নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনে সহজেই কোন কিছু পাবার আশা করাটা বোকামী। অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার হয়েই আসতে হয় কাংক্ষিত লক্ষে। এই পথ এত সোজা নয়। অনেক ভুল ভ্রান্তি আছে সেই পথ চলায়। হয়তো আরো অনেক কোথিন হবে সামনের পথ টুকু। তারপর ও হার মেনে নেয়ার পক্ষে আমি নই। জয়ী যে আমাকে হতেই হবে।

মাহবু১৫৪

জীবনে সহজেই কোন কিছু পাবার আশা করাটা বোকামী। অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার হয়েই আসতে হয় কাংক্ষিত লক্ষে। এই পথ এত সোজা নয়। অনেক ভুল ভ্রান্তি আছে সেই পথ চলায়। হয়তো আরো অনেক কঠিন হবে সামনের পথ টুকু। তারপর ও হার মেনে নেয়ার পক্ষে আমি নই। জয়ী যে আমাকে হতেই হবে।

মাহবু১৫৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনিশ্চয়তার পথে যাত্রা/:)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৮

আজকাল অর্ককে কোথাও খুব একটা দেখা যায়না। এ নিয়ে বন্ধু মহলে বেশ কয়েকবার আলোচনা হলেও ঘাটাঘাটি তেমন হয়নি। কারণ সবাই জানে অর্ককে নিয়ে কোথাও আলোচনা হোক, এটা সে চায় না। এদিকে সবাই যার যার ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই ভাল অবস্থান গড়ে নিয়েছে আবার কেউ কেউ সে পথে হাটছে, অনেকে আবার বিয়ে থা করে সুখে আছে। ব্যতিক্রম শুধু অর্ক।

নাজিমউদ্দিন রোডের চারতলা বাড়ির ছাদের একপাশে একটি রুমে থাকে অর্ক। বাড়িটি তার দাদার করা। তিন তলায় পরিবারের সবাই থাকলেও ছাদের এই ঘরটিতে সে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে এসেছে। তার নিজের জগতে থাকতেই সে পছন্দ করে, বেশ কেটে যায় এখানে। পরিবারের শত বকাঝকা সত্বেও এ ঘর থেকে তাকে কেউ সরাতে পারে নি। এমনও রাত গিয়েছে একটার পর একটা সিগারেট ধরিয়ে সারারাত পার করেছে মিটিমিটি তারাজ্বলা আকাশের পানে চেয়ে। কোন কোন রাত পার হয়ে যায় সাতাশ / আটাশ বছরের এই জীবনের কথা ভেবে--------------



ছাত্রজীবনে সেরা ছাত্র না হলেও ভাল ছাত্রের তালিকা থেকে তার নামটি কখনো বাদ পড়েনি। অষ্টম শ্রেনীতে বৃত্তি পাওয়ার পর বড় চাচার কাছে আবদার করে সাইকেলের জন্যে। যে বড় চাচার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে সবাই ভয় পায় তার কাছে এই আবদারে বাড়ীর ছোট থেকে বড় সবাই ভয় পেয়েছিলো। কিন্তু তাদের ভয় মিথ্যে প্রমাণিত হয়। কেননা বড় চাচা এই ছেলেটিকে খুব পছন্দ করেন। অর্কের মাঝে নিজের ছায়া দেখতে পান যা তার পাঁচ ছেলেমেয়ের কারো মাঝে পান না। তাই ওর সব আবদার পূরণ করেন তিনি। সাইকেলে চড়ে নাজিমউদ্দিন রোড থেকে শীতলক্ষ্যার পাড় পর্যন্ত ঘুরে বেড়ানো ছিলো তার রোজকার কাজ। কখনো বন্ধুদের সাথে আবার কখনো একাই বেড়িয়ে যেতো।



ঘুরে বেড়ালেও কখনো গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ায়নি অর্ক। সে জানতো তাকে ভাল ফলাফল করতেই হবে। এসএসসিতে খেটেছিলো আপ্রাণ কিন্তু ফলাফল আশানুরুপ হয়নি। কোন মতে ফার্স্ট ডিভিশনটা ছিলো, যেখানে সবার আশা ছিলো স্ট্যান্ড করবে। নিজের রেজাল্ট নিয়ে নিজেই আর ভাবতে পারেনা, ভাবতে চায় না।বার বার ফিরে ফিরে আসে সেই ফলাফলের দিনের স্মৃতি। নোটিশ বোর্ডে যে কতক্ষণ হা করে তাকিয়ে ছিল সেদিন; সে নিজেও জানে না।



