নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

@ @

মাহমুদ০০৭

@ @

মাহমুদ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কথাসাহিত্যিক নাজিব ওয়াদুদের সাক্ষাৎকার

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯



আশির দশকের সুচনা হতেই আমি তার লেখালিখির সাথে পরিচিত। তার লেখা পড়লেই বুঝা যেতো তিনি পড়াশুনা করেন এবং সবচেয়ে বড় কথা হল তিনি চিন্তা করেন।আমাদের দেশে চিন্তাশীল লেখকের সংখ্যা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে।চিন্তা না থাকলে নতুন লেখা তৈরি হয় না।নতুন লেখা তৈরি না হলে নতুন বই হয় না।নতুন বই না হলে নবতরঙ্গ সৃষ্টি হয় না।
নাজিব চিন্তাশীল লেখক এবং তার কল্পনা কাব্যের সামন্তরাল। এ ধরণের লেখককে পৃষ্টপোষকতা দেয়া পাঠকদের উচিত ও কর্তব্য বলে আমি মনে করি। নাজিব দায়িত্বজ্ঞানহীন লেখক নন।তিনি প্রতিভাবান ও পরাক্রমশালী লেখক। তার গ্রন্থাদি অপেক্ষাকৃত কম হলেও আমার মতো প্রায়ান্ধ লেখকও খুঁজে পেতে তার বই পড়ার প্রয়াস করে থাকে।

- আল মাহমুদ

লেখক নাজিব ওয়াদুদ এর উথান ৮০ এর দশকে।এবং এ পর্যন্ত নিরলস সাহিত্যসাধনায় নিয়োজিত আছেন।তিনি একজন সব্যসাচী লেখক (কথাকার,অনুবাদক, ছড়াকার,প্রাবন্ধিক,নাট্যকার)হলেও প্রথমত ও প্রধানত কথাশিল্পী।কাক ও কারফিউ (১৯৯৮), নষ্ট কাল অথবা হৃদয়ের অসুখ (২০০৮), কমরেড ও কিরিচ (২০১০) এবং পদ্মাবতী কিংবা সুন্দরী মেয়েটির নাক বোঁচা (২০১১), তার ছোটগল্প গ্রন্থ।এ পর্যন্ত উপন্যাস দুটি।দ্বিতীয় হৃদয় (২০০৬) ও বিয়ের ফুল (২০০৮)।সৃজনশীল রচনার পাশাপাশি তিনি অনুবাদেও ইতিমধ্যে বিদগ্ধ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।নোবেলবিজয়ী অরহ্যান পামুক (২০০৮), আনাড়ী রসিকজন (বালজাকের উপন্যাস, ২০১১),তার উল্লেখযোগ্য অনুবাদগ্রন্থ।পাশাপাশি ছড়াও লিখেছেন।ছড়াগ্রন্থ ফুলকুড়–নি ধানকুড়–নি (২০০৯)।এছাড়াও লিটল ম্যাগাজিন ‘পরিলেখ’ ও ‘নন্দন’ সম্পাদনা করেন।প্রিয় সামহোয়্যারইন ব্লগে তাকে এবং তার সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি পাঠককে জানানোর উদ্দেশ্যে লেখক মাসউদ আহমাদকে দেয়া তার সাক্ষাতকারটি (আংশিক)উপস্থাপন করা হল।মূলত যেসব প্রশ্নে তার সাহিত্যিক মতামত /দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে কেবলমাত্র সে সব অংশ উপস্থাপন করা হল।

মাসউদ -আপনি কিছু বলবেন বলেই লেখেন, না ভালো লাগে বলে ?

নাজিব - কিছু বলার জন্যই মূলত লিখি।তবে ভাল লাগে বলেও কিছু কিছু লিখি বৈকি।

মাসউদ - আপনি সাহিত্যচর্চা করেন কেন?শিল্পের জন্য শিল্প নাকি দায়বদ্ধতা থেকে?

নাজিব- এরকম কিছু ভেবে সাহিত্যচর্চা শুরু করিনি।তারপর একবার যখন শুরু করেছি তখন হয়তো একেক সময় একেক দৃষ্টিভঙ্গি এর পেছনে সক্রিয় থেকেছে, কিন্তু সেটাই একমাত্র উদ্দেশ্য এমন ও নয়।যাই হোক,আপনি হয়ত বুঝতে পারছেন যে কোন সাহিত্যকর্মী যখন কাজ শুরু করে, তখন তার পেছনে বিশেষ কোন উদ্দেশ্য-লক্ষ্য-প্রথমে সক্রিয় থাকে না।কারণ তখন তার যে বয়স তাতে জীবন ও শিল্পকে বোঝার মত পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে না।আসলে জীবন ও শিল্প আলাদা কিছু নয়।জীবন ছাড়া শিল্প হয় না,শিল্প ছাড়া জীবন অর্থহীন।দুটি বিষয় পরস্পরের সঙ্গে এমন ওতপ্রোতভাবে মিলেমিশে থাকে যে তাকে পৃথকভাবে অনুভব করা মুশকিল।কিন্তু প্রি - অকুপায়েড হয়ে ভাবলে বা দেখলে তাকে কারো চোখে জীবনধর্মী,কারো চোখে শিল্পময় দেখায়। তবে হ্যা,তারপরও যদি জানার জন্য পীড়াপিড়ি করেন তাহলে বলব জীবন আগে,শিল্পের চিন্তা পরে।একটা গল্প যখন লিখি তখন প্রথমত ও প্রধানত জীবনের ছবিই আঁকি,কিন্তু তাকে জীবনের সৌকর্যে সাজাতেই হয়।তা নাহলে তা সাহিত্য হবে না । সুতরাং দায়বদ্ধতা জীবনের প্রতি যেমন শিল্পের প্রতিও তেমনই।

মাসউদ- আপনার লেখার পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু বলুন। যেদিন লেখেন সেদিনটা কিভাবে কাটে?

নাজিব - আমার লেখার নিদিষ্ট কোন পদ্ধতি নেই।লেখার ধরাবাধা কোন রুটিন আমি গড়ে তুলতে পারিনি।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি থেকে কিছু একটা লিখতে বসি।আমি লেখাকে তার নিজের মত করে চলতে দিতে চাই।লেখা এগিয়ে চলে নিজের মত করে।কখনো বেধে গেলে রেখে দেই।একটা সময় ছিল যেদিন লিখতাম সেদিন নেশাগ্রস্থের মত বুঁদ হয়ে থাকতাম।এখন ঠিক সে রকম হয় না।কারণ একইসাথে নানারকম লেখা নিয়ে কাজ করতে হয়,অন্য কাজেও ব্যস্ত থাকতে হয়।

মাসউদ - গল্প উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে উপাদান সংগ্রহের জন্য প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাকে আপনি কতটুকু গুরুত্ব দেন?

নাজিব - যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকি।অভিজ্ঞতা হচ্ছে উপাদান যার সাহায্যে নানা রকম কাঠামো গড়া যায়।কিন্তু তাকে সাহিত্য বা শিল্প করে তুলতে তাকে অবয়ব দিতে হয়, তার উপর নানান রুপ ও রঙ চড়াতে হয়।

মাসউদ - এ প্রসঙ্গটি এ কারণে টানছি যে,বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি ও মানুষ এবং তাদের প্রাত্যহিক জীবনাচরণ - ভাষা আপনার গল্পে এসেছে শিল্পিতভাবে,প্রায়ই লেখকের কণ্ঠস্বর যেন তাদের নিজস্ব অস্তিত্বের ছবি আঁকে।এমন বৈশিষ্ট্য হাসানের রাঢবঙ্গের লেখায় দেখা যায় ............

