নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন #আম জনতা...

রোমান্টিক বুইড়া

স্বপ্ন হাসিমুখের...!!!

রোমান্টিক বুইড়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

"স্কুল,এক্সাম এবং আমি"

১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

ছোটবেলা থেকেই আমি প্রচন্ড শিক্ষা অনূরাগী
খুবই ভালই স্টুডেন্ট ছিলাম।
এত ভাল ছিলাম যে মুখে বলাই বাহুল্য।
.
খালি ক্লাস থ্রিতে অংকে একবার ২ পেয়েছিলাম,
এই যা! এরপরে ক্লাস six বা seven এ ওঠার পর থেকে ten পর্যন্ত
দুইটার বেশি সাবজেক্টে কোন দিনও ফেল করি নাই।
.
(ফাইনাল পরীক্ষায়)
শুধু অংক আর ইংলিশেই ফেল করতাম।
আর কোনটায় ফেল করতাম না।
কিন্তু, এভাবেই আমার হাইস্কুল জীবন কাটতে লাগল।
মানুষ চিন্তা করত 1st, 2nd, 3rd হওয়ার ।
.
আর আমি চিন্তা করতাম :
“এক সাবজেক্টে ফেল করলে বিবেচনায় পাশ।
দুইটায় করলে বিশেষ বিবেচনায় ।
আর তিনটায় করলে ফেল।
সুতরাং তিনটায় কিছুতেই ফেল করা যাবে
না।”
আর আমি কি এতই খারাপ ছাত্র যে তিনটায়
ফেল করব??
বিশেষ বিবেচনায় হলেও পাশ করেই ছাড়তাম!!!
৩ বিষয়ে ফেল করার ছাত্র অন্তত আমি ছিলাম না।
.
যে দিন পরীক্ষার রেজাল্ট দিত ,
তার ৩দিন আগে আর ৩দিন পরে স্কুলের ত্রিসীমানায় ঘেঁষতাম না।
কিন্তু একদিন কপালটা ছিল খারাপ ।
.
এমনই দিনে স্কুলে
গেলাম যেদিন ছিল রেজাল্ট দেওয়ার date.
রেজাল্ট টা যখন হাতে আসল,
দেখলাম অংকে ডাবল জিরো।
অংকে আমি সারা জীবনই ফেল করেছি,
কিন্তু, ডাবল জিরো কোনদিন অন্তত পাইনি। আর পেলেও অন্তত জানিনা।
(কারণ রেজাল্টের দিন তো আর স্কুলে যেতাম না )
.
শুন্য দুইটা দেখে বুকের মধ্যে ধক করে উঠল।
লজ্জায় কচু গাছের সাথে ফাঁস দিয়ে মরে যেতে ইচ্ছা করছিল।
কিন্তু কচু গাছ আমার ভার বহন করতে পারবেনা বলেই দিলাম না।
.
আর শুধু ভাবছিলাম এ রেজাল্ট আমি বাড়ির সবাইকে দেখাবো কেমন করে!!
রেজাল্ট সিট টা হাতে নিয়ে বাড়ির দিকে
হাঁটছি আর কল্পনা করছি আমার উপর আজ কি কি হবে।
.
আমার আব্বার স্বভাব ছিল এরকম,
উনি সব সময় রেজাল্টটা নিয়ে এমন এক জায়গায় বসতেন যাতে বাড়ির সবাই শুনতে পায়।
তারপর উনার মাইকের গলা নিয়ে চিল্লায়ে এভাবে বলতেন
:
“ ক্লাসে বাংলায় সর্বোচ্চ নাম্বার ৮২,
আর উনি পেয়েছেন ৩৩ ।
হিসাব বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ নাম্বার ৮৮,
আর উনি পেয়েছেন ৩৮ ।
ইংরেজীতে সর্বোচ্চ নাম্বার ৯৪,
আর উনি পেয়েছেন ১৩।
অংকে সর্বোচ্চ নাম্বার ১০০,
আর উনি পেয়েছেন ৫।”
.
আমার চোখের সামনে শুধু ওই সীন টাই ভাসছিল।
বাড়িতে গেলে কি না কি হয় এই ভেবে,
আমার সারা শরীরের রক্ত যেন হিম হয়ে আসছিল।
আর কিছুতেই যেন পা চলছিল না।
মনে হচ্ছিল বাড়ি যেন কত দূরে !!
.
ফেল নিয়ে আমার কোন চিন্তা ছিল না।
কিন্তু টেনশন ছিল ওই জিরো দুইটা নিয়ে।
"বাতেন" স্যার সারাদিন আমার বাপেরে খ্যাচাইব।
আর কিছুনা জিরো !!
এক পেলেও বলা যেত কিছু একটা তো পেয়েছি।
ডাবল জিরো নিয়ে তো আর সংসার করা যায় না।
.
চট করে একটা বুদ্ধি মাথায় আসলো। ভাবলাম এই জিরো দুইটাকে তো ৪০ এ কনভার্ট করা যায়।
কিন্তু ওটা করার সাহস হলো না।
কারণ আমি ৪০ পেয়েছি এটা কেউ কোন কালেও বিশ্বাস করবে না।
পরে এটা নিয়ে ঘাটাঘাটি হবে আর
আমি ধরা খেয়ে যাব।
আর ফলাফল হবে আরো ভয়াবহ।
.
তাই ৪০ না বানিয়ে ০৪ বানানো যাক।
এটা অন্তত সবাই বিশ্বাস করবে
আর এ নিয়ে ঘাটাঘাটিও হবেনা।
০৪ ও ফেল তবে শুন্য পাওয়ার কলঙ্ক তো হবেনা!
ফেল তো আমি সবসময় ই করি।
ওটা আবার এমন কি?
ডিসিশন নেয়া হয়ে গেলো।
এখানে দুইটা শূন্য। পরের শূন্যটার উপর আরেকটা শূন্য বসিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে।
কাঁপা কাঁপা হাতে কলমটা নিলাম ।
উত্তেজনায় সারা শরীর কাঁপছে। সুন্দর করে
পরের শূন্যটার উপর একটা শূন্য বসিয়ে সস্তির নি:শ্বাষ ছাড়লাম।
.
কিন্তু একি হলো!!!!!!!!!
নিজের চোখকে যেনো বিশ্বাস করতে পারছি
না।
এ আমি কি করলাম !!! হায় হায় হায়।
মাথার উপর বাঁশ পড়ল।
হাতের কাপাকাপিতে ৩য় শূন্যটা ২য় শূন্যের উপর না পড়ে পড়ল দুইটার মাঝখানে।
হয়ে গেল তিন শূন্যের পিরামিড !!!!!!!
.
ওরে বাবা রে আজ বুঝি শেষ,
এরচেয়ে তো আগেরটাই ভাল ছিল।
শূন্য দুইটার মাঝখানে গ্যাপ ছিল না।
(মানে এরকম ছিল ০০)
একেবারে গায়ের সাথে লাগানো ছিল।
৩য় টা যোগ হওয়ায় ওটা পিরামিড হয়ে যায়।
.
বাড়িতে সবাই এটা দেখে অট্টহাসির রোল পড়ে গেল।
আমি যেন একটা সার্কাসের জোকার।
সবাই আমাকে নিয়ে মজায় লেগে গেলো।
বাবা এই কান্ড দেখে শাস্থি মওকূপ করে দিলেন।
আর বাবা আজও আমাকে এটা নিয়ে খ্যাপায়।
আর বলে ,
“মানুষতো অংকে ডাবল জিরো পায়।
তুই তো ডাবল জিরোর ও যোগ্য না।
তুই পেয়েছিস তিনটা জিরো!”
.
স্কুল জীবনের সেসব দিনগুলো ভিষন মিস করি।
কি করে যে অত দ্রুত দিন গুলো শেষ হয়ে গেল
টের ই পেলাম না.......

