নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদিহা মৌ

মাদিহা মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই কথা ১৯ঃ থ্রি কমরেডস

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৩



কাহিনি সংক্ষেপ
ওরা তিন বন্ধু - রবার্ট, গোটফ্রীড, ওটো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তিন সৈনিক।
প্যাট্রিসিয়া - দুঃসাহসী এক মেয়ে।
কার্ল- লক্কড়মার্কা চেহারার তেজি এক রেসিংকার।
যুদ্ধোত্তর জার্মানীর চরম দুঃসময়ে সুখে-দুঃখে একসাথে এরা সবাই। এই উপন্যাস সম্পর্কে নিউ ইয়র্ক টাইমসের মন্তব্য - এটি সম্ভবত লেখকের সবচেয়ে কোমল, অনুভূতিময় এবং মর্মস্পর্শী উপন্যাস।


পাঠ প্রতিক্রিয়া
যুদ্ধফেরত সৈনিকের পরবর্তী জীবনের গতিপ্রকৃতি, গতানুগতিক জীবনের বদলে যাওয়া, বদলে যাওয়া স্বভাব কিংবা আরো কিছু অনুভূতির উপাখ্যান। এরিক মারিয়া রেমার্ক অনুভূতিকে লিপিবদ্ধ করতে পারেন খুব সহজে। লেখনির মাধ্যমে এত জীবন্ত অনুভূতি ফুটিয়ে তুলতে খুব কম লেখকই পেরেছেন। প্রায় একই ধরনের অনুভূতি - কারোর বর্ণনায় একদমই ঠুনকো, আর কারোর বর্ণনায় প্রচন্ড শক্তিশালী। রেমার্ক সন্দেহাতীতভাবেই দ্বিতীয় দলে পড়েন।

এটাকে বলা যায় গল্পে গল্পে যুদ্ধের স্মৃতিচারণ কিংবা যুদ্ধফেরত সৈনিকের যুদ্ধের স্মৃতি থেকে বেরিয়ে এসে, রক্তরঞ্জিত অতীত ভুলে গিয়ে, ছোট্ট সুন্দর সংসার করার আপ্রাণ চেষ্টা।

কিন্তু সেই চেষ্টায় হঠাৎ করে যখন বিপর্যয় চলে আসে, তখন খুঁজে পাওয়া যায় অভূতপূর্ব এক বন্ধুত্বের উদাহরণ। হ্যাঁ, এটাকে আমি উদাহরণই বলবো। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধুত্বের মধ্যে এই তিনজনের বন্ধুত্ব এগিয়ে থাকবে একদম প্রথম দিকে।

প্রথমদিকে আমি কার্লকে ভেবেছিলাম নেহায়েতই একটা রেসিং কার, যেটার চেহারা দুমড়ানো মুচড়ানো হলেও, ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী। দক্ষ চালকের চালনায় কল্পনাতীত গতিতে ছুটে রেস জিতিয়ে দিতে পারে। কিন্তু পরে বুঝলাম, এটা কেবল গাড়িই নয়, এটা এমন একটা মেশিন, যেটা সময়ে মানুষের জীবন বাঁচাতেও সাহায্য করে।

বইটা পড়তে শুরু করার পর কাহিনিটা ঠিক যেন টানছিলো না। জোর করে পড়ছিলাম। মনে হচ্ছিল, ক্লাসিক বই আমার জন্য নয়। হামা ভাইয়ের সাজেশনে বইটা পড়তে শুরু করেছিলাম। খানিকটা পড়ে, তাকে বললাম, বইটা টানছে না। ভাইয়া বললো,
"মন শান্ত হলে এই বইটা পড়বেন। একজন বইপোকার জন্যে এটা অবশ্যপাঠ্য।"

হ্যাঁ, আমি ভুল ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে আগ্রহ বাড়তে থাকলো। সম্পর্কের ভিত তৈরি করে, ওটা বিল্ড আপ করার পথে হুট করে আশঙ্কার মেঘ, তারপর আশঙ্কার প্রহর সরে গিয়ে হুট করে একটু স্বস্তির ছোঁয়া, আরো কিছু ভালো মুহূর্ত … ; অনুভূতির ছুটোছুটির খেলা আমাকে আটকে রাখলো বইয়ের শেষ পাতা পর্যন্ত।

কিছু কিছু লাইন এত বেশি ভালো লেগেছে যে, কী বলব!
"বিষণ্ণতা, শ্রদ্ধাবোধ এবং নীরব জ্ঞানের মিশ্রণ নিয়ে যে ভালোবাসা - সেটাই সুখ।"
সুখের এরচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা আর কী হতে পারে?

