নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদিহা মৌ

মাদিহা মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই কথাঃ২১ অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪



অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
এরিক মারিয়া রেমার্ক

কাহিনি সংক্ষেপ
সতেরো বছর বয়সী এক জার্মান কিশোর পল বোমার। সাথে তার সাত বন্ধু কাট, ক্রপ, মুলার, লিয়ার, জাদেন, ডেটারিং আর হাই। দুইজন ছাড়া বাকি সবার বয়স পলের মতোই। যাদের সবাইকেই ইচ্ছের বিরুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়া হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। ট্রেনিং ক্যাম্পের কঠোর পরিশ্রম, ওপরওয়ালার অপরিসীম দুর্ব্যবহার আর যুদ্ধের নারকীয় তান্ডবে অনুভব করল, হাজার বছরের সভ্যতাও মানুষের পশুত্বকে মুছে দিতে পারেনি। অনুভব করলো, যুদ্ধের প্রথম বোমাটা ঠিক হৃদয়ের মধ্যেই পড়ে; গুড়িয়ে দেয় সমস্ত চেতনা আর মানবিক মূল্যবোধ।

পাঠ প্রতিক্রিয়া

যুদ্ধ কতটা নৃশংস হতে পারে? একজন মানুষ যদি যুদ্ধের নৃশংসতা কল্পনা করতে চায়, কতটুকু করতে পারবে? আমি আমার কথা বলতে পারি। আমি যুদ্ধ সম্পর্কে যেটুকু জানি, সেটা হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। একসময় ভাবতাম, পাকিস্তানীরা যেসব নৃশংসতা করেছে, তার সাথে কোনও কিছুর তুলনা হয় না।

কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। যুদ্ধ কতটা বীভৎস, ভয়ঙ্কর, অমানুষিক, একঘেয়ে, পাশবিক (বিশেষণ খুঁজে পাচ্ছি না আর) হতে পারে - বইটা না পড়লে জানা হত না। আহত সৈনিকগুলির যখমের বর্ণনা, গাদা গাদা লাশের মধ্যে ভয়ঙ্করভাবে আহত হয়ে বেঁচে থাকা একজনের বাঁচার ব্যর্থ আকুতি, ছোট্ট ছোট্ট অনভিজ্ঞ বাচ্চা ছেলেগুলিকে ফ্রন্টে মশামাছির মরতে পাঠানো, প্রচন্ড গরম কিংবা প্রচন্ড বৃষ্টিতে অমানুষের মত মানুষ মারার ওই যুদ্ধগুলির স্বার্থকতা কী ছিল, আমার মাথায় আসে না। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের আকুতি ছিল স্বাধীনতার আর পাকিদের ছিল ঘাড়ত্যাড়া বাঙালিদের শায়েস্তা করা - যুক্তিযুক্ত কারণ তো ছিল! কিন্তু দুই দুইটা বিশ্বযুদ্ধ যে হল, ওগুলির লক্ষ কী ছিল? বছরের পর বছর ধরে এই হত্যাযজ্ঞ করে কী ফায়দা হয়েছিল?

যুদ্ধের নারকীয় বর্ণনাগুলি পড়ে শিউরে উঠলেও, ঘৃণায় মন তিক্ত হয়ে উঠলেও চোখ ভিজে আসেনি। গল্পকথক যখন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিরতি নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো, ছুটি শেষে আবার ফিরে যাবার সময় হল - সে সময়ের অনুভূতিগুলির বর্ণনা পড়তে গিয়ে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। পলের বোন যখন চিৎকার করে বলছিল, "মা মা তোমার পল এসেছে, পল এসেছে তোমার!" - কেমন যেন শিরশিরে অনুভূতি হচ্ছিল। এরকম ভয়াবহ যুদ্ধ থেকে বাড়ি ফিরে যাবার অনুভূতি বুঝি এরকম অপার্থিব হয়! বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া বুঝি এত হৃদয়বিদারক হয়!

