নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এখনও সময় আছে - সন্তানের সাথে মেলামেশা করুন

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪০

ছোটবেলায় আমাদের পাড়ার ছেলেদের (সিলেটের কথা বলছি) সাথে মিশতে দেয়া হতো না। কারন পাড়ার ছেলেরা ছিল আড্ডাবাজ, বিকাল হলেই আড্ডায় মেতে উঠতো - পড়ালেখার ধারে কাছে নাই। এবং সবারই জীবনের লক্ষ্য ছিল একটাই - আত্মীয় স্বজন কাজিন মাজিন কাউকে বিয়ে করে লন্ডন চলে যাওয়া। শিক্ষিত হয়ে লন্ডন গেলেও রেস্টুরেন্টে আলু ছিলতে হবে, অশিক্ষিত হয়ে গেলেও সেই আলুই ছিলতে হবে। কাজেই শুধু শুধু পড়ালেখা করে সময় নষ্ট করার কী মানে?
পাড়ার যুবকদের কাছে লন্ডন যাওয়া ছিল বেহেস্তে যাওয়ার মতই আরাধ্য বিষয়। লন্ডন প্রবাসীদের দিকে তারা এমনভাবে তাকিয়ে থাকতো যেন বেহেস্ত থেকে জিব্রাইল (আঃ) নেমে এসেছে। যে যুবক তার জীবদ্দশায় লন্ডন যেতে পারেনি - তার ইহ জনম পুরোটাই বৃথা।
স্বাভাবিকভাবেই আমার দেশপ্রেমিক পিতামাতা স্পষ্টভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন ওসব ছেলেদের সাথে না মিশতে। যা করার দেশেই করতে হবে। চারটা ডালভাত খেলেও নিজ দেশে যে সম্মান, যে শান্তি পাওয়া যায় - তা পৃথিবীর আর অন্য কোন দেশেই পাওয়া যায় না।
আমি অ্যামেরিকা আসার পরেও আমার বাবা নির্দেশ দিয়েছিলেন - পড়ালেখা শেষ করে দেশে চলে আসবা। ল্যান্ড অফ অপর্চুনিটি অ্যামেরিকা হলেও - নিজের দেশেও অপর্চুনিটির অভাব নেই।
তারপরে আকাশের অনেক তারা ঝরে গেল, নদীর অনেক জলও ঘোলা হলো। বাবা মারা গেলেন। অনেক কিছুই ধীরে ধীরে উল্টে পাল্টে গেল। বুঝতে পারলাম পিতার ডানার নিরাপদ আশ্রয় থেকে দেখা জগৎ এবং বাইরে ছাদহীন আকাশের নিচের জগতে যোজন যোজন পার্থক্য।
এবং তারপরেই আমার দেশে শুরু হয়ে গেল জঙ্গিবাদ, খুনাখুনি, কোপাকুপি। এবং দেশবাসীকে নির্বাক করে দিয়ে গুলশান হামলাকারী জঙ্গিদের পরিচয় বেরিয়ে এলো - সবাইই সমাজের তথাকথিত ভদ্র ঘরের সন্তান! ছোটবেলায় এসমস্ত ছেলেদের সাথেই মেলামেশা করতাম আমরা। বাবা মা এদের সাথেই মিশতে দিত।
একটি ব্যাপার সুস্পষ্টভাবে চোখে ধরা পড়লো - যদি এসব ছেলে জঙ্গিদের ব্রেনওয়াশের হাত থেকে নিরাপদ না থাকে, তাহলে দেশের কোন ছেলেই নিরাপদে নেই।
জঙ্গিদের সবারই পিতামাতা মোটামুটি একই কথা বলছেন - "আমরা বুঝতেই পারিনি কবে ও জঙ্গি হয়ে গেছে। হঠাৎ করেই নামাজ রোজা রাখতে শুরু করেছিল - এবং তারপরেই পত্রিকায় দেখি এই খবর!"
একই ঘটনা নিউ ইয়র্কের ধরা পড়া যুবকের অভিভাবকের। একই কথা পৃথিবীর সমস্ত ধরা পড়া জঙ্গির অভিভাবকের। কেউই জানেন না কবে তাদের সন্তান জঙ্গি হয়ে গেল।
একটা সমস্যা কী এখানে কেউ লক্ষ্য করছেন?
আমাদের সময়ে আমাদের বাবা মারা আমাদের প্রতিটা বন্ধু বান্ধবের বায়োগ্রাফি জানতেন। আমরা কাদের সাথে মেলামেশা করছি - তাদের পড়ালেখা থেকে চরিত্রের হালহকিকত কী - কার বাবা মা কী করেন - সবকিছু আমাদের বাবা মায়েদের নখ দর্পনে ছিল। এখনকার পিতামাতারা সন্তানদের স্বাধীনতা দিতে গিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাই বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। সে কোথায় কার সাথে মেলামেশা করছে - সেটার উপরই তাঁর চরিত্র - বেড়ে ওঠা ইত্যাদি নির্ভর করবে। একদল ডাকাতের সাথে মেলামেশা করলে আপনার ছেলের সাধুসন্ত সবার সুযোগ একেবারেই শূন্য। বরং সে যদি ডাকাত না হয় - তাহলেই অবাক হতে হবে।
এখনও সময় আছে - সন্তানের সাথে মেলামেশা করুন। তাঁদের বন্ধু হোন। তাঁদের সাথে দূরত্ব কমান। তাঁদের নৈতিক চারিত্রিক মানবিক শিক্ষা দিন। টেলিভিশনে অনেকতো সিরিয়াল আর খবর দেখলেন। তাতে দুনিয়ার কিই বা পাল্টে ফেলেছেন আপনি? বরং সেই সময়টা নিজের সন্তানদের সাথে কাটিয়ে নিজের সংসার তছনছ হওয়ার হাত থেকে আপনিই তাকে বাঁচান।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৪

সৈয়দ আবুল ফারাহ্‌ বলেছেন: বাবা-মায়ের আয়-রোজগার বা কাজের ব্যস্ততা সন্তান থেকে দূরে নিয়ে যায়। শিশুদের স্বাধীন চিন্তা ও কথা বলার দক্ষতার প্রয়োজনীতা ভালভাবে যাচাই-এর প্রয়োজন আছে।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৫

টোকাই রাজা বলেছেন: ভাল লাগলো তবে
স্বাভাবিকভাবেই আমার দেশপ্রেমিক পিতামাতা স্পষ্টভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন ওসব ছেলেদের সাথে না মিশতে। যা করার দেশেই করতে হবে। চারটা ডালভাত খেলেও নিজ দেশে যে সম্মান, যে শান্তি পাওয়া যায় - তা পৃথিবীর আর অন্য কোন দেশেই পাওয়া যায় না।
আমি অ্যামেরিকা আসার পরেও আমার বাবা নির্দেশ দিয়েছিলেন - পড়ালেখা শেষ করে দেশে চলে আসবা। ল্যান্ড অফ অপর্চুনিটি অ্যামেরিকা হলেও - নিজের দেশেও অপর্চুনিটির অভাব নেই।

এই ব্যাপারটা ক্লিয়ার না! এখন আপনি কোথায় দেশে না বিদেশ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.