নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

DEATH IS BETTER THAN DISGRACE

রসায়ন

রসায়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্যা নেক্সট গ্রেটেস্ট থ্রেট তো হিউম্যানকাইন্ড । বিজ্ঞান পোস্ট সিরিয়াল ৬

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৫৯

আগ্নেয়গিরি

দ্যা নেক্সট গ্রেটেস্ট থ্রেট তো হিউম্যানকাইন্ড !


আজ থেকে প্রায় চার বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মহাকাশীয় পাথরখন্ড বা এস্টেরয়েড(Asteroid) তাদের পারস্পরিক মহাকর্ষ বলের প্রভাবে কাছাকাছি আসতে শুরু করে । কাছাকাছি আসার সময় এরা পারস্পরিক ঘর্ষণে প্রচন্ড উত্তাপ তৈরি করে গলিত পদার্থে পরিণত হয়। এভাবে এস্টেরয়েড আসতে আসতে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর আকার ধারণ করে, এই প্রক্রিয়া চলাকালীন পৃথিবী গলিত অবস্থায় ছিল। এরপর থিয়া নামক আরেকটি মঙ্গলগ্রহের সমান গ্রহের সংঘর্ষ হয় পৃথিবীর সাথে । এতে পৃথিবীর আকার বেড়ে যায় এবং উৎপন্ন প্রচন্ড তাপে পুরো পৃথিবী গলিত ম্যাগমার সাগরে পরিণত হয় । এখন যেমন মাটির নিচে পৃথিবীর অভ্যন্তর গলিত অবস্থায় আছে সেরকম থিয়ার সাথে সংঘর্ষের পর পুরো পৃথিবীটাই গলিত হয়ে গিয়েছিল।



এই থিয়া ও পৃথিবীর সংঘর্ষে যেমনি এই ঘটনা ঘটেছিল তার পাশাপাশি পৃথিবীর চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছিল সংঘর্ষের ফলে থিয়ার ধ্বংসাবশেষ । যেগুলো শনি গ্রহের বলয়ের মতো পৃথিবীর চারপাশে একটি বলয়ের তৈরি করেছিল । এই বলয়ের খন্ডগুলো কালক্রমে পৃথিবী তৈরি হওয়ার মতোই মহাকর্ষীয় টানে কাছাকাছি এসে পৃথিবীর উপগ্রহ লুনা(luna) তথা চাঁদ তৈরি করে । চাঁদও তখন পুরো গলিত অবস্থায় ছিল । চাঁদ যখন তৈরি হয় তখন তা পৃথিবী থেকে মাত্র ১৯০০০ (ঊনিশ হাজার) কিলোমিটার দূরে ছিল। বর্তমানে চাঁদ প্রায় দুই লক্ষ সত্তর হাজার কিলোমিটার দূরে । সে যাই হোক পৃথিবী থেকে চাঁদ স্পষ্ট দেখা যায় , চাঁদের গায়ে তাকালে দেখা যাবে কালো স্পট। এগুলো গলিত ম্যাগমার চিন্হ । পৃথিবীতে এগুলোর অধিকাংশই সাগরের নীচে তাই আমরা দেখতে পাই না।



তো এই চার বিলিয়ন বছরে তাপ হারাতে হারাতে পৃথিবীর উপরের অংশের ম্যাগমা শক্ত হয়ে ভূপৃষ্ঠ বা ক্রাস্ট(crust) এর জন্ম হয়েছে । এই ক্রাস্ট এর পুরুত্ব মাত্র ৬০-৭০ কিলোমিটার । এর নীচে সব গলিত। পৃথিবীর যেসব জায়গায় ভূপৃষ্ঠ বা ক্রাস্ট দুর্বল ওখান দিয়েই ম্যাগমা বাইরে বের হয় বা হতে চায় । একেই বলে আগ্নেয়গিরি । যেমন, ভিসুভিয়াস, কিলিমাঞ্জারো , ফুজিয়ামা এসব । সাগরের তলায়ও রয়েছে এরকম অজস্র আগ্নেয়গিরি।

এবার দেখা যাক কি করে আগ্নেয়গিরি আমাদের মানুষের জন্য একটি থ্রেট হতে পারে অদূর ভবিষ্যতে !!!

