নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনার যদি কোন মেয়ে থাকে, এবং তাঁর ক্লাসের কোন ছোকরা তাঁর সাথে গ্রূপ স্টাডি করতে চা.....

২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২২

এখানে প্রায়ই দেখি রাস্তার ধারে পুলিশ লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি থামিয়ে টিকেট দিচ্ছে। হাইওয়ের পাশে খুবই সাধারণ দৃশ্য। লোকাল রাস্তা ঘাটেও দেখা যায়।
মাঝে মাঝে দেখি একটা গাড়ির পেছনে দুই তিনটা পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ধরেই নেই যাকে ধরা হয়েছে, সে ব্যাটা বড়সড় কোন অপরাধী, যাকে ধরতে পুলিশ ব্যাকাপ নিয়ে হাজির হয়েছে।
গতকাল আমি বৌ বাচ্চা নিয়ে বাড়ির কাছের ওয়ালমার্টে শপ করতে বেড়িয়েছি। সিগন্যালে থামতেই অন্যপাশে সামনে দেখি পুলিশের গাড়ি। স্পিড ঠিক রেখে গাড়ি চালাতে না চালাতেই দেখি পেছন থেকে বাতি জ্বালিয়ে দিয়েছে। বুঝলাম না ঘটনা কী। ৫৫ মাইল স্পিড লিমিটের রাস্তায় আমি চালাচ্ছিলাম ৪৫ মাইল বেগে। সেটাও অপরাধ বটে, কারন পেছন থেকে অন্য গাড়ির জন্য সেটি দুর্ঘটনার কারন হতে পারে। কিন্তু আমাকে ৫৫ পর্যন্ত তুলতে সময়তো দিবে। মাত্রই সবুজবাতি জ্বলেছে। এতদ্রুত পঞ্চান্ন মাইল তুলতে হলেতো আমার ফেরারি চালাতে হবে। এরমাঝেই বাতি জ্বালিয়ে দিয়েছে!
পেছনে লাল নীল বাতি জ্বলে উঠতেই বৌর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল।
"হায় হায়! কী আকাম করছো? পুলিশ কেন লাইট জ্বালালো? টিকেটের টাকা যে অনেক! শুধু শুধু টাকা নষ্ট!"
জ্বরের ঘোরের রোগীর মতন সে প্রলাপ বকতে লাগলো। এখনও জানিই না কেন পুলিশ আটকেছে।
পেছন থেকে পুলিশ অফিসার এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, "কেমন আছো?"
মহিলা অফিসার। যুবতী। বয়স তিরিশ পঁয়ত্রিশ হবে। ইউনিফর্মে যেকোন ফিট বডির নারী পুরুষকেই সুন্দর দেখায়। এই মহিলা এমনিতেও সুন্দরী।
বললাম, "এতক্ষনতো ভালই ছিলাম, এখন জানিনা কেমন থাকবো।"
মহিলা হেসে বললেন, "যে কারনে তোমাকে থামিয়েছি, তুমি কী জানো যে তোমার সামনের লাইসেন্স প্লেট মিসিং?"
হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। ওয়ার্নিং দিয়ে ছেড়ে দিবে। স্পিডিং বা অন্যান্য কারনে টিকেট দিলে কয়েকশো ডলার নষ্ট হতো শুধু শুধু।
আমি বললাম, "হ্যা, একটা ছোট একসিডেন্ট হয়েছিল (হাইওয়েতে পড়ে থাকা ট্রাকের টায়ারের সাথে হাইস্পিডে বাড়ি খেয়েছিল) বলে রাস্তায় পড়ে হারিয়ে গেছে। আচ্ছা, বলতো, ওটা কোথায় পাওয়া যাবে?"
মহিলা ঠিকানা বলে দিলেন। আমার ড্রাইভার লাইসেন্স আর ইন্সুরেন্স কার্ড চাইলেন।
মানিব্যাগ হাতড়ে দেখি যেখানে ড্রাইভার লাইসেন্স থাকে, সেখানে সেটা নেই। আমি ঘাবড়াবার আগে বৌ গেল ঘাবড়ে, বিড়বিড় করে বললো, "সর্বনাশ! করেছো কী! কোথায় হারাইসো?"
ওর চেহারা দেখে তখন যে কেউ অনুমান করবে আমার আসলে কোন লাইসেন্স নাই। অবৈধভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। এখন চুরি ধরা পড়েছে।
যাই হোক, ওটা পেলাম। ক্রেডিট কার্ডের চিপায় লুকিয়ে ছিল।
গাড়ির ইন্সুরেন্স দিতে গিয়ে মহিলার হাতে ডেন্টাল ইন্সুরেন্স ধরিয়ে দিলাম। এইটা আমার নিজের দোষেই। তারপরে নিজেই হাসতে হাসতে সঠিক ইন্সুরেন্স দিলাম।
মহিলা বললেন, "আমি একটা স্ক্যান করে তোমাকে ফেরত দিচ্ছি। সাথে একটা রিটেন ওয়ার্নিং দিব, ঠিক আছে?"
এমনভাবে অনুমতি চাইলো যেন আমি যদি বলি, "না ঠিক নাই। ত্যক্ত করার জন্য বিরক্ত হচ্ছি। ফাজলামি বন্ধ করে যেতে দে, অনেক কাজ আছে।" আর অমনি সে আমার কথা মেনে নিবে।
লক্ষী সোনাবাবুর মতন বললাম, "ঠিক আছে।"
