নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

পূজা মন্ডপ বা প্রতিমা ভাংচুর এবং ইসলাম

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৩

বছর ঘুরে আসছে শারদীয় দুর্গোৎসব। দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। তবে এই সময়টায় আনন্দের পাশাপাশি কিছু ঘটনা একদম মন ভেঙে দেয়। পূজা মন্ডপ বা প্রতিমা ভাংচুর তার একটি।
এসবকে "বিচ্ছিন্ন ঘটনা" বলে উড়িয়ে দেয়ার কোন উপায় নেই। বছরের পর বছর ধরে ঘটে আসছে। এতটা কনসিস্ট্যান্ট পারফরম্যান্স আমাদের দেশে আর অন্য কোন ক্ষেত্রেই নেই। থুক্কু, ভুল বললাম, ঘুষ এবং দুর্নীতির সাথে এই আকাম কম্পিট করতে পারে।
এর সবচেয়ে বড় কারন বোধয় এইটা, যে দেশের মুসলিম জনসংখ্যার একটি বড় অংশের সমর্থন আছে এই কুকাণ্ডে। যারা ভাংচুর করছে তারা তো করছেই, যারা চুপ করে আছে, তারাও হয়তো মনে মনে বলছে, "ঠিকই আছে। মূর্তি পূজা করবে কেন? ইসলামে মূর্তি পূজা হারাম!"
জ্বি, কথা ঠিক। নিরাকার আল্লাহকে করা সবচেয়ে বড় অপমান হচ্ছে তাঁকে একটি আকৃতি দিয়ে সেই আকৃতির উপাসনা করা। আল্লাহ বলেছেন তিনি সব গুনাহ মাফ করবেন, কিন্তু কেউ যদি তাঁর উপাসনায় অন্য কাউকে শরিক করে, এবং ঐ অবস্থায় মারা যায়, তাহলে সেই গুনাহ তিনি মাফ করবেন না।
কিন্তু, এই আল্লাহই কিন্তু বলছেন কারও দেবদেবীকে গালাগালি না করতে (ভাংচুরতো প্রশ্নই উঠেনা)। তিনিই বলছেন, ধর্মের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নেই। (বাকারাহ, ২৫৬, আয়াতুল কুর্সির ঠিক পরের আয়াতটাই এই)
কনফিউজ্ড? একটার সাথে কন্ট্রাডিক্ট করে ফেলছে না আরেকটা? বাঙালি মুসলিমের মাথায় তারতুর প্যাঁচায়ে যায়। সে কোন ভাবনা চিন্তা না করেই ভাংচুর শুরু করে দেয়।
যারা এই কাজটা করে তারা কোন জানোয়ারের চেয়ে কোন অংশেই উচ্চশ্রেণীর প্রাণী নয়। ওদের চেয়ে বরং আপনাদের বিষয়টা বোঝানো যাক। আপনারা শিক্ষিত রুচিশীল এবং বুদ্ধিমান প্রাণী। আপনারা বুঝবেন। তারপর নিজের পোলাপানদের শিক্ষা দিবেন। তাঁরা দিবে তাঁদের বাচ্চাকাচ্চাদের। তাহলে একদিন যদি আমরা মানুষ হই!
ধরেন আপনার বাড়িতে তিনটা ছেলে মেয়ে আছে। একটা বড় মেয়ে, তারপরের দুইটা ছেলে। আপনার ছোট ছেলে করলো কি রং পেন্সিল দিয়ে আপনার দেয়ালে কার্টুন এঁকে ভরিয়ে ফেলল।
আপনি যতই ঠান্ডা মাথার মানুষ হন না কেন, পুত্রস্নেহে আপনি যতই গদগদ পিতা/মাতা হন না কেন, আপনার মেজাজ স্বাভাবিকভাবেই খারাপ হবে। আপনি ছোট ছেলেকে ডেকে এনে ইচ্ছামতন বকে ঝকে দিবেন। আপনার বড় মেয়েকে দেখিয়ে বলবেন কত আদর্শ কন্যা সে। বাপ মায়ের কথা শোনে, কোন উল্টাপাল্টা কাজ করে না, ক্লাসে সবসময়ে ফার্স্ট হয়। ওর মতন মেয়েই হয়না।
ছোট ছেলে কান্নাকাটি করলে আপনার মন আবার গেলে যাবে। পারলে আরেকটা রং পেন্সিল এগিয়ে দিয়ে বলবেন "নতুন রং যখন বসাবোই, তখন মনের খায়েশ মিটিয়ে যত খুশি রং করে নে।"
ঠিক বলেছি না?
এখন ধরুন, আপনি বাড়িতে এসে দেখলেন আপনার পিচ্চি দেয়াল এঁকে ভরিয়ে দিয়েছে। আপনি কেবল বকাঝকা শুরু করেছেন, এবং আপনার বড় মেয়ে করলো কি, আপনার সেই অপরাধী ছোট ছেলেকে ধরে ঠাস ঠাস করে দুইটা চড় বসিয়ে দিল। আগেই বলেছি, আপনার বড় মেয়ে হচ্ছে আদর্শ সন্তান। আপনার সবচেয়ে প্রিয় সন্তানও সে। কিন্তু, এইক্ষেত্রে আপনার কী মেজাজ খারাপ হবেনা আপনার মেয়ের উপর?
