নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদিহা মৌ

মাদিহা মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই কথা ২২ঃ দ্য আই অফ গড (সিগমা ফোর্স #৮)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৩





ফ্ল্যাপ থেকে-
"ধ্বংস হয়ে মঙ্গোলিয়ার মাটিতে পড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আই অফ গড নামক স্যাটেলাইটের তোলা ছবিতে দেখা যায় আমেরিকার তিনটি শহর : নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, ওয়াশিংটন ডি.সি. আগুনে ধোঁয়ায় ধিকিধিকি জ্বলছে। অথচ শহর তিনটির পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাহলে এই ইমেজটি আসল কোথা থেকে...
অন্যদিকে ১০ বছর আগে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ফাদার জসিপ আবার ফিরে এসেছেন দৃশ্যপটে। ভিগোর ভেরোনাকে মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা বই এবং তের শতাব্দীর অজ্ঞাত একজনের মাথার খুলি পাঠিয়েছেন তিনি। ডিএনএ টেস্টিং-এর পর জানা যায়, খুলির মালিক স্বয়ং চেঙ্গিস খান। খুলিটিতে লেখা: চার দিনের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে এই দুনিয়া।
কমান্ডার গ্রে পিয়ের্সের এবারকার মিশন... ঠেকাতে হবে দুনিয়ার কেয়ামত। হাতে সময় ৯০ ঘন্টা। মিশন ব্যর্থ হলে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে পৃথিবী এবং ধ্বংস হয়ে যাবে মানবসভ্যতা।"
.
কাহিনী সংক্ষেপ
একই দিনে দুনিয়ার দুই প্রান্তে ঘটলো এমন বিপরীতধর্মী দুইটি ঘটনা, যার ফলাফল একই। এবং ফলাফলটা ভয়াবহ। চারদিনে ধ্বংশ হয়ে যাবে পৃথিবী। সিগমার অভিজ্ঞ কয়েকজন সদস্য দুই দলে বিভক্ত হয়ে নেমে পড়লো মিশনে। একদলে রয়েছে পূর্বপরিচিত মঙ্ক, ফাদার ভিগোর, নবাগত জ্যাডা আর ডানকান। খবর পাওয়ার সাথে সাথেই দলটি নেমে পড়লো একশনে।
ওদেরকে একই সাথে খুঁজে বের করতে হবে আই অফ গডের ধ্বংসাবশেষ, আর সেই সাথে লুকিয়ে রাখা রেলিক (সংরক্ষিত স্মৃতিচিহ্ন। এই বইয়ে চেঙ্গিস খানের দেহের সং্রক্ষণ করা অংশাবশেষকে রেলিক বলা হয়েছে) গুলি। আবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেলিকে রাখা ধাঁধার সমাধান করতে হবে।