নাজিব - হ্যা,হাসানের গ্রাম হচ্ছে রাঢবঙ্গের অর্থাৎ বর্ধমান -বীরভূমের গ্রাম। তারাশঙ্কর, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ও তাই।আমার ত মনে হয় হাসানের গ্রামদর্শনে তারাশঙ্করের কিছু প্রভাব আছে।আমাদের গ্রামগুলি বরেন্দ্র অঞ্চলের বিশেষ করে রাজশাহী আর চাপাইনবাবঙ্গঞ্জের।আরেকজন শক্তিশালী গল্পকারের কথা এখানে বলা উচিত।তিনি হলেন আবু বকর সিদ্দিক।তিনি এই দুই অঞ্চল নিয়েই ,লিখেছেন।কিন্তু আমার মনে হয়, আমিসহ এই চারজনের মধ্যে একটাই হয়তো মিল,সেটা হলো আমাদের সকলেরই গপের পটভূমি গ্রাম,চরিতগুলো গ্রামের মানুষ,বিশেষত কৃষক- মজুর।আর কোন মিল নেই - না জীবনদৃষ্টির,না ভাষার।

মাসউদ - লেখালিখির ক্ষেত্রে বাস্তব অভিজ্ঞতাকে আপনি কিভাবে বিচার করেন ?

নাজিব - বাস্তব অভিজ্ঞতার গুরুত্ব অপরিসীম।তাই বলে বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলে লেখা যাবে না এমন নয়।

মাসউদ - আচ্ছা আপনার গ্রামীণ পটভূমির গল্পে হাসান আজিজুল হকের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন প্রভাব আছে বলে ধরা যায়?

নাজিব - তার ব্যক্তিসংসর্গ ও গল্পের ভাষা আমাকে প্রথমদিকে অভিভূত করেছিল।কিন্তু আমার মনে হয় তার প্রভাব আমার উপর পড়েনি।আসলে প্রত্যেক লেখকের সাহিত্যরুচি গড়ে উঠে তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা এবং ব্যক্তিত্বের উপর ভিত্তি করে।সেদিক থেকে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে আমার দূরত্ব বেশ ব্যাপক।তারপরেও বলব,হাসানের গ্রামভিত্তিক রচনাগুলোই তার শ্রেষ্ঠ রচনা, যদিও তার মধ্যে এক ধরণের কৃত্রিমতাও আছে।তবু আমি সেসব গল্পের ভক্ত পাঠক।

মাসউদ - আপনার সাহিত্যে মানবিক বিশ্লেষণ মনে হয় একটু রহস্যময়,কিন্তু গভীরতাকে স্পর্শ করে। রহস্য সৃষ্টির কারণ একটু ব্যাখ্যা করবেন ?

নাজিব - বাংলা সাহিত্য প্রধানত রিয়েলিস্টিক।আবার অপ্রধান হলেও অত্যন্ত শক্তিশালী হচ্ছে মনোবিশ্লেষণ ধারাটি।তৃতীয় আরেকটি ধারা রয়েছে যার মধ্যে এ দুটো ধারার সম্মিলন ঘটেছে।
যাই হোক,আপনারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন যে,আমার গল্পচর্চা বাংলা গল্পসাহিত্যের এই তৃতীয় ধারার মধ্যে পড়ে।সমকালের নবীন-প্রবীণ অধিকাংশ গল্পকারই এই ধারার অন্তর্ভুক্ত।তবে আমার কিছু গল্প আছে একেবারেই রিয়েলিস্টিক,আবার কিছু গল্প আছে মনোবিশ্লেষণাত্মক এবং নিরীক্ষাধর্মী।যে ধারার গল্পই হোক আমি গল্পে প্রত্যেকটি চরিত্রের মানবিক দিকটাকেই অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এমনকি আমি যে কয়টি বক্তব্যপ্রধান গল্প লিখেছি সেগুলাতেও এই বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে।আর রহস্যময়তার কথা বলছেন?আমি মনে করি ছোটগল্পের এটি একটি অপরিহার্য কৌশল।এ কৌশলে যে যতটা পারঙ্গম তার গল্প ততটাই উৎকর্ষগামী এবং আকর্ষণীয় বটে।আর এই রহস্যময়তার ভেতর দিয়ে গল্পকার চরিত্রের বা বিষয়ের গভীরতাকে স্থান দিতে চান,কিন্তু এই স্পর্শ যে শারীরিক অনুভূতি সৃষ্টি না করে মানসিক(সাইকোলজিক্যাল) বোধ ও চেতনার উম্মেষ ঘটায় সেটা সম্ভব হয় এই রহস্যময়তার কারণেই।

মাসউদ - ছোটগল্প যুগ যন্ত্রণার ফসল- এই কথাটি আপনি কিভাবে বিবেচনা করেন?

নাজিব - কথাটা একটু বদলে বলা দরকার।সেটা হল - যুগ চেতনা।একটা গল্পের সফলতাও অনেকাংশে নির্ভর করে সেটি যুগের প্রবণতা ও চেতনাকে কতটা ধারণ করতে পারল তার উপর। তবে ভুলে গেলে চলবে না যে,প্রকৃত শিল্পীকে কালাতিক্রমী হতে হয়।কিন্তু সেটা হতে হয় সমকালকে ধারণ করেই।
মাসউদ - আপনি ত প্রচুর অনুবাদ করেছেন।অনুবাদ কি আপনার মৌলিক সাহিত্যচর্চাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে না ?
নাজিব-হ্যা , প্রচুর অনুবাদ করেছি। এখনও করছি।অনুবাদের প্ত্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয় বিশ্বসাহিত্য পড়তে গিয়ে।কোনও কোনও লেখা পড়তে গিয়ে মনে হত এই কারণে এই লেখাটি বাংলাভাষী পাঠকের সামনে হাজির করা দরকার।আর একটা জিনিস মনের ভেতর উদয় হয়।সেটা হলো আমি মনে করলাম একটা গল্প,প্রবন্ধ বা উপন্যাস অনুবাদ করতে গেলে সেই লেখাটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়।তার প্রত্যেকটি শব্দ প্রত্যেকটি বাক্য উপমা-উৎপ্রেক্ষা - রুপক - প্রতীক বাগভঙ্গিকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা সুযোগ ঘটে।এই অভিজ্ঞতা হয়তো আমার নিজের লেখার সময় কাজে লাগবে।মূলত এই কারণে নব্বই দশকের প্রথম ভাগে অনুবাদের কাজ শুরু করেছিলাম।সম্পাদক - পাঠকদের চাহিদার কারণে সেটা বহুমাত্রিক আর বহুলপ্রজ হয়ে উঠে।
হ্যা , বেশি বেশি অনুবাদ সৃজনশীল লেখকের নিজের লেখার ক্ষতি করে বলেই আমার মনে হয়।প্রথমত, নিজের লেখার সময় কমে যায়। অনুবাদ করতে করতে সেই ভাষাভঙ্গির প্রভাব নিজের ভাষাভঙ্গির উপর পড়তে পারে।২০০৭- ২০০৮ সালে আমি যখন অত্যাধিক অনুবাদ করেছি তখন আমাকে এই বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

মাসউদ -বিশ্বসাহিত্যের সাথে তুলনা করলে বাংলা সাহিত্যের বর্তমান অবস্থান কোন পর্যায়ে?বাংলা সাহিত্য চর্চায় ঢাকা না কলকাতা এগিয়ে?

