নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৫ই অগাস্ট কী করবেন?

১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:৩৪

শিশুরা এমনিতেই বেহেস্তের ফুল হয়ে।
তারমধ্যে তার বয়স আঠারো-কুড়ি মাস হওয়া পর্যন্ত কিউটনেসের পরিমান থাকে আকাশ ছোঁয়া। আধো আধো বুলিতে কথা বলা, এক দুইটি দাঁত মুখে নিয়ে হাসি, হাঁটতে হাঁটতে ধুপ করে পরে যাওয়া। তারপর কান্না। এই বয়সী শিশুকে বুকে নিয়ে ঘুম পাড়ানোর মতন সুখ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর নেই। এই বয়সটিই মা বাবার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের সময়।
নবীজির (সঃ) দ্বিতীয় পুত্রটি ঠিক এই বয়সেই মারা গেল। আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর দাস হলেও তিনিওতো সন্তানের পিতা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর বুকটা ভেঙে গেল। তিনিই শিক্ষা দেন বিপদে ধৈর্য্য ধরার, উপরওয়ালার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার। কিন্তু এদিন কেউ যেন তাঁর বুকের ভিতর পাম্প দিয়ে কষ্টগুলো নিংড়ে তুলে এনে চোখ ভাসিয়ে দিচ্ছে। চোখের অশ্রু বুকের সব কষ্ট ধুয়ে দিতে চায়। স্ত্রী খাদিজা (রাঃ) ও তাঁর কন্যারা কাঁদছেন যেমন স্বজনহারারা কাঁদেন।
তাঁর প্রতিবেশী ছিল তাঁর চাচা আবু লাহাব। লাহাব শব্দের মানে হচ্ছে, আগুন। আগুনের মতন চেহারার বর্ণ, সাথে লালচে চুল দাড়ির জন্য মক্কাবাসী তাকে এই নামে ডাকতো। আরেকটা রেফারেন্স থেকে জেনেছিলাম, ব্যাটার স্বভাবও ছিল আগুনের মতন জ্বলে ওঠা। সেই স্বভাবের কারণেও এমন নাম হয়ে থাকতে পারে। ইসলাম প্রচারের একদম প্রথম থেকেই এই লোক নবীজির (সঃ) বিরোধিতা করে আসছিল। তার যুক্তি ছিল - যদি ইসলামকে সত্য বলে গ্রহণ করে ফেলি, তাহলেতো প্রমান হয়ে যাবে আমার বাপ (আব্দুল মুত্তালিব, মক্কার লেজেন্ড) দাদারা (হাশিম - আরেক লেজেন্ড, বনু হাশিম গোত্র প্রধান, সাথে আরও অনেক সুকীর্তি ছিল তাঁর) ভুল ছিলেন - তখনকার আরব সমাজে নিজের পূর্ব পুরুষদের কোন কর্মকে খারাপ জ্ঞান করা কবিরাহ গুনাহ পর্যায়ের অপরাধ ছিল।
কাজেই আবু লাহাব যখন দেখলো ভাতিজা মুহাম্মদের (সঃ) পুত্র সন্তানটি মারা গেছে, সে নিজের বাড়ি থেকে বের হয়ে উল্লাস করে জনে জনে খবর দিতে লাগলো, "শুনেছো? "আল্লাহর নবী" মুহাম্মদতো নির্বংশ হয়ে গেল! হাহাহা! ওর ছেলেটা মারা গেছে!"
তখনকার আরবে বংশধারা বলতে কেবল পুত্রকেই ধরতো।
আবু লাহাব আধুনিক যুগের ভাষায় সারা শহর জুড়ে যেন পার্টি থ্রো করলো। "ড্রিংকস অন মি!"
প্রতিটা বাড়িঘর একটার সাথে আরেকটা লেগে লেগে থাকতো। কাজেই আবু লাহাবের প্রতিটা কথা তখন নবীজির (সঃ) বাড়িতে এসে পৌঁছাচ্ছে।
যতদূর জানি, পুত্রের লাশ তখনও বাড়িতে। এর মধ্যে নিজের পরিবারেরই এক সদস্যের এমন আচরণ কেমন কষ্ট দেয় বুঝতে পারছেন?
নবীজি (সঃ) কাঁদলেন, তবু একটা কথা বললেন না।
নাজেল হলো সুরাহ কাউসার।
কুরআন শরীফের সবচেয়ে ছোট সুরাহ।
অথচ এই সুরাহ নাজেলের পরপরই সন্তানহারা নবীজির (সঃ) চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে গেল। যেন কালো মেঘ সরে গিয়ে ঝলমল করে উঠলো সূর্য। তিনি বললেন, "এটিই আমার সবচেয়ে প্রিয় সুরাহ।"
