নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়ছি দর্শনশাস্ত্র নিয়ে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখালেখির চেষ্টা করি, তা ফল হিসেবে কাব্যগ্রন্থ \"ভালোবাসা এবং অন্যান্য অশ্লীলতা\" বইমেলা \'১৭ তে প্রকাশিত হয়েছে। একা থাকতে ভালোবাসি।

গালিব আফসারৗ

সাধারণ নৌকার অসাধারণ মাঝি

গালিব আফসারৗ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ জীবনের জলযান

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬



মেয়েটাকে আমার ভালোলাগে, খুব ভালোলাগে।

মেয়েটার ডান গালের উপর ছোট্ট একটা তিল আছে, বাম নাকের উপর ছোট্ট নাকফুল। মাঝেমাঝে কপালে ছোট্ট একটা কালোটিপ পড়ে, একহাতে ছোট্ট একটা ঘড়ি আরেকহাতে ছোট্ট ব্রেসলেট। ছিমছাম কটি কোমরের মেয়েটিকে আমি প্রায়ই দেখি, কলাভবনের বারান্দায় বান্ধবীদের সাথে গল্প করতে করতে ছোট্ট করে হাসি দিয়ে দূরে তাকিয়ে থাকে।

প্রায় দু'বছর হয়ে গেলো, মেয়েটিকে এভাবেই দেখে আসছি। এই দু'বছরে ওর সাথে তেমন কথা হয়নি, হয়ত দু'চারবার দেখা হলে জিজ্ঞেস করেছি, কেমন আছো?
ছোট্ট করে একটা হাসি দিয়ে ও উত্তর করেছে, এইতো ভাইয়া, ভালো। আপনি?

এরচেয়ে বেশি কথা বলা হয়নি কখনো।
এরচেয়ে বেশি কাছাকাছি হইনি কখনো।

কখনওই ওর ফেসবুকে একটা মেসেজ করার সাহস হয়নি, মাঝেমাঝে ওর ছবিতে লাভ রিয়েক্ট দিয়েই চুপ থেকেছি; ঝড় ওঠা মনের বিপরীতে।
কখনওই ওর চোখে চোখ রাখার সাহস হয়নি, মাঝেমাঝে রাত্তিরবেলা চাঁদের দিকে তাকিয়ে থেকে সান্তনা খুঁজেছি।
মেয়েটি ঐ চাঁদের মতো।

তারপর, এই একেলা দিনগুলো চলে যাচ্ছে, নিঃসঙ্গ রাতগুলো চলে যাচ্ছে।
গাছ থেকে পাতা ঝরে পরছে,
রাস্তায় ধুলো জমছে,
আকাশের মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আর আমি, দুটো বছর যাবত মেয়েটিকে খুব করে চেয়ে আসছি। কিন্তু সেই চাওয়া ওর কানে পৌঁছুতে দিই নি। ও কখনো কল্পনাই করতে পারবেনা কোনদিন, আমি ওকে কি পরিমাণ পছন্দ করি।
ওর ছোট্ট হাতদুখানায় আমার জীবনের সঞ্চয় তুলে দিতে পারি, পারি জীবন তুলে দিতে।
মেয়েটি কখনওই তা জানবেনা।

সেদিন বৃহস্পতিবার।
ক্লাস শেষ করে কাঁঠালতলায় বসে আছি, একা একা। কেন দেরি করছি জানিনা, বসে থাকতে ভালো লাগছিলো।
কিছুক্ষণ পরে, কলাভবনের ওদিক থেকে মেয়েটি আসছিলো, একা একা; আমাকে এভাবে একা বসে থাকতে দেখেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণে, আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো ও। চুপচাপ কেটে গেলো কয়েক মুহূর্ত।

ওর কাঁধেচাপা ছোট ব্যাগ, হাতে ঘড়ি। গলায় লম্বা-চিকন একটা মালা ঝুলানো।
মাথায় ওড়না, কয়েকগাছি উড়ন্ত এলোচুল বারবার মেয়েটির বামচোখের উপর এসে পড়ছিলো।
আমি তাকিয়ে ছিলাম অপলক; কেনোনা আমি জানি, এই সৌন্দর্য থেকে যে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে সৌন্দর্যহীন প্রেতাত্মা বৈ কিছুই নয়।

তারপর, আমি কিছুই বললাম না, মেয়েটিও কিছুই বললোনা।
তারপর
ওর সুন্দর চেহারায় পৃথিবীর সমস্ত রুপের পসরা সাজিয়ে একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে মেয়েটি চলে গেলো।
আমি দেখলাম, এই হাসি দিয়ে ও আমাকে বন্দি করে ফেলেছে।

কোন একদিন হয়ত আবার এই হাসির জন্যই, এই কাঁঠালতলায় বসে মরে যাবো; কোনো একদিন। শুধু তার হাসির জন্য।

অথচ, মেয়েটি তা কখনওই জানবেনা, কোনোদিন জানবেনা।



মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

নীল মনি বলেছেন: চমৎকার বর্ণনার ঢঙ,সাবলীল ভাষা আর গভীর ভালোবাসা। ভালো লেগেছে

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

গালিব আফসারৗ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আচ্ছা বুঝলাম। সৌন্দর্যহীন প্রেতাত্না হতে আমার কোন আপত্তি নাই :P

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

গালিব আফসারৗ বলেছেন: কিন্তু আমার যে ওসবে খুব আপত্তি :)

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৫

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: পড়ে মজা পেলাম আমার একটা গল্প পড়তে পারেন
Click

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: বারবার 'মেয়েটি' 'মেয়েটি' ভালো দেখায় না। মেয়েটির কি নাম নেই??

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮

গালিব আফসারৗ বলেছেন: আমার ডিপার্টমেন্টের একটা মেয়ের ছায়ায় গল্পটি লেখা। তাই ওর নাম কিংবা অন্যকোন ছদ্মনাম নিতে চাচ্ছিলাম না, রাজীব ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.