নাজিব -এই বিষয়টা বিস্তৃত আলোচনার দাবি রাখে।এখানে সে সুযোগ নেই।আমি সংক্ষেপে যেটা বলতে চাই সেটা হচ্ছে,সাহিত্য একটি নির্দিষ্ট ভাষা এবং সেই ভাষাভাষী মানুষের জীবনবোধ ও জীবনচর্চাকে অবলম্বন করে সৃষ্টি হয়।তাই আঙ্গিক এক রকম হলেও লেখা শেষ পর্যন্ত এক রকম হয় না।
বাংলা সাহিত্যের কথা যদি বলি তাহলে স্বীকার করতেই হবে যে,আমাদের সাহিত্যে আধুনিকতা মূলত ইউরোপ হতে আমদানী করা এবংসাহিত্যের বিচারপদ্ধতি ও ইউরোপীয় বিবেচনার দ্বারা প্রভাবিত।ইউরোপ যে মানদণ্ড বেধে দিয়েছে তার ভিত্তিতেই বিশ্বসাহিত্য যাচাই বাছাই করা হয়।
অথচ প্রত্যেক ভাষার নিজস্ব সাহিত্যকে তার নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য দ্বারাই পরীক্ষা করা উচিত।অবশ্য তার মানে এই নয় যে সার্বজনীনতা থাকবে না।যাই হোক,যে সাহিত্য ইউরোপীয় সাহিত্যের মত নয়,তাকে বিশ্ব দরবারে ঠাই না দেবার তৎপরতা এখনো শক্তিশালী।এটা উপনিবেশকতার কুফল।উপনিবেশিক কারণে ইউরোপের বাইরের যে সব সাহিত্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছে,সেসব সাহিত্যকে বিশ্বমানের মর্যাদা 'দেওয়া' হয়েছে।বাংলা ভাষা আজতক সেই 'সুবিধা'আজতক 'অর্জন' করতে পারেনি।তা নাহলে, আমি মনে করি বাংলা সাহিত্য বিশ্বের যে কোন সাহিত্যের সাথে তুলনীয়।বিশেষ করে কবিতা ও ছোটগল্পের ক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্য খুবই সমৃদ্ধ।তবে হ্যা,একটা কথা অবশ্য স্বীকার করতে হবে যে আমাদের সাহিত্যের গড়পড়তা মান আশানুরূপ নয়।উচ্চমানসম্পন্ন রচনাও প্রচুর নয়।আজকাল বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে উপন্যাসের জয়জয়কার।কথাসাহিত্য দিয়েই আজকাল সাহিত্যের গুণ মান বিচার করা হচ্ছে।এই ক্ষেত্রে আমরা তুলনামূলকভাবে দুর্বল।
বাংলাদেশ আর পশ্চিমবাংলার সাহিত্যের মধ্যে সাধারণভাবে তুলনা করলে আমি বলব কেউ কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই।তবে উৎকর্ষ এবং পরিমাণ একই সাথে বিবেচনায় নিলে বলব আমরা কবিতা ও প্রবন্ধে অগ্রগামী,ওরা এগিয়ে কথাসাহিত্যে।

মাসউদ - আমাদের কথাসাহিত্য এগুচ্ছে না কেন?

নাজিব - এগুচ্ছে না কথাটা পুরোপুরি ঠিক নয়।বলা ভাল কাঙ্ক্ষিত গতিতে,কাঙ্ক্ষিত প্রাচুর্যে হচ্ছে না।এর অনেক কারণ আছে। একটা বড় ব্যাপার ঐতিহাসিক।বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ একই ভাষাভাষী হলেও ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে এদের শিক্ষা,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিকাশ ঘটেছে ভিন্ন পথে ভিন্ন ভাবে।এই কারণে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা(মূলত হিন্দু)যত দ্রুত ও যত সহজে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশের নিজস্ব ধারাবাহিকতাকে যত দ্রুত ও যত সহজে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশের নিজস্ব ধারাবাহিক্তাকে অনুসরণ এবং ইউরোপীয় ধারাকে আত্মস্থ করতে পেরেছে,বাংলাদেশের বাঙালি( মূলত মুসলিম) জনগোষ্ঠী তা পারেনি।তারপরেও কবিতা ও প্রবন্ধের অগ্রসরতা অতুলনীয়।কিন্তু সেতা কথাসাহিত্যে ঘটতে পারেনি। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের দিগভ্রান্তিও একটা বড় কারণ।চল্লিশের দশক হতেই এর শুরু,এবং সেটা আজো চলছে।আমরাবাংলাদেশের গল্প -উপন্যাস না লিখে ইউরোপীয় গল্প - উপন্যাস লেখার দিকে ঝুকে পড়েছি।আমরা বিষয় -আঙ্গিক- জীবনবোধের নিজস্বতাকে আবিস্কার করার পরিবর্তে ইউরোপ আমেরিকার অন্ধ অনুসরণ,এমনকি অন্ধ অনুকরণ করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু সেটাও সফলতার সাথে করতে পারিনি।কারণ, আমরা আমাদের ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং বাঙ্গালিত্বকে বিসর্জন দিতে ও সক্ষম হইনি।

মাসউদ - তাহলে বাংলাদেশের একজন সাহিত্যিকের সামনে মূল সমস্যাগুলো কী?একটু বিস্তারিতভাবে বলুন।