মিডিয়ায় আপনারা হয়তো অনেকেই দেখে থাকবেন মাঝে মাঝে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের(ভলকানিক ইরাপশন/ volcanic eruption) ফলে ছাইয়ের কারণে বিমানের ফ্লাইট বাতিল, কিংবা এয়ার রুট পরিবর্তন বেশি হলে মানুষের বাড়িঘর বা বিমান বন্দরও বন্ধ হয়ে যায় । এর কারণ হলো ছাই(ভলকানিক এশ) । এই ছাই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি হয় । এই ছাইয়ের কণা খুবই সূক্ষ্ম হওয়ায় তা বায়ুমণ্ডলের উপরে উঠে যায় ও বিশাল জায়গা দখল করে।

তো ৬৫০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের পৃথিবীর উপরিভাগের এই মাত্র ৬০ কিলোমিটার এর দুর্বল ক্রাস্ট(ভূপৃষ্ঠ) খুব সহজেই পৃথিবীর অভ্যন্তরের বড় মাপের আন্দোলন দ্বারা ফেটে যেতে পারে জায়গায় জায়গায়, এই ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। এরকম হলে হটাৎ করে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মাটি বা ভূপৃষ্ঠ ফেঁটে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হবে। এর ফলে জনজীবন তো বেকায়দায় পড়বেই তো সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে এই ছাইয়ের উদ্গীরন !!!



এত ব্যাপক হারে ছাইয়ের উৎপাদন হবে যেটা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে পুরোপুরি কভার করে ফেলবে। এতে সূর্যের আলো আর পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারবে না। আর আমরা জানি সূর্যের আলো ছাড়া আমাদের পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না । কেননা সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করে এবং বাই প্রোডাক্ট হিসেবে অক্সিজেন তৈরি করে । এই দুটোই মানুষ তথা প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার রসদ। তাই এরকম ঘটনা ঘটলে সালোকসংশ্লেষণ আর ঘটবে না ফলে খাবার আর অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতে শুরু করবে সব প্রাণিকুল। একটা ইনফরমেশন দিতে চাই এই সুযোগে, আমরা জানি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেনের পরিমাণ ২১% । তাহলে গাছপালা আর যদি নাই থাকে অর্থাৎ নতুন অক্সিজেন প্রোডাকশন না হয় তবে এই যে বায়ুমণ্ডলে বিদ্যমান অক্সিজেন দিয়ে আমাদের পৃথিবীর সব প্রাণীর কয়দিন চলবে ?

উত্তরটা হচ্ছে প্রায় তিন থেকে চার হাজার বছর(এস্টিমেটেড) !!! কিন্তু শুধু শ্বাস নিয়েই তো আর বেঁচে থাকা যাবে না, দরকার হবে খাবারের কিন্তু খাবার তো আর পাওয়া যাবে না ফলে এক জন আরেকজনকে খেয়ে ফেলে ঊর্ধে ২০ বছর বা সর্বোচ্চ শতবছর আমাদের কেউ না কেউ বেঁচে থাকতে পারবে যদি না আমরা সিনথেটিক ফুড আবিস্কার করতে পারি। তবে সমুদ্রের ব্যাকটেরিয়া হাজার হাজার বছর এমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারবে । তার মানে আমরা শেষ হয়ে গেলেও জীবকুল একেবারে শেষ হবে না ।

এনিওয়ে, ছাইয়ের কারণে সূর্যের আলো ব্লক হয়ে যাওয়ার একমাসের মধ্যে পুরো পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা মাইনাস অর্থাৎ শূন্যের নিচে চলে যাবে । শুরু হবে বরফের যুগ বা আইস এজের । ছোট জলাশয় বরফ হয়ে যাবে এবং সাগরের উপরিভাগে বিরাট বরফের স্তর পড়বে । কিন্তু পুরো সাগর কখনোই বরফ হবে না কেননা সাগরের নীচে আগ্নেয়গিরি আছে এবং সেসব থেকে তাপ আসা অব্যাহত থাকবে ।

এত কিছু ঘটতে ঘটতে পুরো মানুষের বংশ শেষ !!!



এখানে একটা কথা উল্লেখ্য , পৃথিবীর টিকে থাকার জন্য তার সূর্যের আলো বা আলাদা তাপের দরকার নেই, পৃথিবীর কেন্দ্রে তাপের অভাব নেই । পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে তাপের বা আরো স্পেসিফিকলি তাপের নিয়ন্ত্রণের দরকার মানুষের নিজেরই !!!


এনিওয়ে, এই আইস এইজ (Ice Age) চিরস্থায়ী হবে না । একসময় এই ছাই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে দূরীভূত হয়ে যাবে অর্থাৎ পৃথিবীর বুকে পতিত হবে, তখন আবারো সূর্যালোক পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছনো শুরু করবে, এতে ভূপৃষ্ঠের বরফ গলতে শুরু করবে । শত বা হাজার বছরের ব্যবধানে পৃথিবী হয়ে যাবে আবারো তরল পানির গ্রহ যেখানে জীবন ধারণ সম্ভব। তখন মানুষ বা কোন প্রাণী থাকবে না । কিন্তু সাগরের ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন সরল এককোষী জীবগুলো থাকবে । সেসব থেকেই হয়তোবা আবারো ঘটতে পারে বিবর্তন কিংবা সৃষ্টিকর্তা আবারো ইচ্ছে করলে নতুন জীব সৃষ্টি করতে পারে ।

কে জানে কি হয় !

