নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ, এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় ।

মাহমুদ পিয়াস

মানুষ হবার চেষ্টা করছি ! পারছি কই !

মাহমুদ পিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোটিভেশনওয়ালা

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫২

'না পড়লে রেজাল্ট ভালো হবে না',
'পরিশ্রম না করলে জীবনে উন্নতি হবে না'....
এগুলা তো মুখস্ত কথা ভাই, তারপরেও তোর মোটিভেশন স্পিকারের কাছে যাওয়া লাগে ক্যান ?

কারন হলো, মোটিভেশন স্পিকার যখন বলে, 'সিজিপিএ ইজ নট ফ্যাক্ট, তখন চোখে একটা প্রশান্তি ভাব অাসে ! মনে হয়, তাইলে হুদাই পড়ার কি দরকার ! তারা এও বলেন, কেতাবী পড়াশোনার চাইতে টেকনিক্যাল দক্ষতার দিকে বেশী মনোযোগ দাও ! অারে ভাই, তাইলে হুদাই ক্যালকুলাস, মেস এনালাইসিস, কার্শপ কারেন্ট/ভোল্টেজ ল, থেভনিন থিওরেম পইড়া লাভ কি ? ছোটকাল থেকে একটা টিভি/রেডিও মেরামত করা দোকানে হেল্পারি করলেই তো EEE পড়ুয়া ছেলেটার চাইতে বেশী দক্ষ হতে পারতাম, না কি ?
কেও হয়তো যোগ করবে, ওটা জাস্ট একটা সম্মান ! অাচ্ছা, তাইলে একটু হলেও পড়ার দরকার অাছে, প্রমান হলো !
এবার অাসি পরের কথায়, ধরুন অাপনি ওয়ালটন কোম্পানীতে সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে চান ? তাহলে শুধু সার্ভিসিং জানলেই চলবে ?
তাহলে, হুদাই ট্যাকাপয়সা খরচ না করে বাচ্চাকাল থেকে মেকানিকের দোকানে টিভি মেরামত শিখতাম, তাইলেই তো সার্ভিসিংয়ের চাকরিটা পেয়ে যেতাম ! তাহলে পড়াশোনা লাগসে কোথায় ?
কোম্পানীর দরকার কাজ, অামি কাজ জানি ! তাইলেই তো ল্যাঠা চুকে গেলো ! ডিগ্রির কি দরকার ? কিন্তু তবুও কোম্পানীগুলা সার্ভিসিংয়ের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা ছেলে/মেয়েগুলা নিয়োগ দেয় ! শুধু পাশ করাওয়ালাকে দেয় না, এদের মধ্যে যে একটু কাজ জানে তাকে দেয় ! শুধু কাজ জানাওয়ালাকে দেয় না, "যে কাজ জানে এবং যার সিজি ভালো তাকেই দেয়" !
কিন্তু এই সিজি অার কাজ দুটোকেই ভালো জানতে হলে, অাপনাকে ক্লাসের পড়াটা ঠিক করে বাসায় এসে অনলাইনে/অফলাইনে অাপনাকে কাজ শিখতে হবে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছাত্ররা তো ক্লাস/ল্যাব/এসাইনমেন্ট শেষ করেই কুল পায় না, সে বাড়তি কাজ শিখবে কখন ?
এরপরেও যে শিখতে পারবে, সেই কেবল চাকরির দৌড়ে এগিয়ে থাকবে ! এতোকাল এটাই হয়ে অাসছে !

