নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

মোঃ খুরশীদ আলম

মোঃ খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম

মোঃ খুরশীদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলাম হত্যাকান্ড সমর্থন করে না

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০৯

ইসলাম হত্যাকান্ড সমর্থন করে না
=== মোঃ খুরশীদ আলম

উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ধর্মীয় ইস্যুতে সৃষ্ট অপরাধ । অপরাধের ধরন তর্কাতর্কী, হাতাহাতি, ঝগড়া ফাসাদ বা হুমকি ধমকিতে থেকে নেই । একেবারে হত্যাযজ্ঞ বা হ্তাকান্ডে রূপ নিয়েছে । এই ধরনের পরিস্থিতি ধার্মীক অধার্মীক সবার জন্য ভীতিকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। জনমনে আতংক আর উদ্বেগ উৎকন্ঠাক্রমেই সীমা ছেড়ে গিয়েছে। মানবিক মূল্যবোধ আর নীতি নৈতিকতার বিষয়টি আমলে আসছে না। ফলে, এ ধরনের হত্যাকন্ডে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রপাগান্ডার পালে হাওয়া দিয়ে বিদ্বেষকে আরও বেগবান করা হচ্ছে বলেই আমি মনে করি। এহেন পরিস্থিতিতে ধার্মীক (বাপ-দাদাকে দেখে দেখে যারা ধর্মকর্মে অভ্যস্থ, শরিয়তের জ্ঞান অর্জনে নয়) অধার্মীক সকলের মনে প্রশ্ন দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয় যে, ইসলাম ধর্ম কি সন্ত্রাসের ধর্ম ?
আমরা কথায় কথায় বলে থাকি, “ইসলাম শান্তির ধর্ম” আবু জেহেল, আবু লাহাব ও তাদের অনুসারিরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে এমন হীন কাজ নেই যার মাধ্যমে কষ্ট দেয়নি। নামায পড়ারত অবস্থায় উটের নারী ভূড়ি রাসূলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে, হত্যা পর্যন্ত করতে উদ্যত হয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে রাসূল তাদের জন্য হেদায়েত চেয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন, পাল্টা আক্রমন করতে ‍উদ্যত হননি।
আল্লাহপাকের ঘোষণা “আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণতা দান করলাম আর ইসলামকে গ্রহণযোগ্য ধর্ম হিসাবে মনোনীত করলাম । ” এ ঘোষণার পরে ইসলাম ধর্মে পরিবর্তন-পরিবর্ধন, সংযোজন- বিয়োজন করার কোন সুযোগ নেই। এমতাবস্থায় চাইলে কেউ ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে বা অবিশ্বাসী হয়ে থাকতে পারে। পুরুষ্কৃত- তিরষ্কৃত করার রায় তো স্বয়ং আল্লাহ নিজেই দিবেন, আমরা নই। তাহলে, দুনীয়াজোড়া লাখো অবিশ্বাসীকে যদি তিনি মহান সৃষ্টিকর্তা স্বাভাবিক সুযোগ সুবিধার ভাগীদার করতে পারেন তাহলে আমরা কেন জ্বলে মরি ।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর খোয়াজনগর হতে উদ্ধারকৃত অস্ত্র, গ্রেনেড ও জেএমবি’র সদস্যকে গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় ভুগছে দেশবাসী। ইতিপূর্বে ব্লগার হত্যা, মাজারের ফকির ও তার খাদেমকে হত্যা, ইতালিয়ান ও জাপানি হত্যা এবং সমসাময়িক ‍উদ্ধারতৎপরার পিছনে একই জঙ্গি গোষ্ঠী অর্থাৎ জমায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি জড়িত মর্মে আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের এই রহমত উল্লাহ প্রকাশ লেংটা ফকির ও তার খাদেম আব্দুল কাদেরকে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে বিগত 07/10/2015 খ্রিঃ তারিখে চট্টগ্রাম আদালতে বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জনাব ঝলক রায়ের খাস কামরায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি (164) দিয়েছেন ধৃত আসামী জেএমবির সদস্য সুজন প্রকাশ বাবু। হত্যার কারণ তিনি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, পীর ফকিরদের কাপড় গোড়ালির উপরে থাকার বিধান থাকলেও কথিত ঐ পীর সারাক্ষণ ন্যাংটা থাকতো আর ভক্ত মুরিদরা তাকে সেজদা করতো। এই কারণে তাকে হত্যা করা হয়। “ভক্ত মুরিদদের সেজদাই কাল হলো ” শিরোনামে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী পত্রিকায় খরব বেরিয়েছে আজ 08/10/15 ইং তারিখে।
