নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতির পিতা নিয়ে প্যাচগি, ইব্রাহিম (আঃ) বনাম বঙ্গবন্ধু

২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:২৮

এখন নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে "জাতির পিতা" নিয়ে। ইব্রাহিম (আঃ) এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তর্ক। একপক্ষ আরেক পক্ষকে খেয়ে ফেলছে। নিতান্ত মূর্খ মানব থেকে শুরু করে সমাজের তথাকথিত সম্মানিত আঁতেল জ্ঞানভাণ্ডাররাও এই তর্কে যুক্ত হচ্ছেন।
আমার কথা পরিষ্কার, কেউ মানুক কী না মানুক, কুরআনে বলা হয়েছে ইব্রাহিম (আঃ) মুসলিম জাতির পিতা, তার মানে তিনি মুসলিম জাতির পিতা। কথা এখানেই শেষ। কারন যে কুরআন অস্বীকার করে, সে মুসলিম থাকেনা।
কেউ যদি ইনিয়ে বিনিয়ে বলার চেষ্টা করে তিনি অমুসলিম ছিলেন, তাহলে পাতা খাওয়া চতুষ্পদ থেকে উন্নতি ঘটে সে হাম্বা হাম্বা রব তোলা চতুষ্পদে পরিণত হয়েছে। এর বেশি কিছু না।
কারও গাত্র দাহ ঘটে, (১.) ইব্রাহিমকে পিতা বললেতো বঙ্গবন্ধুকে "জাতির পিতা" হিসেবে অস্বীকার করা হচ্ছে। কারন মানুষের একটাই পিতা হওয়া সম্ভব, দুইজন নয়।
কেউ কেউ ঘোষণা দিবে, (২.) মুসলিম কোন "জাতি" না, তাঁরা "সম্প্রদায়।" বাঙালি "জাতি" এবং এর পিতা বঙ্গবন্ধু।
কেউ আবার অতি বিজ্ঞ সাজার চেষ্টা করে বলবে, (৩.) "ইব্রাহিম (আঃ) যদি পিতা হন, তাহলে তাঁর আগের নবীদের কী হবে?"
তৃতীয় পয়েন্টেতো ছাগশিশু নিজেই ধরা পরে গেল। বঙ্গবন্ধু যদি বাঙালির পিতা হন, তাহলে তাঁর পূর্ববর্তীগণরা কী ছিলেন? বা কলকাতা তথা সমস্ত পশ্চিমবঙ্গের লোকেরা কী? তাঁরাওতো বাঙালি। তাঁরাও আমাদের মতোই বাংলায় কথা বলে, ভাত মাছ খায় এবং একই সংস্কৃতি বহন করে।
সহজ উত্তর, আমাদের ভাষায় শব্দটি ভিন্নভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এক্ষেত্রে হিন্দি শব্দটি আমার মনে হয় বেশি সঠিক। "রাষ্ট্র-পিতা।" গান্ধীজি ভারতের রাষ্ট্রপিতা। ফাদার অফ দ্য নেশনকে তাঁরা চমৎকারভাবে নিজেদের মতন করে এবং সঠিকভাবে অনুবাদ করেছে।
বঙ্গবন্ধুও আমাদের "রাষ্ট্রপিতা," তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে - এবং যেহেতু তাঁর আগের কোন বাঙালি (রবীন্দ্রনাথ, মাইকেল, বিদ্যাসাগর, নেতাজি প্রমুখ) বাংলাদেশের অধিবাসী ছিলেন না, এবং পশ্চিমবঙ্গের লোকজন ভারতের নাগরিক, বাংলাদেশের নয়, কাজেই সবদিক দিয়েই আমার ধারণা শব্দটি ফিট করে। মাথায় রাখতে হবে, অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের পার্থক্য হচ্ছে, আমরা নিজেরাই নিজেদের "জাতিকে" ভাগ করে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ হয়েছি। কাজেই "father of the nation" এর ট্রান্সলেশনটা আমাদের জন্য ভিন্ন হতেই হবে। উপায় নাই।
এইবার আসি দ্বিতীয় পয়েন্টে, যেখানে কেউ কেউ বলে, মুসলিমরা জাতি নয়, "সম্প্রদায়।"