বইয়ের অর্ধেকটা পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুমের মধ্যেই আশ্চর্য অবসাদ, বিষণ্ণতা জেঁকে বসলো। এই যে প্রাত্যাহিক সাদামাটা জীবন, লৌকিকতা সব কেমন অর্থহীন লাগলো।

একটা লাইন অসাধারণ লেগেছে।
"বৃষ্টি তো প্রকৃতির সমস্ত ময়লা ধুয়েমুছে চলে যায়, হৃদয়ের ময়লা মুছে যায় না?
এরকম আরো লাইন ছিল।

রেমার্কের তিনটা বই পড়েছি। দ্য রোড ব্যাক, থ্রি কমরেডস আর এইটা। তিনটার মধ্যে আর কোনটা এটার মত নাড়া দেয়নি।

বই পরিচিতিঃ
বইঃ অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
লেখকঃ এরিক মারিয়া রেমার্ক
রূপান্তরঃ জাহিদ হাসান
পৃষ্ঠাঃ ১২০
মূল্যঃ ১৮০ টাকা
প্রচ্ছদঃ আলীম আজিজ
প্রথম প্রকাশঃ ১৯৮৬
প্রকাশনীঃ প্রজাপতি প্রকাশন

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৯

মেহেদী রবিন বলেছেন: পড়েছি। অসাধারণ বইটি। সুন্দর রিভিউয়ের জন্যে ধন্যবাদ। আপনি অনেক পড়েন তাই না?

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৯

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ।

অনেক পড়ি বলতে, অবসর আর কাজের ফাঁকে প্রধান সঙ্গী বই।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৪১

হাসান মাহবুব বলেছেন: গুড। সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি বই পড়ে ফেলেছেন। এখন বাকি স্বপ্ন, মৃত্যু ভালোবাসা আর দ্যা ব্ল্যাক অবিলিস্ক। দুটোই সেবা থেকে বের হয়েছে। পইড়েন। বাংলা ভাষায় তার আর কোন বই অনুদিত আছে কি না তা জানি না। খোঁজ পাই নি। আপনি পেলে আমাকে জানায়েন।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭

মাদিহা মৌ বলেছেন: হ্যাঁ, এই দুইটাও লিস্টে আছে। পড়ে ফেলবো। রেমার্কের আর কোন অনুদিত বই পেলে জানাব আপনাকে।

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৪

বিলুনী বলেছেন: পড়া হলো এই পোস্টে উপস্থাপিত বই কথা । ভাল লাগল । যা বলতে চেয়েছেন তা বলা হয়েছে বেশ চমৎকারভাবে !!! । বুঝা যাচ্ছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছু ঘটনাবলী নিয়ে রচিত উপন্যাসের দৃশ্যাবলীর অনুভব করেছেন গভীরভাবে । তবে একটা কথা ঠিক আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তি যুদ্ধারা যে কি পরিমান দু:খ কস্ট , যন্ত্রনা ও যাতনা ভোগ করেছে তা নীজের চোখো যে না দেখেছে তার পক্ষে শুধু বই পুস্তকে পড়ে কিংবা ছায়াছবি দেখে সঠিকভাবে অনুভব করতে পারা যাবেনা । সে সময়কার নারকীয় ছবি কিংবা কাহিণী শুনলে যে কারোরই চোখ ভিজে যাবে । অত্যন্ত কাছে থেকে দেখেছি একটানা ১২ ঘন্টা যুদ্ধ করতে করতে গোলাঘাটের পুলের কাছে প্রিয় বন্ধুবর রফিকের দেহটা বুলেটে জাজরা হয়ে যেতে , দেওলিয়া পাড়া, এখন ময়মনসিংহ জেলার গফরগাও উপজেলাধীন শহীদ নগরে ট্রেনলাইনে মাইন পুতার সময় সেটা বিস্ফুরিত হয়ে বন্ধু মান্নানের হাত ও পায়ের টুকরাগুলি কিভাবে ছিটকে গিয়ে গাছের মাথায় গিয়ে ঝুলে থাকে ( তাঁর ও আরো কয়েকজন শহীদের নামে পরে এ জায়গার নামকরণ হয় শহীদ নগর) , মংময়নসিংহের শ্বভুগঞ্জ জুটমিলের উপরে বোমা বর্ষন করে ফিরার পথে পাকি বোমারো বিমান হতে মেশীনগানের গুলি বর্ষনে গফরগাওয়ে রাস্তার উপরে বাজারে জমায়েত মানুষের মধ্যে মহুর্তেই ৯৮ জন মানুষের মৃত্যুতে আকাশ বাতাশকে ভারী করে তুলেছিল , নদীর বুকে হাটু জলে দাঁড করিয়ে পাকিহানাদাররা পাখীর মত মানুষকে গুলি করে মেরেছে । প্রতিদিন নদীর জলে মানুষের মৃত দেহ ভেসে আসতো , সেমময় নদীর মাছ আমরা খেতে পারতামনা মনে হতো এর মধ্যে অাছে মরা মানুষের দেহের অংশ । বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের এমন অনেক দৃশ্য যা মনের কোনে জমে রয়েছে তা আপনার এ লিখার উপরে মন্তব্য লিখার সময়ে নীজের অজান্তেই চলে এসেছে ।

