নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন রণবীর

মামুন রণবীর

আমি খুব সাদাসিধে মানুষ ।কবিতা,গল্প,লিরিক লিখার চেষ্টা করি মাত্র ।মাঝে মাঝে জীবনকে রহস্যেঘেরা বৃত্ত মনে হয় । যে বৃত্তে আমরা একদিক থেকে অন্যদিকে পরিভ্রমন করি ।কখনো কখনো জীবনের কথাগুলো অলীক ভাবনাদের স্পর্শ করতে ব্যাকুল হয় ।কিন্তু ভাবনাগুলো কখনোই স্পর্শ করা হয়না ।হয়তো কিছু কথা রাখতে গিয়েও রাখা হয়না ব্যাপারটির সাথে একমত পোষণ করে ।রাখা না রাখার ক্যানভাসে জীবন নি:শেষের পথে হাঁটে ।একসময় সেটাও ফুরোয় ।এরমাঝে অনেক কথার মিছিলে একটি প্রশ্ন মনে বারবার আঁচর কাটে...........আমরা কি কখনো পরিপূর্ণ হতে পারি.................আমরা মুগ্ধ হই...........কিন্তু মুগ্ধতাকে ছুঁতে পারিনা,খুব কাছ থেকে............

মামুন রণবীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প : ডিজিটাল ফিচার

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০

অফিসে প্রচন্ড কাজের চাপ ।সামনে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ।আমরা বিশ্বকাপ সংখ্যা বের করছি।তাই ক্রীড়া প্রতিবেদকদের দৌড়ের শেষ নাই ।গত একমাস যাবত কাজ চলছে।ক্রিকেটারদের ইন্টারভিউ নেওয়া,ফিচার লিখা,পুরনো পত্রিকা ঘাঁটাঘাঁটি করা,ফটো টিমকে কাজ বুঝিয়ে দেয়া,পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ,মাঠের বাইরের উত্তাপ,ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতামত নেয়া,রেকর্ড কর্ণার রেডি করা,সংখ্যার বিজ্ঞাপন বানানো আরও কতো কাজ।পাঁচ জনের টিম হওয়ায় ধকলটা একটু বেশি সইতে হচ্ছে।বিটের সম্পাদক হলে যা হয় আরকি।তদারকিতে একটু ভুল হলেই শেষ ।

যথারীতি রাতে রিপোর্টগুলো দেখতে বসলাম।রাত গভীরের পথ ধরলো ।কটা বাজে সেদিকে না তাকিয়ে একের পর এক রিপোর্ট পড়ছি ।আমাদের স্পোর্টস করেসপন্ডেন্টরা বেশ মেধাবী ।লেখায় ওদের তুলনা নাই।পত্রিকার ভাগ্য ভালো যে এরকম একটা টিম পেয়েছে।রিপোর্ট দেখতে দেখতে তন্দ্রাচ্ছন্নতা পেয়ে বসলো ।ওটাকে পাত্তা না দিয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে শহর দেখলাম। রাতের শহর বেশ অদ্ভুত।চারদিকে কোন শব্দ নেই।যেন এখানেই থেমে গিয়েছে সময় ।মৌনমুখর শহরটাকে একলা থাকতে দিয়ে আমি আবার কম্পিউটার রুমে আসলাম।ইদানিং সফটওয়্যার বানাবার প্রতি বেশ ঝোঁক তৈরি হয়েছে।কিন্তু এটা তো সহজ ব্যাপার না।ইচ্ছে হলেই বানিয়ে ফেলা যায়না।যদিও সফটওয়্যার নিয়ে পড়েছি। কিন্তু ওটা ওই ক্লাস পর্যন্তই।ক্রিকেটকে যেদিন ভালোবেসে ফেললাম সেদিন থেকেই ক্রিকেটের আশেপাশে থাকার চেষ্টা। ক্রিকেটার হওয়া তো সম্ভব হলোনা তাই ক্রিকেট সাংবাদিকই হলাম।অতীতের অভিজ্ঞতা আর টুকটাক বই পড়ে সাহসটা বেড়ে গেল। সাহস থাকলে আর দমায় কে? এভাবে চলতে থাকলো ।দিন ফুরায় সফটওয়্যার তৈরির নেশা আরো গাঢ় হতে থাকে।

