC এর ওয়ার্ল্ড কাপ এর শুরু হবার মাস ছয়েক আগে ঘোষণা দেয়া হলো যেকোন দেশ WCC এর বাছাই পর্বে খেলতে পারবে। এই ঘোষণা শুনে জাপান এবং আমেরিকা WCC এর সদস্য হবার ইচ্ছে পোষণ করলো।

WCC এর প্রথম বিশ্বকাপটা খুব একটা জমজমাট না হলেও তাক লাগিয়ে দিল জাপান আর কেনিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল তারা। কোয়ার্টার ফাইনালের বাকি ছয়টা দেশ হলো বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, স্কটল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ড । নক আউট পর্বে যখন জাপান আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠল, তখন পুরো বিশ্ব তোলপাড়। এত ভালো খেলছে জাপান! তাহলে এতগুলি বছরে কেন আইসিসিতে জয়েন করেননি তারা?

এই প্রশ্নের উত্তরে জাপানের অধিনায়ক ইয়াং মিং সংবাদ সম্মেলনে হাসতে হাসতে বলতে শুরু করেন,
"অনেক বছর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে যাবার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। পথে কয়েকটা ছেলেকে খেলতে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করেন, 'ওরা কী খেলছে?' জবাবে তার সেক্রেটারি বলেছিলেন, 'ওরা ক্রিকেট খেলছে।'
তিনি মাথা নেড়ে বলেছিলেন, 'খেলুক, খেলাধুলা করা ভালো।'
কার্যালয় থেকে ফেরার পথে দেখলেন ছেলেগুলি তখনো খেলছে। তিনি জিজ্ঞাসা করে বললেন, 'খেলা এখনো শেষ হলো না?' সেক্রেটারি জবাব দিল, 'না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । ক্রিকেটে অনেক সময় লাগে।'
প্রধানমন্ত্রী বললেন, 'যে খেলায় এত সময় নষ্ট হয়, সে খেলা আমার দেশে চলবে না!'
এজন্যই এতদিন জাপান থেকে কোন ক্রিকেট টিম বের হয়নি।'

ইয়াং মিং একটু দুষ্টুমি করে ব্যাপারটা উড়িয়ে দিলেও আড়ালে আবডালে অনেকে কানাঘুষা করতে থাকলো, আইসিসিই হয়ত জাপানকে আসতে দেয়নি। নইলে এত জনসংখার একটা দেশে কোন স্বীকৃত ক্রিকেট দল ছিল না- এটা অবিশ্বাস্য।

কোয়ার্টার ফাইনাল শেষ হতেই জমে উঠলো WCC বিশ্বকাপ । সেমিতে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। আর জাপানকে বিদায় দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সম্ভাব্য দল দুটোই ফাইনাল নিশ্চিত করলো।

ফাইনালে সাকিব, তামিম, মাশরাফি এবং বিশেষ করে আশরাফুল ভালো খেললেও, ক্রিস গেইলের ডাবল সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ৩৭৫ রানের টার্গেট, সহজ সহজ টার্গেটে পরিণত হলো । জিততে জিততেও হেরে গেল টাইগার বাহিনী।

ওয়েস্ট ইন্ডিজদের হাতে কাপটা তুলে দেয়ার সময় ইন্ডিয়ান মিডিয়া বাংলাদেশকে যতভাবে সম্ভব অপমান করেই গেল। কিন্তু WCC কিংবা বাংলাদেশ গায়ে মাখলো না সেটা। সবাই জানে, পরবর্তীতে ICCর চেয়ে WCC ওয়ার্ল্ড কাপই বিশ্ব মাতাবে। যদিও ICC ওয়ার্ল্ড কাপকে বিশ্বমিডিয়া ওয়ার্ল্ড কাপ বলতে নারাজ। বরং ওরা ওটাকে সপ্তদেশীয় সিরিজ বলে ব্যঙ্গ করে। বেশি লাভ করতে চেয়ে বিশ্বয়ানের এই যুগে তারা দশ দল নিয়ে তারা বিশ্বকাপ খেলতে চেয়েছিল। তার উপযুক্ত সাজা পেতে শুরু করেছে আইসিসি।