তা বাবাজি, আমাদের নবীজি (সঃ) যেখানে স্পষ্টাক্ষরে ঘোষণা দিয়েছেন, "তোমরা আজ থেকে এক উম্মাহ, তোমাদের একজনের কষ্টে সমস্ত উম্মাহর কষ্ট হবে....." - এবং এখানে "উম্মাহ" শব্দের অর্থ "জাতি" - সেখানে তুমি বোমা ফাটিয়ে চিৎকার করলেও কিচ্ছু যায় আসেনা। মুসলিমরা এক জাতি কিভাবে হলো? তাঁরা একই সাথে রমজান মাসে রোজা রাখে, ঈদের দিনে নামাজ পড়ে, কুরবানীর ঈদে পশু কোরবান করে, নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য এড়িয়ে চলে, দিনে পাঁচবার নিজের প্রভুর সামনে মাথানত করে - কালচারালি একটা নির্দিষ্ট ছকের মধ্যে থাকে। একই সংস্কৃতি বহন করে। সে যে অঞ্চলেরই মুসলিম হোক না কেন। সাদা হোক, কালো হোক, কী হলুদ চামড়ার অধিবাসী। মুসলিমরা কখনই গায়ের চামড়ার ভিত্তিতে নিজেদের ভেদাভেদ করতে পারবেনা। ভাষার ভিত্তিতেও নয়। নিয়ম নেই। তাই দেখা যায়, যে অঞ্চলেরই মুসলিম হোক না কেন, যে ভাষাতেই কথা বলুক না কেন, নামাজ সে ঠিকই আরবিতে পড়ে, এবং আরবি কুরআন পড়েই সে নির্দেশ গ্রহণ করে। এক নেতা মুহাম্মদকে (সঃ) মেনে চলে, এক প্রভু আল্লাহর দাসত্ব স্বীকার করে।
বাঙালি যেমন, যেখানেই থাকুক, বৈশাখে নববর্ষ পালন করে, ষোলই ডিসেম্বর বিজয়োৎসব করে, ছাব্বিশে মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করে, একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ দিবস পালন করে এবং পৃথিবীর যে অঞ্চলেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল খেলুক না কেন, সাপোর্ট করে।
তাহলে একটি জাতি, আরেকটা সম্প্রদায় হয় কোন যুক্তিতে? গায়ের চামড়া? কেন? বাংলাদেশে কী ইউরোপ অ্যামেরিকানদের মতন ফর্সা বা আফ্রিকানদের মতোই কালো চামড়ার লোক নেই? ভাষা? আমার ছেলে যদি কালকে বাংলায় কথা বলতে তাঁর অসুবিধা হয়, যেটা বিদেশে বড় হওয়া লক্ষ লক্ষ শিশুদের ক্ষেত্রে হচ্ছে, তাঁরা কী বাঙালি নয়?
দেশের বুদ্ধিজীবীদের এখানেই সমস্যা, অতি আতলামো ফলাতে গিয়ে নিজের যুক্তিতে নিজেই প্যাঁচিয়ে ভূমিতে ধরাশায়ী হয়ে গোঁ গোঁ করতে থাকে।
এবং সবচেয়ে বড় পয়েন্টে আসি, প্রথমটা। ইব্রাহিম (আঃ) পিতা হলে বঙ্গবন্ধুকে পিতা ডাকা যাবেনা। এবং ভাইস ভার্সা। কারন বায়োলোজিক্যালি মানুষের একটাই পিতা হওয়া সম্ভব। দুইটা নয়।
কিন্তু ওহে জ্ঞান সাগর, ইসলাম বা বাংলাদেশের সাথে কী আমাদের "বায়োলোজিক্যাল" সম্পর্ক? দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে কী ভাইয়ের বিন্দুমাত্র ধারণা আছে? অ্যামেরিকান সিটিজেন একই সাথে নিজের দেশেরও সিটিজেন থাকতে পারবেন। মানে হচ্ছে, অ্যামেরিকান বাঙালিরও দুইটা জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু এবং জর্জ ওয়াশিংটন। অ্যামেরিকান মুসলিম বাঙালির সেখানে তিনজন। কোন সমস্যা? না। অতি মুক্তমনা অ্যামেরিকানরা এতে কিচ্ছু মনে করে না। করে আমগো দেশের ওয়ানাবি পোলাপান। যারা নিজেদের মুক্তমনা বলে দাবি করে, কিন্তু তাদের চাইতে সংকীর্ণমনা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
যাই হোক, একজন মুসলিম বাঙালি বলতেই পারে তাঁর জাতির পিতা ইব্রাহিম (আঃ) এবং "রাষ্ট্রপিতা" বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে যদি বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি "জাতির পিতা"ও বলে, তাহলেও সমস্যা নাই। যেহেতু আমাদের মহা আঁতেল সম্প্রদায় শব্দটির সঠিক অনুবাদের পরিবর্তে নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি নিয়ে ব্যস্ত।
সহজ সমাধান না দিয়ে যারা গিট্টু প্যাঁচিয়ে বেড়ায় এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে - তাদের বুদ্ধিজীবী বলতে ইচ্ছে করেনা। সে যেই হোক না কেন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৫৩

