নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ধর্মের নামে পশু হত্যা খুবই পৈশাচিক রিতী" - আসলেই কী তাই?

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৮

কোরবানি হওয়া উচিৎ স্রেফ আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে। "আল্লাহ শ্রেষ্ঠ" সেটা প্রমান করতে নয় - বরং এটাই নিয়ত থাকতে হয় যে, আল্লাহর চেয়ে প্রিয় আমার কাছে আর কোন কিছু হতে পারেনা। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এই দিনে পশু জবাই করে উৎসব পালন করতে, আমি উৎসব পালন করবো। টাকা পয়সা বা বাড়ির প্রিয় গবাদি পশু কোরবান হয়ে যাচ্ছে, ম্যাটার করেনা। যিনি দেনেওয়ালা, তিনিই দিবেন। না দিলেও অসুবিধা নাই।
বড় পশু, দামী পশু, কমদামী পশু ইত্যাদি এখানে মূখ্য বিষয় নয়। মূল বিষয় হচ্ছে নিজের ভিতরের পশুকে কোরবান করা। পশুর গলায় ছুরি চালানোরও আগে আমাদের নিজেদের বাজে অভ্যাস, যেমন মিথ্যা বলা, ঘুষ খাওয়া, পরচর্চা ইত্যাদি থেকে শুরু করে যেকোন ছোট বড় বদভ্যাসের গলায় ছুরি চালাতে হবে। শপথ নিতে হবে - যা করার করেছি, আর এইসব না। আজকে থেকে আমি পবিত্র মানুষ।
ভাল হওয়া আসলেই সহজ, শুধু একটু চেষ্টা নিলেই হয়। মন্দ হতেই বরং অনেক কসরত করা লাগে।
আগেও এক লেখায় বলেছি, আবারও বলি, পশু হত্যা করাটা এখানে নেগেটিভ অর্থে দেখার কিছু নেই। আমরা নিজেরা বাঁচার জন্য প্রতিদিন কয়েক লক্ষ গরু ছাগল মেরে ফেলছি। কোরবানির ঈদের মাংসও খাওয়া ছাড়া অন্য কোন কাজে ব্যয় হয়না। আমাদের এমন কোন ধর্মীয় আচার নেই যে আল্লাহর উদ্দেশ্যে এক ভাগ মাংস বা সামান্য এক টুকরা মাংসও ফেলে দিতে হবে। পশুর যাবতীয় মাংস আমাদেরই খাবার জন্য, ঠিক যেমনটা আমরা অন্য সময়ে মাংস খাই। একে আমি কাবাব বানালাম, না স্টেক বানালাম, না ভুনা বা শুটকি করে খেলাম সেটা আমার উপর। এখানে বিতর্কের কোনই অবকাশ নাই।
তবে, কোরবানির সবচেয়ে বড় মাহাত্ম্য হচ্ছে আমরা এর তিন ভাগের দুইভাগই দান করে দেই। অন্য সময়ে আমরা যে মাংস খাই, তখন কতটুকু দান করি? আপনি যদি নিজে প্রতিবার বাজার থেকে কেনা মাংসের তিনভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য রেখে বাকি দুইভাগ বিলিয়ে দেন, তাহলে আমার কোন কথা নাই। আর যদি তা না করে নিজের জন্যই রাখেন, যেটা অত্যন্ত স্বাভাবিক মানব চরিত্র, সেইক্ষেত্রে কোরবানির বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে না যাওয়াই ভাল। কারন, একমাত্র হাড় কিপ্টা মানুষ বা পিওর ভেজিটেরিয়ান ছাড়া কারোরই কোরবানী নিয়ে আপত্তি করার কথা না। এক লাখ টাকার গরুর ৬০ হাজার টাকার মাংসই দান করে দিচ্ছি - কৃপণদেরতো কলিজা ছিড়ে ফালাফালা হয়ে যাওয়ার অবস্থা! তারাই তখন লাফালাফি করে, "ইহা অমানবিক। ইহা ব্লাসফেমি! ধর্মের নামে ইহা অনাচার।"
অথচ নিজে বিয়েবাড়িতে গিয়ে বাটি ভর্তি মাংস খেতে খেতে কলেস্তরল হাই করে ফেলে - তখন মানবতা কই যায়? পশুকি তখনও হত্যা করা হয়না?
মাংসাশীদের পক্ষে একটা সহজ যুক্তি দেই। কথাগুলো আমার না, ওস্তাদ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের। সাথে আমি নিজে থেকেও কিছু কথা যুক্ত করে দিচ্ছি। দেখেন পছন্দ হয় কিনা।
