নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাসটিস ফর রাজন

১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৪৬

আমরা সেদিন পাশের শহর লাস কলিনাস গিয়েছিলাম পৃথিবীখ্যাত ভাস্কর্য্য "দ্য মাস্টাং" দেখতে। বাবুকে স্ট্রলারে রেখে আমরা সবাই ছবি তুলায় ব্যস্ত। সে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে।
হঠাৎ আমার মনে উদয় হলো, আমার ছেলেকে ছাড়া আমি কোন ছবি তুলবো না।
অনেকখানি হেঁটে এসে তাকে কোলে তুলে নিয়ে আমি আর তার মা ছবি তুলতে লাগলাম।
এর ঠিক দুই মিনিট পর তিন্নি হায় হায় করে উঠলো। বাবুর স্ট্রলার বাতাসের ধাক্কায় আপনাতেই গড়িয়ে মাস্টাংয়ের লেকের পানিতে পড়ে গেছে।
ইরহান যেহেতু আমার কোলে, আমি তেমন উতলা হলাম না। তবে তার নানা নানী জানতেন না যে ও আমার কোলে। তাঁদের ধারনা হলো, সেও পানিতে পড়ে গেছে।
তার নানা তাই নিজের বয়স খেয়াল না করে তিন ফুট উঁচু পাথরের প্ল্যাটফর্ম থেকে পাকা মেঝেতে লাফিয়ে পড়লেন। এবং ব্যালেন্স হারিয়ে হাটু ও হাত ছিলে একদম রক্তাক্ত অবস্থা।
কিন্তু তিনি যখন দেখলেন আমার কোলে তাঁর নাতি, তিনি নিজের ক্ষতের কথা বেমালুম ভুলে গেলেন। ঐদিকে কার সীট ও স্ট্রলার তখনও পানিতে ডুবে আছে।
ঘটনার সময়ে আমার নার্ভ শান্ত থাকলেও কয়েক মুহূর্ত পরেই খেয়াল হলো, যদি আমি তাকে সময় মতো সরিয়ে না নিতাম, তাহলে কী হতো?
হাত পা ঠান্ডা হয়ে এলো।
ইরহান তখন আমার কোলে। এই ঘটনার কিছুই সে জানেনা। নিশ্চিন্তে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ঠিক যেভাবে তার বাবা তার দাদার দিকে তাকিয়ে থাকতো।
"বাপ বেঁচে থাকতে চিন্তা কিসের ব্যাটা?"
আমি আমার ছেলের কপালে, গালে, নাকে চুমু খেলাম।
আমার ডাকনাম রাজীব। কিন্তু আমার বাবা আমাকে আদর করে "রাজন" ডাকতেন। আমি খুবই বিরক্ত হতাম। নামটা আমার মোটেও পছন্দ ছিল না। আব্বু বলতেন, "আমি মারা গেলে আর কে এই নামে ডাকবে?"
ছেলেটার নামও রাজন ছিল। লোহার রুলার দিয়ে যখন তাকে পেটানো হচ্ছিল, সে চিৎকার করে তার মাকে ডাকছিল। তারপরেও হারামিগুলার মনে দয়া হয়নি। রাজনের বাবা যদি আশেপাশে থাকতেন, আমি নিশ্চিত তিনি ছুটে এসে নিজের ছেলেকে বাঁচিয়ে ফেলতেন। তাঁর মাও একই কাজ করতেন। তাঁর নানা, নানী, দাদা, দাদী, তার স্বজনদের যে কেউ, নিজের প্রানের ঝুকি নিয়েও ঝাপিয়ে পড়তেন। এইভাবে মরতে দিতেন না।
ছেলেটাকে দেখে আমার নিজের ছেলের কথা মনে হলো। পৃথিবীর কোন বাবাই চাননা তাঁর ছেলে তাঁর আগে পৃথিবী ত্যাগ করুক। যারা এই কাজটা ঘটালো, তাদের কী সন্তান নেই? তারা কী মানুষের গর্ভে জন্মায়নি?
একটি শিশু, সে যদি চুরি করেও থাকে, কিই বা এমন সাত রাজার ধন চুরি করেছিল যে তাকে এইভাবে পিটিয়ে মারতে হলো? বাসে যখন পেট্রল বোমা মারা হয়, তখন এইসমস্ত বীর পুরুষেরা কোন গর্তে লুকিয়ে থাকে? দুর্বলের সাথেই এদের যত বীরত্ব!
"ফেসবুকে দিয়ে দিয়েছি! পৃথিবীবাসী দেখুক!"
কী নির্লজ্জতা! কী পাষন্ডতা!
মানুষের চেয়ে জঘন্য প্রাণী পৃথিবীতে কী আছে? এই হিংস্রতায় ইবলিসেরও কলিজা শুকিয়ে যাওয়ার কথা।
এই ঘটনার পর আমি নিশ্চিৎ, সকাল বিকাল মেথর পট্টির গু খেয়ে বেড়ে উঠা শুয়োরগুলোকে যদি আমি "মানুষ" বলে ডাকি, তাহলে তারা গালি দেয়ার অপরাধে আমাকে মারতে তেড়ে আসবে। শুয়োর হলেও, তাদেরও ইজ্জত আছে।
অ্যামেরিকান আইন প্রনয়ন নিয়ে তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ফাল বোধয় বাংলাদেশেই পারা হয়েছে। সেই জাতির সমস্ত ভাইদের বলছি, আগে নিজের দেশকে সভ্য বানান। তারপরে অন্যের ব্যপারে মন্তব্য করতে আসবেন।
একটা গণপিটুনি দিয়ে হারামিগুলিকে পিস পিস করে কেটে রেলওয়ে ট্র্যাকের উপর ফেলে রেখে শেয়াল-কুকুরদের জন্য ইম্প্রুভড ডায়েটের ব্যবস্থা করা যেত! তারপরেও আমার মনে হয় এই অপরাধের প্রতি সুবিচার করা হতো না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৯

পয়গম্বর বলেছেন: "অ্যামেরিকান আইন প্রনয়ন নিয়ে তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ফাল বোধয় বাংলাদেশেই পারা হয়েছে। সেই জাতির সমস্ত ভাইদের বলছি, আগে নিজের দেশকে সভ্য বানান। তারপরে অন্যের ব্যপারে মন্তব্য করতে আসবেন" - সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.