মহিলা নিজের গাড়িতে যেতে না যেতেই দেখি তাঁর পেছনে আরেক গাড়ি পুলিশ এসে দাঁড়িয়েছে। দুইটা ষন্ডামতন অফিসার বেরিয়ে এসে আমার গাড়ির পেছনে পোজ দিয়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে (মহিলা সহ) গল্প জুড়ে দিল। মহিলা কাজ করতে না করতে আরেক গাড়ি এসে হাজির। সেখান থেকেও নেমে এলো বিশালদেহী পুলিশ অফিসার। নিজেরা নিজেরা কী নিয়ে যেন ফুসুর ফুসুর করছে।
বৌ অতি নার্ভাস স্বরে বললো "এত অফিসার কেন? কোন ঝামেলা নাতো"
আমার পেছনে তিন গাড়ি পুলিশ বাতি জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এতদিন অন্যের ঘটনায় মনে করতাম নিশ্চিত সন্ত্রাসী। এখন আমার পাশ দিয়ে যত গাড়ি যাচ্ছে, সবাই কৌতূহলী দৃষ্টিতে আমাদের দেখছে। "ব্রাউন চামড়ার ইল্লিগ্যাল ইমিগ্র্যান্ট ধরা খেয়েছে নিশ্চই" - ভেবে কেউ কেউ পুলকিতও হচ্ছে হয়তো।
যাই হোক, মহিলা সবকিছু ফেরত দিতে দিতে বললেন, "এই যে ডকুমেন্ট এবং ওয়ার্নিং। কেউ যদি আবার থামায়, তাহলে এইটা দেখিয়ে বলবে যে তুমি অলরেডি ওয়ার্ন্ড হয়েছো।"
জিজ্ঞেস করলাম, "পেছনে এত গাড়ি কেন?"
মহিলা হেসে বললেন, "ও কিছু না, আমরা সবাই সবাইকে ব্যাকাপ দেই।"
তখন সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেল।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমার বৌ যখন ক্লাসমেট ছিল, তখন আমিও তাঁকে "ব্যাকাপ" দিতে তাঁর সাথে গ্রূপ স্টাডি করতাম। সমস্ত জীবন ফাঁকিবাজি করা এই আমি ইউনিভার্সিটির পড়ালেখায় এতটাই মনোযোগী হয়ে গেলাম যে তাঁর বাসায় গিয়ে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা "গ্রূপ স্টাডি"ও করেছি। গ্রূপ স্টাডির ফলে পড়াশোনার উন্নতির পাশাপাশি আমাদেরও সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। এখন এক উন্নতির বয়স চার হয়ে গেছে, গতকাল থেকে পৃ-কে ক্লাস শুরু করেছে। আরেক উন্নতি ইন শা আল্লাহ, কামিং সুন।
সে যাক, এর আগেও বহুবার আমাকে পুলিশ আটকেছে। টিকেট দিয়েছে, ওয়ার্নিং দিয়েছে। কোথাও ব্যাকাপ দিয়ে কেউ হাজির হয়নি। সর্বক্ষেত্রে অফিসাররা ছিলেন পুরুষ। এইবার নারী অফিসার (তাও আবার সুন্দরী) গাড়ি থামাতেই ব্যাকাপে হাজির হয়ে গেলেন তিনজন নিষ্ঠাবান জাঁদরেল অফিসার। আরও কিছুক্ষন যদি আমরা আটকে থাকতাম, তাহলে হয়তো সেখানেই পুরো মিকিনি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, মিকিনি কোর্ট, বিচারক সবাই উপস্থিত হতেন।
মোরাল অফ দ্য স্টোরি, "আপনার যদি কোন মেয়ে থাকে, এবং তাঁর ক্লাসের কোন ছোকরা তাঁর সাথে গ্রূপ স্টাডি করতে চায়, তাহলে অবশ্যই বুঝে নিবেন ছেলেটার নিয়্যত ভাল না।"

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৩৫

ডার্ক ম্যান বলেছেন: গ্রুপ স্টাডির হাত ধরে আপনি বাবা হয়ে গেলেন???

২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :) জ্বি ভাই। :)

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে পুলিশ আগ্রহ নিয়ে গাড়ি থামায়। তখন অজানা এক আনন্দে পুলিশের চোখ মুখ ঝকমক করে।
গাড়ির কাগজ পত্রের ছোট একটা ব্যাগ থাকে, সেখানে দুই শ' টাকা ভরে দিলেই সমস্যা শেষ। পুলিশ কাগজপত্র দেখার উছিলায় টাকা পকেটে ভরে নেয়।
প্রতিদিন একই ঘটনা। প্রতিটা রাস্তায়।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :( আহারে। :(

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৩৮

নতুন বলেছেন: মোরাল অফ দ্য স্টোরি, "আপনার যদি কোন মেয়ে থাকে, এবং তাঁর ক্লাসের কোন ছোকরা তাঁর সাথে গ্রূপ স্টাডি করতে চায়, তাহলে অবশ্যই বুঝে নিবেন ছেলেটার নিয়্যত ভাল না।"

=p~ =p~ =p~

২৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.