নাজিব- সমকালে লেখক হিসেবে আমরা প্রধানতঃদুটি সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছি।একটা হলো,বিশবপ্রগতির,আসলে ইউরোপ আমেরিকার সঙ্গে আমাদের পশ্চাঁদপদতার বিশাল ফারাক সৃষ্টি হয়েছে।বাংলা কথাসাহিত্যের জন্মই অনুকরণ আর অনুসরণ দিয়ে।মাঝখানে তা দ্রুত নিজস্ব চরিত্র অর্জন করে।কিন্তু এখন আমরা আবার সেদিকে ছুটে চলেছি।তার কারণ ঐ ফারাক।আমাদের জীবন এখন উপনিবেশ-কালের চেয়েও ব্যাপক ও গভীরতর অর্থে পাশ্চাত্য-নির্ভর।আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক,সাংস্কৃতিক ও নৈতিকভাবে পশ্চিমের বিশ্বস্ত দাসে পরিণত হয়েছি।পশ্চিম যা করছে আমতা তা-ই করতে চাই।আমরা আমাদের মাঠে ঘাটে ইউক্যালিপটাস লাগাই। হাইব্রিড ফসলের চাষ করি।পারলে যমুনার চরে টুইন টাওয়ার লাগাতে চাই।আমার গল্পের পটভূমি পদ্মার চর,যেখানে বিদ্যুৎ নেই,রাস্তা নেই,স্কুল নেই,হাসপাতাল নেই,কিন্তু আমার মগজের ভেতরে আছে নিউইয়র্ক,লন্ডন,প্যারিস।আমার চরিত্র ফুলবানু, আব্দুল হালিমরা লেখাপড়া জানে না,সারাদিন কাজ করে,অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটায়,আল্লাহ-বিল্লাহ করে,কিন্তু আমার মগজে মাক্সবাদ,যৌনতত্ত্ব,মনোবিকলনতত্ত্ব,আধুনিকতাবাদ,,আধুনিকতাবাদ,উত্তরআধুনিকতাবাদ,উপনিবেশবাদ,উত্তর উপনিবেশবাদ,ইত্যাদির জটলা। কথা না বাড়িয়ে বলি,আমার মগজের চিন্তা আর আমার দেশ - কাল মানুষের বাস্তবতাকে আমি মেলাতে পারি না।পটভূমি ও চরিত্রের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে গেলে মগজের চিন্তাকে কাজে লাগানো যায় না,বা মগজের চিন্তাকে যেহেতু আমি কাজে লাগাতে চাই (দাসত্ববোধ আমাকে প্রলুব্ধ ও বাধ্য করে)সে কারণে এই পটভূমি ও চরিত্রের উপর নির্ভর করা চলে না। আমি যেহেতু বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক দাস,সেজন্য আমাকে আমার পটভূমি ও চরিত্রের সাথে প্রতারণা করতে হয়। সে কারণেই আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার লেখকরা যা পেরেছে আমরা তা পারিনি।যদিও উপনিবেশ তাদের কাছে এমনকি ধর্মও ভাষাও কেড়ে নিয়েছে।এই মেলাতে না - পারার ব্যর্থতা ঢাকতে আমরা বোধ হয় বিষয় হিসেবে শ্লোগান (রাজনীতি নয়),কামুকতা (যৌনতা)নয়,ঐতিহ্যবিরোধিতা(প্রগতি নয়) প্রভৃতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।আর তার সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছি পশ্চিমা সংস্কৃতি, বুদ্ধিবৃত্তি,ও চিন্তার দাসত্ব। আর একটি সমস্যা হলো ভাষার ধুম্রজাল।একপাতা- আধপাতা পড়ার পরই যদি পাঠককে ক্লান্ত ও বিরক্ত হতে হয়, সে ভাষা শেষ পর্যন্ত সাহিত্যের শত্রুতে পরিণত হয়, যদিও তার লক্ষ্য সাহিত্যের উৎকর্ষই।অনুবাদ আর ইংরেজির মাধ্যমে বিশ্বসাহিত্য পাঠ করে আমার ধারণা হয়েছে, কোনও বড় লেখক,একেবারেই হাতে গোনা দু'একজন ব্যতিত,ভাষাকে দুর্বোধ্য করেন না।গল্পের মাঝে প্রবন্ধের স্বাদ নিতেও পাঠক প্রস্তুত বলে মনে হয় না।

মাসউদ -কথাশিল্পী নাজিব ওয়াদুদ এবং ব্যক্তি নাজিব ওয়াদুদ কে আপনার সবচেয়ে বেশি প্রিয়?

নাজিব- ব্যক্তি নাজিব ওয়াদুদ ভেবে বিস্মিত হয় কথাশিল্পী নাজিব ওয়াদুদ আমার তুলনায় কতই না সৃজনশীল,মননশীল,আর কথাশিল্পী নাজিব ওয়াদুদ ব্যক্তি নাজিব ওয়াদুদের বড়ত্বের কাছে সব সময় মস্তক অবনত করেই রাখে। এই দুইজন পরস্পরের প্রতি বেশ একটা সমীহ ভাব পোষণ করে।


নাজিব ওয়াদুদ সম্পর্কিত কিছু লিঙ্ক
নাজিব ওয়াদুদের গল্প মাটিমাখা মানুষের ঘ্রাণ
গল্প- 'জানালার বাইরে' by অরহ্যান পামুক (অনুবাদঃ নাজিব ওয়াদুদ)
কবিতার ব্যক্তিকতা ও সর্বজনীনতা মাহমুদ দারবিশ অনুবাদ : নাজিব ওয়াদুদ
মাহমুদুল হক উন্মূল ব্যক্তিজীবনের শব্দভাস্কর নাজিব ওয়াদুদ
পদ্মাপাড়ের বউ -নাজিব ওয়াদুদ

মন্তব্য ৬০ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৬০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭

মামুন রশিদ বলেছেন: এই মেলাতে না - পারার ব্যর্থতা ঢাকতে আমরা বোধ হয় বিষয় হিসেবে শ্লোগান (রাজনীতি নয়),কামুকতা (যৌনতা)নয়,ঐতিহ্যবিরোধিতা(প্রগতি নয়) প্রভৃতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।আর তার সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছি পশ্চিমা সংস্কৃতি, বুদ্ধিবৃত্তি,ও সিন্তার দাসত্ব। আর একটি সমস্যা হলো ভাষার ধুম্রজাল।একপাতা- আধপাতা পড়ার পড়ই যদি পাঠককে ক্লান্ত ও বিরক্ত হতে হয়, সে ভাষা শেষ পর্যন্ত সাহিত্যের শত্রুতে পরিণত হয়, যদিও তার লক্ষ্য সাহিত্যের উৎকর্ষই।


একজন কথা সাহিত্যিককে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ মাহমুদ । ভালো লেগেছে তার সাহিত্য দর্শন, সাহিত্য নিয়ে ভাবনা । সুযোগ পেলে তার গল্প পড়ার ইচ্ছা রাখি । চমৎকার এই কাজটি মাঝে মধ্যে করার জন্য অনুরোধ রইলো । আর ফেবুতে যেটা শেয়ার দিলেন, বিখ্যাত লেখকদের 'কেন লিখি?' সিরিজটা ব্লগে দেয়ার জন্য অনুরোধ রইলো ।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৩

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই ।
উনাকে,মোয়াজ্জেম আজিম , শাহাদুজ্জামান, আবু বকর সিদ্দিক উনাদের নিয়ে লেখার পরিকল্পনা আছে।
নাজিব ওয়াদুদ একজন শক্তিমান সাহিত্যিক। এমন একজন সাহিত্যিক আমাদের অগোচরে থেকে যাচ্ছে,এটা খুবই দুঃখজনক।অল্প লেখা,কেন্দ্র হতে দূরে অবস্থান,উনার লাজুকনিভৃত মানস এসবের জন্য দায়ী। এইটা নিয়ে সাক্ষাৎকারে
লেখক মাসউদ আহমেদ ও জিজ্ঞেস করেছিলেন -
মাসউদ - আমরা জানি, আপনি বিনয়ী,আত্মপ্রচারবিমুখ।আপনি ঢাক - ঢোল পেটাতে পছন্দ করেন না।সে কারণে অনেকেই মনে করেন আপনার যতখানি প্রাপ্য আপনি তা পাচ্ছেন না।কিন্তু প্রচার ত দরকার,নাকি?
নাজিব - কিছুদিন আগে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসনাত আব্দুল হাইয়ের সাথে পরিচয় হয়েছে।তো প্রথম দিনই তিনি বললেন,'আপনি এত ভাল লেখেন ,অথচ ঢাকায় আপনার পরিচিত বা বন্ধু সার্কেল নেই বলে আপনাকে নিয়ে ততটা আলোচনা হয় ন।অগ্রজ ও অনুজের সমর্থন ছাড়া কোন লেখকের পক্ষে প্রতিষ্ঠা পাওয়া খুব কঠিন।' আমি এ নিয়ে ভাবিনি কখনো।ঢাকায় একটা বন্ধুগোস্থী গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি ।
তার ছোটগল্প গুলো অবশ্যই পাঠ করা উচিত।বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন নেবার মত কিছু ছোটগল্প যেমন -
আবাদ,খনন জীয়নকাঠি আরও দুয়েকটি এমন গল্প তিনি লিখে ফেলেছেন।

