নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

৮০০ কোটি টাকায় অনেক কিছুই সম্ভব

১১ ই মার্চ, ২০১৬ ভোর ৫:২৫

সালটা ঊনিশশ একাত্তুর। ইন্দিরা গান্ধী ভিখিরিনির মতন পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তের দেশে ছুটে ছুটে যাচ্ছেন পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বৈশ্বিক সমর্থনের আশায়।
প্রতিটা রাষ্ট্রপ্রধানই তাঁর কথা খুব মন দিয়ে শুনছেন, আন্তরিকভাবে গণহত্যায় নিহত মানুষদের জন্য দুঃখ প্রকাশও করছেন - কিন্তু সাহায্যের হাত কেউই বাড়িয়ে দিচ্ছেন না। মুখে একটু প্রতিবাদ করবেন, সেই সাহসটুকুও কারোর নেই। যদি বড় ভাই ক্ষেপে যান! ইন্দিরা বুঝলেন বড় ভাইকে না ধরলে কিছুতেই কিছু হবেনা।
তিনি এলেন বড় ভাইর বাড়ি - ওয়াশিংটন। এয়ারপোর্টে তাঁকে স্বাগত জানাতেও তেমন কেউ এলো না। চোখে আঙ্গুল দিয়েই বুঝিয়ে দেয়া যে তুমি এখানে মোটেও নিমন্ত্রিত নও। আতিথেয়তার কথা আশাও করো না।
অবশেষে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে তাঁর দেখা হলো, প্রেসিডেন্ট তাঁকে দেখে বললেন, "এখানে বেশ ঠান্ডা পরেছে তাই না? দিল্লির আবহাওয়া কেমন?"
ইন্দিরা কোন ঘোরপ্যাচে না গিয়ে সরাসরি বললেন, "মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমি অর্ধেক পৃথিবী পাড়ি দিয়ে এখানে আপনার সাথে দুই দেশের আবহাওয়া নিয়ে কথা বলতে আসিনি। পূর্ব পাকিস্তানে মানুষ মরছে। এক কোটি শরণার্থী এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। পাকিস্তান তাদের জনসংখ্যাকে এইভাবে আমাদের দিকে ঠেলে দিতে পারেনা। আপনি কিছু করুন।"
"পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যপারে আমাদের করার কী আছে বলুন? বরং আমরা শরণার্থীদের জন্য কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করতে পারি।"
ইন্দিরা চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন, "ভারত গরিব রাষ্ট্র হতে পারে, কিন্তু অতিথি সেবার জন্য তাঁকে কারও কাছে হাত পাততে হয়না।"
প্রেসিডেন্ট কথা ঘোরাতেই বললেন, "আপনার গায়ের জামাটা বেশ দারুন। একে শাড়ি বলে, তাই না?"
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের নাম বাংলাদেশী মাত্রই জানা থাকার কথা। দুঃসময়ের বন্ধুকে যেমন আজীবন মনে রাখতে হয়, তেমনি সেই সময়ের শত্রুকেও কখনও ভুলে যেতে নেই।
এই নিক্সনের পতন কিভাবে হয়েছিল জানেন? বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির হেড অফিসে আড়ি পাতার চেষ্টা করেছিলেন "ভদ্র"লোক। ধরা খাওয়ায় বেইজ্জতি বরদাস্ত করতে না পেরে ইস্তফা দেন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সিংহাসন থেকে।
বাঙালি হিসেবে ব্যপারটা শুনলে হাসিই পায়, তাই না? আড়িপাতার চেষ্টা করেছিল - এ আর এমন কি! এজন্য কেউ গদি ছেড়ে দেয়?
এখানেই আমাদের সাথে উন্নত দেশগুলোর পার্থক্য। মানসিকতাই ওদের সময়ের আগে এগিয়ে নেয়, এবং এই মানসিকতাই আমাদের কয়েকশ বছর পিছিয়ে দেয়।
বছরখানেক আগে কোরিয়ায় ফেরি ডুবে স্কুল শিশুরা নিহত হলে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত কাঁদতে কাঁদতে পদত্যাগ করেন। আমাদের যেদিন লঞ্চ ডুবেছিল, আমাদের নৌমন্ত্রীকে দেখেছিলাম খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকতে।
