নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সে এক আশ্চর্য জলপ্রপাত...

সাপের শরীর হয়ে আঁধারের গাছ/ কুয়াশার বন্যায় ডুবো দেবী মাছ!

মাহী ফ্লোরা

আমি আমিই....... আকাশজুড়ে চাঁদের আলো রূপার জলে আঁকা অন্ধকারের ঠোঁটের কোনায় নীলচে হাসি বাঁকা! তারা-আলোর রথ ছুটানো একটি ডজন ঘোড়া সমস্বরে বল্লো, এ নাও গোলাপ, মাহী ফ্লোরা। ......... মহাবিশ্বের শুভেচ্ছা পেয়েছি এভাবে!

মাহী ফ্লোরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুমি গল্প হলেও পারতে...

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৯

কেমন আছো?
নীরা চমকে উঠতে গিয়ে সামলে নেয়।আস্তে করে মুখ ফিরিয়ে তাকায়।হয়ত এক সময়ের খুব চেনা মানুষটাকে দেখে একটু হাসে। তারপর বলে ভাল!

নীরা কে আজ থেকে দু বছর আগেও আমি চিনতাম।তখন নীরা ছিল সবুজ একটা পাতা।খুব ভাল গান করে সে। আমারতো মনে হয় তার ঠোঁটের পাশ দিয়ে নরম একটা সুর অযথায় খেলা করে সারাক্ষন। ছটফট করে কাঁপতো যেন টের পাওয়া যায় খুব হাওয়া দিচ্ছে, কোথাও থেকে উড়ে আসছে ঝড়ের বার্তা। এরকম ঝড় সচরাচর হয়না।

ভিড়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখলাম নীরা কে। ছেলেটা কে ছিল? মনে মনে ভাবতে ভাবতে আমিও এগিয়ে যাই।কত কে ই তো হতে পারে। নীরার জীবনের ছাব্বিশটা বছরতো আমার অজানা।

বিকেল পার হতেই কেমন যেন নেশার মত টানতে থাকলো নীরা। একসময় খুব আসা হত নীরাদের বাড়িতে। গত দেড় বছরে অবশ্য এসেছি দু একবার। নীরার প্রিয় কফি খেতে খেতে অনেকদিন আগে শোনা গানের কথা মনে করার চেষ্টা করি আমি। মনে মনে সুর তোলার চেষ্টা করি। ভাবি একদিন ঠিক সুরটা গলায় তুলে ফেলব।নীরা কে অবাক করে দিব। একা একাই খুব হাসতে থাকি।কত কি আকাশ পাতাল যে আমি ভাবি নীরা কে নিয়ে।মনে মনে একটা চিঠির খসড়া করে ফেলি,

নীরা আমি তোমার ঠোঁট টাকে চিনি বলে জানি আজ অভিমান ছলকে ছলকে পড়ছে আমদের ছাদে। কতকাল হাসি নি,জানো? কতকাল খোলা বই বিপদে পড়েছে স্বপ্নের শেষ টাকে পেয়ে। তোমাকে দেখেছি সেই কবে!

এমন কোন রূপকথা লেখা হোক যেখানে আমি তোমার কথা বলবো। একটি আড়াল আমি তোমার জন্য খুঁজি। কিছু ছইপাতা ঘাসের ভেতর যেমন হারিয়ে গেছে রূপার আঙটি টা....

সব কিছু হারিয়ে ফেললে আমি তোমার কাছেই এসে বসি, তোমাকে বলি আমার গোপন লতা। মনে পড়ে আমি তোমাকেই ভালোবাসতাম....

চিঠির ভেতর কাটাকুটি করতে করতে মনে পড়ে নীরা অভিমান করেনি। কেন করবে? চিঠিতে মিথ্যে বলতে ভাল লাগে তবু। যেন নীরা আমার জন্য হন্যে হয়ে গাছেদের, ফুলেদের, মাছেদের কাছে খোঁজ নিয়েছে। আমি আসিনি বলে খুব কেঁদেছে। এক রাশ বৃষ্টি হয়েছে কদমের হাতে।
মেয়েটাকে দেড় বছর আগে এক ভিড়ের ভেতর দুম করে বলে বসেছিলাম, নীরা আপনি সুনীল কে ছাড়তে পারবেন আমার জন্য?
একটা ছোট্ট মুহুর্ত তবু যেন আমি উত্তরের অপেক্ষায় ঘেমে নেয়ে একটা গোলাপী শীতের বিকেল কে তুলোর বল করে কানে গুঁজে দিচ্ছিলাম।
নীরা হয়ত কথাটা গুরুত্বের সাথে না নিয়েই হেসে বলেছিল, কি যে বলেন না আসিফ ভাই!