অথচ মোটিভেশনওয়ালারা কথা শুরুই করেন 'সিজিপিএ ইজ নট ফ্যাক্ট' লাইন দিয়ে, অার অামার মতো স্টুডেন্ট যারা এমনিতেই পড়তে বসে না, তারা রাত জেগে ইউটিউবে এইসব মোটিভেশন শুনে সকাল ১১টায় ঘুম থেকে ওঠে ! তারপর ব্রাশ করে ভাবে, পড়ে কি হবে কাজ শিখতে হবে, কারন গুরু বলেছেন, সিজি ইজ নট ফ্যাক্ট !
এবার টেনেটুনে পাশ করা এবং টুকটাক কাজ জানা সিজিওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে দেখেন, কতদিন ধরে সে চাকরিহীন অবস্থায় অাছে ! ভাইবা বোর্ড পর্যন্তও সে যেতে পারে না শুধুমাত্র তার সিজি খারাপ বলে !
তাহলে সিজিই কি সব ?
ভাইলোগ, প্রতিযোগীতামূলক বিশ্বে অাপনাকে টিকে থাকতে হলে, অাপনাকে অবশ্যই কাজ জানতে হবে, ভার্সিটির সোস্যাল অর্গানাইজেশনগুলোর সাথে যুক্ত থাকতে হবে, সেই সাথে অাপনার গর্জিয়াস সিজি থাকতে হবে ! এবার অাপনি এই কাজগুলা সব করেন তারপর দেখেন, মনে হবে ২৪ঘন্টায় দিন না হয়ে ৪৮ঘন্টায় দিন হলে ভালো হতো ! বাথরুমে বসে মনে হবে, ধূরু ইন্টিগ্রেশনের সূত্রগুলা মুখস্ত হওয়ার অাগেই বাথরুম চেপে গেলো, খাওয়া কমায় দিতে হবে... !
কিন্তু সফল হওয়ার এসব মন্ত্র দিতে গেলে লোকে অার পয়সা খরচ করে মোটিভেশন শুনতে যাবে না, সুতরাং তাদের কাছে 'সিজি নট ফ্যাক্ট' লাইনটা অত্যন্ত শ্রতিমধুর ! শুনলেই মন জুড়ায় যায় !
ভাইসব, ওই মোটিভেশনওয়ালা এতোদূর গেছে তার সিজির জোরেই ! খোজ নিয়ে দেখেন তার সিজি কতো ?
এরপরেও যারা কয়েকজনের উদাহরন দিয়ে বলবেন, অামার চাচাতো ভাইয়ের বন্ধুর বড়ভাইয়ের শালার সিজি কম হয়েও সে অাজ মাইক্রোসফটে ইঞ্জিনিয়ার হতে পেরেছে, তাহলে অাপনাকে অামি শতহাজার উদাহরন দিতো পারবো, যারা শুধুমাত্র রেজাল্ট খারাপের কারনে ভালো চাকরি পায় না ! হয়তো অাপনিও অনেক ভালো সিজিওয়ালা চাকরিহীন দেখাতে পারবেন, কিন্তু অামি অাগেই বলেছি, সিজি অার কাজ দুটাই অাপনাকে উচু করে রাখতে হবে ! এবার সিজি অার কাজ জানাওয়ালা বেকার দেখান ?

সুতরাং ভাইসব, ওইসব মোটিভেশন শোনা বাদ দিয়া পড়তে বসেন, জীবনে এই পড়াটাই সাথে থাকবে মোটিভেশন না ! কারন যদি সিজিটা টপ রাখতে পারেন, দেখবেন জুনিয়ররা এসে অাপনার কাছে এসে বলছে, 'ভাই কিভাবে পড়লে সিজিটা দেখতে সুন্দর হবে একটু বলেন তো' তখন দেখবেন অাপনার সিজির দাম কতো !
ওইরকম মোটিভেশন সবাই দিতে পারে(দিলামও), কিন্তু গর্জিয়াস সিজিহীন বাস্তবের জীবন খুবই কঠিন বস, কথাটা যত তাড়াতাড়ি মাথায় ঢুকাতে পারবেন, ততই অাপনার লাভ !!
সারকথাঃ প্রচুর পড়ো তারপর কিছু সময় বাকী থাকলে সেটুকুও পড়ো, বাকীসময়টুকুও পড়ো, এরপর যদি একটু সময় পাও, তাইলে কাজ শিখে নিজেকে সেই লাইনে অাগায় রাখো !
যে প্রচুর পরিশ্রম করতে বলে, প্রচুর এবং প্রচুর পড়তে বলে সে কথা কখোনোই মোটিভেশনাল স্পিচ হতে পারে না, মোটিভেশন সেটাই যেটা অাপনাকে হালকা খুব সামান্য এবং অল্প পরিশ্রমে বিশাল বাড়িগাড়ি কোটিকোটি টাকাপয়সাওয়ালা হবার স্বপ্ন দেখাবে, বাস্তবে সেসব মোটিভেশন দিল্লিকা লাড্ডু !