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
হাহাহা... দারুণ শিক্ষা অনুরাগী তো আপনে =p~

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:

ব্লগিং এ ফেল করবেন, মনে হচ্ছে।

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩

ধমনী বলেছেন: শিক্ষানুরাগী হইতে শিক্ষিত হওয়া লাগে না। আপনি পাশ।

৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: "কারণ আমি ৪০ পেয়েছি এটা কেউ কোন কালেও বিশ্বাস করবে না "। অাহারে বেচারা!

৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০০

রোমান্টিক বুইড়া বলেছেন: আমি ফেল থেকেই পাশ করার অনুপ্রেরনা পাই ;-)

৬| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০৩

আমি শঙ্খচিল বলেছেন: আপনার স্কুল জীবনের অভিজ্ঞতা পড়ে বুজলাম আমি ই একা খারাপ ছাত্র না আমার মত অনেক খারাপ ছাত্র আছে । ভাল থাকবেন ।

৭| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:২৯

বিপরীত বাক বলেছেন: হাতের কাপাকাপিতে ৩য় শূন্যটা ২য়
শূন্যের উপর না পড়ে পড়ল দুইটার
মাঝখানে।
হয়ে গেল তিন শূন্যের পিরামিড !!!!!!!

excellent... bravo brother...

৮| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:১৭

রোমান্টিক বুইড়া বলেছেন: হাহাহাহা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.