নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাদাসিধে মানুষ ।কবিতা,গল্প,লিরিক লিখার চেষ্টা করি মাত্র ।মাঝে মাঝে জীবনকে রহস্যেঘেরা বৃত্ত মনে হয় । যে বৃত্তে আমরা একদিক থেকে অন্যদিকে পরিভ্রমন করি ।কখনো কখনো জীবনের কথাগুলো অলীক ভাবনাদের স্পর্শ করতে ব্যাকুল হয় ।কিন্তু ভাবনাগুলো কখনোই স্পর্শ করা হয়না ।হয়তো কিছু কথা রাখতে গিয়েও রাখা হয়না ব্যাপারটির সাথে একমত পোষণ করে ।রাখা না রাখার ক্যানভাসে জীবন নি:শেষের পথে হাঁটে ।একসময় সেটাও ফুরোয় ।এরমাঝে অনেক কথার মিছিলে একটি প্রশ্ন মনে বারবার আঁচর কাটে...........আমরা কি কখনো পরিপূর্ণ হতে পারি.................আমরা মুগ্ধ হই...........কিন্তু মুগ্ধতাকে ছুঁতে পারিনা,খুব কাছ থেকে............
ঘুমাতে যাব, এমন সময় খবর পেলাম বারী সিদ্দিকী অার নেই। মুহূর্তেই মনটা ছেয়ে গেল হাহাকারে। অার গাইবেননা প্রিয় বারী,অার বাঁশির সুর বাঁধবেননা এটা মেনে নেওয়া পাহাড়সম কষ্টের।
কি অসাধারণ তার গায়কী,চোখে পানি এসে যায়। কি অসাধারণ তার বাঁশির সুর, বিমোহিত করে। সেই মানুষটিই যিনি অামাদের হাসাতেন,কাঁদাতেন তিনি পাড়ি জমালেন অন্যভুবনে। যাত্রাটা একটু তাড়াতাড়িই বটে। যেতে তো হবেই কিন্তু অার কটা দিন…….চোখটা বারবার ভিজে যাচ্ছে।
বড্ড বেদনাহত হয়ে লিখছি,অবচেতনেই মনে বেজে ওঠছে, শুয়া চান পাখি অামার অামি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি……….তুমি অামি জনম ভরা ছিলাম মাখামাখি……….অাজি কেন হইলে নীরব
বাংলার লোকসংগীত ও আধ্যাত্মিক ধারার গানকে যেভাবে অামাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন তা বারবার নাড়া দেয় ভাবনায়। তার ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘সাড়ে তিন হাত কবর’, ‘তুমি থাকো কারাগারে’ গানগুলো নাগরিক জীবনকে অান্দোলিত করে বারবার।
বারী জন্মেছিলেন নেত্রকোণায়,১৯৫৪র ১৫ই নভেম্বর। এবার জন্মদিনের পরপরই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেলেন কিন্তু অার ফেরা হলোনা। এইতো দু তিন দিন অাগে তার ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য ঘাঁটছিলাম। বারীর গানের হাতেখড়ি হয় তার পরিবারেই। পরে নেত্রকোনার শিল্পী ওস্তাদ গোপাল দত্তের অধীনে তার আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এরপর ওস্তাদ আমিনুর রহমান একটি অনুষ্ঠানে তার বাঁশি এবং গান শুনে বারীকে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন।
আমিনুর রহমানের অধীনে তিনি দীর্ঘ সময় তালিম নেন।সত্তরের দশকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হন বারী। ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ওপর বিস্তর পড়াশোনাও ছিল বারীর।
নব্বইয়ের দশকে ভারতের পুনেতে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন তিনি । ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে গান করে ব্যাপক পরিচিতি পান। তখন তার গাওয়া সুয়াচাঁন পাখি গানটি মানুষের ঠোঁটস্থ ছিল।
এরপর শুধুই সামনে এগিয়ে চলা। বারী গান করেন বিভিন্ন চলচ্চিত্রে,মঞ্চে,টেলিভিশনে। অর্জন করেন অসংখ্য পুরস্কার। দেশ বিদেশে মানুষ অপেক্ষা করতে থাকে কখন বাজবে বারীর বাঁশি,কবে গাইবেন তিনি। গাইতে গাইতে একদিন পথের প্রান্তে চলে এলেন,এরপর চলে গেলেন ২৪ নভেম্বর নামের এক রাতে।
বারী সেই শিল্পী যিনি গান গাইবার সময় তার চোখ দিয়ে ঝড়তো অঝোর ধারা,সেটা হোক টেলিভিশন কিংবা মঞ্চ। গান গাইবার সময় গানের সঙ্গে এমন একাত্ম হয়ে যাওয়া কেবল সাধকের পক্ষেই সম্ভব।
বারী চলে গেলেন তখন যখন শহরে সমকালীন নীরবতা,প্রকৃতিতে শীতলতা,কুয়াশার বিষন্নতা।
বারী অন্য এক ভাবের দেশে গেলেন,মাটির দেহ নিয়ে। কেন যেন মনে হয় তিনি অামাদের শুয়া চান পাখি। অামরা শত ডাকলেও অার সাড়া দেবেন না। তিনি থাকবেন অামাদের মনে। তিনি থাকবেন তার সমস্ত না থাকা জুড়ে ।
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৯
শায়মা বলেছেন: উনার প্রতি শ্রদ্ধা !
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪
রুরু বলেছেন: ওনার গানে একটা নস্টালজিয়া ভাব আছে। যা অন্য শিল্পীদের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় না।