বছর তিনেক পর সাবের হোসেন মাশরাফিকে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রস্তাব করেন। মাশরাফি দুই বছর আগেই ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছে। সেই সাথে দুই বছর ধরে বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ হিসেবে আছে। একজন নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক ক্রিকেটার হিসেবে নিজের জায়গায় বসানোর মত আর কাওকেই খুঁজে পাননি সাবের হোসেন।

WCC এর দ্বিতীয় বিশ্বকাপের মাস ছয়েক আগে নিউজিল্যান্ড আর শ্রীলংকা ICC ছেড়ে দিলো। কারণ টি২০ বিশ্বকাপ ২০১৬ সালে ভারত নিজেদের মাঠে যা সুবিধা নিয়েছে, সেই সাথে তাদের কিনে রাখা আম্পায়ার বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে যে পরিমান ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে তারা বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। একই ঘটনা ঘটেছে ICC ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও। তখন সুবিধা নিয়েছিল বিগ থ্রির তিন দেশ- ইংল্যান্ড, ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়া।

এসব কারণেই WCC তে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করল নিউজিল্যান্ড আর শ্রীলংকা। WCCও সাদরে গ্রহণ করলো তাদের।
বুড়িয়ে গেছেন ব্রায়ান লারা। WCC এর জন্য নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে। সদস্য দেশগুলি থেকে একজন করে নমিনেশন পেল। বলাই বাহুল্য, তারা সবাই সাবেক খেলোয়াড়। কারণ WCC এর নিয়মাবলীর মধ্যে বলা আছে, WCC এর অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোর প্রাক্তন খেলোয়াড়েরাই WCC এর দায়িত্ব গ্রহণ করবে। অবশ্যই কোন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব WCC তে থাকতে পারবে না। যারা কখনো ক্রিকেট ব্যাট ধরেও দেখেনি, তারা কী করে ক্রিকেট বোর্ডে থাকে?

নির্বাচনের দিন, সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে যার নামের পাশে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান লারা হাসি মুখে তার নাম ঘোষণা করললেন। হাসিখুশি বুদ্ধিমান ছেলেটাকে তিনিও খুব পছন্দ করেন।
মাশরাফি বিন মর্তুজা!

করতালিতে কান ঝালাপালা। সবাই খুব খুশি। যোগ্য ব্যাক্তির হাতেই দায়িত্ব পড়েছে। শুধু মাশরাফি হতভম্ব হয়ে বসে আছে। সে যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ব্যাচ পরিয়ে দেয়ার জন্য ব্রায়ান মঞ্চে ডাকলেন মাশরাফিকে। এগিয়ে গেল মাশরাফি। কিন্তু ব্যাচ পরাবার আগ মূহুর্তে সে বলল, 'আমি কিছু বলতে চাই।' মাইকের সামনে গিয়ে মাশরাফি বলল, 'সবাই জানে, WCC শুরু হয়েছিল কী কারণে। বাংলাদেশ ছিল এর উদ্যোক্তা। তুলনামূলক ছোট একটা দেশ, সেই সাথে গরীব। কিন্তু নিজেদের প্রতি অবিচারের জবাব হিসেবে WCCএর চেয়ে ভালো আর কিছুই ছিল না। এরকম একটা উদ্যোগ নেয়ার জন্য যতটা দুঃসাহস দেখানো দরকার, তার সবটাই বাংলাদেশ দেখিয়েছে। তখন বাংলাদেশই ছিল WCC এর সর্বেসর্বা। চাইলে WCC এর পূর্ণ ক্ষমতা নিয়ে নিতে পারতাম আমরা। কিন্তু নিইনি। কারণ যে অনৈতিকতার জন্য ICC ছেড়ে দিয়ে WCC গঠিত হয়েছিল, সেই অনৈতিকতা যেন WCC তেও শুরু হোক, তা আমরা চাইনি। আমি জানিনা আমি এই পদের যোগ্য কিনা । আমি এটাও জানি না আমাকে আপনারা কেন ভোট দিয়েছেন....'
থেমে যেতে হলো মাশরাফিকে। কারণ উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গরা সবাই একসাথে বলছে, "আপনিই যোগ্য প্রার্থী!"
একটা হাত তুলে তাদের থামিয়ে দিয়ে বললেন, 'আমার মতে কুমার সাঙ্গাকারা এই পদের যোগ্য...'

গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল হল জুড়ে। মাশরাফি সাঙ্গাকারাকে মঞ্চে উঠে আসতে আহ্বান জানালো। সাঙ্গাকারা মঞ্চে উঠে মাইকের সামনে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো। তারপর বলতে শুরু করলো,
'সত্যি কথা বলতে কী, আমি আশা করেছিলাম আমিই হয়ত নির্বাচিত হবো। মাত্র দুই মাস হলো WCC তে এসেছি। এরই মধ্যে এতটা আশা করা বোকামি। যখন মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম ঘোষণা করা হলো, তখন আমি ভেবেছিলাম ICC এর মত WCC তেও বুঝি Big 3 গঠিত হয়েছে। তাই কিছুটা ক্ষুদ্ধও হয়েছিলাম। সবাইই দেখি ক্ষমতার অপব্যবহার করে!

কিন্তু এখন আমার ভুল ভেঙ্গে গেছে। এখানে অনৈতিক কিছুই হচ্ছে না। আর এতগুলো মানুষ যাকে ভোট দিয়েছে সেইই নিশ্চয়ই এই পদের উপযুক্ত প্রার্থী। WCC এর প্রেসিডেন্ট মাশরাফিই হবে। আর একটা কথা বলে আমার বক্তব্য শেষ করছি, আমার ভোটটা তো আমি মাশরাফিকেই দিয়েছি!'
তুমুল করতালি পড়লো আবারো। ব্রায়ান লারা এগিয়ে এসে সাঙ্গাকারার হাতে দিল ব্যাজটা। বললেন,
'আপনিই ওকে পরিয়ে দিন।'
সাঙ্গাকারা হাসিমুখে মাশরাফির বুকে ব্যাজ পরিয়ে দিলেন।

ওইদিন তৃতীয় বারের মত করতালিতে মুখরিত হলো পরিবেশ।

WCC এর দ্বিতীয় আসর শুরু হবার মাস দুয়েক আগে সাউথ আফ্রিকাও WCC তে যোগ দিল। পাকিস্তানও আসতে চাইলো। কিন্তু বাংলাদেশ তাতে সায় দিল না। তাদের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়া হলো।

চার বছরে অনেকগুলো দেশ সফর করে এবং হোম সিরিজ খেলে বাংলাদেশ এখন পুরাই ঝরঝরে একটা টীম। এখন আর একজন দুইজনের পারফর্মেন্সের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়না। দলের সবাই ভালো খেলে।

বাংলাদেশ দলকে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছে তাসকীন আহমেদ। কথা-বার্তা আচার আচরণে এ যেন মাশরাফির এক কার্বন কপি! নেতৃত্ব দেয়ার বৈশিষ্টগুলিও যেন মাশরাফির মতোই। সে একে একে সব বাঁধা পেরিয়ে দলকে তুলে নিয়ে গেলো ফাইনালে।

WCC এর প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এইবারের বিষয় আলাদা। এইবার খুব হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে ফাইনালে উঠতে পেরেছে। যদিও এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হারার কোন রেকর্ড নেই, কিন্তু তারপরও । ভয় পেয়েছে তাসকীন। প্রতিপক্ষ যেখানে সাউথ আফ্রিকা। তাও আবার সাউথ আফ্রিকার মাটিতেই। বিশেষ পরিকল্পনা ছাড়া তাদের হারানো যাবেই না । কিন্তু তাসকীনের মাথায় ওইরকম স্পেশাল কিছুই আসছে না। কী করা যায়?

চট করে বুদ্ধিটা এল তাসকীনের মাথায় । মাশরাফি ভাইয়ের কাছে যায় না কেন সে?