সুরাহ কাউসার নবীজির (সঃ) সম্মান ডিফেন্ড করে, ঠিক যেমনটা আল্লাহর সম্মান ডিফেন্ড করে সুরাহ ইখলাস। কুরআন শরীফে এই দুই সুরাহ থাকতে দুনিয়ার কারোর ক্ষমতা নেই তাঁদের অপমান করার।
এইসব পরে বিস্তারিতভাবে লেখা যাবে।
আপাতত ভিন্ন টপিকে আলোচনা করি।
তা নবীজি (সঃ) যতই বলুন আবু জাহেল (অনেকেই জাহেল-লাহাবে গুলিয়ে ফেলে ভাবেন দুইজন বুঝি একই ব্যক্তি। না, দুইজন আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্ব, দুইটাই বদমাইশ) মুসলিম জাতির ফেরাউন, আল্লাহ কিন্তু মাত্র একটা বদমাইশকে একদম নাম ধরে অভিশাপ দিয়েছেন পবিত্র কুরআনে। সেটি এই আবু লাহাব। কেন, সেটা তার উপরের আচরণে বুঝতেই পারছেন। (যদিও সুরাহ লাহাব এই ঘটনার বহু আগে নাযেল হওয়া সুরাহ। আবু লাহাব একদিনের বদমাইশ না। এবং আল্লাহও জানেন ভবিষ্যতে কে কখন কেমন আচরণ করবে।)
যাই হোক, এই ছিল আবু লাহাবের আচরণের অতি সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
এখন আসি নবীজির (সঃ) উদাহরণে।
মক্কা বিজয়ের পর ইকরিমা (রাঃ) ইবনে আবু জাহেল (আবু জাহেলের পুত্র) যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন, তখন নবীজি (সঃ) তাঁর সাহাবীদের বলে দিলেন, "তোমরা আবু জাহেলকে গালাগালি করো না। এতে ইকরিমা কষ্ট পাবে, এবং মৃতেরা জীবিতদের কথা শুনতে পায়না।"
সাহাবীরা জানেন এই আবু জাহেল কী ছিল। স্রেফ নিজের বংশের মর্যাদায় আঘাত আসবে বলে প্রতিপক্ষ বংশের নবীজির (সঃ) জীবন সবচেয়ে বেশি দুর্বিষহ করে রেখেছিল এই আবু জাহেল। যেহেতু আবু তালিব জীবিতাবস্থায় হাশেমী পরিবারের সন্তানের উপর হাত তোলার সাহস তার ছিল না, কাজেই সেই শোধ সে তুলতো বেলাল, ইয়াসির, সুমাইয়া প্রমুখদের উপর অত্যাচার করে। কারন এরা সবাই ছিলেন দাস।
ইয়াসির (রাঃ) এবং সুমাইয়াকে (রাঃ) সবচেয়ে নৃশংসতম মৃত্যু দিয়েছিল এই আবু জাহেল। এক বর্ণনা মতে ইয়াসিরকে (রাঃ) দুইপাশ থেকে ঘোড়া দিয়ে টানিয়ে মাঝ বরাবর ছিড়ে দুই টুকরা করে এবং সুমাইয়ার (রাঃ) যোনি পথ দিয়ে বর্ষা ঢুকিয়ে একদম বুক পর্যন্ত ঠেলে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল সে। এবং মা বাবার মৃত্যু দৃশ্য সে তরুণ আম্মারকে (রাঃ) দেখতে বাধ্য করেছিল। এমনই নৃশংস ছিল আবু জাহেল।
তারপরেও তার মৃত্যু দিনে (বদরের যুদ্ধ) নবীজি (সঃ) কোন বিজয়োৎসব করেননি।
এবং তার পুত্রের সামনে পিতার নামে কুকথা বলাটাও নিষেধ করেছিলেন।
উপরে দুইটা উদাহরণ দিলাম এই কারনে যে পনেরোই অগাস্ট আসছে।
আপনার কাছে অপশন আছে যেকোন একজনকে ফলো করার।
আপনি ইচ্ছে করলে কেক কেটে নেত্রীর জন্মদিনের উৎসব পালন করতে পারেন। একে অপরের মুখে ঠেলে কেক ঢুকিয়ে বলতে পারেন ড্রিংকস অন মি!
আবার ইচ্ছে করলে চুপচাপ শোক জ্ঞাপন করতে পারেন।
"গণতান্ত্রিক" দেশে আপনার অধিকার আছে আবু লাহাবকে অনুসরণ করার, কিংবা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:২৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: সুরা লাহাব কেন নাযিল হয়েছিল??



