নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন রণবীর

মামুন রণবীর

আমি খুব সাদাসিধে মানুষ ।কবিতা,গল্প,লিরিক লিখার চেষ্টা করি মাত্র ।মাঝে মাঝে জীবনকে রহস্যেঘেরা বৃত্ত মনে হয় । যে বৃত্তে আমরা একদিক থেকে অন্যদিকে পরিভ্রমন করি ।কখনো কখনো জীবনের কথাগুলো অলীক ভাবনাদের স্পর্শ করতে ব্যাকুল হয় ।কিন্তু ভাবনাগুলো কখনোই স্পর্শ করা হয়না ।হয়তো কিছু কথা রাখতে গিয়েও রাখা হয়না ব্যাপারটির সাথে একমত পোষণ করে ।রাখা না রাখার ক্যানভাসে জীবন নি:শেষের পথে হাঁটে ।একসময় সেটাও ফুরোয় ।এরমাঝে অনেক কথার মিছিলে একটি প্রশ্ন মনে বারবার আঁচর কাটে...........আমরা কি কখনো পরিপূর্ণ হতে পারি.................আমরা মুগ্ধ হই...........কিন্তু মুগ্ধতাকে ছুঁতে পারিনা,খুব কাছ থেকে............

মামুন রণবীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই শহর সেই শহর

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০৫

নিজ শহরের কথা মনে পড়ে গেল । হঠাৎ করেই। অনেকদিন যাওয়া হয়না।এইমুহূর্তে খুব মিস করছি। মস্তিষ্কে নাড়া দিচ্ছে সেই দিনগুলো। আহ কতো বাদরামিই না করতাম। ক্রিকেট ব্যাট বল নিয়ে মাঠে পড়ে থাকা ছিলো বাধ্যতামূলক রুটিন।একদিন ক্রিকেট না খেললে ঘুম হতোনা।সবচেয়ে আনন্দময় ছিলো ২০১০-১১ র দিনগুলো

দুপুর আর বিকেল মানেই ক্রিকেটের ময়দান।মাঝে মাঝে অবশ্য ফুটবলও খেলা হতো ।সেটা বর্ষাকালে।মাঠ যখন কর্দমাক্ত।তখনকার ফুটবল মানেই একরাশ উদ্দীপনা ।তুমুল বৃষ্টির মধ্যেও আমাদের খেলা থালতোনা। তবে ফুটবলের চেয়ে ক্রিকেটটাই বেশি চলতো।শহরজুড়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টও চলতো।মোটাদাগে বলতে গেলে ক্রিকেটটাই ছিলো আমাদের ধ্যানজ্ঞান। বাংলাদেশের একটা ম্যাচেও মিস হতোনা। প্রায়শই কারেন্ট চলে যেতো।তখন আমাদের ভরসা ছিলো শহরের বিখ্যাত ওয়ালটন শো রুম।বন্ধুরা যে যেভাবে পারতো চলে আসতো। কেউ বসে কেউবা দাঁড়িয়ে খেলা দেখতো। খেলা দেখতে পারাটাই আমাদের একান্ত কাম্য ছিলো। কে আর ক্রিকেটার্স নামে একটা ক্রিকেট টিম গঠন করেছিলাম। দুইটা টুর্নামেন্টও আয়োজন করেছিলাম।শহরের কাচারীরোড এলাকার বন্ধু,বড়ভাই,ছোটভাইদের নিয়ে সেই টিম গঠিত হয়েছিলো।দলে ছিলো সনি ভাই, শুভ্র,সায়েম,নাইম ,লিমন,ইমরান,সোহেল এবং আমি ।আমরা একসাথে কতো কি যে করেছি তা লিখে শেষ করা যাবেনা। এখন সবাই পরস্পর থেকে অনেক দূরে।অবশ্য মনের দিক থেকে সবাই খুব কাছে। সবাইকে খুব মিস করি।

সে সময়ে একটা সাহিত্য পত্রিকা বের করতাম।নাম ছিলো আলোকবর্তিকা। এটি সবার মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিলো।একটা টিম করেছিলাম।নাম ছিলো কবিয়াল।এই কবিয়াল পরিবারের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছিলো আলোকবর্তিকা। কবি লোকান্ত শাওন,সারোয়ার ভাই ছিলেন উপদেষ্টা।মশাল দা ছিলেন শিল্প এবং অলংকরণের কারিগর।আর জামাল ভাই অত্যন্ত যত্ন করে তার প্রেস থেকে প্রিন্ট করে দিতেন। আর সবথেকে বেশি কাজ করেছে আমার বন্ধুরা।সোহেল,আরিফ খান,লিটন,শফিক এরা না থাকলে অনেক কিছুই অসম্পূর্ণ থেকে যেতো।