আমাদের রানা প্লাজা ভেঙ্গে পড়ে, আমাদের মন্ত্রী বলেন, "বিএনপির লোকেরাই ঝাকাঝাকি করে ভবন ধ্বসিয়ে দিয়েছে।"
আমাদের অবরোধে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সন তখন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, "আপনারাই মানুষ মারা রাজনীতি শুরু করেছিলেন।"
এ ওর গায়ে দোষ চাপাচ্ছে, সে তার গায়ে। এ গদি আগলে রেখেছে, ও গদির আশায় টানাটানি করছে।
এসব দেখে আমাদের চোখ সয়ে গেছে, আড়িপাতার কারনে কাউকে পদত্যাগ করতে দেখলে তাই আমরা চোখ কপালে তুলে ভাবি, কী করে সম্ভব! তাও সত্তুরের দশকে!
কাজেই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চিংকু হ্যাকাররা যখন আটশ কোটি টাকা গায়েব করে ফেলে তখন আমাদের অর্থমন্ত্রী এসবকে রাবিশ বলবেন সেটা খুবই স্বাভাবিক। এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই।
কথা হচ্ছে, আমি আপনি সবাই জানি চুরি হওয়ার পেছনে আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেবের বিন্দুমাত্র হাত নেই। মানুষ তাঁর কথাবার্তা নিয়ে, কাজকর্ম নিয়ে হাসি ঠাট্টা ও সমালোচনা করলেও তাঁর শত্রুরাও বলতে পারবে না যে তিনি দুর্নীতিবাজ। কাজেই তাঁর পদত্যাগ করা হয়তো কোনমতেই জাস্টিফায়েড সলিউশন না। কিন্তু এও ঠিক, টাকা আওয়ামীলীগের দলীয় কোষাগারের টাকা না। রিজার্ভ ব্যাংকের টাকা মানে আমার টাকা, আপনার টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর দায়িত্ব দিয়েছিলাম যাতে সেই টাকা বাড়িয়ে তোলে। অর্থমন্ত্রী এই টাকার অন্যতম পাহারাদার। তাঁর দায়িত্ব নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আছে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। যদি না থাকে তাহলে লোক লাগিয়ে সেটার ব্যবস্থা করা। এবং যদি তাঁর দাবি হয়েই থাকে যে আমাদের নিরাপত্তা সিস্টেম ভাল ছিল, তাহলে বাড়িতে চোর ঢুকলো কিভাবে? তাহলে তাঁকে এই আসনে কী কাজটা করার জন্য বসানো হয়েছে?
এখন দেখার বিষয় একটাই - তিনি এটাকে কিভাবে সমাধান করেন।
আটশ কোটি টাকা সহজ কথা না। এই টাকায় সবকিছুই করা সম্ভব। তবে আপাতত একটা সর্বাধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বানানো যায়, যেখানে প্রতি বছর শ খানেক ডাক্তার তৈরী ছাড়াও অনেক মানুষের ফ্রী চিকিৎসা সম্ভব। কতদিন আর বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাবে মানুষ?
কিংবা কয়েকটি শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করা যায়, যার মধ্যমে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান ও একই সাথে ফিক্সড ইনকাম সম্ভব।
বেশ কিছু সড়ক মহাসড়ক নির্মান সম্ভব, এবং কে না জানে, যোগাযোগ ব্যবস্থা যত উন্নত হয়, দেশের অর্থনীতিও ততই ত্বরান্বিত হয়।
শুনেছি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। হয়তো উদ্ধার সম্ভব।
এও শুনেছি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। আশা করি তদন্ত রিপোর্ট স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৯