বিশ্বকাপ একদমই নিকটে।আমাদের সংখ্যাও বেরিয়ে গেছে।বেশ ভালো বিক্রিও হয়েছে।কিন্তু সফটওয়্যার প্রকল্প আর এগোয় না। মাথার ভেতর আইডিয়া জমতে জমতে এটা প্রকল্পের রূপ নিয়েছে। প্রকল্প তো বাস্তবায়ন করতেই হবে।নইলে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবো কি করে। প্রতিরাতে ঘুম হয়না। শুধু চিন্তা।একরাতে কম্পিউটারের সামনে বসেছি এই সংকল্প নিয়ে যে না বানিয়ে উঠবোই না। টানা দুইদিন কাজ করে কিছু একটা বানিয়ে ফেললাম।এটা এমন একটা সফটওয়্যার যাতে কে কখন কবে কোথায় কিভাবে কি করেছে এসব প্রাথমিক তথ্য দিলেই দারুণ দারুণ ফিচার তৈরি হয়ে যায়।ব্যাপারটি আরো স্ট্যান্ডার্ড করতে আরো দুইদিন কাজ করলাম।এরপর নিজে বিশ্বকাপের একটি ফিচার তৈরি করলাম ।ওই সফটওয়্যারের কোন প্রকার সাহায্য নিলাম না।পত্রিকায় ছাপা হবার পর ফিডব্যাক বেশ ভালো ছিলো। এবার পরের ম্যাচেগুলোর কিছু ফিচার সফটওয়্যার দিয়ে তৈরি করলাম। আমাকে কিছুই করতে হলোনা।শুধু প্রাথমিক তথ্যগুলো দিলাম।তথ্যগুলো সাজানো ছিলো এভাবে,স্টেডিয়াম মেলবোর্ন,জিতেছে অষ্ট্রেলিয়া চার উইকেটে,পরাজিত দল ওয়েষ্ট ইন্ডিজ,সেরা রান ম্যাথু হেইডেন ১১০ ।আর স্কোর্ডকার্ড দিয়ে দিলাম।রেডি মিক্স ফিচার হয়ে গেল।পত্রিকায় ছাপালাম।ফিডব্যাক মোটুমোটি।কিন্তু দিনের পর দিন এটি নামতে লাগলো।আবার সফটওয়্যার বাদ দিয়ে নিজে লিখলাম।এবার ফিডব্যাক ভালো।চিন্তা করলাম সফটওয়্যারটিকে আরেকটু আপগ্রেড করতে হবে।কিছু কাজ করে আরেকটু স্ট্যান্ডার্ড করলাম। এবার ম্যাচের ভিডিও আপ করে দিলেই সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয় ফিচার তৈরি করবে।

বিশ্বকাপের ২য় সপ্তাহ।ভিডিও আপ করে দেই ফিচার হয়ে যায়। পত্রিকায় ছেপে দেই।এই ফিচারের নাম দিলাম ডিজিটাল ফিচার।কোন প্রকার স্পর্শ ছাড়াই তৈরিকৃত। এভাবে আরো কিছুদিন গেলে পাঠক মতামত তেমন পাইনা।ব্যাপারকি ভাবতেই ফিচারগুলো পড়লাম।দেখলাম সব প্রায় একই ধরণের।বৈচিত্রতা নেই।সেদিন থেকেই বাদ দিলাম ওই সফটওয়্যার ।খুব দেখার ইচ্ছে ছিলো সফটওয়্যার কি মানুষের থেকেও ভালো লিখতে পারে ?আর ভার্চুয়াল এই ব্যাপারটি কি আসলেই ভালো । এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে আবারো শিখলাম মানুষ ভালোবাসা দিয়ে লিখে আর সেই ভালোবাসতে পারার ক্ষমতা যন্ত্রের নেই।

সফটওয়্যারটি কম্পিউটার থেকে মুছতে গিয়ে ফোনের রিংটোন কানে এলো ।উফ ঘুমটা ভেঙে গেল।অফিস থেকে ফোন করেছে ।জলদি যেতে হবে। বিছানায় বসে ভাবলাম আহ কি অপরূপ স্বপ্নই না দেখছিলাম।বাস্তবে এমনটি হলে কেমন হতো ?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন :)

আহা স্বপ্ন ভাঙ্গে স্বপ্ন পূরণ করতেই ;)

+++++++

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

মামুন রণবীর বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:০২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
হাহাহা!
টুইস্টটা ভাল লাগলো।

তবে, সফটওয়্যার কিন্তু নিজে থেকে কাজ করার মত কিছু না। এটা কাজকে সহজ করে - কিন্তু তারমানে এই না যে এটা দিয়েই সবকিছু করে ফেলা যাবে। মানুষের নিজের হাত লাগবেই। যত অত্যাধুনিক সফটওয়্যারই হোক না - ওটার চালক হিসেবে কারো না কারো থাকা লাগবেই।

৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৩৯

মামুন রণবীর বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.