'আমি তো ভেবেছিলাম তুই আমাকে ভুলেই গেছিস!' ওকে দেখেই বলল মাশরাফি, গলায় খেদ। 'ভুলেটুলে চলে এলি নাকি?'
ফোনটা তুলে রুম সার্ভিসকে খাবার দিয়ে যেতে বললো মাশরাফি। দুপুরের খাওয়ার সময় হয়ে এসেছে।
'বুঝোই তো ভাইয়া! এত দায়িত্ব! আমি ছোট মানুষ, আমার উপরে কী করে তোমরা এত দায়িত্ব চাপায়া দিলা!' ক্ষমা প্রার্থনার ভঙ্গীতে অভিযোগ করতে করতে মাশরাফির সামনের সোফাটায় বসতে বসলো তাসকীন। হাসলো মাশরাফি। 'বল কী জন্য এসেছিস? কোন কারণ ছাড়া তো আমার ঘরে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেনের পা পড়ার কথা না!'
'ধুর ভাইয়া! আমি কিন্তু চলেই যাবো।' উঠেই পড়লো উঠেই পড়লো তাসকীন ।
'আরে বোস! বোস! আমার কাছে এসে না খেয়ে যাবি! তাইই বা কেম্নে হয়?'
'ভাইয়া, ফাইনাল নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। বিশেষ কোন পরিকল্পনা ছাড়া তো ওয়ার্ল্ড কাপ জিততে পারবো না। কী করবো বলো না! আমার মাথায় তো তেমন কোন কার্যকর বুদ্ধি আসছে না।'
রুম সার্ভিস খাবার দিয়ে গেছে। সেদিকে তাকিয়ে মাশরাফি বলল,
'চল খেয়ে নিই, তারপর বলছি।'

WCC বিশ্বকাপ ফাইনাল, সাউথ আফ্রিকা, ২০২০
টান টান উত্তেজনা গ্যালারি জুড়ে। সময় যেন থেমে গেছে। ২৪৪ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান করে ফেলেছে সাউথ আফ্রিকা। ৬ উইকেট হারালেও উইকেটে টিকে আছে ডেভিড মিলার। একে আউট করতে না পারলে কাপ সাউথ আফ্রিকার হাতেই চলে যাবে। তাছাড়া মিলার নব্বইয়ের কোটায় পৌঁছে গেছে। ৯১ রান তার।

বোলিং করতে এলো তাসকীন । তার আর মাত্র দুই ওভার বাকি। বল করার আগে ফিল্ডিং চেঞ্জ করলো সে। মিলার কোথায় কোথায় বল তুলে মারতে পারে সেসব জায়গায় ফিল্ডার রাখলো।

দৌড়ানো শুরু করতেই মাশরাফির কথাগুলো তাসকীনের কানে বাজতে শুরু করলো রেকর্ড প্লেয়ারের মত-
"সবসময় মনে রাখবি, তুই এমন একটা দেশের হয়ে খেলিস, যে দেশের মানুষ ইতিহাসের প্রথম ও শেষবার ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল। যে দেশ স্বাধীন হতে গিয়ে দুই লক্ষ মা বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছিল। যেদেশ স্বাধীন হবার পরও আটচল্লিশ বছর ধরে প্রতিবেশী দেশের কাছে শোষিত হয়ে এসেছে। ওদের জবাব দেয়ার জন্যেই তোদের বিশ্বকাপ জিততে হবে। মনে রাখবি, তুই দেশের জন্য খেলিস। দেশের বিশ কোটি মানুষ তোর দিকে তাকিয়ে আছে।”

আতাহার আলী খান বলে যাচ্ছেন,
This has to be one of the biggest moments in World Cup history. Devid Milar is playing a blinder here, 91 off 58. 45 more needed off 30, 4 wickets in hand, looks like a possibility for the Proteas provided Devid stays there.
Taskin Ahmed delivered under pressure 5 years ago against England. Can he do it today, when his country is on the brink of achieving something bigger? He has only 12 balls left to make an impact. This could be the match defining over.
3 fielders on the legside boundary, here he comes. Bowled him, its all over for Devid! Is it all over for South Africa? Full and straight, 151kph and the middle stump is out of the ground. What a delivery under pressure?