যাহোক All Quiet on the Western Front এই বাংলা বইটি পড়া হয়নি কখনো । তবে এর ইংরেজীটা পড়েছিলাম ।মনে রাখার মত তার কিছু অংশ সেভাবেই আপনার বিবরণের সাথে মিলিয়ে নিলাম ।

কাহিনীর প্লট ও এর বিররন দিয়েছেন সুন্দরভাবে । কাহিনীটির একটি বিশেষ আখ্যান এ উপন্যাসটির আবেদনকে অনেকখানি বাড়িয়ে দেয় যেমন Paul’s experience in the military hospital while recovering from wounds. During this time he has time to think and reflect on the war and its effects. Another crucial scene shows Paul going home on leave এটাও উঠে এসেছে অআপনার লিখায় সুন্দরভাবে । আরো ভাল ভাবে বলা যায় যে The people at home have a conception of the war that differs from the experience at the front.
বইয়ের অর্ধেকটা পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলে দেখা যায়, তাই বইটি নিয়ে বাকি দুএকটি কথা তুলে ধরা হলো নীচে ।
At another point, Paul guards a group of Russian prisoners. Another time he is stuck for an entire night in no-man’s land in a foxhole with a French soldier who he has stabbed and killed. These two experiences impress on Paul the similarity between the soldiers on the two sides, how they are only enemies as a matter of chance and because of orders from above.
Paul is the last of his friends to die. Paul is thus left alone and ponders the random nature of war and the helpless position of the individual soldier constantly faced with death. His recognition of his instinctive drive to survive, despite the fact that he cannot think of what he is surviving for, puts him eerily at peace, just before he himself is killed.
বহুবিদ কারণেই বইটি জার্মানী , আমেরিকা ও আরো কয়েকটি দেশে স্কুলের পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত । বিশেষ করে the book is explicitly graphic in language and detail, which is also a characteristic of the Neue Sachlichkeit. It is meant to shock the audience with the horror of war. This fits with Remarque’s intention of accurately replicating the soldier’s experience at the most objective level .Besides using highly descriptive language, Paul uses the first person plural, “we,” throughout much of the novel. This further emphasizes that Paul is supposed to be more than just an individual soldier, but is representative of each and every individual soldier, whose experiences would be similar.

ধন্যবাদ বইটি নিয়ে স্মৃতি রোমন্থনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০

মাদিহা মৌ বলেছেন: বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ … :)

৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:১২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আমার পড়া এই বইটার নাম মাঝে মাঝেই মনে হয়, তবে ওয়েস্টার্নগুলোর চাইতে মাসুদ রানা আমার কাছে বেশী প্রিয়।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৩১

মাদিহা মৌ বলেছেন: আগে আমিও মাসুদ রানা পড়তাম অনেক। এখন আর পড়ি না …

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.