নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নামাজ পড়ার স্থানের দেয়ালে বিজ্ঞাপন

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১২

ফেসবুকে মাঝে একবার চিটাগং এয়ারপোর্টের একটি ছবি আলোচনায় উঠেছিল। নামাজ পড়ার স্থানের পার্শ্ববর্তী দেয়ালে একটা বিজ্ঞাপন শোভা পাচ্ছে, যেখানে মানুষের ছবি আছে। স্বাভাবিকভাবেই একদল মুসলিম পিটিশন করলেন যাতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ছবিটি সরিয়ে ফেলেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টা উপলব্ধি করে সাথে সাথে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে ফেলেছেন।
তাঁদের ধন্যবাদ।
আমার ফ্রেন্ডলিস্টের এক মহিলা খবরটি শেয়ার করায় একজন কমেন্ট করেন, "আপনি বলতে পারেন না বিজয় হয়েছে, এখনও সেই দেয়ালে উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন শোভা পাচ্ছে। এর ফলে নামাজে দাঁড়ানো ব্যক্তির মনোযোগ নষ্ট হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেয়ালের সব বিজ্ঞাপনই সরাতে হবে।"
যে বিজ্ঞাপনটি এখন শোভা পাচ্ছে, তাতে কিন্তু কোন জীবিত প্রাণীর ছবি নেই। শুধু একটি কোম্পানির নাম ফ্যান্সিভাবে লেখা। ভদ্রলোকের আপত্তি বিজ্ঞাপনের লাইটিংয়ে। এত উজ্জ্বল কেন হবে? নামাজের পাশে এত উজ্জ্বল আলো থাকা উচিৎ না।
স্বাভাবিকভাবেই আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, "উজ্জ্বল বাতি পাশে থাকলে নামাজ আদায় হয়না, এই বিষয়ে আপনার কোন রেফারেন্স জানা থাকলে আমাকেও জানান, আমিও জেনে ধন্য হই।"
ভদ্রলোক আমার সাথে কথা বলায় আগ্রহী হলেন না। পাত্তাই দিলেন না।
আমি আমার মন্তব্য ব্যাখ্যা করলাম। এখানে আরেকটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করি। দেখি আপনাদের পাত্তা পাই কিনা।
চিটাগং এয়ারপোর্টের যে স্থানটা নিয়ে কথা উঠেছে, সেটি নামাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয়া স্থান, কোন প্রতিষ্ঠিত বা নির্ধারিত মসজিদ না। যদি তাঁরা না ছাড়তেন, তাহলে আমাদের কিছুই করার থাকতো না। এইটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, আমাদের বুঝতে হবে।
আমাদের নামাজের নিয়মের ক্ষেত্রে আসা যাক। আল্লাহ বলেছেন সময় হলে নামাজ আদায় করতে। প্রতিটা নামাজের জন্যই আল্লাহ দারুন ফ্লেক্সিবল সময় দিয়েছেন। যেমন ফজরের সময় হচ্ছে সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। জোহরের নামাজ সূর্য মাথায় উঠার পর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়া পর্যন্ত। (লাঠির ছায়ার মাপের একটি হিসেব আছে, ওটাতে না গেলাম।) মাগরিব হচ্ছে সূর্যাস্ত থেকে পশ্চিমাকাশে লালিমা থাকা পর্যন্ত। এমন না যে ঠিক বারোটা পাঁচ মিনিটেই নামাজে দাঁড়াতে হবে, নাহলে কাজে হয়ে যাবে। নির্দিষ্ট সময় ব্র্যাকেটে আমরা আমাদের সুবিধা মতন সময়ে নামাজে দাঁড়াতে পারবো। মাগরিব ছাড়া এই ব্র্যাকেট সাধারণত কয়েক ঘন্টার হয়ে থাকে। এইটাও আরেকটা মহাগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