পুরো মাঠ উল্লাসে ফেটে পড়লেও তাসকিন তাকালো ভিআইপি বক্সের দিকে, যেখানে মাশরাফি বসে আছে। যদিও মাশরাফিকে মাঠ থেকে দেখা যাচ্ছে না। তবুও তাসকীন সেদিকে তাকিয়ে স্যালুট দিল মাশরাফির উদ্দেশ্যে আড়াল থেকে মুচকি হাসলো মাশরাফি বিন মর্তুজা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তী।

কিছুক্ষণ মিলারের আউট উদযাপনের পর আবার বোলিং এ এলো তাসকিন। কমেন্টেটর উত্তেজিত গলায় বলে চলেছেন,
Bangladesh knows that the job is not done yet. Out comes Dale Steyn. He can hit the long ball. Taskin puts a slip in place. Here comes Taskin, ooooo, he's edged it, he's edged it to slip! Listen to the crowd, they are going wild! The Indians at the ground are stunned to silence though. What a delivery again, it was the leg cutter and Steyn was absolutely flummoxed there.
Taskin on a hat trick! South Africa's chances are hit further. Hat trick ball, Taskin brings all his fielders inside the circle barring one. Morkel to face. Can he shake off that unwanted tag? Right now though, it's Taskin on a hattrick and on the brink of history. Full length, oooo its hit the pad, appeal, and there goes the finger!!!!!!!!! Taskin Ahmed, what a spell from him. Changed the fate of the match in three balls! Wow! Its all red and green now! First ever hattrick in a world cup final is by a Bangladeshi, the story doesn't get sweeter than that. Bangladesh, just one dream delivery away from ultimate glory.


উত্তেজনাকে আরো উস্কে দিতে তাসকিনের পরের ওভারে রুবেল সাউথ আফ্রিকার শেষ উইকেটটা তুলে নিয়ে বিজয় নিশ্চিত করলো। তাসকীন তখন সবাইকে এড়িয়ে দৌড়ে ছুটে যাচ্ছে ভিয়াইপি বক্সের দিকে। কাঁদতে কাঁদতেই ঝাঁপিয়ে পড়লো তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, তার আদর্শ মাশরাফি ভাইয়ের উপরে । দুই চোখে অশ্রুর বন্যা নেমেছে । বাচ্চাদের মত হাউমাউ করে কাঁদছে তাসকীন।

ক্যাপ্টেনের পিছনে ছুটে এসেছে পুরো দল।
'গাধা নাকি ছেলেগুলি?' মাশরাফি ভাবছে। বিশ্বকাপ জিতলে বুঝি ড্রেসিংরুমের দিকে ছুটে আসতে হয়? আর এই ছোকড়া তো জড়িয়ে রেখেই কাঁদছে! এত কাঁদে কেনো? আজকে বুঝি কাঁদার দিন?'
মাশরাফি তাসকীনকে জড়িয়ে রেখেই বাকি দলের দিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখালো। সবাই ছুটে এসে ঘিরে ধরলো ম্যাশ-তাসকীনকে।
প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জয়ের প্রাথমিক উদযাপন মাঠে না হয়ে ভিয়াইপি বক্সে হলো।

***

মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:১৪

মুচি বলেছেন: সত্যিই ভাই অসাধারণ। জানি হবে না, কিন্তু সত্যই ভাবতে ভালোই লাগে।

আর লেখাটও চমৎকার হয়েছে।

:)

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১১

মাদিহা মৌ বলেছেন: হবে না আমিও জানি, কিন্তু এরকম কিছুর আকাঙখা অনেকদিনের।

[দেরীতে প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: আবারও পড়লাম। বিশ্বাস করেন, কাল রাতে এমনটাই ভাবছিলাম আমি।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১২

মাদিহা মৌ বলেছেন: ঐ ঘটনার পর থেকে সবাই ই এমনটা ভেবেছে।

৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১৫

সুজন শাহজাহান বলেছেন: যতবারই এই লেখাটা পড়ি, শরীরে শিহরণ বয়ে যায়। চমৎকার। :)

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১২

মাদিহা মৌ বলেছেন: আমারও। এমনটা ভাবতেই শিহরণ লাগে।


[দেরীতে প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭

বিজন রয় বলেছেন: আই ছিঃ ছিঃ।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩

মাদিহা মৌ বলেছেন: আসলেই!

৫| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০৬

অগ্নি কল্লোল বলেছেন: Shame on ICC

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

মাদিহা মৌ বলেছেন: shame

৬| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: চমতকার!