"তুমি ওকে মারলে কেন?"
মেয়ে তখন অবাক হয়ে জবাব দিবে, "কিন্তু ও যে অপরাধ করেছে।"
"ওর অপরাধের জন্য শাস্তিতো আমি দিচ্ছিই, তুমি কেন মাতবরি করতে এলে?"
এখন কিন্তু কাহিনী ঘুরে যাবে। আপনি আপনার ছোট ছেলেকে মারধরের অপরাধে বড় মেয়েকে শাস্তি দিবেন। নো ম্যাটার হোয়াট ছোট ছেলের অপরাধ, নো ম্যাটার হোয়াট বড় মেয়ে আপনার কতটা প্রিয়। এই ক্ষেত্রে বড় মেয়ে অন্যায় করেছে। এইটাই কী ন্যায় নয়?
সিচ্যুয়েশন নিয়ে কারোর কোন প্রশ্ন আছে?
একজ্যাক্টলি এইটাই ঘটছে এখানে।
আল্লাহ প্রচন্ড অপমানিত হন যখন তাঁকে সাকার রূপে উপাসনা করা হয়, তিনি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন যখন কেউ বলে তিনি সন্তান গ্রহণ করেছেন, কোরান শরীফে এই নিয়ে ভয়াবহ বর্ণনা করা হয়েছে, "হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে। এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়। (মারইয়াম, ৯০-৯১-৯২)
রাহমানুর রহিম, পরমকরুনাময় কতটা রাগ করলে এই কথা বলেন! এই আয়াতের পরপরই তিনি বলেন, "নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না। তাঁর কাছে তাদের পরিসংখ্যান রয়েছে এবং তিনি তাদেরকে গণনা করে রেখেছেন। কেয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে একাকী অবস্থায় আসবে। যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদেরকে দয়াময় আল্লাহ ভালবাসা দেবেন।"
জ্বি, কেয়ামতের দিন, সে যেই হোক না কেন, "একা" আল্লাহর কাছে দাঁড়াতে হবে। কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে। এবং আল্লাহকে ফাঁকি দেয়ার কোনই উপায় নেই, কারন তাঁর কাছে সবকিছুর হিসাব আছে।
এখন এই কথাতো আপনারা সবাই মানেন যে আমাদের নবী মুহাম্মদের (সঃ) চাইতে বড় ইসলামিক স্কলার, তাঁর চেয়ে বড় আলেম, তাঁর চেয়ে বড় কুরআন বিশ্লেষক এই পৃথিবীতে কেউ কখনই ছিল না, ভবিষ্যতেও আসবে না। তা তিনি কী করেছেন এই প্রতিমা পূজারীদের সাথে?
নাজরান থেকে একদল খ্রিষ্টান ধর্ম যাজক এসেছিল তাঁর সাথে দেখা করতে। দেখা সাক্ষাৎ তো না, তাঁকে আসলে বাজিয়ে দেখতে চেয়েছিল তিনি কী আসলেই শেষ নবী নাকি। তো তাঁরা এসে কোথায় উঠলেন? মসজিদে নববীতে। সেই সময়ে কোন হোটেল, মোটেল ছিল না কিনা। নবীর বাড়িও ছিল বর্তমানে আমাদের টেক্সাস সাইজ ক্লজেটেরও ছোট। তিনি তাঁদের মসজিদেই থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করলেন।
কথাবার্তার একটা পর্যায়ে তাঁদের ইবাদতের সময় হয়ে গেল। তাঁরা বাইরে কোথাও যেতে চাইলেন, নবী মুহাম্মদ (সঃ) করলেন কি জানেন? তাঁদের মসজিদে নববীতে ইবাদত করতে বললেন। Can you believe it?
বর্তমানে কোন মসজিদের ইমাম যদি বলেন "আপনাদের মন্দির/গির্জা ভাংচুর হয়েছে? আপনারা আমাদের মসজিদের এই ঘরে প্রার্থনা করতে পারেন" - তাহলে সেই ইমামের কী শাস্তি হবে কল্পনা করতে পারেন?
