নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিরাকেল

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৫:০১

সবার আগে আমার সাথে ঘটা কুরআনের একটি মিরাকেল বর্ণনা করা যাক। তারপরে মূল বক্তব্যে আসছি।
আমি অনেক আগে একটা লেখায় বলেছিলাম, আমি নিজের সাথে একটা ইন্টারেস্টিং খেলা খেলি। সারাদিনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা মাথায় নিয়ে এশার নামাজের পর কুরআন খুলে বসি। কেবল দুই পৃষ্ঠা পড়ার টার্গেট থাকে। এবং সেখান থেকেই এসব ঘটনার কোন মিল/নির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায় কিনা সেটা খুঁজে দেখার চেষ্টা করি। দেখা যায় প্রতিদিনই আমি আমার উত্তর পাচ্ছি।
যেমন একবার খুউব দামি এক সেট ফার্নিচার কিনে ফেলার পর মন খচখচ করছিল। অনেক টাকা এইভাবে বেরিয়ে যাওয়ায় মনে মনে অপরাধবোধ হচ্ছিল। যদিও নিজের টাকা যাকাত/সদকা দেয়ার পরে খরচে ইসলামে কোন বাঁধা নেই, তারপরেও মনে হচ্ছিল এত টাকা একসাথে এইভাবে উড়িয়ে দেয়া উচিৎ হয়নি। সেই রাতেই আমি কোরআনে আমার সবচেয়ে প্রিয় আয়াতখানা পড়ি। "সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।"
যেদেশে মাত্র পাঁচশো ডলার পকেটে নিয়ে জীবন শুরু করেছিলাম, এবং ঘরে একসময়ে শোবার জন্য কেবল ম্যাট্রেস ছাড়া আর কোন কিছুই ছিল না, মাত্র কয়েক বছরেই এমন আসবাব কেনার সামর্থ্য যিনি দিয়েছেন, তাঁর প্রতি শুকরিয়া আদায় না করে উপায় আছে? তিনি সাথে থাকলে ভয় কিসের?
কিংবা দুই হাজার সতেরো সালের মার্চ মাসে লন্ডনে হামলা (পথচারী এবং পুলিশ নিহত হয়েছিলেন এক জিহাদি চেতনার উন্মাদের আক্রমনে, মনে আছে?) হবার দিন আমি পড়েছিলাম, "বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ।"
এই আয়াতটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই কারণেই যে তখন দেশে বিদেশে অনেককেই ইনাতে বিনাতে দেখেছিলাম এই বলে যে "এই সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা জানাই - কিন্তু/তবে ফিলিস্তিন, ইরাক, সিরিয়ার অবস্থানের পেছনে কে দায়ী?.........."
যেই দায়ী হোক, অন্তত নিহত হওয়া পথচারী বা পুলিশ অফিসারটি যে নয় - এইটা মাঠে ঘাস খাওয়া বলদও হাম্বা হাম্বা করে বলে দিতে পারবে। ইসলামে "কোলাটেরাল ড্যামেজ" বলে কোন টার্ম নেই। রাসূলের স্পষ্ট নির্দেশ আছে যুদ্ধ ময়দানেও সিভিলিয়ানতো সিভিলিয়ান, একটা গাছেরও ক্ষতি করা যাবেনা। দরকার হলে নিজেরা মরে যাবে, তবু নির্দোষের রক্ত ঝরানো যাবেনা।
এক বলদ আমাকে বলতে এসেছিল, "এইটাতো তাহলে প্র্যাকটিক্যালি 'যুদ্ধ' হয়না।"
উত্তর সহজ, তাহলে তুই যুদ্ধ করিস না। মরে যা। উপরে গিয়ে বলতে পারবি আল্লাহর রাসূলের নির্দেশ ভঙ্গ না করতেই মরে গেছিস। মুসলিম হলে অবশ্যই বিশ্বাস করবি যে তুই তাহলে বেহেস্তে যাবি। ইনোসেন্টের প্রাণ নিলে মুসলিম হলে জেনে রাখ, তুই দোজখে যাবি। আমার না, কুরআন হাদিসই এই কথা বলে।
আমাদের খলিফায়ে রাশেদীনের হজরত উসমান, হজরত আলী নিজেরা শহীদ হয়েছিলেন, তবুও নির্দোষের রক্ত ঝরতে দেননি। একবার তাঁদের মৃত্যুর সময়কার ঘটনাগুলো স্টাডি করুন, কী ভয়ংকর পরিস্থিতি ছিল উপলব্ধি করুন! তোতাপাখির মতন আন্দাজে আল্লাহু আকবার বলার আগে ইসলাম নিয়ে একটু পড়াশোনা করে নিন।