শহরের নামী কলেজে ভর্তি হয় অর্ক। এক্ষেত্রে তার বড় চাচার ইচ্ছাই ছিলো প্রবল। কলেজ জীবনের পূর্ণ স্বাধীনতা যেখানে সবাই উপভোগ করে, স্বাধীনতার অপব্যবহার করে সেখানে সে কখনই তা করেনি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া ছাড়া। খুব আড্ডাবাজ হওয়ার ফলে সে সহজেই সবার সাথে মিশতে পারতো ফলে বন্ধু যোগাতে সময় লাগতো না। কিন্তু অজানা এক কারণে সে বন্ধুত্ব বেশীদিন টেকেনা। কোন না কোন কারণে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েই যায়। হয়তো কেউ তাকে বোঝে না। ব্যাপারটি নিয়ে প্রথম প্রথম অনেক ভাবলেও পরে আর মাথা ঘামায়নি। এটিই স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছে। এইচএসসি পাশ করে সে চান্স পায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।



ক্যাম্পাসের দিনগুলো কিভাবে উড়ে উড়ে চলে গেছে টের পায়নি অর্ক। বন্ধুরা যখন প্রকাশ্যে চুটিয়ে প্রেম করে গেছে তখন সে নিরবে বসে রাফার কথা ভেবে গেছে। মনে মনে মেয়েটিকে প্রচন্ড ভালবাসলেও কখনো মুখফুটে বলতে পারেনি। এখনো মনে পরে, যেদিন তার মনের ভালবাসার কথা জানাতে চেয়েছিল রাফাকে, সেদিন রাফার সামনে যেয়ে কিছুই বলতে পারে নি অর্ক। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল তার। কিসের ভরসায় সে বলবে মেয়েটিকে, পড়ালেখাই এখনো শেষ হয়নি। বন্ধুরা অনেক বোঝালেও তার মন সায় দেয়নি। ভেবেছিলো একেবারে যোগ্য হয়েই রাফার সামনে দাঁড়াবে। কিন্তু সে সুযোগ আর পায়নি অর্ক। ফাইনাল ইয়ারে উঠে বিয়ে হয়ে যায় রাফার। রাফার বিয়ের পর অর্কর মধ্যে এক অন্যরকম পরিবর্তন আসতে শুরু করে।



ফাইনাল পরীক্ষা সামনে তাই পড়ালেখার মাঝেই ডুবে থাকে অর্ক। আরকটি কারণ ছিলো রাফা। মেয়েটির স্মৃতি সামনে আসতে দেয়নি ব্যস্ততার অযুহাত দেখিয়ে। সকলের বারণ সত্বেও অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অনিয়মের ফলে যা হবার তাই হল। পরীক্ষার পনের দিন আগে হসপিটালে ভর্তি হতে হলো তাকে। কোন মতে পরীক্ষাগুলো দিয়েছে। রেজাল্ট বের হলে দেখা গেলো ডিপার্টমেন্টে দ্বিতীয় হয়েছে সে। তিনটি বছর সে-ই প্রথম ছিলো তাই বিশ্বাস ছিলো এবারো তাই হবে এবং ভার্সিটিতেই শিক্ষক হিসেবে ঢুকবে। কিন্তু শেষ বছরের ফলাফল তার সব হিসেব নিকেষ বদলে দিয়েছে।



এত বছর হয়ে গেল অথচ এখনো কিছুই পারে নি সে নিজের জন্য এমনকি বাবা মায়ের জন্য। মাঝে মাঝে তাই সে অপদার্থ মনে করে নিজেকে। আড়ালে এ নিয়ে চোখের পানি ফেলে সে। বাসা থেকে চাপ না থাকলেও নিজ়েই চেষ্টা করে গেছে একের পর এক চাকরীর। আস্তে আস্তে নিজের চারপাশে একটি বলয় তৈরি করেছে, যেখানে কারো প্রবেশাধিকার নেই। সেও বের হয় না তার ভেতর থেকে। দু-চার জায়গা থেকে যে ডাক পড়েনি তা নয়। কিন্তু তার সবদিক থেকে মিলছে না। আজও একটি ইন্টারভিউ আছে। এটিই শেষ; যদি না হয় তবে বাইরে চলে যাবে বলে ঠিক করেছে। জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাকা হাতে লাগতেই সম্বিত ফিরে পেলো অর্ক। রাত আর বেশী বাকী নেই। তার মানে সারারাত ধরে সে অতীতের স্মৃতিচারণ করে কাটিয়েছে।