অ্যামেরিকায় কিন্তু ঘটনা এমন ঘটেনা। রবিবার গির্জার পার্কিং লটে অতিরিক্ত ভিড় হলে ওরা পাশের মসজিদের পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করে। শুক্রবার বা ঈদের দিন আমরা যেমন গির্জায় গাড়ি পার্ক করে আসি। রবিবার ঈদ হলে অবশ্য গিট্টু লেগে যায়। তারপরেও ওরা ঝামেলা করেনা। যে আগে আসবে, পার্কিং স্পেস তাঁর।
একবার কোথায় যেন একটা গির্জা ভেঙে গিয়েছিল, কিংবা কয়েক সপ্তাহের জন্য তাঁদের বন্ধ রাখতে হয়েছিল সংস্কার কাজে, তখন তাঁরা কোথায় প্রার্থনা করেছিল জানেন? ঠিক ধরেছেন, পাশের মসজিদে। রেফারেন্স? ঐ যে উপরে নবীজির (সঃ) ঘটনা বললাম।
এইবার আসুন মূর্তি ভাংচুরের বহু প্রতীক্ষিত টপিকে। আহাম্মকেরা দাবি করে (আহাম্মক বললাম কারন ক্যানভাসের এরচেয়ে বড় গালি দেয়া নিষেধ, কিন্তু আপনার মনে মানুষের বলদামি নিয়ে যেই গালিই আসছে কল্পনায় ধরে নিন আমি ওটাই বলেছি) যেহেতু নবী (সঃ) কাবা ঘরের মূর্তি ভেঙে ফেলেছিলেন, কাজেই মূর্তি ভাংচুর করা জায়েজ।
এখন বলি কেন এই সম্প্রদায়কে আহাম্মক বললাম।
নবী (সঃ) কখন মূর্তি ভাংচুর করেছেন জানেন? মক্কা বিজয়ের পর। এইটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। মক্কা বিজয়ের আগে সুদীর্ঘ তেইশ বছর তিনি নব্যুয়াতি করে গেছেন, মক্কায় ছিলেন তেরো বছর, তিনি এই কাবায় দাঁড়িয়েই ইবাদত করতেন, এবং guess what, তখনও কাবা মূর্তিতে গিজগিজ করতো।
হিজরত করে মদিনা গেলেন। হুদাইবিয়ার পর মুসলিমরা প্রথম হজ্জ্ব পালন করতে এলো, তিনি এলেন না, আবু বকরের (রাঃ) নেতৃত্বে সবাই এলেন, এবং সারপ্রাইজ সারপ্রাইজ, মূর্তি ভাংচুর করা হলো না। এইবারও চিন্তা করে দেখেন, মুসলিমরা হজ্জ্ব করছে, কাবা ঘরে, এবং কাবায় তখনও মূর্তি গিজগিজ করছে।
এবং তারপরের বছর মক্কা বিজয় ঘটে, এবং তিনি মূর্তি ভাংচুর করেন। কেন? কারন, মক্কা বেদখল করে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল, এখন যেহেতু পুনরুদ্ধার হয়ে গেছে, কাজেই মূর্তি ভাংচুর ছাড়া আর উপায় নেই। মানে হচ্ছে, যদি কখনও কোন মসজিদ দখল করে সেখানে মূর্তি স্থাপন করা হয়, তাহলেই কেবল ঐ মসজিদ পুনরুদ্ধারের পর মূর্তি ভাঙা জায়েজ আছে, নাহলে নয়। আপনি random কোন মন্দিরে ঢুকে ভাংচুর করতে পারেন না। এই অধিকার আপনাকে দেয়া হয়নি।
প্লাস আরেকটা মহাগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। কুরাইশরা তখন ব্র্যান্ড নিউ মুসলিম, মূর্তি/প্রতিমা/বৃক্ষ পূজা থেকে এখনও মানসিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই, ওরা যদি মূর্তি সামনে দেখে, তাহলে আগের অভ্যাস বসত তার প্রতি সিজদায় মাথা ঝুকবেই। এর প্রমান মুসা (আঃ) নবীর সামনে তাঁর সম্প্রদায়ের সোনার গাভী নির্মাণ করে পূজা অর্চনা করা; এর প্রমান রাসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে কুরাইশদের একটি সৌভাগ্যবান বৃক্ষের দাবি, যেখানে তলোয়ার ঝুলালে যুদ্ধের সময়ে বরকত আসে। (জাহেলী যুগে এইটাই ছিল তাঁদের বিশ্বাস। ওদের একটা গাছ ছিল, যেখানে ওরা যুদ্ধাস্ত্র ঝুলিয়ে রাখতো, এবং বিশ্বাস করতো এতে তাঁদের অস্ত্রের উপর বরকত হয়। এবং নবী (সঃ) খুবই ব্যথিত হয়েছিলেন ওদের এই আবদারে।) এবং এর সবচেয়ে বড় প্রমান আমাদের দেশে পীর ফকির-মাজার-পূজা। গাছে তলোয়ার ঝুলানো, এবং আমাদের দেশের মাজারের পানি পড়া, পরীক্ষার জন্য কলম পড়া, অসুস্থতায় হুজুরের তাবিজ ধারণ এইসবে পার্থক্য কী? আমাদের দেশে মহা জরুরি ভিত্তিতে এইসব মাজার ভাংচুর এবং ভন্ড পীরদের জেলে ঢোকাতে হবে। কিন্তু আফসোস কারোর মাথাতেই কথাটা ঢুকেনা।
