নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা কৌতূহলী যাত্রার নাম- স্রষ্টা, সৃষ্টি, উদ্দেশ্য এবং এই সব কিছুর সত্যতা কে ঘিরে... আর আমি সেই পথের একজন সাধারণ যাত্রী। নিজের জায়গা থেকে সব স্থান, কাল, পাত্রে আপন অস্তিত্বকে কল্পনা করতে ভালোবাসি আর সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটা কাজ করে যাই...

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate )

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate ) › বিস্তারিত পোস্টঃ

#সৌন্দর্য #কথন-

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:২৬

ধরুন, আপনি একজন অতি সুন্দর বা সুন্দরি মানুষ। ( ধরার কিছু নেই, আপনি এমনিতেই সুন্দর :p )। এখানে মনের সৌন্দর্য নয়, বাহ্যিক দৈহিক সৌন্দর্যের কথাই বলছি। আহা কি সুন্দর চোখ, নাক, মুখ, দেহের গড়ন বলতে গেলে চমৎকার মাশা আল্লাহ। মাঝে মাঝে যেনো নিজেই নিজের প্রেমে পড়ে যান। বাহ বাহ এতো রুপ যে কোন ভাবে ঢেকে রাখাই যায় না, এদিক সেদিক ঝিলিক মেরেই যায়।

যাই হোক মূল কথায় আসি। আপনার এই সৌন্দর্যের কৃতিত্ব আসলে কার? উম্ম, ভাবুন ভালো করে ভাবুন। জি ঠিক ধরেছেন, আপনার এই সৌন্দর্যের কৃতিত্ব একমাত্র সৃষ্টিকর্তার। আপনাকে যিনি মানুষ হিসেবে বানিয়েছেন, বান্দর, গরিলা, শিম্পাঞ্জীর মত নয়, একজন সুন্দর, অতি সুন্দর মানুষ হিসেবে সব কিছু দিয়েছেন। আপনি দৈহিক সৌন্দর্যে অন্য আর আট দশটা মানুষ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

তো প্রশ্ন হলো, অন্য আর আট দশ জনকে না দিয়ে আপনাকে এই সৌন্দর্য কেনো দেয়া হলো? কখনো কি ভেবে দেখেছেন? আপনার মনে অনেক রকম উত্তর ঘোরাফেরা করছে তাইতো? আচ্ছা, আল্লাহ খুশি হয়ে আপনাকে এই সৌন্দর্য দিয়েছেন, এমন যদি কেউ ভেবে থাকেন, তাহলে তা অমূলক ধারণা। কেনো না আপনি জন্মের আগে এমন কোন পূণ্য করে আসেন নি, যে আপনাকে পুরস্কার হিসেবে তা দেয়া হবে! আর পৃথিবী যেহেতু পরীক্ষা ক্ষেত্র, সেহেতু সেই প্রশ্ন ও আসে না।

আচ্ছা মানুষ এই সৌন্দর্যের ব্যাপারটা ঠিক কিভাবে ব্যবহার করে? অধিকাংশ মানুষ নিজের এই সৌন্দর্যের ক্রেডিট নিজের উপর ই নিয়ে থাকে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা যেনো প্রায় নেশার মত। মানুষ যেই সকল বিষয় নিয়ে অহংকার করে থাকে তার মাঝে সৌন্দর্য নিয়ে অহংকার প্রধান ৩ কারণ এর একটি! প্রায়শই দেখা যায়, মানুষ নিজের এই সৌন্দর্য কে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করে। যখন একজন সুন্দরি রমণী সেজে গুঁজে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যান, অথবা যে কোন উপায়ে তার সৌন্দর্যের সর্বোচ্চ উপযোগিতা কাজে লাগান- মানুষ কে তার দিকে আকৃষ্ট করার জন্য তখন তার সুন্দর দেহের, রুপ লাবণ্যের ব্যবহার হয়ে থাকে তার মনের অগোচরে গুণগ্রাহী দর্শকের প্রশংসা পাওয়ার তীব্র বাসনা। এই বাসনা যে কোনভাবেই ইতিবাচক নয়, তা মস্তিষ্কের সামান্য ব্যবহারেই বোঝার কথা।

যখন কারো রূপ লাবণ্য দেখে মানুষ আকৃষ্ট হয়, সেই আকর্ষণ কখনো আকর্ষণ এর বাইরে গিয়ে ভালোবাসায় রূপ নিতে পারে না। বাস্তব উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়- সেলিব্রেটিদের জীবন লক্ষ্য করুন। যেই মানুষগুলোকে তার ফ্যান ফলোয়ার রা পাগলের চেয়ে বেশি পছন্দ করে, সেই মানুষ টি তার আপন ঘরের মানুষ এর কাছে অতি অপছন্দের! তাদের ঘন ঘন ডিভোর্স ই আসল ঘটনা বলে দেয়। তাহলে সৌন্দর্যের আসল মূল্যায়ন কি? দেহের সৌন্দর্য কি কোন ভাবেই প্রকাশ করা যাবে না?