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৫০

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: ওরে বাব্বাহ ! ভয়াবহ কথা !!!

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৩

রসায়ন বলেছেন: হুম । আরো পোস্ট আসছে সামনে। পড়ার আমন্ত্রণ রইলো ।

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:১৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: রসায়ন ,




ভালো পোস্ট । আসলেই কে জানে কি হয় !

শেষ প্যারার আগের প্যারাটি ঠিক বোধগম্য হলোনা । পৃথিবী টিকে থাকার না পৃথিবীতে মানুষ টিকে থাকার কথা বলতে চেয়েছেন ! ঊভয়ের টিকে থাকার শর্ত হিসেবে সূর্য্যের আলোর বিকল্প আছে কি ?

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৭

রসায়ন বলেছেন: পৃথিবীতে মানুষ টিকে থাকার কথা বলেছি । সূর্যের আলো না থাকলে সালোকসংশ্লেষণ হবে না ফলে খাবারের অভাবে মানুষ সহ প্রাণিকুল শেষ। কিন্তু পৃথিবীর নিজের কিছুই হবে না। ওটা যা আছে তাই থাকবে কেবল জীববৈচিত্র্য আর নেই।

৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৫৩

শৈবাল আহম্মেদ বলেছেন: অলৌকিক নিয়ম ধর্ম স্বপ্ন বা মনের ইচ্ছামত ধারনা তুলে না ধরে-লৌকিক ও যুক্তিসংগত কথা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৭

রসায়ন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ আমার ব্লগ পোস্টটি পড়ার জন্য ।

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ৭:১৪

সিগন্যাস বলেছেন: প্রিয় রসায়ন ভাই,
আমরা যদি একটা অতিকায় গ্রহাণু শুক্র গ্রহে ফেলে দেয় তাহলে কি সেখানে বরফ যুগ আসবে?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৪৯

রসায়ন বলেছেন: না, কেননা বড় কিছু ফেললে সেটার আঘাতে পুরো শুক্রগ্রহ উত্তপ্ত হয়ে গলিত রূপ নেবে।

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই পোষ্টের সাথে আমি অনেকাংশে একমত নই।
কেন?? তা নিয়ে আমি একটা পোষ্ট দিব।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৪৯

রসায়ন বলেছেন: ধন্যবাদ । পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম

৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৮

গরল বলেছেন: পৃথিবী গঠন নিয়ে আপনার বর্ণনা সত্যি বলে মনে হচ্ছে না। আমি যেটা পড়েছিলাম যে নক্ষত্রের বিস্ফোরনে কিছু অংশ ছিটকে এসে গ্রহগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। আর দিন দিন ম্যাগমার চাপ কমছে, বাড়ছে না, তাই এত বড় অগ্নুৎপাত হওয়ার সম্ভবনাও কমে যাচ্ছে। আপনি কি আপনার বর্ণনার কোন সোর্স উল্লেখ করতে পারেন?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৫৬

রসায়ন বলেছেন: মহাবিশ্বের যত পাথর ও অন্যান্য জিনিস পত্র এসবের সবই বিভিন্ন তারার সুপারনোভার ধ্বংসাবশেষ । আপনি আমার বিঘ্ন সিরিজের আগের পোস্ট গুলো পড়তে পারেন বিশেষত তারা নিয়ে লিখাগুলো।
আর পৃথিবীর অভ্যন্তর এখনো অনেক উত্তপ্ত ও গলিত। আমরা সাধারণ অবস্থায় যা দেখি চারপাশে তাহলো গরম কিছু ধীরে ধীরে তাপ হারিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। কারণ হচ্ছে তাপ পরিবহন পদ্ধতিতে বেরিয়ে যায় কিন্তু পৃথিবীর চারপাশে মহাকাশ যেটা বায়ু শূন্য ফলে তাপ পরিবাহিত হয় না। ফলে এই তাপ বিকিরণ পদ্ধতিতে অত্যন্ত ধীর গতিতে বের হচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় ৬০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস যেটা সূর্যের পৃষ্ঠের থেকেও বেশি।


আমার তথ্যের সূত্র ইউটিউব ও স্পেস বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট। যেমন space.com

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.