তো যা বলছিলাম, সবার মাথাতেই এই প্রশ্ন আসবে, তাহলে মুহাম্মদ (সঃ) নবী হয়ে কিভাবে কুরআনের কথার বিপরীতমুখী কাজ করলেন? কেন হজরত উমার জেরুজালেম পতনের পর খ্রিষ্টানদের একটিও গির্জা ভাংচুর করলেন না? কিভাবে পারস্য বিজয়ের পর একটিও মন্দির ভাংচুর ঘটনা ঘটেনি? ওরা কি তাহলে ইসলাম জানেনা?
ওরা আসলে আপনার বড় মেয়ে হতে চায় নি। আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা, তিনি আমাদের গাইড, তাঁর অধিকার আছে কাউকে কাউকে অপরাধের জন্য বকে দেয়ার, কাউকে শাস্তি দেয়ার, এবং কাউকে কাউকে ক্ষমা করার - আমাদের নেই। আমাদের কাজ হচ্ছে, ইবাদত করে যাওয়া। এই ক্ষেত্রে ছোটভাইকে বলা দেয়ালে আঁকিবুকি না করতে। করলে বাবা রাগ করবেন।
কারন সূরা মারিয়ামের আয়াতগুলো উপরে দিলাম না? তার পরের আয়াতগুলিতে আল্লাহ বলছেন, "আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন। (৯৭)"
কলহকারী সম্প্রদায়কে সাবধান করতে বলেছেন। ভাইয়েরা, আল্লাহ বিশৃঙ্খলা পছন্দ করেন না। আদম সৃষ্টির সময়ে ফেরেশতারা তাঁকে এইটাই বলেছিল, "ওরাতো পৃথিবীতে গিয়ে কলহ সৃষ্টি করবে।"
জবাবে আল্লাহ বলেছিলেন, "আমি যা জানি, তোমরা তা জানোনা।"
কাজেই সমাজে কলহ সৃষ্টি করলে আল্লাহ পার্সোনালি ব্যাপারটাকে হ্যান্ডল করেন। সাবধান করার কাজ ছিল সাবধান করেছেন, এরবেশি কিছু করতে যাবেন না। চড় থাপ্পড় মারলে বাবা মাই উল্টো আপনার উপর খেপে যাবেন।
সূরা মারিয়ামের শেষ আয়াতটাই আমাদের কলিজা শুকিয়ে দিতে যথেষ্ট, "তাদের পূর্বে আমি কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি। আপনি কি তাদের কাহারও সাড়া পান, অথবা তাদের ক্ষীনতম আওয়াজ ও শুনতে পান?"(৯৮)
আল্লাহর গজব যখন নাজেল হবে, একটা আওয়াজ করারও টাইম পাবেন না। আপনার জিন্দেগীভরের ইবাদত কেবল একটি আর্তের অভিশাপে নষ্ট হয়ে যেতে যথেষ্ট।
কাজেই, এই দূর্গা পূজায়, আপনার এলাকায়, পাড়া মহল্লায় পূজা মন্ডপ পাহারা দিতে ভলান্টিয়ার লাগলে আপনি নিজে নাম লেখান। কেউ যেন কলহ সৃষ্টি করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করুন।
সবার আগে একটা কমন সেন্স এপ্লাই করুন, কেউ যদি ধর্মীয় কারন দেখিয়ে আপনার মসজিদ পুড়িয়ে দেয়, আপনি বা আপনার চৌদ্দগুষ্ঠি, বা আপনার বংশধররা কেউ কখনও সেই ধর্মের ঈশ্বর বা লোকজনকে ভাল জ্ঞান করবে? ঠিক এইটাই ঘটবে যদি ইসলামের নাম নিয়ে কোন বদমাইশ (আবারও বলছি, মনে যে গালি আসে কল্পনা করে নিন, ইসলামের নামে ধর্মব্যবসায়ীদের আমি কোন অবস্থাতেই মেথরপট্টির শুকরের চেয়ে মহান প্রাণী গণ্য করিনা) কারোর প্রতিমা মূর্তি, কারোর পূজা মন্ডপ ভাংচুর করে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুবুদ্ধি দান করুন। বলেন, আমিন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১১