এখানেও কিছু ভাইলোগ লেবু চিপার মতো কইরা মোটিভেশন পাইলেন, তাহলে অার কি !
যান, পড়তে বসেন !!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৯

আখেনাটেন বলেছেন: ভাই কি মোটিভেশনের কপচানিতে ডিমোটিভেটেড নাকি! ;)

মোটিভেশন হল রকেটের পেছনে অাগুন লাগার মতো, যখন আগুনটা লাগে তীব্র গতিতে ছুটে চলে।
জ্বালানী শ্যাষ রকেটও ভস্মীভূত। :P

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৫

সাফাত আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমি যদি চাকরি না পাই, মানুষের কাছ থেকে ইজ্জত ও যদি না পাই, যদি কপালে চারটা খাবার জুটে, সেটাই আমার জন্য যথেষ্ট । ফালতু লোকগুলার কাছ থেকে আমার ইজ্জতের প্রয়োজন নেই । যত বড় হই, আমার ছোটরাই আমাকে স্যার বলবে, আমার সমমানের যে তার কাছে আমি কিছুই না । জীবন অনেক সংক্ষিপ্ত, এখানে সেটেলমেন্টের কোন প্রয়োজন নেই । যদি মৃত্যুর আগে আমাকে তিন মাস হাসপাতালের বিছানায় শুতে হয়, তাহলে আমার ক্যারিয়ারের সকল অর্জন মৃত্যুর কাছে মূল্যহীন । সকল অশান্তির মূলে রয়েছে, টাকা, খ্যাতি এবং অত্যাধিক নারীপ্রীতি । এইসবের পেছনে ছুটে জীবনটাকে দুবির্ষহ করতে চাই না ।

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:২৬

শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: ভাইজান দেখি পুরান গর্তেই পড়ে থেকে সুর তুলতেছেন নতুনের!

বাংলাদেশ সহ সব স্থানের মোটিভেশনাল স্পীকার নিয়ে আমার এত বেশীই চুলকানী যে আমি তাদেরকে মোটিভেশনাল স্পীকার না বলে 'মুতে ভাসাইন্নার দল' বলি। কিন্তু..... আপনার কথা গুলা পড়ে আমি এতটাই হাসছি, যা ৬ডিজিট স্যালারীর ব্যাটার কথা শুনেও হাসি নাই।

ভাই, আপনি তো সেই চাকরীই করতে হবে এই 'চাকর' মনভাব নিয়ে পড়ে আছেন। ছোট বেলা থেকে রেডিও টিভির দোকানে বসে যদি কাজ শিখেন, আপনাকে ১৫-২০ হাজার টাকায় কোন কম্পানিতে কেন চাকরী নিতে হবে? বরং আপনি মাসে আপনার নিজের প্রতিষ্ঠানে বসেই কামাবেন তার থেকে ঢের বেশী।

দেশে একজন বিবিএ বা এমবিএ করা লোকের স্টার্টিং স্যালারী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধানমন্ডি ৪/এ তে দাড়িয়ে যে লোক পিয়াজু, বেগুনী, ছোলা, সিংগাড়া বিক্রি করে তার থেকে অনেক কম। আর্ধেকও না; ৪ভাগের এক ভাগের মত! আর যদি ঝাল মুড়ি ওয়ালার সাথে তুলনা করেন, তাহলে কাছাকাছি হলেও হতে পারে; মনে হয় না ঝালমুড়ি ওয়ালার সাথে সব সময় পেরে উঠবে!

যে কাজ জানে, সে কাজ করে; সে কেন চাকরীর ইন্টারভিউ বোর্ডে যাবে? তাকে কেন চাকরীই করতে হবে? আপনি আপনার মোটিভেশনের কেন্দ্রবিন্দুতে চাকরীতে নিয়ে রেখে অন্যের দোষ খুঁজতে গেলে তো হবে না।

লেখাপড়া করা সার্টিফিকেট ওয়ালা লোক যখন মোবাইল রিপেয়ারিং এর জব এর জন্য কোন প্রতিষ্ঠানে এপ্লাই করে নিজের যোগ্যতা প্রমানের বিশাল লড়াই করে, তখন মোতালিব প্লাজায় কোন একজন অর্ধ শিক্ষিত লোক ঘুপচি একটা দোকানে বসেই সপ্তাহে ঐ লোকের এক মাসের স্যালারি পকেটে পুরে!

উদাহরণ দুই পক্ষেই টানা যাবে। তবে আপনি যদি শুধুমাত্র চাকরীকেই সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু ধরেন, তাহলে আপনার সাথে পাগলেও পারবে না।

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৪৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: তেনারা কমন কিছু লোকের উদাহরণ দেন। কিন্তু বাকী সবাই যে ঐ জায়গায় যেতে পারেনি তার কথা টানেন না। তবে আমরা এসব কথা শুনলে মজা পাই, তৃপ্তি পাই। লেখায় সহমত...

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: একদিন তো চলে যেতেই হবে।

৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩

নীল আকাশ বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.