আমি আর কোনদিন কিছু বলিনি। ভয়ংকর একেকটি প্রতীক্ষার দিন কে যেতে দেখেছি বিপজ্জনকভাবে রাস্তা পার হতে।
নীরা কে আমি আসলে বোঝাতে পারিনি।আমাকে হেসে উড়িয়ে দিতে দেখেও বলা হয়নি, নীরা তোমাকে নিয়ে আমার স্বপ্নে মরে যেতে ইচ্ছে হয়।বুকের ভেতর ঘড়ির কাটা কাঁটার মত বিঁধে,আমি দুম করে মনে মনে মরে যাই।

আজ নীরাদের বাড়িতে শোকের একটা সারস গালিচা পেতে বসে আছে।নীরার মা সুচিত্রা আন্টি আমি এসেছি শুনে তার শোবার ঘরে আমাকে ডেকে পাঠালেন।নীরার সেই ঘটনার পরই উনি স্ট্রোক করেন।
আমি ঘরে ঢুকতেই রোগা ডান হাত টাকে বাড়িয়ে দেন আন্টি। যেন খুব স্বাভাবিক। আমি তার হাত টা ধরে পাশেই চেয়ারে বসলাম।মনে হয় প্রায় বিকেলেই আমি আসি আর উনি হাত বাড়িয়ে মমতার স্পর্শ দেন আমাকে। আসলে এমন কিছুই হয়না তাই ঘটনার প্রবাহ কে চোরা চোখে আমি দেখে যেতে থাকি।
মনে মনে আমি লক্ষ কথা বলতে পারি কিন্তু এমন সময় ঠিক কি বলতে হয় বুঝতে না পেরে আমি বিব্রত হই। উনি কেঁপে কেঁপে উঠেন। যেন কান্না সামলাচ্ছেন।
নীরা কে কোথাও দেখতে পাচ্ছিনা। সে কি বাসায় নেই?
হঠাৎ আমার ধ্যান ভেঙ্গে যায়। যেন রোদ এসে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে কুয়াশার ফোটা গুলো।আমি শুনতে পাই আন্টি বলছেন, এতদিন একবার ও আমাদের কথা মনে হয়নি বাবা?

ভীষন ক্লান্ত লাগে। মনে হয় ঝোঁকের মাথায় হুট করে চলে আসা বোকামি হয়েছে।

বছর দেড়েক আগে যখন আমি অপেক্ষা করছিলাম নীরা বুঝুক আমার অনুভব। আমার শুন্যতাকে আনারের দানার মত গালে মেখে লাল হোক নীরা ঠিক তখনি গোপনে গোপনে নীরা অন্যের হয়ে উঠছিল।
নীরার বাড়ি থেকে বিয়ে ঠিক করছিল। আমার অবাক চোখের সামনে দিয়ে নীরা ছেলে পক্ষের সামনে সেজে গুজে বসলো অথচ বিয়ের দিন নীরা একটা বোকা মেয়ের মত পালিয়ে গেলো প্রেমের কাছে।
নীরার ফিরে আসার খবর আমি পেয়েছিলাম কিন্তু তার চোখে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা আমি কি করে দেখতাম! তাই আসিনি। স্বার্থপরের মত আমি একা একাই একটা মায়া লালন করছি নীরা। তোমার মায়ের মাথার কাছে বসে তোমার চূর্ন ইতিহাসকে বৈধতা দিচ্ছি দেখে যাও।
ভাগ্যিস কেও মনের কথা টের পায় না।
আন্টি ব্যাকুল হয়ে আমার মুখের দিকে কেন তাকিয়ে আছেন বুঝতে পারিনা আমি। প্রশ্নের সহজ উত্তর বুঝতে না পারলে যেমন অস্থির লাগে আমার এখন তেমন লাগছে।
হঠাৎ মনে হল তিনি জানতে চাইছিলেন আমাদের সাথেই কেন এমন হল বাবা?
আমি উদাস হয়ে বসে থাকি।
আঙ্কেল ছয় মাস আগে মারা গেছেন। চমকে উঠি আমি। কিভাবে?
চোখের সামনে একটা এক্সিডেন্ট কে পাশ কাটিয়েছিলাম। আন্টির বর্ননা শুনে সব দেখতে পেলাম আবার ফ্ল্যাশব্যাকে গিয়ে।
কেন যেন আমার আবার মায়া হতে থাকলো নীরার জন্য। আন্টিকে জিজ্ঞেস করবো করবো ভাবতেই আন্টি বললেন নীরা একটু বাজারে গেছে। তুমি বসো এখনি চলে আসবে। দেখা করে যেও কিন্তু। আর বাবা নীরার জন্য এক্টা কোথাও ভাল চাকরি টাকরির খোঁজ পেলে দেখোনা বাবা। এই চাকরিটায় খুব খাটায় আবার বেতন ও খুব কম।দেখোনা আজ শুক্রবার সব ফেলে রাখা কাজ একা নীরাকে সামলাতে হয় এই এক দিনেই। আমার তো অবস্থা দেখছোই। তোমাকে আমি আমার নিজের ছেলের মত দেখি বলে এসব বলছি...