আবু তালেব শেখ বলেছেন: আলোচনায় একমত। তবে বাংলাদেশে প্রতিমা ভাংচুর রাজনৈতিক খেলা এটা কমবেশি সবাই বুঝতে পেরেছে। ফায়দা লোটে লিডাররা আর দোষ হয় সব মুসলমানের।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন। এই জন্যই পাহাড়া দেয়া উচিৎ, যেহেতু আমাদের বদনাম ছড়াতে কাজটা করে, তাই আমাদেরই দায় ওদের মুখোশ খোলা।

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: কয়লাকে শত ধুইলেও তা কালোই থাকে ।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হমমমম

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫২

সোহাগ সালেহ বলেছেন: ইসলাম কখনোই অন্য ধর্মের প্রতি কটাক্ষ করাকে সমর্থন করে না।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক।

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০৩

স্বল্প বাঁধন বলেছেন: মুর্তি ভাংচুর অবশ্যই হীন উদ্দেশ্য প্রণীত ঘটনা।এগুলো বরাবরই রাজনৈতিক মহলের কাজ।নিরপেক্ষমনে চিন্তা করলে স্পষ্ট হবে আশা করি।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন। এই জন্যই পাহাড়া দেয়া উচিৎ, যেহেতু আমাদের বদনাম ছড়াতে কাজটা করে, তাই আমাদেরই দায় ওদের মুখোশ খোলা।

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২০

ANIKAT KAMAL বলেছেন: এ‌তো চমৎকার সাবলীল ভাষায় সম‌য়োপ‌যোগী পো‌স্টের জন্য অান্ত‌রিক ধন্যবাদ ম্যাডাম, ভা‌লো থাক‌বেন সব সময়। সব‌চে‌য়ে বড় কথা হ‌চ্ছে যত‌দিন অামরা বি‌বে‌কের দায়বদ্ধতা ও অাত্ন স‌চেতনতা‌বোধ থে‌কে ভা‌লো হব না তত‌দিন কোন কিছুই ভা‌লো অাশা কর‌তে পারব না। কারণ অামরা প্র‌তি‌নিয়ত নি‌জের সা‌থে নি‌জে বিশ্বাস ঘাতকতা কর‌ছি।