তারপরেও আমাদের কাজকে আরও সহজ করে দিতে হুকুম হয়েছে, যদি উটের মুখ কাবার বিপরীতমুখীও থাকে, তাহলেও উটের পিঠেই নামাজ আদায় করতে। এটা এক্সট্রিম কেসের জন্য। আপনার নামাজের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে, আপনাকে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।
লক্ষ্য করুন, স্থান কাল পাত্র ইত্যাদি নিয়ে ইসলামের খুউব বেশি কড়াকড়ি নেই। পরিষ্কার পবিত্র স্থান হলেই হলো। আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে যাবেন।
আরেকটু বিস্তারিত তথ্য দেই। মসজিদে নববীতে আমাদের নবীর মাথার উপর কোন ছাদ ছিল না। খেজুর পাতার যে ছাদ নির্মিত হয়েছিল, কাবা পরিবর্তনের ঘটনায় সেই স্থানটি পরে মসজিদের পেছনের অংশ হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ বৃষ্টির সময়েও নামাজে দাঁড়াতেন। সিজদাহ দিলে তাঁর কপালে কাদামাটি লেগে যেত। সাহাবীগণ জুতা পায়েই নামাজে দাঁড়াতেন। কারন খালি পায়ে উত্তপ্ত মেঝেতে দাঁড়ানো সম্ভব হতো না। আমরা এসি, টাইলস, দামি কার্পেটওয়ালা মসজিদ না হলে কমপ্লেন করি!
এখন ফেরা যাক বিমান বন্দরে।
আমরা অনেকেই অবশ্যই বিমানে চড়ার আগে নামাজ আদায় করতে চাই। অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়না বাইরের একচুয়াল মসজিদ থেকে নামাজ আদায় করে আসা। তাই এয়ারপোর্টেই নামাজে দাঁড়াতে হয়। আমাদের সৌভাগ্য যে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এমন নির্দিষ্ট স্থান আছে যেখানে আরামসে নামাজে দাঁড়ানো যায়। বিশ্বের বেশিরভাগ এয়ারপোর্টেই এই সুবিধা নেই। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হয়। এই দৃশ্য দেখে অনেক সহযাত্রী "মুসলিমদের" সাথে বিমানযাত্রায় ভয় পেয়ে ফ্লাইট ক্যানসেল পর্যন্ত করে ফেলে। আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ বাংলাদেশ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে।
এই পর্যন্ত সব স্পষ্টতো?
এখন আসা যাক বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে।
মানুষের ছবি আছে, এই বিজ্ঞাপনেও কিন্তু "খুব বেশি" সমস্যা থাকার কথা না। চমকে উঠবেন না, প্রমান দিচ্ছি।
আমাদের ইতিহাসের প্রথম হজ্জ্বের ঘটনা কে কে লক্ষ্য করেছেন? হুদাইবিয়ার সন্ধির পরের বছর মুসলিমদের প্রথম হজ্জ্বে আমাদের নবী (সঃ) যাননি, আবু বকরের (রাঃ) নেতৃত্বে সেই হজ্জ্বে মুসলিমরা গিয়েছিল। তখন পর্যন্ত মক্কা বিজয় হয়নি, তখন পর্যন্ত কাবা ঘিরে তিনশো ষাটটি দেব দেবী মূর্তি সাজানো। মুসলিমরা সেই দেবদেবীর ভিড় এড়িয়েই কাবা ঘর তাওয়াফ করেছেন, হজ্জ্ব আদায় করেছেন।