আমি শুনতে শুনতেই তলিয়ে যেতে থাকি।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: অনেকিদন পর আপনার লেখা পড়লাম। চমৎকার লাগল।

আশা করি ভালো আছেন।


শুভেচ্ছা রইল।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫২

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল আছেন আশা করি। :)

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৫৩

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: খুব ভালো লাগল গল্পটা।


গল্পে তৃতীয় প্লাস।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৯

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯

রঙ তুলি ক্যানভাস বলেছেন: জীবনের টুকরো গল্প...
সত্যিকারের ভালবাসাকে না বুঝে 'মোহে'র ভালবাসার পিছে ছোটা, তারপর সব হারিয়ে বুঝতে পারে 'ভালবাসা'টা হয়ত ভালবাসা ছিলনা,অন্যকিছু ছিল...

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৩

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর কমেন্টে।

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৮

নীরব 009 বলেছেন: লাইক দিলাইসি B-)) B-)) B-))

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৬

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: লাইক হইছে তাইলে? :-P

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: চমতকার গল্প। ভাল লাগা রইল। :)

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৮

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ধন্যবাদ আমাদের ;)

৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৫

অপু তানভীর বলেছেন: আপু অনেক দিন পর তোমার গল্প পড়লাম। কেন আগের মত লিখো না??

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪২

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: লিখতে পারিনাযে ভাইয়া। :)

৭| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০৭

কলমের কালি শেষ বলেছেন: অন্যরকম গল্প । ভালো লাগলো ।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৩

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ধন্যবাদ।

আচ্ছা নতুন কালি ঢুকানো যায়না? #:-S

৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: কই হারাইসিলেন এতদিন?

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৬

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: হাহাহা!

আসা হয়না ব্লগে। কেমন ছিলেন?

৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৭

আইয়ুব আল আমিন বলেছেন: গল্প চিরদিন গল্পই। সত্যি হয় না। এতওওওও সুন্দর গল্প, তারপরও........

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৯

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: হ্যা সত্য হয়না।

১০| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৭

ডি মুন বলেছেন:
চমৎকার গল্প
++++++

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৫

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ধন্যবাদ।

১১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:১৬

নস্টালজিক বলেছেন: খুব সুন্দর।

তুমি গল্প হলেও পারতে-নামটাও দিয়েছেও। সুন্দরম।


শুভেচ্ছা নিও, ফ্লোরা।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৭

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রইলো। কেমন আছেন? :)

১২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৮

উদাস কিশোর বলেছেন: গল্পে ভালোলাগা রইলো

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৩

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ধন্যবাদ...

১৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৫

কলমের কালি শেষ বলেছেন: দুঃখিত দেরিতে আসায় । আসলে আমার নোটিফিকেশন সবসময় ০ দেখায় । মন্তব্যের প্রতিউত্তরগুলো সামু চুপি চুপি নিজে দেখে রেখে দেয় আমাকে আর জানায় না। সামু এত্তগুলা পঁচা খুব হিংসাপ্রবন ।আমাকে কালার করার ধান্দায় ঘুরে শুধু !!... :(( :( :( :(( |-)

কালি রিফিলের কথা বলেই তো লজ্জায় ফেলে দিলেন হয়তো ভাবতেছেন আমি ফকির রিফিল করার টেকা নাই । কিন্তু আমি তো ইচ্ছে কইরা রিফিল করি না কারন কলমে কালি রিফিল করলে আপনাদের এত সুন্দর সুন্দর পোষ্টে মন্তব্য করবো কিভাবে !!... ;) ;)

১৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩

পৃথিলা আফনান বলেছেন: :)

১৫| ১৪ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: যুদ্ধ মানে, শক্রু শক্রু খেলা-
যুদ্ধ মানে আমার প্রতি তোমার অবহেলা
অবহেলা মরে যাক, ভালোবাসা জয়ী হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.