একটা ছাগল বছরে দুই থেকে তিনটা করে বাচ্চা দেয়। এখন মানুষ যদি ছাগল খাওয়া বন্ধ করে দেয়, তাহলে এক বছরে ছাগল সংখ্যা প্রায় আড়াই থেকে তিনগুন বাড়বে। তৃতীয় বছরে সেই সংখ্যা প্রথম বছরের পাঁচ থেকে ছয়গুন হবে। আপনাকে এক দেড়শো বছর অপেক্ষা করতে হবেনা, কেবল দশ বছরই যদি মানুষ ছাগল খাওয়া বন্ধ করে দেয় - প্রথিবী ভরে যাবে কেবল ম্যা ম্যা রবে। এইটা ছিল স্রেফ ছাগলের স্যাম্পল। এখন যোগ করুন গরু, মহিষ, উট, শূকর ইত্যাদি যাবতীয় প্রাণী যেগুলো মানুষ প্রতিদিন খেয়ে ফেলছে। যদি না খেত - তাহলে ইকোসিস্টেমটাই নষ্ট হয়ে যেত। ফুড চেইন খতম হয়ে যেত সেই কবেই।
মাছের কথাটাই ভাবুন। এক থেকে দুই বছর যদি বাংলাদেশের মানুষ মাছ খাওয়া বন্ধ করে দেয় - তাহলে মাছের ঘনত্বে নদীর পানি উপচে বন্যার সৃষ্টি হবে। মানুষই তখন সারভাইভ করতে পারবেনা।
কেবল বৃক্ষ লতা পাতা গুল্ম খেয়ে বেঁচে থাকবেন। তারও উপায় নেই। আমাদের আপনা আদমি জগদীশ চন্দ্র বসুই প্রমান করে গেছেন গাছেরও জীবন আছে - তারাও সংবেদনশীল। ওদের খেয়ে ফেলাটাওতো প্রাণ হত্যা! তাহলে আমরা বাঁচবো কিভাবে?
"নিষ্ঠুর" প্রকৃতির অতি "নিষ্ঠুর" নিয়ম এইটাই - অন্যকে খেয়ে বেঁচে থাকো।
ইসলাম বরং পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
ব্যাক টু দ্য কোরবানি টপিক।
তিনভাগের এক ভাগ মাংস আমরা নিজে খাই। এক ভাগ পায় আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী। আরেকভাগ পায় ফকির মিসকিনগণ। যদিও কেউ কেউ বলবেন, কোন ভাগ না খেয়ে পুরোটাই আপনি খেতে পারবেন। কথা ভুলও না। কিন্তু আমার ভাই এই তিনভাগ বাটোয়ারার নিয়মটাই ভাল লাগে। তো তা করতে গিয়ে আমাদের দেশে আমরা করি কি, হাড্ডিগুড্ডি ও যেসব মাংস আমরা খাইনা, ফকিরদের সেসবই দান করি। যুক্তি চমৎকার, "ওরা জীবনেও মাংস খায় নাকি যে মাংসের ভাল মন্দ বুঝতে পারবে? ওদের যে এটা দিচ্ছি - এই যথেষ্ট।"
এখানেই সমস্যা। দান করে ওদের আমরা ফেভার করছি না। ওদের দেয়াটা আমার উপর আল্লাহর নির্দেশ। কাজেই এইটা তাদের অধিকার। এবং তাদের হাড্ডি ও বাজে মাংস দিয়ে আমি প্রত্যক্ষভাবে তাদের ঠকাচ্ছি।
এরপর আসে আত্মীয়ের পালা। এখানেও দেখা যায় যারা খুব কাছের আত্মীয়, আমরা তাঁদের ভাগেই ভাল মাংস দেই। দূরের আত্মীয়, বা যাদের আমরা খুব একটা পছন্দ করিনা, তাঁদের ভাগে পড়ে হাড্ডিওয়ালা মাংস, মাংসওয়ালা হাড্ডি নয়। এখানেও ডিসক্রিমিনেশন। এবং তারচেয়ে বড় কথা, কোন আত্মীয়ই আমার নিজের জন্য রাখা মাংসের সমান কোয়ালিটির মাংস পায়না। এখানেও বৈষম্য।
এ থেকে বাঁচার আমার একটা আইডিয়া আছে, যা আমি নিজে অ্যাপ্লাই করি। দেখেন পছন্দ হয় কিনা।
বিদেশে আমাদের একটা সুবিধা আছে। বিভিন্ন দোকান আমাদের হয়ে র‌্যাঞ্চে পশু কোরবানি দেয়। তারপর আমাদের ভাগের মাংস বক্সে ভরে আমাদের বুঝিয়ে দেয়। আমি করি কি, দোকানেই মাংস তিনভাগ করে ফেলি। এক ভাগ গরিবকে দেই, একভাগ কোন আত্মীয়কে দেই, আরেকভাগ নিজের জন্য রাখি। নিজেও জানিনা আমার বক্সে কেমন মাংস পড়ছে। কাজেই নিজের কাছে অন্তত পরিষ্কার থাকি, আমি আসলেই আল্লাহকে খুশি করতে কোরবানী করেছি, তাঁর নির্দেশ মতই ভাগ করে বিলিয়ে দিয়েছি।
বাকি আল্লাহ ভরসা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:১১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