মানে বুঝতে পারছেন? আপনার সাথে আল্লাহর সাক্ষাতের সময়ে আপনার আশেপাশে মানুষের ছবি থাকলো নাকি দেবদেবী মূর্তি থাকলো তাতে কিছু যায় আসেনা। আপনার তাকওয়া জরুরি। যে কারনে আমরা দেখি ব্যস্ত মহাসড়কের সাইডে গাড়ি থামিয়ে গাড়ির ভিতরেই নামাজে বসে পড়েছেন ব্যস্ত ট্যাক্সিওয়ালা। কিংবা ম্যানহাটনের বিখ্যাত "হালাল গাইজ" রেস্তোরার মালিকপক্ষকে একবার দেখলাম মাগরিবের সময়ে মহাব্যস্ত দোকানের পিছনেই ফুটপাথের মতন এলাকায় কাগজের কার্টুন ভাজ করে মাগরিবের জামাতে দাঁড়িয়ে গেছেন। একেই বলে তাকওয়া। ওরা জানে আশেপাশে গাড়ির হর্ণ, লোকজনের চিৎকার চ্যাঁচামেচি, বিলবোর্ডের চাকচিক্য ইত্যাদিতে তাঁর কিছু যাবে আসবে না।
হ্যা, মসজিদের ভিতরে যদি কেউ অমন কড়া সাজসজ্জা করে, ছবি/মূর্তি স্থাপন করে, তাহলে ইস্যু তুলতে পারেন। কিন্তু সেই এলাকা "মসজিদ" ছিল না। দুইয়ে পার্থক্য আছে।
মাইরের চেয়ে অ্যাকশনে সময় নষ্ট করে আমরা অযথা ঝামেলা পাকাতে পছন্দ করি। তাকওয়া নিয়ে নামাজে দাঁড়ানোর চেয়ে আশেপাশের পরিবেশ নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট করি। এতে নিজের ঝামেলা বাড়লে সমস্যা ছিল না, অন্যকে ঝামেলায় ফেলাটাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে থাকে বলেই সমস্যা। যেমন এই ক্ষেত্রে পুরো দেয়াল থেকে সব ধরনের বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেয়ার যে দাবি তুললেন ভদ্রলোক এবং কয়েকজন সেটা সাপোর্টও করলেন, তাঁদের বোঝা উচিৎ যে বিজ্ঞাপনের কারণেই এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের পকেটে কিছু টাকা আয় হয়। আপনি কেন অযথা কারনে তাঁদের সেই আয় থেকে বঞ্চিত করবেন? ছবিওয়ালা বিজ্ঞাপনতো সরিয়েছেই, সব বিজ্ঞাপন সরানোর দাবিটা কী একটু বেশি বেশিই হয়ে যাচ্ছেনা? ইসলাম কী আপনাকে সহনশীল হবার নির্দেশ দেয় না? অন্যের সুবিধা অসুবিধা বোঝার নির্দেশ দেয় না? তাহলে এমন বিবেকবুদ্ধিহীন আচরণ কেন?
যেকারনে একবার একটা ভিডিওতে যখন দেখলাম প্লেনের ভিতরে গলিপথ আটকে নামাজ আদায় করছেন এক মুমিন বান্দা, এবং নামাজ শেষে প্লেনের ক্রুকে ঘুষি বসিয়ে দিয়েছে, তখন হতাশায় একদম নির্বাক হয়ে গেলাম।
কিছুদিন আগেই লিখেছিলাম, এবং আমি সবসময়েই বলি, আমরা প্রতিটা মুসলিম একেকজন ইসলামী প্রতিনিধি। আপনার আমার আচার আচরণ স্বভাব চরিত্র থেকেই লোকে ইসলাম সম্পর্কে ধারণা পাবে। যেকোন কিছু করার আগে তাই অবশ্যই আপনাকে শতবার ভাবনা চিন্তা করতে হবে কাজটার ইম্প্যাক্ট সম্পর্কে। নাহলে যারা ইসলামকে জানেনা, তাঁরা বলবে, "মুহাম্মদের (সঃ) ফলোয়ারদের এই অবস্থা!"
