নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

মাহফুজ

তেমন কিছু লিখবোনা নিজেকে নিয়ে কারণ লিখতে গেলে সেটা এতো বিশাল হবে যে কেউ পড়বেনা; অবশ্য লিখলেই যে অনেকে পড়বে তাও না। যাই হোক আসি মূল বিষয়ে, আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যে জীবনে চলার পথে একটি সুন্দর সেতু পেয়েছিলাম, মজবুতও ছিলো। সেতুটির পাশেই ছিলো একটি বাঁশের সেতু। আমি অনায়াসেই সুন্দর আর মজবুত সেতু দিয়ে ওপারে চলে যেতে পারতাম যেখানে খুব সুন্দর একটি পৃথবী আছে। আমি বোকার মতো নিজের খামখেয়ালিপনার কারণে বাঁশের সাঁকোতে উঠে পড়লাম যেটা ছিলো খুবই ভয়ানক এবং জায়গায় জায়গায় ত্রুটি অর্থাৎ নড়বড়ে আর খুবই গভীর। বাতাস দিলেই সেতুটি দুলতে থাকে ভয়ানক ভাবে।

মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্দোলনে চোখের মণি

১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:২৭



সদিন গভীর রাত্রিতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সবকিছু একটু বেশী অন্ধকার মনে হলো। মোবাইল হাতড়ে বের করে বাটনে টিপ দিলাম নাহ কোনো আলো জ্বললোনা। অন্য মোবাইলটাও এনে বাটনে টিপ দিলাম তবুও কোনো আলোর সন্ধান মিললোনা। নাহ, এমনতো হবার কথা না। একসাথে দুটো মোবাইলের চার্জ শেষ হবার কথা না! কারেন্ট চলে গেছে নাকি ঝড়তুফানে? আচ্ছা কারেন্ট গেলেও তো এতো অন্ধকার হয়না কখনো। বাসায় আইপিএস আছে, প্যাসেজের বাতিটা মোটামুটি সবকিছু আলোকিত করে রাখে আর সে আলো আমার দরোজার নীচ দিয়ে এই রুমেও আসে। যতো সময় যাচ্ছে ততো অবাক হচ্ছি অন্ধকারের কথা ভেবে। দুই হাত দিয়ে চোখমুখে একবার ঘষে দিলাম। কিছু একটা পরিবর্তন খেয়াল করলাম আমার মুখমন্ডলে। আবার ধীরে ধীরে দুই হাত কপাল থেকে ঘষে নীচে নামাতে লাগলাম। মনে হলো গর্তের মতো কিছু একটা। তারপরই আমি যা আবিষ্কার করলাম তাতে অজ্ঞান হয়ে যাবার দশা। দেখি আমার চোখের কোঠর দুটো খালি আর সেখানে অনায়াসে আমার আঙ্গুল ঢুকে যাচ্ছে! ইয়া আল্লাহ আমার চোখের মণি কোথায়? আম্মু বলে শরীরের সমস্ত শক্তি এক করে চিৎকার দিয়ে উঠলাম কিন্তু আমার সে চিৎকার আমার নিজেরই শুনতে কষ্ট হলো। কেমন যেনো গোঙ্গানির মত ক্ষীণ শব্দ হয়ে থেমে গেলো আমার চিৎকার।
আমি অন্ধ মানুষের মতো আলতো করে দুই পাঁ নীচে নামালাম। কিসের যেনো একটা শব্দ পাচ্ছি খুব ক্ষীণ শব্দ। কান পাতলাম বুঝার জন্য শব্দটা কিসের? ভয়ে আতঙ্কিত আমি ততক্ষণে ঘেমে গোসল করে ফেলেছি। পিংপং বলের মতো আমার মেঝেতে কিছু একটা ধাপাধাপি করছে মনে হলো আমার। আমি অন্ধকারে আন্দাজে হাত বাড়িয়ে দিলাম শব্দটার উৎসকে স্পর্শ কিংবা ধরবার আশায়।