১৫ই আগষ্ট আমি চুপচাপই পালন করি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তো আমার বুকে, ছাত্রলীগের মত গলা ফাটিয়ে মিছিল করার দরকার আছে।(লীগের ছেলেরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বোঝেই না!)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সাফা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে নবী (সঃ) যেদিন প্রথম পাবলিকলি ইসলাম প্রচার শুরু করেন (যেদিন তিনি বলেছিলেন, যদি আমি তোমাদের বলি পাহাড়ের ওপার থেকে একদল সেনা তেড়ে আসছে, তোমরা কি আমাকে বিশ্বাস করবে? ওরা বলেছিল অবশ্যই করবো। কারন তোমাকে কখনও মিথ্যা বলতে শুনিনি।....), তখন আবু লাহাব প্রথম প্রকাশ্যে নবীর (সঃ) বিরোধিতা করে। আবু লাহাব ছিল নবীর (সঃ) চাচা, একই পরিবারের সদস্য। তারপরেও সে চিৎকার করে বলেছিল, মুহাম্মদ ধ্বংস হোক। (আস্তাগফিরুল্লাহ)
কথাটা শুনে নবী (সঃ) প্রচন্ড কষ্ট পান। কিন্তু তিনি কোন জবাব দেন না। বরং তাঁর হয়ে আল্লাহ জবাব দেন, সূরা লাহাব নাজেল হয়।
এটি প্রতিটা নবী বিরোধীর জন্য আল্লাহর তরফ থেকে সতর্কবার্তা, জানিয়ে দেয়া জাহান্নামে তাদের পরিণতি কী হবে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: শেখ মুজিব বললেন, তোমরা কী চাও? মেজর বিব্রত ভঙ্গিতে আমতা-আমতা করতে লাগল। শেখ মুজিবের কঠিন ব্যক্তিত্বের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। শেখ মুজিব আবার বললেন, তোমরা চাও কী?
মেজর মহিউদ্দিন বলল, স্যার একটু আসুন।
কোথায় আসব?
মেজর আবারও আমতা-আমতা করে বলল, স্যার একটু আসুন।

শেখ মুজিব বললেন, তোমরা কি আমাকে খুন করতে চাও? পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে কাজ করতে পারেনি, সে কাজ তোমরা করবে?

এই সময় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে ছুটে এলো মেজর নূর। শেখ মুজিব তার দিকে ফিরে তাকানোর আগেই সে ব্রাশফায়ার করল। সময় ভোর পাঁচটা চল্লিশ। বঙ্গপিতা মহামনব শেখ মুজিব সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়লেন। তখনো বঙ্গবন্ধুর হাতে তার প্রিয় পাইপ।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.