গত কিছুদিন ধরে ফেসবুকে অনেককিছুই দেখছি। এক আহাম্মক উন্মাদ প্রকাশ্যে ইসলামের ভুলভাল ব্যাখ্যা দিয়ে নাস্তিকদের কল্লা ফেলার হুকুম দিয়ে যাচ্ছে। মোশাররফ করিমকে নাস্তিক ট্যাগ দিয়ে একদল এই অভিনেতারও মৃত্যুদন্ড শুনিয়ে যাচ্ছে। সুদূর লন্ডনে বসে এক মুমিন ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন তিনি তাঁকে গাড়িচাপা দিয়ে মারবেন। ইন্টারনেট বস্তির মানুষের হাতে চলে যাওয়ায় এই এক সমস্যা হয়েছে। শুকরের হাতে বাঘের পাঞ্জা গেলে যা হয় আর কি।
বেচারা অভিনেতা ক্ষমা চাওয়ায় আবার একদল তাঁকে কাপুরুষও আখ্যা দিচ্ছে।
প্রথম কথা, যারা তাঁকে কাপুরুষ বলছেন, কেন বলছেন জানতে পারি? বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা আপনারা জানেন না? আজকে মোশাররফকে কোপালে আপনারা তখন কিছু করতে পারবেন? ফেসবুকে দুয়েকটা বাণী বর্ণনা ছাড়া আর কোন কিছুই করার মুরোদ নেই কারোর। মাঝে দিয়ে মরলে তিনি মরবেন, তাঁর বৌ হবে বিধবা এবং সন্তানরা হবে এতিম। খুবতো শুনেছিলাম, "জাফর স্যারের কিছু হলে দেশ উল্টায়া ফালামু" টাইপ কমেন্ট করতে। কই, তাঁকে যখন কোপ দেয়া হলো, কাউকেতো দেখলাম না দেশ উল্টে ফেলার মতন কিছু করতে। আমাদের ভাগ্য ভাল তাঁর কিছু হয়নি। কিন্তু কিছু হলেও কেউ কিছু করতো না। যাদের করার ক্ষমতা আছে, তাঁরা ভোট বাঁচাবার জন্য চুপ করে থাকেন। একটা কেন, হাজারটা জাফর ইকবাল নিহত হলেও তাদের কিছু যাবে আসবে না।
"ধর্ষণে মেয়েদের পোশাক দায়ী" এই কথা যারা সমর্থন করে, তারা প্রত্যেকেই পটেনশিয়াল ধর্ষক। এরা সুযোগ পেলেই ধর্ষণ করবে। ইসলামের দোহাই দিতে আসলে আমি নিজ হাতে তাদের থাপড়াবো। আমি বরং নবীর (সঃ) জীবনের ঘটনা বলি।
বনু ক্বায়নুকা নামের ইহুদি গোত্রের বাস ছিল মদিনায়। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ইহুদি তিন গোত্র এবং মুসলিমদের মধ্যে সন্ধিচুক্তি হয়। কিন্তু নানা কারণেই এই বনু ক্বায়নুকা মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে আসতো। মুহাম্মদ (সঃ) ইস্রায়েলের বংশে না জন্মে ইসমাঈলের বংশে জন্মানোটা ওরা মানতে পারছিল না। বদরের যুদ্ধ জয়ের পর এরা প্রকাশ্যেই বলে বেড়াতো তোমরা আসল পুরুষদের সাথে লড়োনি। আমাদের সাথে লড়াই বাঁধলে দেখিয়ে দিতাম। সন্ধির কারণেই মুসলিমরা চুপ থাকতো।
তা এক মুসলিম নারী ক্বায়নুকা বাজারে কেনাকাটা করতে গেলে ইহুদি দোকানদার তাঁর সাথে ইভটিজিং করতে থাকে। মহিলা পাত্তা না দিয়ে চলে আসছিলেন। কিন্তু একজন তাঁর কাপড়ের এক কোণে বাটখারা রেখে দিলে চাদরের মতন তাঁর পোষাক বাজারে খুলে যায়, এবং তিনি সম্পূর্ণ অনাবৃত অবস্থায় উন্মুক্ত হয়ে পড়েন।
এতে বাজারজুড়ে লোকজন খুব মজা পায়। হাসাহাসি করে। এবং বাজারে উপস্থিত এক মুসলিম নিজের বোনের এমন অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের তলোয়ার দিয়ে এক কোপে অপরাধীর মাথা ফেলে দেন।
এতে বাজারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে সেই সাহাবীকেও হত্যা করে।
মুসলিম শিবিরে এই খবর পৌঁছালে কী হয় সেটা বলার আগে বর্তমান বাংলাদেশে এই ঘটনা হলে কী ঘটতো সেটা বলা যাক।
প্রথমেই একদল আহাম্মক বলতো, "মেয়ে মানুষ বাজারে কেন গেল? এমন পোশাক কেন পড়লো যা সামান্য একটা বাটখারার ভারেই খুলে পরে যায়। মেয়েটিকে শাস্তি দেয়া হোক!"
আল্লাহর নবী (সঃ) বাঙালি ছিলেন না। তিনি তাঁর দলকে সাথে সাথে নির্দেশ দিলেন বনু ক্বায়নুকাকে ঘেরাও করতে। সন্ধির শর্ত ভঙ্গ হয়েছে, এখন যুদ্ধ হবে।