অপর দলে রয়েছে, কমান্ডার গ্রে, তার সঙ্গিনী সেইশান আর কমান্ডার কোয়াস্কসি। দ্বিতীয় দলের পৃথিবী বাঁচানোর মিশনে নামতে খানিকটা দেরি হয়ে গেল। কারণ ওই সময়টায় তাদের সেইশানের মাকে খুঁজতে এবং পরবর্তীতে বন্দী সেইশানকে উদ্ধার করতে উত্তর কোরিয়ায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল।
.
দুইদল একত্র হয়ে কঠিন আর দূর্গম পথ অতিক্রম করে দুর্যোগ আর বিপর্যয় মোকাবেলা করে চরম মুহূর্তটায় পৌঁছে গেল। কিন্তু সেখানেও তাদের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল কঠিন বাঁধা।
.
রোলিন্সের বইয়ে শেষটা কক্ষনো নির্বিঘ্নে শেষ হয় না। প্রাকৃতিক বৈরিতা, শত্রুপক্ষের আক্রমণ দুইটাই উপস্থিত থাকে লক্ষে পৌঁছুতে দেরি করানোর জন্য।
.
পাঠপ্রতিক্রিয়া
ছোটবেলায় যখন তিন গোয়েন্দা পড়তাম, তখন গল্পগুলিতে পরিচিত মুখগুলিকে (মেরী আন্টি, রাশেদ চাচা, রোরিস-রোভার, জিনা, হ্যানসন, ডেভিড ক্রিস্টোফার, এমনকি শুঁটকি টেরি) পেলে খুব উৎফুল্ল হয়ে পড়তাম। আবার মাসুদ রানার ক্ষেত্রেও যখন রাহাত খান, সোহানা, সোহেল, গিলটি মিঞা প্রমুখদের কাহিনীতে খুঁজে পেতাম, তখন অন্যরকম অনুভূতি হত। বই পড়ার আনন্দটা স্বাভাবিকের চেয়েও বেড়ে যেত।
একই কথা খাটে রোলিন্সের সিগমা ফোর্সের ক্ষেত্রে। দ্য জুডাস স্ট্রেইনের পর আই অফ গড ধরেছি। মাঝের চারটা বই বাদ পড়ে গেলেও যখন দেখলাম জুডাস স্ট্রেইনে সাগরে তলিয়ে যাওয়া মঙ্ক আই অফ গডে স্বশরীরে বেঁচে আছে, খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম। আবার সেইশান আর গ্রে'কে একসাথে থাকতে দেখেও খুব ভালো লেগেছে। এখানে উল্লেখ্য, গ্রে আর সেইশান জুডাস স্ট্রেইনে আলাদা হয়ে গিয়েছিল।
.
রোলিন্সের অন্যান্য বইয়ের মত এটাতেও রয়েছে - ধর্ম, বিজ্ঞান, ইতিহাস, অ্যাডভেঞ্চার, একশন এর সবকিছুর পারফেক্ট সংমিশ্রণ।
.
এমন সব অস্থির বিষয় এক বইয়ে রাখার পরেও লেখক সাহেব থেমে যান না। একটু আধটু জীবনবোধও থাকে বইয়ে! যদিও খুব সূক্ষ, তবুও থাকে। উদাহরণ স্বরূপ আমি কয়েকটা লাইন বলতে পারি যেগুলি আমার খুবই ভালো লেগেছে -
"আমাদের নশ্বর শরীরের আয়ু অল্প। ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া একটি উপহার। এই উপহারকে অপচয় কোরো না, ভবিষ্যতে কাজে লাগাবে ভেবে আলমারিতে তুলে রেখো না, দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরো আর কাজে লাগাও।"
কী অসাধারণ জীবনবোধ!
.
পৃথিবীর আনাচে কানাচে লুকিয়ে থাকা ইতিহাস, সংস্কৃতি আর থ্রিলকে সংমিশ্রিত করে একজন পশু চিকিৎসক আমায় পুরো পৃথিবী ঘুরিয়ে আনতে সক্ষম হচ্ছে! সেই অভিযান প্রচন্ড রোমাঞ্চকর এবং রহস্যে মোড়া। একমূহুর্ত রেস্ট করার কোন চান্স নেই।
.
সিগমাফোর্স সিরিজে সবচেয়ে ভালো লেগেছে যেই জিনিসটা, লেখক প্রতিটা বইয়েই শত্রু মিত্র দুই পক্ষেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে মেয়েদের রাখছেন। আর সেই মেয়ে চরিত্রটাও হবে একদম কমপ্লিট প্যাকেজ। বুদ্ধিমতী, করিৎকর্মা, একরোখা। বিশেষ করে সিগমার চিরশত্রু গিল্ট'এর হয়ে কাজ করা মেয়েগুলি; স্যান্ডস্টর্মে ক্যাসান্দ্রা, দ্য জুডাস স্ট্রেইনে শেইচান - অসাম লাগে!
তাই বলে সিগমার হয়ে কাজ করা মেয়েগুলি যে পিছিয়ে আছে, তাও নয়। তারাও অ-সা-ধা-র-ন!
.
সবমিলিয়ে রোলিন্সের বই হাতে নেওয়া মানেই অসম্ভব ভালো কিছু সময় পার করা।
.
ঝরঝরে অনুবাদে বইটা পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। অনুবাদ পড়ে মনেই হয়নি, এটা অনুবাদকের প্রথম অনুবাদ।
.
বই পরিচিতি
বই: দ্য আই অফ গড (সিগমা ফোর্স #৮)
লেখক: জেমস রোলিন্স
রূপান্তর: Arif Zaman
প্রকাশক: রোদেলা প্রকাশনী
প্রকাশকাল: আগস্ট, ২০১৬
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৪০০ ( লেখকের সংযোজিত অতিরিক্ত তথ্য সহ)
মূদ্রিত মূল্য: ৪৬০ টাকা

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৩

সাহসী সন্তান বলেছেন: বইটার মধ্যে থ্রিলার এবং সাসপেন্স উভয়ই মনে হচ্ছে একটু বেশি পরিমাণে দেওয়া হইছে? তবে কাহিনী সংক্ষেপ পড়ে কিছুটা জটপাকানো বলে মনে হল। অবশ্য এই ধরনের বইয়ের কাহিনীই যে এমন হবে, সেটাই স্বাভাবিক!

রিভিউ পড়ে বইটা পড়ার আগ্রহ জাগলো! দেখি সময় করে উঠতে পারি কিনা..... :)

পোস্টে ভাল লাগা! শুভ কামনা জানবেন!