কোন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের রেজাল্ট ও আচার আচরণ দেখে আমরা সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা করিনা? এখানেও ঠিক তাই।

ধর্ম থেকে বাঙালির স্বভাবেও একই ব্যাপার লক্ষ্য করা যায়।
সেদিন এক দাওয়াতে গিয়েছিলাম। দাওয়াতটা মূলত দেয়া হয়েছিল আমার মাকে, আমি ফাউ গিয়ে হাজির হয়েছি। কাউকেই চিনিনা। তাই স্বভাবমতন কারোর সাথে খাতির জমানোর পরিবর্তে খাওয়া দাওয়ায় মনোনিবেশ করলাম। রান্না ভাল ছিল। মাংস, কাবাব, চিংড়ি, পোলাও খেতে খেতে বাঙালি বিজ্ঞজনদের আড্ডা শুনছি।
এক ভদ্রলোক সরকারকে খুব গালাগালি করছেন। তাঁর অভিযোগ, সরকার কেন জনগণ থেকে ট্যাক্স নেন। আমার ইনকাম আমি করবো, সরকার কেন সেখানে ভাগ বসাবে?
স্বাভাবিকভাবেই এই ভদ্রলোকের গলার স্বর অত্যন্ত উচ্চ। কিছু বোঝাতে গেলে আমার স্বরও উপরে উঠে যাবে। কী দরকার? এরচেয়ে মুরগির গ্রিল খাওয়া অনেক ভাল।
আমি রানে তৃপ্তির কামড় দিলাম। তখন হোস্ট ভদ্রলোক অতি বিনয়ের সাথে বললেন, "আপনি যে আপনার বাড়ি থেকে হাইওয়ে ধরে আমার বাড়িতে এলেন, কোন সমস্যা হয়েছে?"
ভদ্রলোক বললেন, "না।"
"রাস্তাঘাট যে এত ভাল, কোন ভাঙাচোরা নেই - এসবের জন্য সরকারের টাকা লাগে না? সেজন্যইতো ট্যাক্স নেয়।"
আমি আরও যোগ করতে পারতাম, নাইন ওয়ান ওয়ান কল করার দুই মিনিটের মাথায় এখানকার পুলিশ, ফায়ার, এম্বুলেন্স সার্ভিস এসে হাজির হয়, এজন্যওতো ট্যাক্স দেয়া দরকার। বাচ্চারা বিনাপয়সায় স্কুলে পড়াশোনা করছে। এখানকার পাবলিক স্কুলেও যে ফ্যাসিলিটি, আমাদের দেশের অত্যন্ত বিলাসবহুল প্রাইভেট স্কুলেও তা নেই। এই খরচটা তুলবে কিভাবে? আরও অনেক অনেক নাগরিক সুবিধা, যা আমরা নাগরিক হলেও পাচ্ছি, নাগরিক না হয়েও পাচ্ছি - সবইতো আসছে ট্যাক্সের টাকা দিয়েই। তাহলে আমাদের মেন্টালিটি এমন কেন হবে যে, যেই দেশের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আমরা নেব, তারপরে সেই দেশকে সামান্য কিছুও ফেরত দিব না?
আমাদেরই এক আত্মীয় আছেন ইংল্যান্ডে। বছর বছর বাচ্চা জন্ম দিয়েছেন। থাকেন সরকারি বেনিফিটের উপর। কিছুই করেন না। সরকারি বাড়ি, সরকারি বেনিফিটের টাকায় সংসার চালান। সরকার কাজের জন্য ট্রেইন করে, তিনি নানান অজুহাতে ফাঁকতালে পিছলে যান। যেমন সরকার ট্রাক চালানোর ট্রেনিং দিল, তিনি ভং ধরলেন, ট্রাক চালালে তাঁর মাথা ঘোরে। অন্যান্য স্কিল ট্রেনিং দিলেন, এবং প্রত্যেকটাতেই অতি দক্ষতার সাথে তিনি নিজের অদক্ষতা প্রমান করলেন। সরকার শেষমেশ হাল ছেড়ে বললেন, "যা তুই তোর মতন থাক। আমরা তোর সংসার চালাবো।"
এই লোকটা যখন ব্রিটিশ সরকারের, বিশেষ করে রানীর বদনাম করে, তখন কেমন গা জ্বলে? নিমক হারামিরওতো একটা লেভেল থাকা দরকার, কী বলেন?