ধরতে পারবেনা, ধরতে পারবেনা নাকি কণ্ঠে বলে উঠলো কেউ। আসলে কেউ না কণ্ঠটা মনে হলো সম্মিলিত কোরাস ধ্বণির মতো! আমি হাউ ভোল্টেজ শক খাওয়ার মতোই ভয়ে ছিটকে আসলাম। হাত পা উঠিয়ে বিছানায় জায়গা করে নিলাম।
কোনোরকম প্রশ্ন করলাম কাঁপাকাঁপা স্বরে, কেক্কেকেক্কে....
আমরা, উত্তর দিলো কোরাস ধ্বণি।
একটু সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম- আমরা কারা?
আমরা তোমার চোখের মণি। আবার সেই কোরাসধ্বণি।
-তোমরা মেঝেতে কি করো? আমি অবাক থেকে আরো অবাক হয়ে গেছি। যেকোনো সময় নির্বাক হয়ে যাবো এইসব অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা আর বেশী সময় চললে।
আমরা তোমার বিপক্ষে আন্দোলনে নেমেছি আর তাই তো তুমি ঘুমিয়ে পড়তেই আমরা তোমার অক্ষিকোটর থেকে বের হয়ে এসেছি।
চোখের মণির আন্দোলন!! কি বলছো এসব আর তোমরা একসাথে কথা বলো কেন?
আমরা আলাদাভাবে কথা বলতে পারিনা।
অহ আচ্ছা তা আন্দোলনটা কিসের?
বিশ্রামের আন্দোলন।
মানে! বিশ্রামের আবার আন্দোলন হয় নাকি?
অবশ্যই হয়। তুমি আমাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করাও যা আমরা আর মেনে নিতে পারছিনা।
কি সব বলছো তোমরা?
ঠিকই বলছি আমরা। কণ্ঠগুলো কিছুটা উত্তেজিত মনে হলো। বেশ রাগান্বিত স্বরে তারা বলতে লাগলো- তুমি ঘুমাও সেই ভোরে নাহয় শেষ রাতে। সারা রাত আমাদের সামনে মোবাইলের স্ক্রিন ধরে রাখো। অসহ্য লাগে আমাদের, জ্বালাপোড়া করে। তোমার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ থাকেনা। ভোরবেলা ঘুমিয়ে আবার হুট করে উঠেই কাজে লাগিয়ে দাও আমাদের। এভাবে কি বিশ্রাম হয়?
অভিযোগ সত্যি গুরুতর। আমার কিছু বলার নেই তবুও আত্মপক্ষ সমর্থন বলে তো কথা আছে।
আমার ঘুম না আসলে আমি কি করবো আর তোমাদের ই কিভাবে বিশ্রাম দেব।
এই কথা শুনে তারা আরো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো।
এসব তোমার মিথ্যা অজুহাত। তোমার ঘুম আসলে, চোখ ভারী হয়ে গেলেও তুমি ঘুমাওনা। তাড়িয়ে দাও ঘুম, গেম নাহয় ব্রাউজিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ো।
আমিও হাল ছাড়লামনা।
মেনে নিলাম তোমাদের কথা কিন্তু আমি যে সপ্তাহে দুই তিন দিন তোমাদের লম্বা বিশ্রাম দেই। ভোরে কিংবা শেষরাতে ঘুমিয়ে পরের দিন দুপুরে কখনো বিকেলেও উঠি। সেটার কথা তো বললেনা।
এই কথা বলে যে আরো ফেঁসে যাবো ভাবিনি।
ভালো কথা বলেছো। দিনের বেলা ঘুমিয়ে তুমি আমাদের কর্মক্ষমতা নস্ট করে দিচ্ছো দিনেদিনে। দিনের আলো আমাদের খাদ্যের মতো। দিনে যখন তুমি ওমন লম্বা ঘুমে তলিয়ে যাও তখন আমাদের খুব কষ্ট হয়। দিনের আলো দেখার জন্য আমরা ছটফট করতে থাকি। তোমার যেমন অক্সিজেন না পেলে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় আমাদের তেমনি দিনের আলোবাতাস না পেলে কষ্ট হয়।