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৭| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এমনই যেন হয়!
চমৎকার স্বপ্ন। শীঘ্রই যেন বাস্তবায়িত হয়।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭

মাদিহা মৌ বলেছেন: সব প্রেক্ষাপট ভাবলে আপু এটাকে অবাস্তবই লাগে। কোন দেশই ওই টাকার খনি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে না।

৮| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৭

উল্টা দূরবীন বলেছেন: পুরাই ফ্যান্টাস্টিক ফ্যান্টাসি। লেখাটা পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম যেনন শেষ না হয়। দারুণ লিখেছেন।

আসলেই, আমাদের ক্রিকেটবোর্ডের এরকম একটা বিকল্প ভাবনা ভাবার সময় এসেছে। নতুন করে কিছু শুরু করলে এগিয়ে আসা দলের অভাব হবে না।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮

মাদিহা মৌ বলেছেন: দলের অভাব হওয়ার চান্সই বেশি ভাইয়া! কোন দলই চাইবে না টাকার খনি থেকে চলে আসতে। :(


[দেরীতে প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

৯| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪২

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আগের বছরই পড়েছিলাম। আসলেই এখন এ নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে। মেরুদন্ডহীন আইসিসি থেকে বের হয়ে নতুন সংগঠন নিয়ে ক্রিকেটকে মাঠের খেলায় রাখতে হবে সকল বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক দিক এড়িয়ে।

২০১৫ বিশ্বকাপের পর উইলয়াম পোর্টারফিল্ড কান্না করে অনেক কড়া কথা বলেছিল, মেরুদন্ডহীন আইসিসির টনক নড়েনি। খেলাটাকে ছড়ানোর বদলে আরো সংকুচিত করা হচ্ছে ১০ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের মধ্য দিয়ে। এইবার নেদারল্যান্ডের পিটার বোরেন ও একই কথা বলেছে। Somebody has to take a initiative, right now !

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২১

মাদিহা মৌ বলেছেন: আইসিসির টনক কোনদিনও নড়বে না। পরের সবগুলো বিশ্ব আসরই তাদের তিন মোড়লের দেশে। তারা ওইভাবেই টাকা কামিয়ে ফেলবে।

ছোট দলগুলোর তো দরকারই নেই। তাদের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ গুলো থেকেই তো অনেক আয় হয়ে যায়।


[দেরীতে প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

১০| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০০

এস কাজী বলেছেন: গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠসে লেখাটা পড়তে গিয়ে। লেখাটা অসাধারন হয়সে। তবে জাপানের সাথে সাথে চীন কে আনতে পারলে আরও ভাল হত।

খুব ভাল লাগলো। আসলেই যদি এরকম হত :(

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২২

মাদিহা মৌ বলেছেন: রূপকার্থে ব্যবহার করেছি জাপানকে। ক্রিকেটে ইন্ডিয়ার টাকাকে টেক্কা দেওয়ার মত একটা দেশ দাঁড়ালেই হত।


[দেরীতে প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

১১| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২০

গেম চেঞ্জার বলেছেন: এইটা আগেও পড়া ছিল। আপনারই লেখা। বলেছিলাম গা শিরশির করে উঠছে।

তবে জানেন, বাস্তবতা হলো আইসিসি'র বিপক্ষে একটা বড় ধরণের জনমত তৈরি হচ্ছে।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫

মাদিহা মৌ বলেছেন: তিন মোড়ল থাকলে জনমত দিয়ে কিছুই হবে না। এক আ্যশেজেই তো তারা তিনমাস ব্যয় করে ফেলে। এইগুলোর দামই তো বেশি।

সেইখানে এক বাংলাদেশ না থাকলেও তাদের তেমন কিছু যাবে আসবে না।


[দেরীতে প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

১২| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮

পাক্কু ভাই বলেছেন: গতকাল থেকে টানা ক'জন ফ্রেন্ডকে ইনবক্স করে বেড়িয়েছি এই ( Click This Link) লিংকখানা,,
মানুষ দুঃখে কাতরায়,আমি ক্ষোভে কাতরাচ্ছি প্রতিমুহূর্ত!