খুব মনে পড়ে তালতলার আড্ডাগুলো।প্রতিদিন সন্ধ্যার পর চলে যেতাম।চায়ের কাপে কথা ঝড় উঠতো।মাঝে মাঝে শাহিন ভাইয়ের বাগান বাড়িতে চলতো খাবারদাবারের তুমুল আয়োজন। আহ কি অপরূপ দিনগুলোই না ছিলো।আমাদের আড্ডার অন্যতম কেন্দ্রস্থল ছিলো আমাদের কথা পত্রিকার কার্যালয়।বলে রাখা ভালো আমার জীবনের প্রথম রিপোর্ট এই আমাদের কথা পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়। কতো আড্ডা দিয়েছি কতো লিখা লিখেছি তা বলে শেষ করা যাবেনা।আমাদের কথা ছিলো আমার প্রথম বিষ্ময়। লিখতে ভালো লাগতো।একবার আমি আর ওয়ালী হাসান ভাই ময়মনসিংহে গেলাম পত্রিকা প্রিন্ট করতে ।পত্রিকার পেজ মেকাপ কিভাবে হয় প্রথম দেখলাম।পত্রিকা প্রিন্ট করে আনার পর কোন এক কারণে সম্পাদকের ঝাড়ি খেতে হলো।তবে পত্রিকা দেখার পর সবার অনেক প্রসংশা পেলাম। জানিনা আমাদের কথা আবার কবে প্রকাশিত হবে।তবে আমার অনেক চেষ্টা ছিলো পত্রিকাটি এতো বিরতির পর দ্রুতই যেন প্রকাশিত হয়।

আমাদের আরেক আড্ডাস্থল সুসঙ্গ বার্তা কার্যালয়।জামাল ভাই,লোকান্ত শাওন আর আমি কতো যে আড্ডা দিয়েছি তা মনে পড়লে খুব নষ্টাজলজিক হয়ে যাই।সুসঙ্গ বার্তা যেদিন রেজিষ্ট্রেশন পায় সেদিন যে কতো খুশি হয়েছিলাম তা বলে বোঝানো যাবেনা।আর ভাবতে ভালো লাগে আমার হাত ধরেই এই পত্রিকা অনলাইন ভার্সন চালু করে।

সুসঙ্গ দূর্গাপুর শহরের আরেক সৃষ্টির নাম জলসিড়ি পাঠাগার।দীপক সরকারের উদ্যোগে এই পাঠাগার যাত্রা শুরু করে। এই পাঠাগারে গেলেই অন্যরকম এক প্রশান্তি পাই।সামাজিক,সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে এই পাঠাগারের জুড়ি নেই।

এই শহরের অন্যতম এক প্রতিষ্ঠান দূর্গাপুর সাহিত্য সমাজ।নাজমুল হুদা সারোয়ার এর প্রতিষ্ঠাতা। এই প্রতিষ্ঠানের চমৎকার এক আয়োজনের নাম কবিতা উৎসব ।প্রতি বছর এটি উদযাপিত হয়।আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে ২০১০ সালের উৎসবটি ।কবি আশিষ সান্যাল এসেছিলেন সুদূর কলকাতা থেকে। ভাবতে ভালো লাগে তাকে দেয়া মানপত্রটি মঞ্চে আমি পাঠ করেছিলাম। আর একুশ শতকের স্রোত নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা বের করা হয় সাহিত্য সমাজ থেকে।

এই দূর্গাপুর থেকেই প্রকাশিত হয় অনলাইন সাহিত্য ম্যাগাজিন সৃজন।সকাল রয় এটির সম্পাদক।হয়তো অনেকেই জানেনা বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য যতগুলো সাহিত্য পত্রিকা কিংবা ম্যাগাজিন আছে তার মধ্যে সৃজন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।শুরুতে আমি এটির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে নানা ব্যস্ততার কারণে এটিতে কাজ করা হয়নি। একদিন জলসিড়ি পাঠাগার থেকে আমি,সকাল রয় আর শাওন হাসান ফিরছি।সকাল দা সৃজন করার কথা বললেন।আমি একমুহূর্তেই সায় দিলাম।শাওন ভাই একই কাজ করলেন । তবে সকাল দা কে দেওয়া কথা আমি রাখতে পারিনি।কারণ সৃজনে পরবর্তীতে আর কাজ করা হয়নি। তবে অনলাইনে যখন সৃজনের নতুন সংখ্যা দেখি তখন মনটা আনন্দে ভরে ওঠে ।

দূর্গাপুর থেকে যারা দূরে থাকে তাদের কথা ভেবে ২০১৩র ডিসেম্বরে চালু করেছিলাম অনলাইন পোর্টাল সুসং নিউজ।দু বছর চালানোর পর নানা সমস্যায় এটি আর রান করতে পারিনি।তবে ভাবতে ভালো লাগে দূর্গাপুরের প্রথম অনলাইন আমিই করেছিলাম।আর তখন অনলাইন করাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিলো।কারণ তখন এতো কিছু বুঝতাম না।

জীবনের প্রয়োজনে এক শহর ছেড়ে আরেক শহরে বসতি গড়েছি। কিন্তু যখন একা একা হাঁটি তখন মনটা চলে যায় ঐ শহরে যে শহরের নাম সুসঙ্গ দূর্গাপুর।আমার ভালোবাসার শহর।

মামুন রণবীর
২৪/০১/১৭

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.