নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ, এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় ।

মাহমুদ পিয়াস

মানুষ হবার চেষ্টা করছি ! পারছি কই !

মাহমুদ পিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয় বাংলা\'র জন্মকথা

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৩

পাক সৈন্যটা তার দিকে বন্দুক তাক করে বলেছিলো, তুমি শুধু একবার বলো “পাকিস্তান জিন্দাবাদ । আমরা তোমাকে ছেড়ে দেবো” । রমজান হাটু গেড়ে, দু-মুঠে মাটি তুলে বলল “জয় বাংলা” । সৈন্যটা তার দিকে বজ্রগতিতে গুলি ছুড়তে লাগলো বন্দুকের সব গুলি তার শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়ার পর, আমাকে ওরা জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি চাও ? আমি বললাম, আগে মৃত্যুকে ভয় পেলেও, রমজানকে দেখার পর আমার মাঝে থেকে সেই ভয়টা দূর হয়ে গেছে । পাশে থাকা অফিসারটা বলতে লাগল, “এবার আর আমাদের কেউ রক্ষা করতে পারবে না । আমাদের আত্বসর্মপণ করতেই হবে । বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই হবে” ।
চোখ মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন, আমার আজকের রেডিও অতিথি , বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান । যিনি পাকিস্তানিদের হাত থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন । কিন্তু উনার বন্ধু রমজান, “জয় বাংলা” শব্দটা আঁকড়ে ধরেই শহীদ হয়েছিলেন । “বাংলাদেশ” নাম শোনার ইচ্ছা তার পুরন হয় নি ।
এই সেই ‘জয় বাংলা’ যে কথাটার প্রচলন ঘটিয়েছিলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান । যার জন্ম না হলে, এই বাংলাদেশের জন্ম হতো না । মুক্তিযুদ্ধের পরে, যার এক কথায় মিত্রবাহিনী ফিরে গিয়েছিল । অন্য কোনো দেশে স্বাধীনতা লাভ করার পর, এতো তাড়াতাড়ি মিত্রবাহিনীরা ফিরে যাওয়ার নজির বিরল । কিন্তু তার কথায়, মিত্রবাহিনী এই দেশ থেকে চলে গিয়েছিলো । এই মানুষটাকেও কি আমরা সকল রাজনীতির উর্ধে রাখতে পারি না ? আমি আওয়ামীলীগ বুঝি না, আমি জামায়াত বুঝি না, কিন্তু আমি এই মানুষটাকে বুঝি, যার একটা ডাকে, সাত কোটি বাঙ্গালী নিজের জীবনকে পাকদের হাতে তুলে দিবে, কিন্তু জয় বাংলা মুখ থেকে সরাবে না । এটাকে ব্যবহার করে হয়তো কেউ কেউ রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে, তাই বলে কি আমরাও সেই শব্দটাকে ‘জঙ্গল রাজনীতি’র সাথে জড়িয়ে একাকার করে ফেলবো ? এই শব্দটাকে কি আমরা সকল রাজনীতির উর্ধে রাখতে পারি না ?
‘জয় বাংলা’ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান । স্বাধীন দেশে বাস করবেন আর মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করবেন না, এটা হতে পারে না । আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের সবকিছুর উর্ধে রাখতে হবে । এটা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই । আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো, এটা যেমন সত্য, সেই সময় কিছু মানুষ তার বিরোধিতা করেছিলো, এটাও সত্য । তারা এখনো আমাদের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারে নি ।
প্রোগ্রামের সময় অনেকেই বলছিলেন, আমরা কি সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হতে পেরেছি ? শাহজাহান আলীও তার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, “কিছু কিছু মানুষের কারনে আমরা নিজেদেরকে ‘পরাধীন’ বলতে পারি না । তিরিশ লক্ষ্য প্রাণের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি ‘স্বাধীন’ শব্দটাকে অর্জন করে নিয়েছি, এটা আমাদের কেউ দিয়ে যায় নি । সামান্য কিছু ঘুষখোর,দুর্নীতিবাজ, সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ এর কারনে আমারা স্বাধীন নই, একথা আমি কখনোই বিশ্বাস করবো না ।
মুক্তিযোদ্ধা বরজান আলী আক্ষেপ করে আমাকে বলছিলেন, “বছরের বাকি ৩৬৪ টা দিন আপনারা কোথায় থাকেন, সেদিন তো কেউ আমাদের কে ডাকেন না, আমাদের কথাগুলো কেউ শুনতেও চান না । যখন বিজয় দিবস আসে, তখন আমাদের ডাক পড়ে । ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে পতাকা লাগিয়ে বা কয়েকটা মুক্তিযুদ্ধের ছবি আপলোড দিলেই দেশপ্রেমিক হওয়া যায় না । আমার বন্ধুরা জীবন দিয়ে এদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদেরকে মতো তরুণদের দিয়ে গেছে । আমরা আপনাদের কাছে, আপনাদের জীবন চাই না, আপনারা আপনাদের নিজের অবস্থানে সৎ থেকে, ছোট্ট দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, এটাই মৃত্যুর আগে আপনাদের কাছে আমার শেষ ইচ্ছা”

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভঅর বলেছেন মহান মুক্তিযোদ্ধা। তাকে সালাম।

আপনাদের জীবন চাই না, আপনারা আপনাদের নিজের অবস্থানে সৎ থেকে, ছোট্ট দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, এটাই মৃত্যুর আগে আপনাদের কাছে আমার শেষ ইচ্ছা”
নতুন প্রজন্ম সহ সকলেই আশা করি এই আহবানের যথাযথ সম্মান করবেন।
++++++++++++++++

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭

মাহমুদ পিয়াস বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.