খুবই ভাল কথা বলেছেন , যুক্তি সুন্দর হয়েছে ।

২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৩

বিজন রয় বলেছেন: ঈদ মোবারক।
আপনার এবং আপনার পরিবারের সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০১

বুনিয়াদি ভ্রমঘাতিকা বলেছেন: কিছুদিন আগে এক মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিয়ে এসেছি। এটা ছিল আমার কুরবানি। স্রষ্টা খুশি হোক বা না হোক।

গবিরকে সাহায্যই যদি করতে হয় মহল্লার সবাই মিলে কি গবিরকে স্বাবলম্বী করার কর্মসংস্থান দেয়ার কোন উদ্যোগ নিলে কি হত না? সমাজ ও দেশের মঙ্গল হত না?
এখন তো আপনার টাকা মাংস হয়ে গরীবের পায়খানা হয়ে বের হবে আর কিচ্ছু হবে না।

কেন প্রাণীকে কচুকাটা করেই তাদের গারিবি মিটানো লাগবে ? প্রোটিন ? সেটা তো ডালেই যথেষ্ট আছে , পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া। কেন মাংসের নামে নানা রোগবালাই দিচ্ছ গরীবের ঘরে?

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৩২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: গরিবকে সাহায্য করে তাঁকে সাবলম্বী করে তোলার আইডিয়াটা ভাল দিয়েছেন। তবে সেটা আল্লাহ অনেক আগেই দিয়ে দিয়েছেন। একে "জাকাত" বলে।
পায়খানা হয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারনে যদি খাওয়াদাওয়াই বন্ধ করে দেন - কতটুকু লজিকাল হলো ব্যাপারটা? আপনি নিজে মাংস খাননা? যারা বছরে এই একটা দিনই মাংস খেতে পারে - তাদের মাংস খাওয়ার কারনে রোগ বালাই হয় - এমন অদ্ভুত কথাটাও প্রথম শুনলাম। একটু পড়াশোনা করে জানুন, শরীরে চর্বি জমতে কত বছর ননস্টপ রেড মিট খেতে হয়।
এবং পশুর মাংস না খেলে পৃথিবীর অবস্থা কী হবে সেটা উপরেই ব্যাখ্যা করেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.