ইসলাম ধর্মের নির্দেশনা হচ্ছে পুরুষরা তাদের পরিধেয় বস্ত্র গোড়ালির উপর বা টাখনুর উপরে পড়বে আর নারীরা পড়বে গোড়ালি বা টাখনু ঢেকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইতে ওয়াসাল্লাম বলেন “গোড়ালির যে অংশ কাপড় দ্বারা ঢাকা থাকবে তা জাহান্নামে যাবে । ” আল্লাহ পাকের হুকুম আহকাম মেনে চলা যেমন প্রত্যেকটা মুসলমানের কর্তব্য তেমনি রাসূলেরও । কেননা রাসূল তার নিজের থেকে একটা শব্দও বলেন না, তিনি যা বলেন তার আল্লাহর’ই হুকুম। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা, মাথা অবনত করা তার সাথে শিরক করার সমান অপরাধ। যে এই কাজটি করে ইসলামের ফতোয়া অনুযায়ী সে অবিশ্বাসী বা কাফের হয়ে যাবে।
এখন প্রশ্ন হচেছ, কেউ যদি শরিয়তের বিধান অনুযায়ী না চলে তবে তার শাস্তি কি হওয়া উচিত । দেশের প্রচলিত আইনে যদি শাস্তির বিধান থাকে তবে তা প্রশাসন বাস্তবায়ন করবে আর যদি না থাকে তবে সরকারের উচিত হবে বিধান তৈরী করা। শরিয়তের হুকুম আহকাম না মেনে কেউ যদি সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরী করে, ফেতনা-ফাসাদ চালু করে, জাতির মধ্যে ফাটল ধরাতে চায় তাহলে তাকে আইনের আওতায় গুরুত্ব সহকারে আনা উচিত। এসকল সমস্যা দূর করণার্থে দেশের বরেন্য আলেম-ওলামাকে দিয়ে শরিয়া কাউন্সিল গঠন করে অগ্রসর হওয়া উচিত হবে বলে মনে করি। সেই কাউন্সিলের নির্দেশনায় প্রত্যেক সাপ্তাহে জুমা মসজিদ সমূহে নিদিষ্ট বিষেয়ের উপর খুতবা ও অন্যা্ন্য সচেতনতামূলক আলোচনা হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি দেশের একটি বিরাট অংশ আলেম-ওলামাকে সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমূহ নিয়ে কাজ করতে না দিলে সমাজ অগ্রসর হবে না। ধর্ম অবমাননায় প্রচলিত আইনকে আরো কঠোর করতে হবে এবং ধর্ম অবমাননাকারীদের ধৃত করে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি যেমন জঘন্য অপরাধ তেমনি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি, ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে কটুক্তিও জঘন্য অপরাধ । একটি অপরাধের বিচার না হলে আরও একটি অপরাধের সৃষ্টি হয়। ধর্ম অবমাননাকারীরাই মূলত ধর্মীয় ইস্যুতে সংগঠিত অপরাধকে উসকে দেয়। তাই, যে কোন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি, কটুক্তি মূলক কথা বার্তা কঠোর হস্তে দমন করণার্থে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন হতে হবে। তাহলে হয়তো ঠেকানো যাবে ধর্মীয় ইস্যুতে সংগঠিত অপরাধ বা হত্যাকান্ড।
পত্রিকার পাতায় হত্যাকারী সুজনের ছবি দেখেই বুঝা যায় যে, সে নিয়মিতিই দাড়ি কাটে। তার সংগঠনের বড় ভাইয়েরা তাকে বুঝিয়েছে যে, কথিত ল্যাংটা ফকিরকে হত্যা করা ওয়াজিব এবং তা করলে জান্নাত তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যা্বে। এই বিষয়টি এতো সহজে বুঝে গেল কিন্তু দাড়ি কাটা নিষিদ্ধ আর দাড়ি রাখাওযে ওয়াজিব এই মাসায়ালাটি সে বা তার বড় ভাইয়েরা জানল না? আশ্চার্য হতে হয়, ভাবনা-চিন্তার দৌড় দেখে।
অসহায়, সহজ-সরল যুবকদের যারা ভুলিয়ে-ভালিয়ে বেপথে, অন্ধকারের যাত্রী বানান তাদেরকে অনুরোধ করবো আগে নিজে পরিবর্তন হোন। কেননা সমাজ পরিবর্তনের মূল শর্তই হলো ব্যাক্তি চরিত্রের পরিবর্তন। ব্যক্তিচরিত্রের উন্নতি হলে সমাজ এবং সমাজের পরিবর্তন হলে দেশ, অন্যথায় নয়। যাদের সাড়ে তিন হাত বডিতে ইসলাম নাই আর যাই হোক তাদের দ্বারা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের বক্তব্য অন্ধকারে পাখি শিকার করার মতো ধাকাবাজি ।
একজন আদর্শবান মুসলিমের পরিচয় তার চেহারায়, কথায়, কাজে, প্রতিশোধ পরায়নতায় নয়। ইসলাম তার বিদ্বেষকারীদের হত্যা করার অধিকার কাউকে দেয়নি, প্রতিহত করা বা ঘৃণা করার অর্থ হত্যা হতে পারে না। সবাই যার যার স্থান হতে দাওয়াতের মাধ্যমে, লেখালেখির মাধ্যমে, আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে ইসলামের আদর্শকে সমাজে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব । অন্য কোন পন্থায় নয়। কেননা, ইসলাম কোন হত্যাকান্ডকেই সমর্থন করে না।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৩৫

ই হক মুরাদ বলেছেন: ??????

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। ধন্যবাদ

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:১৫

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ স্যার ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.