এতদিন উস্কানি দেয়া আসল পুরুষ ইহুদি সম্প্রদায় একটা টু শব্দ করেনি। তারা জানে তাদের অপরাধ গুরুতর ছিল। কাজেই তাদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলে তারা সেটা মেনে নেয়। মুসলমানদের কাছে তাঁদের মা বোনদের সম্মান এমনটাই হবার কথা।
আমাদের মুসলিম সমাজে যদি মেয়েদের সম্মান আসলেই এমনটা হতো!
ছোটবেলায় শুনেছিলাম (সত্যমিথ্যা জানিনা, তবে সত্য হলে খুবই ভাল) মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব দিল্লি শহরের মাজার ভাঙ্গা শুরু করেছিলেন। সব ভন্ড পীর মাজার খুলে মাজার ব্যবসা শুরু করে দিয়েছিল। এতে মোল্লারা জাহাপনার উপর খেপেছিল ঠিকই, কিন্তু তিনি তাঁর কাজ ঠিকই করে গেছেন। এমনিতেই মাজার ব্যবসা উপমহাদেশে এইডসের চেয়েও বড় সমস্যা। তিনি যদি সেটা না করতেন তাহলে যে কী হতো! সরকার যদি শক্ত না হয়, তাহলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ শেষ হয়ে যাবে। এই যে আমি লিখে দিলাম, স্ক্রিন শট নিয়ে রাখেন। ইতিমধ্যেই দেশটি ভ্যান্টিলেশনে চলে গেছে। কৃত্রিমভাবে বেঁচে আছে। স্বাধীনতা দিবসে এক ষোড়শীর ধর্ষিতা শবদেহ সবুজ জমিনে পরে থাকার ছবি দেখতে হয়। এই দেশকে জীবিত বলবেন কোন যুক্তিতে?
এইবার আসা যাক নাস্তিকদের মুন্ডুপাতের নির্দেশ দেয়া মাওলানার কথায়।
মাঝে বাড়ি বদলের ঝামেলায় কোরআন পড়া হচ্ছিল না। এদিকে একটি আয়াত মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। আয়াতটি নাজেল হয়েছিল উহুদের যুদ্ধ ময়দানে। যখন মুসলিমরা কাফেরদের অতর্কিত আক্রমনের শিকার হয়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। টুকরো টুকরো হয়ে লাশ হয়ে পড়েছিলেন হজরত হামজা (রাঃ) সহ অসংখ্য সাহাবী। নবী (সঃ) চেহারায় তীর এসে বিদ্ধ হয়েছিল, মৃত্যু থেকে তিনি মাত্র কয়েক হাত দূরত্বে ছিলেন, এমন কঠিন সময়ে তিনি আফসোস করে বলেছিলেন, "সেই জাতির কিভাবে মুক্তি মিলবে যারা তাঁদের নবীদের হত্যা করে?"
নবীর আফসোস মানে নবীর বদদোয়া। এইটা ইসলামে সর্বজন স্বীকৃত।
কিন্তু আল্লাহ তখন কী বলেছিলেন জানেন?
"আল্লাহ কাদের ক্ষমা করবেন কিংবা কাদের শাস্তি দিবেন এই ব্যাপারে আপনার কোন অধিকার নেই। কারন তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর।
আর যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে, সেসবই আল্লাহর। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী, করুণাময়।"
বুঝতে পারছেন? নবীকে (সঃ) আল্লাহ মৃদু বকুনি দিয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি আল্লাহর একজন প্রেরিত পুরুষ, তাঁর কাজ ম্যাসেজ পৌঁছে দেয়া, এর বেশি কিছু নয়। কে শাস্তি পাবে, কে পাবে মুক্তি এই ব্যাপারে আল্টিমেট বিচারক তিনি স্বয়ং। নবী (সঃ) পর্যন্ত নন। এবং সবশেষে তিনি বলে দিয়েছেন, তিনি ক্ষমাকারী, করুণাময়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এটাই। অপরাধ যত বড় হোক, আল্লাহর ক্ষমার ক্ষমতার বাইরে কখনই তা হতে পারেনা। যে আল্লাহর ক্ষমায় বিশ্বাস করে না, সে মুসলিম হতে পারে না।