হয়তো এই চাকরিটাও হবে না তার! বা হয়তো নিজেই ছেড়ে দিবে কয়েক মাস করার পর! ইদানিং কিছুই ভাল লাগে না অর্ক এর। বন্ধু, পরিবার পরিজন, পাড়া প্রতিবেশী সবার কাছ থেকেই সে একটু একটু করে দূরে স্যরে যাচ্ছে। বাসা থেকে একমাত্র বাবাই বলছে বিয়ে করার জন্য। কিন্তু সেটা কি করে সম্ভব? এখনো নিজের পায়ে সে দাঁড়াতে পারে নি। কবে পারবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। এদিকে বাবার বয়সও হয়েছে। সব মিলিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেই হয়তো ছুটে চলছে অর্ক। সে নিজেই জানে না এই অনিশ্চয়তার শেষ কোথায়!





--------------------------



গল্পের থিমঃ মুই

কাহিনি, পরিচালনা, লেখকঃ নীল আপা

এডিটঃ মুই

উৎসর্গঃ নীল আপাকে

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩১

শায়মা বলেছেন: গল্পটা পড়ে দুঃখ দুঃখ লাগছিলো।

কিন্তু থিম আর এডিটের যায়গায় মুই মুই দেখে আমি হাসতে হাসতে শেষ ভাইয়া।:P

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫১

মাহবু১৫৪ বলেছেন: :P :P ;)

ধন্যবাদ আপু

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫২

ভিয়েনাস বলেছেন: আমাদের দেশে এখন এটা কঠিন বাস্তবতা। লেখা পড়া শেষ হলেই ছেলে মেয়েরা দেশ জাতি পরিবারের বোঝা হয়ে পড়ে।

তাইলে গল্পটা এখন কার?? নীলপু র নাকি আপনার? :D

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

মাহবু১৫৪ বলেছেন: মূল লেখিকা নীল :)

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১৩

নীল-দর্পণ বলেছেন: উৎসর্গে নামটা দেইখা :|

আসল ক্রেডিট কিন্তু আপনারই :)

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

মাহবু১৫৪ বলেছেন: তোমার ক্রেডিট সবচেয়ে বেশি :)

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০৪

কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: অসাধারন এবং বিষন্ন একটি লেখা।

+++++++++++++++++

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

মাহবু১৫৪ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৩

পাগলমন২০১১ বলেছেন: এই সমস্যাটি আমাদের দেশে প্রায়ই দেখছি।

অর্করা কি কখনো মনের কথা বলতে পারবেনা?

৫ম প্লাস।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩

মাহবু১৫৪ বলেছেন: হয়তো পারবে না আর পারলেও দেরি হয়ে যাবে

ধন্যবাদ আপনাকে

৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

লোনলিফাইটার বলেছেন: ওয়াও দারুন ব্রো +++

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

মেহেদী হাসান মানিক বলেছেন: :( :( :( :( :( :(
চাকরি.. চাকরি......।
+++

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

মাহবু১৫৪ বলেছেন: চাকরি চাকরি :(

৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৯

শাহ্‌ ফখরুল ইসলাম আলোক বলেছেন: ৮ম প্লাস......... আপাতত এর বেশি কিছুই দিতে পারলাম না।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০৬

মাহবু১৫৪ বলেছেন: আরে! দুলাভাই, কেমন আছেন?

প্লাস এর জন্য ধন্যবাদ

৯| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৮

জাকারিয়া মুবিন বলেছেন: বিষণ্ণ গল্পে বাস্তবতার ছোঁয়া, চমৎকার।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩

আমি ইহতিব বলেছেন: কেমন যেন অসমাপ্ত লাগলো গল্পটা, দ্বীতিয় পর্ব আসবে কি?

গল্পের থিমঃ মুই
কাহিনি, পরিচালনা, লেখকঃ নীল আপা
এডিটঃ মুই
উৎসর্গঃ নীল আপাকে

:) :) :)

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫২

মাহবু১৫৪ বলেছেন: :) :)

২য পর্ব আসার কোন সম্ভাবনা নেই।


ধন্যবাদ আপনাকে

১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪০

মামুন হতভাগা বলেছেন: ভাল লাগল

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ধন্যবাদ

১২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

আমি বাঁধনহারা বলেছেন:
ভালো লাগল।শুভ কামনা
+++++++++++

ভালো থাকবেন
মনে রাখবেন!!!

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫২

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

১৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৫

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: সুন্দর একটা লেখা - পড়ে ভাল লাগলো

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০৫

মাহবু১৫৪ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.