একেএকে আমার সকল রক্ষাকবচ পরাজিত হলো। অবশেষে আমি পরাজয় মেনে নিয়ে নরম সুরে জিজ্ঞেস করলাম- কি কি চাহিদা বলে ফেলো।
আমাদের রাতে বিশ্রাম দিতে হবে। আর কিছুই চাইনা আমরা। মোবাইলের স্ক্রিনটা দূরে ধরে রেখো নাহয় চশমা ব্যবহার করবে।
যদি না মানি?
আমরা আর তোমার অক্ষিকোঠরে যাবোনা।
তাতে তো তোমরাও মারা যাবে!
মারা যাওয়াই সই আর বাঁচতে হলে বাঁচার মতো বাঁচবো।
একেবারে বিপ্লবী কণ্ঠস্বর। আমি আর আগ বাড়তে সাহস পেলামনা।
ঠিক আছে মেনে নিলাম। এবার প্লিজ আমার কোঠরে এসো লক্ষিমণিরা। আমাকে দেখতে দাও।
আমি দু হাত সামনে বাড়িয়ে দিলাম। পিংপং বলের মতো উড়ে এসে আমার হাতে বসলো তারা। আমি উৎফুল্লচিত্তে তাদের যথাস্থানে ঢুকিয়ে দিলাম।
ঐ যে প্যাসেজের আলো আসছে দরোজার নীচ দিয়ে। রেডিয়াম আলোতে দেখা যাচ্ছে ঘড়ির কাটা রাত তিনটের ঘরে। অবচেতন মন আমার মোবাইল হাতড়াতে লাগলো। একটা মোবাইলের স্পর্শ পেতেই চোখের সামনে এনে টিপ দিতেই কারা জানি চরম উত্তেজিত কণ্ঠে বলে উঠলো- এই আবার শুরু করলে? কেঁপে উঠে হাত থেকে মোবাইল ছিটকে পড়লো ফ্লোরে। বিশ্রী একটা শব্দ হলো মোবাইল ভেঙে যাবার। আমি তড়িঘড়ি করে আনতে যাব মোবাইলটা অমনি বিকট শব্দে বেজে উঠলো মোবাইলের এলার্ম।
কে যেনো বলছে, এই কুম্ভকর্ণ কোথাকার, তোর এলার্মে ঘরের সবার ঘুম ভাঙ্গে কিন্তু তোর ভাঙ্গেনা কেন?
আরে এটা যে আমার আম্মু দেখি। মানে আমি স্বপ্ন দেখছিলাম। যাক আমার মোবাইলটা ভাঙ্গেনি তাহলে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৩৫

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: বুঝলাম। তবে নাম করণের সার্থকতা খুঁজে পেলাম না।

১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৪৪

মাহফুজ বলেছেন: আমি বরাবরই স্বার্থক নাম নির্বাচনে অপরিপক্ব আর লেখাগুলোও খুব যে পরিপক্ব তা তো নয়ই। আসলে চোখের মণি নিয়ে লিখা তো তাই এমন নাম দিয়েছিলাম।

২| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ১:৩১

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: যাক আমিও হাপ ছেড়ে বাঁচলাম। নতুন একটা মোবাইল কেনার হ্যাপা কম না।

১৪ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:৩২

মাহফুজ বলেছেন:

৩| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:০১

রাজীব নুর বলেছেন: বানান ভুল থাকলে পোষ্ট পড়ে আরাম পাওয়া যায় না।

৪| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১২

খাঁজা বাবা বলেছেন: ভুতুরে গল্প
স্বপ্ন ই ভাল
বাস্তবে এদের থেকে দূরে থাকেন

৫| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১২

খাঁজা বাবা বলেছেন: ভুতুরে গল্প
স্বপ্ন ই ভাল
বাস্তবে এদের থেকে দূরে থাকেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.