এর ফলাফল উহুদ যুদ্ধের তিন কুরাইশ সেনানায়ক, ইকরিমা ইব্ন আবু জাহাল (কুখ্যাত আবু জাহেলের পুত্র), আবু সুফিয়ান এবং খালিদ বিন ওয়ালিদ প্রত্যেকেই মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে মুসলিম হয়ে গিয়েছিলেন। ইকরিমাতো (রাঃ) আবার একজন শহীদও। সেই যে যুদ্ধের ময়দানে তিন সাহাবীর মৃত্যুশয্যায় পানি খাওয়ার বিখ্যাত গল্প, যেখানে একজন আরেকজনকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় মরতে না দিতে পানি এগিয়ে দিতে থাকেন, এবং দেখা যায় তিনজনই তৃষ্ণার্ত অবস্থাতেই মারা যান - ইকরিমা তাঁদেরই একজন। আবু জাহেলের পুত্র! চিন্তা করা যায়?
তা এই মহাগুরুত্বপূর্ণ আয়াত কোন সূরায় নাজেল হয়েছে, সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম। কালকে রাতে আবার কুরআন খুলে দেখি মিরাকেল! সূরা আল ইমরান, আয়াত ১২৮ এবং ১২৯।
তা এই মোল্লার ভাষ্যমতে বেহেস্তের টিকিট উনার কাছে আছে, তিনি জানেন কে জান্নাতে যাবে, কে জাহান্নামে। যেই অধিকার নবীকে (সঃ) পর্যন্ত আল্লাহ দেননি, তিনি সেটার দাবি করে বসে আছেন। বাহ্! এবং তার কথায় ফালাফালি করে একপাল মূর্খ প্রাণী। এদেরই কয়েকজন তলোয়ার হাতে রাস্তায় নেমে আসে নাস্তিক মারতে। বাহ্ রে বাহ্ মুসলমান!
চিন্তা করে দেখুন, যখন সবাই রাসূল মুহাম্মদের (সঃ) বিরোধিতা করছিল, তখন শত অত্যাচার সহ্য করেও যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, যাদের তিন তিনটা বছর নিজের শহর, নিজের সমাজ থেকে বয়কট করা হয়েছিল, পশুর চামড়া, ঘাস লতাপাতা সিদ্ধ করে খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়েছিল, এবং তারপরে নিজেদের জন্মভূমি থেকেই রাতের আঁধারে নিঃস্ব অবস্থায় ভিনদেশে পাড়ি দিতে হয়েছিল - তারপরেও যারা নবীর অবাধ্য হননি, আল্লাহর উপর বিশ্বাস হারাননি, সেই সমস্ত সাহাবীদের হত্যা করে তাঁদের লাশ টুকরো টুকরো করে কেটে কলিজা বের করে কামড় দিয়ে, ছোড়াছুড়ি করে খেলে নাক কান কেটে গলার মালা বানিয়ে লাশ ফেলে রেখে নবীকে (সঃ) হত্যার উদ্দেশ্যে শরাঘাত এবং তরবারির আঘাত করেছে - এখন বলেন এরচেয়ে জঘন্য অপরাধ ইসলামের দৃষ্টিতে আর কী হতে পারে?
এর ফলে নবীজি (সঃ) যদি তাদের বদদোয়া দেন, তাঁর কী দোষ হবে? অবশ্যই নয়। তারপরেও আল্লাহ বলছেন "আমারই অধিকার আছে কাকে ক্ষমা করবো, কাকে নয়, তোমাকে সেই ক্ষমতা দেয়া হয় নি।"
যে কারনে আমরা দেখতে পাই নবীও তাঁর সারাটা জীবন কেবল ক্ষমা করে গেছেন। চিরশত্রু এবং সব ঝামেলা ও যন্ত্রণার জড় মক্কার কুরাইশদের একদম হাতের মুঠোয় পেয়েও তিনি বলেছেন, "আজ তোমাদের ক্ষমা করা হলো!"
যেখানে ইসলামের দৃষ্টিতে কারোর অপরাধের মাত্রাই কুরাইশদের চেয়ে বেশি হতে পারেনা।
আর এই মাওলানা বলে কিনা নাস্তিক হলেই কোপ! এবং সেটা ভিডিও হয়। এবং সেটা মূর্খ মুসলমান এবং ইসলামোফোব দুইটাই ব্যবহার করে। একদল বলে, "দেখে নিন মুসলমানদের আসল চেহারা। এরা জঙ্গি! এরা সন্ত্রাসী!"
আরেকদল বলে, "জিহাদ, জিহাদ, জিহাদ চাই!"
এবং বাংলাদেশ সরকার চুপ করে বসে থাকে। ছুঁলেইতো তাঁদের বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্বেষের অপবাদ রটবে। এমনিতেও তাঁদের বলা হয়ে থাকে ভারতের দালাল, হিন্দুদের পা চাটা, নাস্তিক সরকার। আহারে! সেকুলার সরকারও যদি ভয়ে নতজানু হয়, তাহলে মুক্তি মিলবে কিসে?
গ্রো আপ বাংলাদেশ! একটু পড়াশোনা করে মানুষ হবার চেষ্টা করো। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষন আঁশ। পুরোপুরি মরে যাবার আগে একটু যদি গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে পারো!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:২৪