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

১৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: উফফ আপু! এটা আমি কি পড়লাম? প্রতি লাইনে আবেগী হয়েছি, গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছে। শেষটা তো চোখ ছলছল করে উঠল।

আচ্ছা আপু বাংলাদেশ যেদিন সত্যিই বিশ্বকাপ জিতবে কি করবেন? আমি কি করব? আমিতো পাগল হয়ে যাব। পুরোপুরি পাগল। আমি এত বড় একটা আনন্দ কি নিতে পারব? সহ্য করতে পারব? আমার বারবার শুধু এই কথাটাই মনে হয়।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা লেখা উপহার দেবার জন্যে।
আমারই মতো ক্রিকেট পাগলী বোনটার জন্যে অনেক শুভকামনা রেখে গেলাম!

১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৩৩

মাদিহা মৌ বলেছেন: শুধু এই গল্প নয়। ক্রিকেট নিয়ে প্রতিটা গল্প লেখার সময় আমি নিজেই হাপুশ নয়নে কাঁদি।

বাংলাদেশ যেদিন বিশ্বকাপ জিতবে, আমি কী করবো, জানি না আপু। অতি উত্তেজনায় হার্ট এটাক হয়ে যেতেও পারে। তাই সে চিন্তা করিও না। তবে এটা জানি, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবেই। এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, আমি সেটা দেখে যেতে পারবো।

আপনার জন্যও শুভকামনা। আশা করি বহুদূরে থেকেও একসাথে আনন্দের কান্না কাঁদতে পারব আমরা …

১৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৩৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ আপু! আমিও একদম তাই করি। নিজের ক্রিকেট অভিজ্ঞতা নিয়ে যে দুটো গল্প লিখেছি সেগুলো লেখার সময় বিশেষ করে মাশরাফি ভাইকে নিয়ে লেখার সময় পাগলের মতো কেঁদেছি। মিলে গেল তাই বলতে এলাম।

বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবেই। এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, আমি সেটা দেখে যেতে পারবো।
হ্যা বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবেই একদিন। তবে মাঝেমাঝে ভয় হয় যদি দেখে যেতে না পারি? জীবন মৃত্যুর তো কোন ঠিক নেই। আর অনেক ভালো টিমও আছে যারা কোনদিন বিশ্বকাপ জেতেনি বা অনেক সময় নিয়ে জিতেছে। এজন্যে মনে ভয় লেগে থাকে। আল্লাহ নিজের দেশের মানুষের সেই পাগলকরা সুখ যেন আমি দেখে যেতে পারি!

হুম মনেপ্রানে সেই আশাই করি। দুবোনে মিলে কান্নাকাটি করে পরম সেই সুখের দিনকে উদযাপন করব।

আপুর জন্যে অনেক অনেক শুভকামনা রেখে গেলাম।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:২৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: এটা সত্যিই আশঙ্কার কথা। ইংল্যান্ড তো ক্রিকেটে উদ্ভাবক হয়েও নিতে পারল না।

তবুও স্বপ্ন দেখি। খুশির কান্না কাঁদবো।
স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে।

১৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপুুুুউউউ! খবর পেয়েছ? ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল আসছে। চলো দুই বোনে মিলে লাফালাফি করে এই খুশি সেলিব্রেট করি। আপুরে ভয় লাগছে মুস্তাফিজ, তাসকিন ছাড়া আমরা ভালো খেলতে পারবতো?

আমার পোষ্টে তোমার কমেন্ট দেখে মনে হলো, আপুর সাথে ক্রিকেট ভাবনা শেয়ার করে আসি। এজন্যেই এলাম।
ভালো থেকো, বোন অনেক দোয়া করে দিল।

বি:দ্র: তোমাকে খবর দিতে দিতে আরো একটি সুখবর পেলাম। আফগানিস্তানও নাকি আসছে, ইংল্যান্ডের আগেই। এত খুশি রাখি কোথায় বলোত?

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:২৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: ইংল্যান্ডের উপর এখনি ভরসা রাখতে পারছি না। একমাস লম্বা সময়। এরমধ্যে একশ একবার তাদের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে। এসে নিক … তারপর বিশ্বাস করব। কী অদ্ভুত ব্যাপার, দেখেন আপু? ২০০ বছররের চেষ্টার পর আমরা তাদের তাড়িয়েছি। আর এখন তাদের আনতেই এত কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। তবে হ্যাঁ, আশা করি, এবার এনে এমন ধোলাই দিব যে বাপের জন্মে আর ভুলবে না!