তার আবাদ গল্প সম্পর্কে প্রাবন্ধিক নুরুল হক বলেছিলেন- তার ‘আবাদ’ গল্পটি বাংলাসাহিত্যের জীবনঘনিষ্ট
যে কোন শ্রেষ্ঠ গল্পের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে।নাজিব ওয়াদুদ-এর ‘আবাদ’ নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। একজন নারী ও ফসলীক্ষেতের জন্মদানের যোগ্যতাকে অভিন্ন সমতলে বিবেচনা করার এক অব্যর্থ শিল্পরুচির পরিচয় এ গল্প।


তার আবাদ গল্পটি পড়ে প্রাবন্ধিক খুরশিদ আলম বাবু বলেছিলেন -অদ্ভুত গল্প।আমার স্পষ্ট মনে আছে গল্পটা পড়ে অনেকক্ষণ
কোন কাজ স্বাভাবিকভাবে করতে পারিনি।স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলাম অনেকক্ষণ।সোনার নদীর মত হৃদয়ে বয়ে গিয়েছিল
একটি সৎ গল্প পাঠের দুর্লভ আনন্দ। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় একবার কৌতুক করে সোমনাথ ভট্টাচার্যের একটি গল্প পড়ে মন্তব্য করেছিলেন
- ঈশ্বরের হাত ধরে লেখা হয়েছে।আপাতত এই মন্তব্যটি নাজিব ওয়াদুদের গল্পের জন্য লাগিয়ে দিলাম ।

নাজিব ওয়াদুদ সম্পর্কিত কিছু লিঙ্কের একদম শেষে উনার একটা গল্পের লিঙ্ক দেয়া হল ।

ভাল থাকবেন প্রিয় মামুন ভাই । সময় সুযোগ করে উনাকে নিয়ে আরো লেখার আশা রইল ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৯

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: বিখ্যাত লেখকদের 'কেন লিখি?' এটা কে সাজিয়ে ব্লগে দেয়ার ইচ্ছে আছে ।
:)

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৪

আবু শাকিল বলেছেন: কথা সাহিত্যিকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন মাহমুদ ভাই :)

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৯

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় শাকিল ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।

৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:



কথাসাহিত্যিক নাজিব ওয়াদুদের সাথে পরিচিত করানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ , প্রিয় মাহমুদ০০৭ :)

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: প্রিয় মাইনুল ভাইকে দেখে অনেক খুশী হলাম ।
অনেক ধন্যবাদ ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম ;)

ভাল থাকবেন প্রিয় মাইনুল ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।

৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৪

সকাল রয় বলেছেন:

শেষের দিকে একটা লাইন দু'বার চলে এসেছে মনে হচ্ছে। ঠিক বুঝতে পারছিনা। আমারই চোখের ভুল কি-না?

যাই হোক লাগলো ভালো ।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: না ভাই, ঠিকই দেখেছেন :)
ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই ।

ঠিক করে নিলাম ।
ভাল থাকবেন কবি ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আবারো হাই ফাইভ অভিবাদন । :)
৫ বছর আসলেই অনেক বড় ব্যাপার ।
আপনার প্রতি অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।

৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩১

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: নতুন এক সাহিত্যিকের সাথে পরিচিত হতে পেরে ভালো লাগলো ।

পোস্টে ভালোলাগা । :)

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০১

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ পার্সিয়াস রিবর্ণ ভাই :)
ভাল থাকবেন ।

৬| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৪

ডি মুন বলেছেন:
প্রকৃত শিল্পীকে কালাতিক্রমী হতে হয়।কিন্তু সেটা হতে হয় সমকালকে ধারণ করেই।


আমরাবাংলাদেশের গল্প -উপন্যাস না লিখে ইউরোপীয় গল্প - উপন্যাস লেখার দিকে ঝুকে পড়েছি।আমরা বিষয় -আঙ্গিক- জীবনবোধের নিজস্বতাকে আবিস্কার করার পরিবর্তে ইউরোপ আমেরিকার অন্ধ অনুসরণ,এমনকি অন্ধ অনুকরণ করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু সেটাও সফলতার সাথে করতে পারিনি।কারণ, আমরা আমাদের ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং বাঙ্গালিত্বকে বিসর্জন দিতে ও সক্ষম হইনি।
আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক,সাংস্কৃতিক ও নৈতিকভাবে পশ্চিমের বিশ্বস্ত দাসে পরিণত হয়েছি


আমার গল্পের পটভূমি পদ্মার চর,যেখানে বিদ্যুৎ নেই,রাস্তা নেই,স্কুল নেই,হাসপাতাল নেই,কিন্তু আমার মগজের ভেতরে আছে নিউইয়র্ক,লন্ডন,প্যারিস।আমার চরিত্র ফুলবানু, আব্দুল হালিমরা লেখাপড়া জানে না,সারাদিন কাজ করে,অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটায়,আল্লাহ-বিল্লাহ করে,কিন্তু আমার মগজে মাক্সবাদ,যৌনতত্ত্ব,মনোবিকলনতত্ত্ব,আধুনিকতাবাদ,মাক্সবাদ,যৌনতত্ত্ব,মনোবিকলনতত্ত্ব,আধুনিকতাবাদ,উত্তরআধুনিকতাবাদ,উপনিবেশবাদ,উত্তর উপনিবেশবাদ,ইত্যাদির জটলা। কথা না বাড়িয়ে বলি,আমার মগজের চিন্তা আর আমার দেশ - কাল মানুষের বাস্তবতাকে আমি মেলাতে পারি না।


অসাধারণ বললেও কম বলা হবে এই সাক্ষাৎকারে কৃত প্রশ্নের জবাবে তার কথাগুলো। উনার দৃষ্টিভঙ্গি, দর্শন, ও চিন্তার এই সামান্য নমুনা পেয়েই আমি অভিভূত। একবারই উনার সাথে দেখা হয়েছে(আশাকরি, আরো বহুবার হবে)। ব্যক্তি হিসেবে উনি খুবই বিনয়ী। স্থির। আস্তে আস্তে মিষ্টি করে কথা বলেন।

পোস্ট প্রিয়তে নিয়ে গেলাম।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে মাহমুদ ভাই।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৪

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় মুন ভাই :)

প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা রইল ।
উনার দৃষ্টিভঙ্গি, দর্শন, ও চিন্তার সাথে আমিও একমত /
ভাল থাকবেন ভাই ।
শুভকামনা রইল ।

৭| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪০

টুম্পা মনি বলেছেন: একজন গুনীমানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন গুনী মাহমুদ ভাইজান।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: এখনো '' বে '' গুণী আছি ;)। গুণীদের পেছনে ঘুরে ঘুরে গুণী হবার চেষ্টায় আছি । :P
হাহাহ । ভাল থাকবেন ।
শুভকামনা নিরন্তর।

৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৬

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: খুব সুন্দর আয়োজন , সাক্ষাৎকার উপভোগ করেছি !