রাফা বলেছেন: কি আর বলার আছে! শেখ হাসিনার সরকারের অবস্থা যদি এই হয় ।আর মাত্র একবার যদি বিএনপি/জামাত ক্ষমতায় আসে তাহোলে তালেবানি শাসন কনফার্ম।

২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:৪৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভালো লিখেছেন...

৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:০৪

বরুন মালাকার বলেছেন: খূব মনযোগ দিয়ে পড়লাম। ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।
আপনি কি সেকু্লার সরকার এর প্রশংসা করলেন, এদের সব অপকর্মের দায়ভার নেবেন?
কিছুটা গোলমাল মনে হলো, জানাবেন। জাজাকাল্লাহু খাইরান।

৪| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০০

ক্স বলেছেন: ইসলামে প্রতিশোধের কোন স্থান নেই। অপরাধ করলে বিচার আল্লাহ করবে। মানুষকে কোন অধিকারই দেয়া হয়নি প্রতিশোধ নেবার। কেউ প্রতিশোধ নিলে সে হয় আল্লাহ্‌র আইনকে অথবা অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বসল। মজলুমের সাথে আল্লাহ থাকে - একথা বিশ্বাস করলে প্রতিশোধের চিন্তাই কোন মুমিনের মাথায় আসবেনা।

আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করার পর কি দামি আসবাব নিয়ে হওয়া খচখচানি দূর হয়েছিল? মনে হয়নি যে, একটু বেশি বিলাস করার চেয়ে আল্লাহ্‌র একজন বান্দাকে স্বাবলম্বী করে তাকে আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায়ে খরচ করাটা বেশি দরকারি হত? আমার পরিচিত আল্লাহ্‌র একজন বান্দা তার ব্যবসা দাড় করানোর জন্য দিনরাত খেটে যাচ্ছে, সুবিধা করতে পারছেনা। এলাকার মাস্তান, নেতা-পাতি নেতাদের বখরা দেবার পর তার হাতে আর কিছুই থাকেনা ব্যবসা বড় করার জন্য। আমি মাঝে মাঝে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করি, কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। আপনি চাইলে আমি তার সাথে আপনার যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি।

৫| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম। কিন্তু কোনো কিছুই স্পষ্ট বুঝলাম না।

এটা কি ধর্মীয় লেখা?

৬| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৩

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: উহুদের যুদ্ধের সময় নবীজী(সাঃ)'এর চোখে তীর বাঁধার সময়টাতে আল্লাহ উনাকে মৃদু বকুনি দেননি। বরং, বুঝিয়েছেন।

৭| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: ভালো পোস্ট।

ইসলাম নাস্তিকদের মুণ্ডু আলগা করার রায় দেয়নি। অথচ, আমাদের মোল্লারা বিভিন্ন আয়তের ভুল ব্যাখ্যা করে মুণ্ডু ফেলে দেওয়ার রায় দিয়ে দেন। আমাদের বড় অংশ এইসব মোল্লাদের অনুসরণ করছে।
যাহোক, আল্লাহ যেনো আমাদের সবাইকে জানবার এবং বুঝবার তৌফিক দান করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.