৬| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২১

গেছো দাদা বলেছেন: মূর্তি ভাঙ্গার বিরূদ্ধে জোরালো ইসলামিক যুক্তিপূর্ন পোষ্ট । লেখক কে হিন্দু দের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই ।

৭| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:০৫

মলাসইলমুইনা বলেছেন: আপনার লেখাটা সুন্দর হয়েছে | ধন্যবাদ নিন | কিন্তু কয়েকটা জায়গায় দ্বিমত করছি | "...যে দেশের মুসলিম জনসংখ্যার একটি বড় অংশের সমর্থন আছে এই কুকাণ্ডে। যারা ভাংচুর করছে তারা তো করছেই, যারা চুপ করে আছে, তারাও হয়তো মনে মনে বলছে, "ঠিকই আছে। মূর্তি পূজা করবে কেন? ইসলামে মূর্তি পূজা হারাম!" -আপনার এই মন্তব্যের সাথে দ্বিমত করছি পুরোপুরি | আমাদের দেশ সবসময় মুসলিম প্রধান | হিন্দুদের বসবাসও এখানে অনেক পুরোন | ধর্মীয় উৎসব হিসেবেপূজা পার্বণও অনেক দিন ধরেই চলছে দেশে | দূর্গা পূজায়তো দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে অনেক আগে থেকেই | দেশের বেশিরভাগ মানুষ যদি "ঠিকই আছে। মূর্তি পূজা করবে কেন? ইসলামে মূর্তি পূজা হারাম!" - এটা ভাবতো তবে কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতিতে এই স্কুল কলেজ বন্ধটা সর্বজনীন হতো না | দেশের বেশিরভাগ মানুষ যদি ইসলামে মূর্তি পূজা হারাম বলে পূজা মণ্ডপ ভাঙচুর করতো তবে এই ভাঙচুর ভয়াবহ আকারে হতো সব জেলায়ই,সব জায়গায়,সব বছরই | সেটা কিন্তু হয় না কখনো |

চিটাগাংয়ে হাটহাজারীতে দেশের সবচেয়ে বড় কওমি মাদ্রাসা | হাটহাজারী মাদ্রাসার দেয়ালের সাথেই লাগানো একটা মন্দির আছে প্রায় শত বছর ধরে | চিটাগাংয়ের মানুষ আমার জানা মতে একটু বেশি ধর্ম পালনকারী | ওখানে হাটহাজারীতে কিন্তু এই মণ্ডপ ধ্বংসের ব্যাপারটা কখনো ঘটেনি বলেই আমি জানি | প্রত্যেকটা সরকারের কাছেই এটা খুব সেনসেটিভ ইস্যু | তারা চেষ্টা করে এটা যেন না হয় | ঢাকার বাইরে মফস্বলে পুলিশ কিন্তু খুবই প্রভাবশালী |তাদের এড়িয়ে কারো পক্ষে এই ভাঙচুর চালানো কিন্তু মোটামুটি অসম্ভব | মফস্বলে কারা এই ভাঙচুর করতে পারে সেটা পুলিশ ভালোই জানে | তাই এরপরও যখন এই পূজা মণ্ডপ ভাঙচুর হয় তখন সরকারি দলের সদস্যরা বা ছোট কিন্তু খুবই প্রভাবশালী (অর্থ বিত্তে) একদল মানুষের ইশারা ছাড়া এটা হওয়া একেবারেই অসম্ভব | সবসময়ই এই ভাঙচুরের পেছনে রাজনীতি থাকে |

পূজা মণ্ডপ ভাঙবার মতো একটা খুবই নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ আমাদের দেশে প্রায় প্রতিটি বছরই ঘটছে | কিন্তু দয়া করে এর সাথে দেশের মুসলিমদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যাকে জড়িয়ে দেবেন না | বেশিরভাগ মানুষই এর বিপক্ষে, যেমন খুন,রেপের বিপক্ষে | কিন্তু অল্প কিছু ক্ষমতাশালী মানুষ (বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যারা ক্ষমতাসীন রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকে) তারা এই কাজ গুলো করে এবং বছরের পর বছর পাড়ও পেয়ে যায় | এর সাথে সাধারণ মানুষ খুব কমই যুক্ত থাকে |

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.