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩০

মাদিহা মৌ বলেছেন: আপনি যদি ড্যান ব্রাউনের ভক্ত হন, তাহলে বলবো, নির্দ্বিধায় পড়ে ফেলুন। ড্যান ব্রাউনের চেয়ে রোলিন্স অনেক, অনেক বেশি উপভোগ্য।

সময় করে ওঠেন, বুঝলেন? আর কত ফাঁকিবাজি করবেন? :P

শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ। আছেন কেমন?

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩০

আমি তুমি আমরা বলেছেন: এখন পর্যন্ত সিগমা ফোর্সের কোন বই পড়া হয়নি। আপনার পোস্ট পড়ে পড়ার আগ্রহ জাগল।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩২

মাদিহা মৌ বলেছেন: খুব উপভোগ্য একটা সিরিজ। পরীক্ষা সামনে না থাকলে এক্ষুনি আরেকটা নিয়ে বসে পড়লাম। পড়ে দেখতে পারেন।

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৯

কালীদাস বলেছেন: কোনদিন পড়িনি। তবে কাহিনী দেখে মনে হল কাছাকাছি কোন সিনামা হয়ত দেখেছি। কোন মুভি হয়েছিল কি এই বইয়ের উপর বেস করে?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৩৩

মাদিহা মৌ বলেছেন: নাহ। বইটা বেরিয়েছেই অল্প কদিন হলো। মানে মূল বই -ই। মুভি হয়নি এখনো।

৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৬

সাহসী সন্তান বলেছেন: সময় করে ওঠেন, বুঝলেন? আর কত ফাঁকিবাজি করবেন?

- মনে হচ্ছে ভার্চূয়ালে একমাত্র আপনিই আমাকে সব থেকে ভাল বুঝলেন! ফাঁকিবাজি যে একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে সেটা আমিও বুঝতে পারছি। তবে সত্যি বলতে আসলে হার্ডকপি পড়ার মত সময় পাই না! কেন পাই না সেটা বলতে গেলে পুরো মহা-ভারত ব্যাখ্যা করা লাগবে!

আর সফট কপি পড়তে গেলে কিছুক্ষন পর বিরক্ত লাগে! বিশেষ করে অনেক বড় কোন লেখা হলে তো বিরক্তটা ডিগ্রী ডিগ্রী অনুপাতে না উঠে একদম সরাসরি উঠে যায়! কেননা আমার সব থেকে বড় দোষ হল, আমি আবার কোন কিছু শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত শান্ত হইতে পারি না!

আছেন কেমন?

- কেবল মাত্র এই প্রশ্নটার কারণেই আপনার পোস্টে আমাকে আবার দ্বিতীয়বার আসতে হল! ;) খুব কঠিন প্রশ্ন, চাইলে এটার উত্তর অনেক ভাবে দেওয়া যায়! তবে আপাতত সেদিকে না গিয়ে ছোট্ট করে- 'ভাল আছি!' :)

আপনি কেমন আছেন? আর ব্লগে ইদানিং কম কম দেখছি বলে মনে হচ্ছে? নাকি আমিই কম আসতেছি বলেই এমনটা মনে হচ্ছে! যাহোক, ভাল থাকবেন!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: সফটকপি আমারো ভালো লাগে না। মাথা ধরে যায়।

জ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। কেমন আছি, খুব ছোট আর বহুল ব্যবহৃত প্রশ্ন হলেও, এর পারফেক্ট উত্তরটা দেওয়া বেশ কঠিন। আর "ভালো আছি" কথাটা সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মিথ্যে কথা।

না, আসলেই কম আসি এখন। ফাইনাল পরীক্ষা সামনে। টেনশন টেনশন।

৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৪

খন্দকার সানাউল ইসলাম তিতাস বলেছেন: আপু মনে হচ্ছে অনেক বই পড়েন, আমিও চেষ্টা করি বই পড়তে। আপনি কি হেনরী রাইডার হ্যাগার্ড, উইলবার স্মিত এর বই পড়েছেন? অথবা ফ্রেডেরিক ফোরসায়াথ, স্টিগ লারসেন? পড়তে পারেন, পিডিএফ আকারেই পাবেন বইগুলো। প্লিজ কিছু মনে করবেন না, অনুবাদ বই রিভিউ করছেন দেখে বললাম

৬| ১১ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: যে বিষয়ের উপর বইটি লেখা, তাতে আমার আগ্রহ খুব কম। কিন্তু আপনার এ ঝরঝরে রিভিউটা পড়তে খুব ভাল লাগলো। আর আপনি এত এত বই পড়েন, এটা জেনেও ভাল লাগলো।
ভাল থাকুন, শুভকামনা...

৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫৪

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আপু হারালেন কোথায়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.