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২২

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: উপভোগ ই আসল কথা :)
আপনাকে দেখে ভাল লাগছে।
ভাল থাকবেন প্রিয় অভি ভাই ।
অনেক শুভকামনা রইল ।

৯| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৫

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: কোন সাহিত্যকর্মী যখন কাজ শুরু করে, তখন তার পেছনে বিশেষ কোন উদ্দেশ্য-লক্ষ্য-প্রথমে সক্রিয় থাকে না।কারণ তখন তার যে বয়স তাতে জীবন ও শিল্পকে বোঝার মত পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে না।আসলে জীবন ও শিল্প আলাদা কিছু নয়।জীবন ছাড়া শিল্প হয় না,শিল্প ছাড়া জীবন অর্থহীন।দুটি বিষয় পরস্পরের সঙ্গে এমন ওতপ্রোতভাবে মিলেমিশে থাকে যে তাকে পৃথকভাবে অনুভব করা মুশকিল।


একটা গল্পের সফলতাও অনেকাংশে নির্ভর করে সেটি যুগের প্রবণতা ও চেতনাকে কতটা ধারণ করতে পারল তার উপর। তবে ভুলে গেলে চলবে না যে,প্রকৃত শিল্পীকে কালাতিক্রমী হতে হয়।কিন্তু সেটা হতে হয় সমকালকে ধারণ করেই।


সাহিত্য একটি নির্দিষ্ট ভাষা এবং সেই ভাষাভাষী মানুষের জীবনবোধ ও জীবনচর্চাকে অবলম্বন করে সৃষ্টি হয়।তাই আঙ্গিক এক রকম হলেও লেখা শেষ পর্যন্ত এক রকম হয় না।
বাংলা সাহিত্যের কথা যদি বলি তাহলে স্বীকার করতেই হবে যে,আমাদের সাহিত্যে আধুনিকতা মূলত ইউরোপ হতে আমদানী করা এবংসাহিত্যের বিচারপদ্ধতি ও ইউরোপীয় বিবেচনার দ্বারা প্রভাবিত।ইউরোপ যে মানদণ্ড বেধে দিয়েছে তার ভিত্তিতেই বিশ্বসাহিত্য যাচাই বাছাই করা হয়।
অথচ প্রত্যেক ভাষার নিজস্ব সাহিত্যকে তার নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য দ্বারাই পরীক্ষা করা উচিত।অবশ্য তার মানে এই নয় যে সার্বজনীনতা থাকবে না।



সাহিত্য, বাংলা সাহিত্য নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা উঠে এসেছে উনার সাক্ষাতকারে। নতুন যারা লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত তারা এই লেখাটা থেকে অনেক কিছু জানতে পারবে এবং নিজের লেখালেখিতে অনেক উন্নতি সাধন করতে পারবে।

নাজিব ওয়াদুদের কিছু লেখা পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে।
অনেকেই লিখছেন কিন্তু ছোটগল্পের প্রকৃত শিল্পী দেশে খুবই কম। নাজিব সেই বিরলদের একজন।
উনার " আবাদ" গল্প সম্পর্কে উনাদের সাথে আমিও একমত । কোন সন্দেহ নেই,একসময়
এ গল্পটি বাংলা সাহিত্যের ক্ল্যাসিক একটা গল্প হিসেবে মুল্যায়িত হবে।তার দেখা খুব সূক্ষ্ম ও
গভীর।উনার সাক্ষাৎকার শেয়ারের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫১

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: লেখক বলেছেন: সাহিত্য, বাংলা সাহিত্য নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা উঠে এসেছে উনার সাক্ষাতকারে। নতুন যারা লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত তারা এই লেখাটা থেকে অনেক কিছু জানতে পারবে এবং নিজের লেখালেখিতে অনেক উন্নতি সাধন করতে পারবে।
- আমিও তা মনে করি ।
লেখালিখির চর্চায় একজন খাটি লেখকের সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি,
সাহিত্যভাবনা জানাটা গুরুত্বপূর্ণ । আমরা যারা লেখালিখিতে নতুন
তাদের জন্য এ ধরণের সাক্ষাৎকার ভাবনার খোরাক দিতে পারে।
'অনেকেই লিখছেন কিন্তু ছোটগল্পের প্রকৃত শিল্পী দেশে খুবই কম। নাজিব সেই বিরলদের একজন। - একমত ।

ভাল থাকবেন প্রিয় প্রবাসী ভাই , শুভকামনা ।

১০| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৬

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: পোস্টে ৬ নং ভাল লাগা এবং সরাসরি প্রিয়তে।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয় প্রবাসী ভাই ।
ভাল থাকবেন ।

১১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩২

পার্থ তালুকদার বলেছেন: আর রহস্যময়তার কথা বলছেন?আমি মনে করি ছোটগল্পের এটি একটি অপরিহার্য কৌশল।এ কৌশলে যে যতটা পারঙ্গম তার গল্প ততটাই উৎকর্ষগামী এবং আকর্ষণীয় বটে।------ -- -- সত্যি তাই।

অনেক ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই ।

এই ধরনের আরো পোস্ট দিলে আমরা উপকৃত হব বলে মনে করি।

ভাল থাকবেন।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: হাহাহ , চমৎকার একটা জায়গা হাইলাইট করেছেন । একটু রহস্য মানে ছলাকলা না থাকলে জমবে কিভাবে ? :)

চেষ্টা করব এই ধরণের আরো পোস্ট দেয়ার ।
ভাল থাকবেন প্রিয় পার্থ ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।

১২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: একটা গল্প যখন লিখি তখন প্রথমত ও প্রধানত জীবনের ছবিই আঁকি,কিন্তু তাকে জীবনের সৌকর্যে সাজাতেই হয়।তা নাহলে তা সাহিত্য হবে না । সুতরাং দায়বদ্ধতা জীবনের প্রতি যেমন শিল্পের প্রতিও তেমনই।

আমার লেখার নিদিষ্ট কোন পদ্ধতি নেই।লেখার ধরাবাধা কোন রুটিন আমি গড়ে তুলতে পারিনি।

আর রহস্যময়তার কথা বলছেন?আমি মনে করি ছোটগল্পের এটি একটি অপরিহার্য কৌশল।এ কৌশলে যে যতটা পারঙ্গম তার গল্প ততটাই উৎকর্ষগামী এবং আকর্ষণীয় বটে।আর এই রহস্যময়তার ভেতর দিয়ে গল্পকার চরিত্রের বা বিষয়ের গভীরতাকে স্থান দিতে চান,কিন্তু এই স্পর্শ যে শারীরিক অনুভূতি সৃষ্টি না করে মানসিক(সাইকোলজিক্যাল) বোধ ও চেতনার উম্মেষ ঘটায় সেটা সম্ভব হয় এই রহস্যময়তার কারণেই।