আওরঙ্গজেব চৌধুরী রিফাত বলেছেন: বাঙ্গালী জাতির পিতা শেখ মুজিব, আর মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম (আ)। কিন্ত সমস্যা হল চেতনাবাদিরা যেমন বঙ্গবন্ধুকে জাতর পিতা বলে ইব্রাহিম (আ)কে অস্বীকার করতে চায় ঠিক তেমন কিছু নামধারী ধার্মিক গোষ্ঠী ইব্রাহিম (আ) এর দোহাই তুলে বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে

২৪ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:১৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই বললাম ভাই এই পোস্টে।

২| ২২ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:০২

স্বতু সাঁই বলেছেন: আপনার এই পোস্ট নিয়ে অনেক আলোচনার আছে। তবে তার আগে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানার আছে। কোরানের কোথাও কি উল্লেখ আছে, ইব্রাহীমকে মুসলমানের জাতির পিতা করা হলো? যদি উল্লেখ থাকে তবে কোন সুরার কততম আয়াতে সেই রেফারেন্সটা অনুগ্রহ করে দেবেন।

২৪ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:১৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: "তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে দৃঢ় থাক। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম।" - আল কুরআন, সুরাহ হাজ (২২:৭৮)

৩| ২২ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:২০

নতুন নকিব বলেছেন:



স্বতু সাঁই,
এই সহজ জিনিষটা আপনার জানা নেই? আশ্চর্য! আপনার কথাবার্তায় তো মনে হয় আপনি কুরআনের অনেক বড় গবেষক! যাই হোক, আপনার সৌজন্যে রেফারেন্সটা দিয়ে দিচ্ছি। সূরাহ আলহাজ্ব, আয়াত ৭৮। প্রয়োজনে লিঙ্কে গিয়েও দেখতে পারেন।
Surah 22. Al-Hajj, Ayah 78

৪| ২২ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৫

রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: নতুন নকিব বলেছেন: স্বতু সাঁই, এই সহজ জিনিষটা আপনার জানা নেই? আশ্চর্য! আপনার কথাবার্তায় তো মনে হয় আপনি কুরআনের অনেক বড় গবেষক!

নতুন নকিব, আপনি স্বতু সাঁইকে এত দেরীতে চিনলেন বলে আমি সত্যিই অবাক হলাম।

আওরঙ্গজেব চৌধুরী রিফাত বলেছেন:
বাঙ্গালী জাতির পিতা শেখ মুজিব, আর মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম (আ)। কিন্ত সমস্যা হল চেতনাবাদিরা যেমন বঙ্গবন্ধুকে জাতর পিতা বলে ইব্রাহিম (আ)কে অস্বীকার করতে চায় ঠিক তেমন কিছু নামধারী ধার্মিক গোষ্ঠী ইব্রাহিম (আ) এর দোহাই তুলে বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে
আপনি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন।

৫| ২২ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৩৬

প্রাবাসী ছেলে সোহেল বলেছেন: আমাদের দেশের ছাগু সম্প্রদায়ের পাকিস্তানের জাতির পিতাকে নিয়ে চুলকানি থাকে না,থাকে বাঙ্গালী জাতির পিতাকে নিয়ে

২৪ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:২০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আবার একই সাথে হাগু সম্প্রদায় ইব্রাহিমকে (আঃ) মুসলিমদের পিতা বলতে অস্বীকার করে।
দুইটাই খারাপ।

৬| ২৪ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৩৯

স্বতু সাঁই বলেছেন: লেখক বলেছেন: "তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে দৃঢ় থাক। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম।" - আল কুরআন, সুরাহ হাজ (২২:৭৮)

এখানে পিতা বলতে কি বুঝিয়েছে তার কি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে পারবেন? আপনি যতোটুকু কোট করেছেন আয়াতটা ততোটুকু নয়। তাছাড়া শুধু ৭৮নং আয়াত নিয়ে বিশ্লেষণ করলে সঠিক ব্যাখ্যা নাও দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে ঐ সুরায় ইব্রাহীমের উপাখ্যানটি কোথা থেকে শুরু হয়েছে এবং কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছ। আপনি খুব শতর্কতার সাথে পড়ে ও বুঝে আমাকে ব্যাখ্যাটা দিন।

২৮ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: পুরো আয়াত, "তোমরা আল্লাহর জন্যে শ্রম স্বীকার কর যেভাবে শ্রম স্বীকার করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাক। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।" - কী বুঝতে সমস্যা হচ্ছে সেটাইতো বুঝতে পারছি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.