প্রসঙ্গে ফেরা যাক। অধিকার নিয়ে কথা বলতে চান বলুন। দাবি আদায় করতে চান, করুন। কিন্তু ন্যায্য যেন হয়, সেটা অন্তত মাথায় রাখুন। শুধু শুধু অন্যায্য দাবি করে অন্যকে ঝামেলায় ফেলার মানে কী?
এদেশে আমার জীবনের প্রথম ঈদের জামাতে গেছি। ইমাম সাহেব ব্রিটিশ উচ্চারনে ইংলিশে নামাজের নিয়ম বলে দিলেন। সবাই বুঝলো। রকেট সায়েন্সতো না যে সবার মাথার উপর দিয়ে যাবে।
তারপরেও তিনি সহজ হিন্দি-উর্দু মিশ্রিত ভাষায় আবারও বললেন। আমাদের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মোটামুটি তিন-চার দেশের নাগরিকই এই ভাষা বুঝি। কাজেই ধরেই নিলেন এতে কাজ হবে।
এরপরে যখন সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন, "তাহলে সবার ক্লিয়ার হয়েছে? আমরা নামাজ শুরু করবো?"
অমনি একজন বাঙালি ভদ্রলোক ইংলিশে দাবি করলেন, "বাংলায় নিয়ম বললেন না যে? হিন্দিতে বললে বাংলাতেও বলতে হবে।"
কিছু বাঙালি ভদ্রলোক সাথে সাথে দেশপ্রেমিক হয়ে গেলেন। হৈহৈ করে উঠলেন, "বাংলায় বলেন, বাংলায় বলতে হবে।"
ইমাম বেচারা ঘাবড়ে গেলেন। তিনি যেন মহাপাপ করে ফেলেছেন। তিনি বললেন, "আমি বাংলা পারিনা। কেউ যদি বলতে চান, আসেন।"
এইবার কেউ এগিয়ে গেল না।
কথা হচ্ছে, আমরা সবাই ইংলিশ ভাষাতেই বুঝতে পেরেছি। এইটা আমাদের কৃতিত্ব যে আমরা যথেষ্ট শিক্ষিত যে সবাই ইংলিশেই নির্দেশনা বুঝতে পেরেছি। কিন্তু যেহেতু উর্দু/হিন্দিতে বলেছেন, সেহেতু আমাদের ইগোতে লেগে গেছে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বুদ্ধিমত্তা লুপ্ত করলাম। এদিকে মসজিদ গিজগিজ করছে সব বর্ণের মানুষে। আরবি থেকে শুরু করে আফ্রিকান সোমালি পর্যন্ত সব ভাষার মানুষ সেখানে উপস্থিত। তাঁদের কেউ কিন্তু দাবি করেনি তাঁদের ভাষাতেও বুঝাতে। তাহলে সেইদিনের ঈদের জামায়াত আমাদের জোহরের ওয়াক্তের শেষে পড়তে হতো।
যাই হোক, সব কথার শেষ কথা, দাবি দেওয়ার আগে একটু হিসেবে নিকেশ করবেন দাবিটা কতটুকু ন্যায্য ও অপরপক্ষকে কোন ভোগান্তিতে ফেলে কিনা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১:২১

ঢাকার লোক বলেছেন: আমাদের দেশে ফ্লাট বাড়ি তৈরী করে যারা বিক্রি করছেন এদের প্রায় সবাই শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত এবং সমাজে প্রভাবশালী; তাদের দাবি, ফ্লাট বিক্রি হচ্ছেনা, তাই বাজার চাঙ্গা করার জন্য যারা এ সকল ফ্লাট কিনবে তাদের টাকার উৎস সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা যেন না করা হয়। এটিকে কেমন দাবি হিসেবে আপনি গণ্য করবেন ?

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: প্রতিদিন প্রেস ক্লাবের সামনে নানান মিটিং মিছিল, সমাবেশ আর মানব বন্ধন চলছেই। তাতে লাভটা কি হয়??

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৫

ফাহমিদা বারী বলেছেন: লেখাটা 'ক্যানভাস'এ পড়েছিলাম। বেশ ভালো লেখা। আপনি সামুতে আছেন জানা ছিল না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.