আফগানরা আসছে? এই খবর জানতাম না। একবছর পর আমাদের ক্রিকেট দেখব, এই খুশিতে বড় করে সেলিব্রেট করাই যায়? কী বল?

আমি হতাশ হতে চাই না আপু। আমি জানি ওরা ভালো খেলবে। খেলতেই হবে।

১৬| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:১৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: না না আপু ও কথা মুখেও আনবে না। ওরা আসবেই। আল্লাহ আল্লাহ কর। নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আনবই না।
আর আপনি? আমি তো বোধহয় ছোট হয়েও তুমি বলছি, তুমিও তুমি বলো। বোনে বোনে আবার আপনি কি? তাও আবার ক্রিকেট পাগল বোন!

না অতো ভাবিনি। ইতিহাস, রাজনীতি মাথায় নেই এখন। ব্যাস ক্রিকেট ক্রিকেট এবং ক্রিকেট। :)

আফগানিস্তানের আসাটা ভীষন জরুরি। ওরা কিন্তু ভালো খেলে, হঠাৎ হঠাৎ চমকে দেয়! পুরোন বাংলাদেশের কথা মনে পরে যায় ওদের দেখলে। আমরাও পরাশক্তিদের হঠাৎ করে হারিয়ে দিতাম! বাংলাদেশ ক্রিকেট দলক সাবধানে খেলতে হবে। আল্লাহ না করুক আফগানিস্তানের সাথে কিছু ভুল হলে ইংল্যান্ডের সামনে আত্মবিশ্বাস তলানিতে পরে যাবে। দোয়া করো এখন শুধু।

ও ইয়াহ! লেটস সেলিব্রেট। যুগ কেটে গেল যেন টাইগারদের প্রিয় লাল সবুজ জার্সিতে না দেখে! উফফ! খুশিতে পা মাটিতে টিকছেনা। :)

আমি হতাশ হতে চাই না আপু। আমি জানি ওরা ভালো খেলবে। খেলতেই হবে।
হুম তাই। মনের কথা বলেছ।
ভালো থেকো, গেলাম আমি।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪

মাদিহা মৌ বলেছেন: আচ্ছা, ঠিক আছে। তুমিই সই।

হ্যাঁ, ঠিক বলছো। আফগানদের দেখলে আগের বাংলাদেশের কথা মনে পড়ে। হঠাৎ হঠাৎ সত্যিই খুব ভালো খেলে।

না, নেগেটিভ কিচ্ছু ভাবব না। খেলা বা অন্য কিছু নিয়েই না। আমি জানি, আমাদের জন্য ভালো কিছুই অপেক্ষা করছে। এখন শুধু অপেক্ষা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপেক্ষা ও যেন আনন্দের।

তুমিও ভালো থেকো আপু।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৩৪

মাদিহা মৌ বলেছেন: আমাদের ভালো সময়ের আর দেরি নেই। আপু শুনেছ? তাসকিন সানি বৈধ! দেখো, আমরা আসন্ন দুইটা সিরিজেই ভালো করব। তুমি দেখে নিও।

১৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩০

পথহারা মানব বলেছেন: নি:সন্দেহে ভাল পোস্ট। কিন্তু আপনার আর সামু পাগলার কমেন্টগুলো দেখে হাসতে হাসতে লেখতে এলাম!!! উরে বাহবা! কত্ত খেলা বুজে রে!

আমার আসলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে কোন সন্দেহই নেই আর এটা একসময় এমনই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যাবে যেন বাংলাদেশ কাপ না জিতাটাই একটা দূর্ঘটনা। আচ্ছা মাঠে এত্ত প্রমীলা দর্শক দেখা যায় তারা কি সবাই খেলা দেখতে আসে?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৩

মাদিহা মৌ বলেছেন: কমেন্ট দেখে হাসতে হলো কেন? আমরা কি হাসির কথা বলেছি? খেলা কতটুকু বুঝি আর না বুঝি, আবেগটা তো খাঁটি।

মাঠে যে মেয়েরা যায় তারা সত্যিই খেলা দেখতে যায় কিনা, জানি না। তবে আমি নিজে অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। সে নিয়ে একটা গল্প লিখে ফেলবো, দাঁড়ান। পড়ে বুঝবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.