পরিণতি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। ওই সম্পর্কে জানতে হলে, অনুভব করতে হলে এই অসাধারণ বইটা না পড়ে উপায় নেই।

বই পরিচিতি
বইঃ থ্রি কমরেডস
লেখকঃ এরিক মারিয়া রেমার্ক
রুপান্তর: মাসুদ মাহমুদ
প্রচ্ছদ: আলীম আজিজ
পৃষ্ঠা: ২৫৬
মূল্য: ৭৬
প্রকাশনীঃ সেবা প্রকাশনী
প্রকাশকালঃ ১৯৮৮

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৮

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: পড়ছি। থ্রী কমরেডস নাম দেখে একটা অস্থির বন্ধুত্বের গল্প আশা করছিলাম। থ্রী মাস্কেটিয়ার্স এর মত। তবে এটা যতটা না বন্ধুত্বের গল্প তার চেয়ে বেশী প্রেমের গল্প মনে হয়েছে আমার কাছে তাই হতাশ হইছি।

আর আপনার বই কথা পোস্ট অন্যগুলা সম্ভবত এর চেয়ে ভাল হয়।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪

মাদিহা মৌ বলেছেন: হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন। বন্ধুত্বের চেয়ে প্রেমটা বেশিই প্রাধান্য পেয়েছে। থ্রি মাস্কেটিয়ার্স পড়িনি, তাই কম্পেয়ার করতে পারছি না। তবে শুনেছিলাম তিন গোয়েন্দার প্রথম দিকের বইগুলি নাকি থ্রি মাস্কেটিয়ার্স এর গল্প অবলম্বনে লেখা। তাইই যদি হয়, দুইটা তো টোটালি ভিন্ন জিনিস। থ্রি মাস্কেটিয়ার্স কিশোর কিশোরী দের জন্য, থ্রি কমরেডস পরিণতদের জন্য।

কীজানি! একেক লেখা, একেক রকম হওয়াই তো স্বাভাবিক।

২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:১৪

সাহসী সন্তান বলেছেন: রিভিউ ভাল হইছে, তবে বইটা পড়তে পারবো কিনা বলতে পারছি না! একচুয়ালি রিভিউ পড়ে বই পড়ার উৎসাহটা কমে গেছে! তাছাড়া আপাতত মন অশান্ত হয়ে আছে, দেখি যদি কখনো শান্ত হতে পারি তাহলে তখন না হয় একটা ট্রাই মারলাম.... ;)

পোস্টে ভাল লাগা! শুভ কামনা রইলো!

অফটপিকঃ- আপনি রিভিউ লেখার আগে উপরে কি একটা লিখতেন না? সেই কথা গুলো যে এবার লিখলেন না? ভুলে গেছেন বোধহয়? মনে করাই দিলাম আরকি..... :P

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:০৩

মাদিহা মৌ বলেছেন: হায়হায়! বলেন কী! রিভিউ পড়ে যদি পড়ার আগ্রহ চলে যায়, তাহলে রিভিউ লেখাই তো বৃথা!

এতদিন ধরে ওই প্যারাটা লিখেছি, মুখস্ত হয়েছে না? তাই আর দিইনি।

৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

শ্রাবণধারা বলেছেন: আসলে বইটা অসম্ভব অসম্ভব ভালো, এবং যে কোন তরুণ তরুণীর অবশ্যপাঠ্য - যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে।

থ্রী কমরেডস ছাড়া, এরিক মারিয়া রেমার্কের অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ণ ফ্রন্ট অতি চমৎকার আর বিখ্যাত একটি বই, এই বইটির গল্পের উপর একই নামে একটা মুভিও আছে, মুভিটিও অসাধারণ । সাধারণত যাদের লেখাপড়ার অভ্যাস আছে তারা প্রথমে "অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ণ ফ্রন্ট" পড়ে । পড়ে মুগ্ধ হয় তারপর "থ্রী কমরেডস" পড়ে আরেকবার মুগ্ধ হয় ।

আপনার রিভিউ পড়ে মনে হলো আপনি খুব সম্ভব "অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ণ ফ্রন্ট" পড়েন নি বা সেবার অন্য কোন ক্লাসিকও বোধ হয় পড়েন নি, তাই থ্রী কমরেডস আপনাকে মুগ্ধ করতে পারেনি ।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:০৭

মাদিহা মৌ বলেছেন: কী বলেন আপনি? থ্রি কমরেডস আমাকে মুগ্ধ করেছে তো!

অবশ্যই এটা অবশ্যপাঠ্য একটা বই।
এরিক মারিয়া রেমার্কের অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ণ ফ্রন্ট না পড়লেও ওটা আমার সংগ্রহে আছে। কয়েকদিন পর পড়তে শুরু করব। ওটা না পড়লেও দ্য রোড ব্যাক পড়েছি। এবং ওটা ভালো লেগেছে।

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৩২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: একটি ভাল বই পরিচিতি তুলে ধরেছেন। ভাল লাগল । ধন্যবাদ ।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:১৫

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ। পড়ে দেখতে পারেন।

৫| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪১

হাসান মাহবুব বলেছেন: এই বই পড়ে যেমন আবেগ অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হয়েছি, তা তুলনাহীন। রেমার্ক আমার প্রিয়তম লেখক। তার অন্যান্য বইগুলোও পড়ে ফেলুন। বিশেষ করে অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট, এবং দ্যা রোডব্যাক।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:৩৩

মাদিহা মৌ বলেছেন: দ্য রোড ব্যাক পড়েছি। ওটাতেই তো বাকিগুলি সাজেস্ট করলেন আপনি।

অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট পড়ে ফেলবো …

৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৩৩

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: বইটার পিডিএফ আছে। হার্ডকপি হলে এতদিনে পড়ে ফেলতাম। সেবার বই গুলো স্ক্যান করলে পড়তে ভালো লাগে না। কেমন যেনো লাগে ফন্টগুলো। নিউমার্কেটে চোখে পড়লে কিনে ফেলবো আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.