আমি মনে করলাম একটা গল্প,প্রবন্ধ বা উপন্যাস অনুবাদ করতে গেলে সেই লেখাটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়।তার প্রত্যেকটি শব্দ প্রত্যেকটি বাক্য উপমা-উৎপ্রেক্ষা - রুপক - প্রতীক বাগভঙ্গিকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা সুযোগ ঘটে।এই অভিজ্ঞতা হয়তো আমার নিজের লেখার সময় কাজে লাগবে।


অসাধারন সাক্ষাতকার । খুব ভালো লাগলো । উপস্থাপন করার জন্য কৃতজ্ঞতা ।

শুভ কামনা রইল কথা সাহিত্যিক সাহেব ও আপনার জন্য ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন:
সাক্ষাতকারের চুম্বক অংশটাই হাইলাইট করেছেন ।
আমার , আপনাদের কাজে লাগলেই পোষ্টের সার্থকতা ।
ভাল থাকবেন কলমের কালি ভাই ।
শুভকামনা নিরন্তর ।

১৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৮

মুহিব জিহাদ বলেছেন: সম্পুর্ন পড়ে কমেন্ট করতে হবে, বর্তমান অবস্থান অর্ধেকের বেশি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আচ্ছা ভাই অপেক্ষায় রইলাম ।
ভাল থাকবেন । :)

১৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৩৪

এহসান সাবির বলেছেন: শেয়ারে ধন্যবাদ।


চমৎকার পোস্ট।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় এহসান ভাই ।
ভাল থাকবেন ।

১৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কথাসাহিত্যিক নাজিব ওয়াদুদ সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো ভ্রাতা ।

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ।

ভালো থাকবেন :)

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: জানাতে পেরে আমারও ভাল লাগছে ।
ভাল থাকবেন রায়্হান ভাই :)
শুভকামনা রইল ।

১৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৮

মুহিব জিহাদ বলেছেন: হ্য, শেষ করে ফেললাম, ভালোই লেগেছে।

পোস্টে ভালোলাগা এবং পিলাস ++++

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৪

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ মুহিব ভাই :)
অনেক ভাল থাকা হোক আপনার ।

১৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫

তুষার কাব্য বলেছেন: খুব বেশি জানতাম না এই গুনি শক্তিমান সাহিত্তিক সম্পর্কে।খুব ভালো লাগলো জেনে।ধন্যবাদ আপনাকে তাঁকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় তুষার ভাই ।
ভাল থাকবেন ।

১৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

সুমন কর বলেছেন: উনার সম্পর্কে জানা ছিল না। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

সময় করে পড়তে হবে।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই ।
অপেক্ষায় রইলাম ।

১৯| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৩

কোলড বলেছেন: Never knew about him. I'll definitely collect his works. Thanks for a wonderful and insightful interview.

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪১

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আপনার মন্তব্যে পরিশ্রম সার্থক মনে হচ্ছে। মনোযোগী পাঠের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ভাল থাকবেন ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।

২০| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: নাজিব ওয়াদুদ নামটা জানা আছে। কিন্তু তার কোনো লেখা পড়ার সুযোগ আমার হয় নি। তবে সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্য বেশ স্পষ্ট। জোরালো যুক্তি। সম্প্রতি হরিপদ দত্তের প্রবন্ধ পড়েও ব্যাপারটা জানা হয়েছিল কিছুটা যে ইউরোপের ছাঁচে আমাদের বাংলা সাহিত্য। ওইযে পদ্মার চরের কথা বললেন, যেখানে বিদ্যুৎ নেই, আমাদের আজকালকার সাহিত্যে আমাদের সত্যিকারের জীবন, জীবনবোধ অনুপস্থিত। এমন কি গল্প বলার ধরনটাও আমাদের নিজস্ব নয়।
আমরা আমাদের সাহিত্যে স্বকীয়তা অর্জন করতে না পারলে কী হবে, আমাদের বই বেরুচ্ছে প্রতি বছর, পুরস্কারও পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের সাহিত্যের মানে কোনো উন্নতি হচ্ছে না।

যেমন বাংলাদেশের মানুষের পকেটে অনেক টাকা, খাচ্ছে ভালো, পরছে ভালো, থাকছে ভালো জায়গায়, দেশে অনেক ধরনের নির্মাণ কিন্তু বাইরের দেশের কাছে রয়ে গেছি ফকিরা। এ দায় আসলে কার?

সাহিত্যের দুর্দশাটা কাদের হাতে পড়ে সৃষ্টি হলো? এ দিকটি কোনো সাহিত্যিকের আলোচনায় পাচ্ছি না আমরা।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ জুলিয়ান দা । এমন একটা মন্তব্য করলেন যেটা বিভিন্নমুখী
বিকিরণ করে।


সাহিত্যের দুর্দশা নিয়ে দু চারটা বলি।এক্ষেত্রে প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে কোন কোন
বিষয়কে আমরা '' দুর্দশা ''বলে চিহ্নিত করব ? নানা মুনির নানা মত।একজনে একই ব্যাপারে বৃহস্পতি দেখে ত আরেকজনে শনি।

বিষয় ঠিক নেই ,তাই কারণের ও জন্ম হয় না, তাই আলোচনা ও হয় না /।

ভাল থাকবেন জুলিয়ান দা ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।








২১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১২

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: সাক্ষাৎকার পড়তে ভালো লাগে বরাবর! নতুন একজন লিখিয়ের সাথেও পরিচয় হল! চমৎকার!

নাজিব - বাস্তব অভিজ্ঞতার গুরুত্ব অপরিসীম।তাই বলে বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলে লেখা যাবে না এমন নয়।
- এই লাইনে বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলেও লেখার সম্ভাবনাতে ভরসা লাগলো! প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অতিশয় মূল্যবান কিন্তু বড় খরুচে! কল্পনাতেও কিছু কাজ চালাতে পারতে হবে!

শুভেচ্ছা নিন!

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪২

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: শুভেচ্ছা নিলাম ;)

লিখতে তিনটা জিনিসের যে কোন দুইটা লাগে , ১) অভিজ্ঞতা,
২) কল্পনা ৩) পর্যবেক্ষণ এবং তার থেকে নিঃসৃত উপলব্ধি।

উনার ছোটগল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ । একা ডেমিক লি তাকে নিয়ে
কিছুটা আলোচনা হলেও আম পাঠকের নিকট তিনি এখনো অপরিচিত
রয়ে গেছেন । এটা আমাদের জন্যই দুর্ভাগ্যজনক ।

যারা শিল্পের প্রতি কমিটেড তাদের প্রতি আমাদের পাঠক দের ও একটা দায়িত্ববোধ থাকে উচিত।

আমার প্রিয় মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে অনেক কথাই বললাম প্রিয় ইফতি ভাই ।
অনেক দিন পর আপনাকে ব্লগে বিচরণ করতে দেখে খুবই ভাল লাগছে।
আপনার পরবর্তী কবিতা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম । ভাল
থাকবেন ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।

ভাল থাকবেন ভাই ।

২২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৭

অন্তরন্তর বলেছেন:

ধন্যবাদ এমন একজনকে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য। আসলেই লজ্জা লাগে
যে একজন লিখকের সম্পর্কে না জানতে পারাটা। উনার ইন্টারভিউ বেশ জোরালো।
বেশ ভাল লাগল । আগের প্রায় সকল নামকরা লিখকরা নাকি প্রকৃতি, নিরিবিলি,
মাটির স্পর্শে থাকত। এখন আপনি এই প্রকৃতি কোথায় পাবেন মাহমুদ ভাই।
প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে আমরা অথবা আমাদের মনটাও আজকাল ডিজিটাল
হয়ে যাচ্ছে।
ভাল থাকুন নিরন্তর।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: মন ডিজিটাল, কমার্শিয়াল দুটাই হয়ে গেছে , ভাই ।
উনার ছোটগল্প গুলো পড়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইল।
প্রকৃতির নির্যাস উনার লেখার ভেতরে আছে।

ভাল থাকবেন ভাই । শুভকামনা রইল ।

২৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

নেক্সাস বলেছেন: বাহ উনাকে আমি আজি জানলাম। আপনাকে ধন্যবাদ

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্নবাদ নেক্সাস ভাই ।
ভাল থাকবেন ।

২৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৮

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

উঁনার অনুবাদ পাঠের মাধ্যমে প্রথমত লেখার পরিচিতি লাভ ৷ পরে কিছু ছোট গল্প পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে ৷ বেশিরভাগ গ্রামীণ জীবন ও প্রেক্ষাপটের চরিত্রেরা অতি সাধারণ ও মাটি ঘেষা ৷ মাটির সোঁদা গন্ধমাখা প্রতিটি লাইনে আর বিস্তৃত বর্ণনা মনে হয় চিত্রনাট্যের দৃশ্যায়ন ৷ অনেক ডিটেলস্ লেখা ৷ ভিন্ন পেশা ও শহরককেন্দ্রিকতার বাইরে থেকেও ধীরে ধীরে উঠে আসছেন মুগ্ধ সব রচনা নিয়ে ৷ উনার লেখার দর্শন ও লেখার পিছনের মনন জানা গেল এবং অনেক কথাই অনেক লেখককে ভিন্নভাবে আশপাশটা দেখতে ও প্রকাশভঙ্গিতে প্রভাব ফেলবে নিশ্চয় ৷

কিছু লাইন বেশ দার্শনিক মতবাদ ও দেশিয় স্বকীয়তায় অনন্য ৷

সৃজনে সুন্দর থাকবেন ৷

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৯

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ভিন্ন পেশা ও শহরককেন্দ্রিকতার বাইরে থেকেও ধীরে ধীরে উঠে আসছেন মুগ্ধ সব রচনা নিয়ে ৷ উনার লেখার দর্শন ও লেখার পিছনের মনন জানা গেল এবং অনেক কথাই অনেক লেখককে ভিন্নভাবে আশপাশটা দেখতে ও প্রকাশভঙ্গিতে প্রভাব ফেলবে নিশ্চয় ৷

- চমৎকার বলেছেন জাহাঙ্গীর ভাই ।

বরাবরের মতই আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগছে ।
ভাল আছেন নিশ্চয় ?

দেরিতে মন্তব্য দেয়ার জন্য দুঃখিত ।

নতুন বছরের শুভেচ্ছা । :)

ভাল থাকবেন প্রিয় জাহাঙ্গীর ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল ।


২৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৩

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: অনেক না জানা বিষয় সম্পর্কে জানা হলো ------- আন্তরিক ধন্যবাদ

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপা। :)

নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল।


দেরিতে মন্তব্য দেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত ।

ভাল থাকবেন আপা।

২৬| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১৬

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: দ্বি বর্ষ পূর্তির শুভেচ্ছা হে অপেক্ষাকৃত কম মহান ব্লগার।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আমি অপেক্ষাকৃত কম মহান দেইখাই
কেউ কুনু খুঁজ নিল না রে ভাই :(( :(( ;)
দুক্ষু কই :P রাখতাম ।

আপ্নাকেও ধন্যবাদ প্রিয় প্রবাসী ভাই , এই নগণ্য ইনফো মনে রাখার
জন্য , শুভেচ্ছার জন্য ।

আপনি এর ডি মুন ভাইয়ের সাথে পরিচয় আমার এই বছরের প্রাপ্তি ।

ভাল থাকবেন ভাই ।
শুভকামনা রইল।

২৭| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৪

অন্ধবিন্দু বলেছেন:







মাহমুদ,
আছেন ভালো ? অগ্রজদের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান মূল্যায়নে আমরা কেমন যেনো উদাসীন হয়ে উঠছি। তবুও আশায় বুক বাধিঁ এমন লিখায় দৃষ্টি রেখে ...

জুলিয়ান সিদ্দিকীর চিন্তান্বিত প্রশ্ন দুটিরে সহজ উত্তর রবিবাবু দিয়ে গেছেন সে কবেই। জাহাঙ্গীর আলমের মন্তব্য পড়ে হুষ্ট হলাম এই ভেবে- ব্লগে সাহিত্য পাঠক আছে তবে ! সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা রইলো ...

ভালো থাকবেন। চর্চায় থাকবেন।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:১৯

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । আপনাকে দেখে ভাল লাগছে ।

আছি মোটামুটি । আপনি ?

জুলিয়ান দার উত্তর রবিবাবুতে আছে , আর মাজা ভাঙ্গা উত্তর সন্দীপনে
আছে/

জাহাঙ্গীর ভাই অনেক গুণী পাঠক ও লেখক । সামুতে উনার মত এমন
' একজন মানুষ পাওয়া - তাও এই সময়ে - সৌভাগ্যের ব্যাপার ।

ভাল থাকবেন ভাই ।
অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য ।

২৮| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: বাংলা সাহিত্যের বন্ধ্যাত্ব অনেকদিনের চলছে।

আমাদের দেশে চিন্তাশীল লেখকের সংখ্যা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে।চিন্তা না থাকলে নতুন লেখা তৈরি হয় না।নতুন লেখা তৈরি না হলে নতুন বই হয় না।নতুন বই না হলে নবতরঙ্গ সৃষ্টি হয় না।

খুব সত্য কথা। আশা রাখি এই অবস্থা খুব শীগগীরি দূর হবে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আপনাকে দেখে ভাল লাগছে আপা/।

হ্যা , কথা গুলো খুবই সত্যি । আপনার মত আমিও আশাবাদী ।

আশা রাখি এই দুরবস্থা কেটে যাবে।

ভাল থাকবেন ।

শুভকামনা রইল ।

২৯| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯

এহসান সাবির বলেছেন: নতুন বছরে নতুন পোস্ট চাই।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৬

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: হাহাহ আজ যে গল্পটা দিলাম সেইটা আপনি যেদিন কমেন্ট করলেন
সেদিন দেবার কথা । ভাবছি গল্প দিয়ে আপনাকে গল্পের লিঙ্ক দিয়ে জবাব
দেব । :) নগদে একশান :P তাআর হইল কই । নানা জায় ঝামেলায় আর দিলাম না । আজ দিলাম ভাই ।

আপনি যেভাবে অনুপ্রাণিত করেন এর ঋণ শোধ করতে পারব না ।

ভাল থাকবেন প্রিয় সাবির ভাই :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.