অবশ্যই যাবে, তবে তা নির্ধারিত মানুষের জন্যই। একজন সুন্দর রমণী হিসেবে আপনার সৌন্দর্যের দাবিদার শুধুই আপনার আপন স্বামী, এর বাইরে কেউই নয়। অনেকেই বলে থাকেন, আরে না আমি কি অন্যের জন্য সাজি নাকি বা নিজেকে প্রদর্শন করি নাকি! আমি তো নিজের জন্য সাজি! আসলে এখানে হিপোক্রিসি জড়িত। যদি শুধু নিজের জন্যই সাঁজা হতো তবে নিজের ঘরেও সেজে বসে থাকা যায়। ঘরে যেমন তেমন থেকে বাইরে এলেই নিজেকে সুন্দরি বলে উপস্থাপন এর হঠাৎ প্রয়োজন পড়তো না। তেমনি একটু মধ্য বয়সী হলে শরীরে হিজাব রুপে কাপড় দিয়ে শরীর ঢেকে রাখার পরিমাণ ও বেড়ে যেতো না! আসলে গুনগ্রাহী দর্শক এর আনাগোনা যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ এই সৌন্দর্য প্রকাশের হিপোক্রিসি চলতে থাকে!

সৌন্দর্য অন্য আর সকল নেয়ামতের মতই আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ নেয়ামত, যা অতি ক্ষণস্থায়ী ও বটে। আপনাকে অতি সুন্দর রুপ লাবণ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে, নিজের অহংকার প্রকাশের জন্য নয়, গুনগ্রাহী দর্শক এর লিস্ট বাড়ানোর জন্য নয়, নিজেকে সস্তা হিসেবে সকলের উপভোগ্য বস্তুতে পরিণত করার জন্য নয়, দেহের ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নয়। আপনাকে এই অপরূপ ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্য দেয়া হয়েছে আপনাকে পরীক্ষা করার জন্য। কি কাজে এই সৌন্দর্য কে ব্যবহার করা হলো, নিজেকে হেফাজত করা হলো, অন্যের কামনার সামগ্রী থেকে নিজেকে বাঁচানো হলো কিনা, শুধুমাত্র আপন প্রাণপ্রিয় স্বামী/স্ত্রীর তরে এই সৌন্দর্য সংরক্ষণ এর চেষ্টা করা হলো কিনা, যেই মহান সত্তা এই সৌন্দর্য দিয়ে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন তার শুকরিয়া আদায় হলো কিনা, তার দেয়া নিয়ম অনুযায়ী চলা হলো কিনা। এই হচ্ছে আপনার সৌন্দর্যের পরীক্ষা। এবং এই পরীক্ষার পাই টু পাই হিসেব অবশ্যই নেয়া হবে।

একটি কথা অতি বাস্তব তবুও আমরা ভুলে যাই, ভালোবাসার উৎস যদি দৈহিক সৌন্দর্যের মোহে পড়ে হয়, তবে সেই ভালোবাসা অবশেষে অতি নারকীয় রুপে শেষ হয়- পরকিয়া, ডিভোর্স থেকে শুরু করে কত কি! কারণ যেই সৌন্দর্য দ্বারা আপনি কাউকে নিজের প্রতি আকর্ষিত করে আপন করতে চেয়েছেন, সেই সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাওয়ায়, সেই মানুষ টি নতুন কারো সৌন্দর্যে মত্ত হয়ে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। নিজের সৌন্দর্য কে হেফাজত করুন, মন কে সুন্দর করে তুলুন, কতদিন আর রবে এই রূপ লাবণ্য। হাজার লক্ষ লিস্ট ধারী এই গুণগ্রাহী দর্শকেরা একদিন ফিরেও তাকাবেনা, শুধু সেই আপন মানুষটি ছাড়া, যে দেহ দেখে নয়, পবিত্র সুন্দর মনের তরে ভালোবেসেছে, আপনাকে জীবন সঙ্গি পাবার জন্য অন্যের দৈহিক সৌন্দর্যে নিজের বিবেক কে বিকিয়ে দেয় নি।

আমাদের কত সুন্দর বিবকে, বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি দেয়া হয়েছে। আফসোস, আমরা তা ব্যবহার না করেই বিনোদনের জোয়ারে ভেসে অশান্তি, হতাশা, চির অসুখী এক আত্মা নিয়ে মৃত্যুবরণ করি!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৬

জাহিদ হাসান মিঠু বলেছেন: অসাধারন লেখা। পড়ে খুব ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ।

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫০

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate ) বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪৫

নাজমুল হাসান স বলেছেন: অসাধারণ।। আমি প্রথম

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫১

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate ) বলেছেন: কৃতজ্ঞতা :)

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪৫

নাজমুল হাসান স বলেছেন: ও হো। কমেন্ট করততে করতে দেরি হয়ে গেল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.