উপপাদ্য বলেছেন: আশা করছি তদন্ত কমিটি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সাগর-রুনি হত্যাকারিদের ধরার মতো একটি বায়বীয় ঘোষনার দৃষ্ঠান্ত শীঘ্রই দেবেন।

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন।

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেই যে যারা চুরি করল তাদের কে শনাক্ত করা হয়েছে ! কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে - এর আগেও শেয়ার বাজারের বাজিকর, হলমার্কের লুটেরাদের সনাক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আদৌ কি কখনো কোনো নূন্যতম ব্যবস্থা নেয়া হয়ছে ? এবারেও যতই সনাক্ত ফনাক্ত হোক, বাংলাদেশের ভিতরে যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কোনো কিছুই হবে না বলে মনে হয় ! আর হাজার কোটি টাকা তো গোপাল ভাঁড় অর্থমন্ত্রীর কাছে খুব বেশি টাকা নয় !

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই চিন্তার কথা। আমার মনে হয়না তদন্তে রিপোর্ট বেরুবে।

৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
++++

৪| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১১

জনৈক শ্রেয়াস বলেছেন: ৮০০ কোটি টাকায় ঢাকার সব ভাঙ্গাচোরা অলি গলি ঠিক করা যেতে পারে । ২ টা আন্তরজাতিক মানের স্টেডিয়াম করা যায়

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক কিছুই করা যায়

৫| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৬

বর্ণহীণ বলেছেন: Nice post.

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৩

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: রিপোর্টের পর আর কিছু হবে না ভাইয়া। তন্দন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রকাশ করে দিলেই কাজ শেষ হয়ে যায়। সুপারিশ বাস্তবের মুখ দেখে না :(

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই চিন্তা

৭| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৩০

অপু তানভীর বলেছেন: যেখানে মন্ত্রীর কাছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা তেমন বড় ব্যাপার নয় সেখানে ৮০০ কোটি কোন ব্যাপার হল !! :D

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অন্যের টাকাতো, তাই গায়ে লাগেনা

৮| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট সময় সাময়ীক পোষ্ট - তবে আমাদের দেশ প্রিয় বাংলাদেশ এখানে ১৬ কোটি দেশপ্রেমিক বাস করেন ।

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হুমমম

৯| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০০

সাগর মাঝি বলেছেন: পোষ্টটা ভাবনায় ভিবুর করে দিল।

১০| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: কোন ব্যাপারই না।। শুধু রিজার্ভ বেশী হওয়াতে আমেরকান রিজার্ভ ব্যাংক এই ব্যাবস্থা করেছে।।

১১| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:০৪

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য একাধিক মনিটরিং ব্যবস্থা থাকে ! কোনো বড় বা অস্বাভাবিক ধরনের লেনদেন হলে একটি সিস্টেমে তা নজর এড়িয়ে গেলেও আরেকটি সম্পূরক সিস্টেমে তা অবশ্যি ধরা পড়বে ! এই কোটি কোটি ডলার হ্যাক করে সরিয়ে নেয়ার সময় ব্যাঙ্কের অনলাইন সিস্টেমে যদি এটা এড়িয়ে যায় (!) তা সত্বেও একটি বিশাল অঙ্কের লেনদেনের হিসাব বা একাউন্টিং কি ওই সম্পূরক সিস্টেমে কারো চোখে ধরা পড়বে না ? এই বিশাল চৌর্য্যবৃত্তি ব্যাঙ্কের বিভিন্ন সিস্টেমের ফ্ল্যাগ সম্পূর্ণ এড়িয়ে যেতে পারে একমাত্র তখনই যখন সবগুলো চেকএন্ড ব্যালান্স ব্যবস্থার দায়িত্বে নিয়োজিত মহান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ না কেউ এর সাথে অবশ্যি জড়িত থাকেন ! এই চক্রের সাথে জড়িত বাংলাদেশী পার্টনারদের সনাক্ত করা ধরা খুব একটা চ্যালান্জিং হওয়ার কথা নয় ! ওই লেনদেনটি যেদিন হয়েছে সেদিন থেকে তত্পরবর্তী হিসাব চূরান্তকরণের সময় পর্যন্ত এই এই ধরনের সকল সম্পূরক সিস্টেমগুলোতে কে বা কাহারা কখন দায়িত্বরত ছিলেন তাদের গতিবিধি, ব্যক্তিগত হিসাব ইত্যাদির তদন্ত করলে অবশ্যই জড়িতদের পরিচয় বেরিয়ে আসা উচিত !

তবে কথা হচ্ছে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে ? এর আগে শেয়ার বাজার, হল মার্ক সহ অনেক বড় বড় দূর্নীতি করে এইসব রাঘববোয়াল পিছলে বেরিয়ে যেতে পারলে, এই ডলার কেলেঙ্কারির হোতারাই বা কিভাবে ধরা পড়বে ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.