নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

মোঃ খুরশীদ আলম

মোঃ খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম

মোঃ খুরশীদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ : মুক্তমনা ও তার স্বরূপ

১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০

প্রসঙ্গ : মুক্তমনা ও তার স্বরূপ
-মোঃ খুরশীদ আলম

বর্তমান সময়ে বেশ আলোচিত এমটি শব্দ “মুক্তমনা” । বর্তমান আলোচিত এ শব্দটি সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ। চিন্তায় স্বাধীন, ভালো-মন্দ যাচাই-বাছাই বিহীন যা খুশী তাই করতে পারাই মুক্তমনার দাবী। মূলতঃ সৃষ্টিগতভাবেই মানুষ তার ভাবনা চিন্তা ও কর্মে স্বাধীন। কেনই বা হবে না? ভাবনা এবং কর্মের স্বাধীনতা না থাকলে কাউকে তার ভাল কাজের জন্য পুরুষ্কৃত করা এবং মন্দ কাজের জন্য তিরষ্কার বা শাস্তির বিধান করা যেত না।
মহান রাব্বুল আলামিন বলেন “ হ্যা, যে ব্যক্তি পাপ অর্জণ করেছে এবং সে পাপ তাকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী। তারা সেখানেই চীরকাল থাকবে। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানেই চীরকাল থাকবে।” ( সূরা আল বাক্বারা ঃ 81-82)
উপরোক্ত আয়াতদ্বয় দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, মানুষ তার সৎকর্মের জন্য মহান রাব্বুল আলামিন কর্তৃক পুরুষ্কৃত হবেন আর তিরষ্কৃত হবেন সে সমস্ত লোকজন, যারা সৎকর্মের পরিবর্তে অসৎকর্ম্ বা আল্লাহর হুকুম আহকামের বিপরীতে তার জীবন পরিচালিত করেছে। মানুষের স্বাধীনতার বিষয়টিও উপরোক্ত আয়াতদ্বয় থেকে স্পষ্ট হয়। কেননা, মানুষ তার কর্মে স্বাধীন না হলে ভাল কাজ বা মন্দ কাজ কোনটাই তার দ্বারা করা সম্ভব হতো না।
প্রশ্ন হলো, সৃষ্টিগতভাবে মানুষ স্বাধীন হওয়া সত্ত্ব্রেও তার সীমা পরিসিমা আছে কিনা? থাকলে তা কতটুকু? আমি স্বাধীন, আমার বাক স্বাধীনতা ধর্মীয় এবং আইনীভাবে স্বীকৃত। তাই বলে, আমি চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কাউকে ইভটিজিং করতে পারিনা, রাষ্ট্রপধানের বিরুদ্ধে কুরূচীপূর্ণ্ মন্তব্য করতে পারিনা। চিন্তায় স্বাধীনতা আছে বলেই কি আমি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে চিন্তা করতে বা মত প্রকাশ করতে পারি ? পারিনা। কারণ, চিন্তায়, কর্মে স্বাধীন হওয়া সত্ত্বেও কোন এক অদৃশ্য শক্তি আমার চিন্তায় সীমারেখা টেনে দেয়, ভিন্নমতের হওয়া সত্ত্বেও যাচ্ছেতাই আচরণ আমার কাছ থেকে প্রকাশ পায় না। কারণ আমার মনুষ্যত্ববোধ, মানবিকতা আমাকে এমন আচরণ থেকে সদা বিরত রাখে। তাহলে দেখা গেল, মানুষ স্বাধীন হওয়া সত্ত্বেও তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং সেই সীমা অতিক্রম করা কখনোই মানবিকতার দাবী হতে পারে না। মত প্রকাশ করতে গিয়ে অন্যের স্বাধীনতা-সম্মানে আঘাত করা, অন্যের ধর্ম্ বিশ্বাসে কুঠারাঘাত করা মুক্তমনার দাবী হতে পারেনা। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া, সম্মান করা, অন্যের সম্মানকে নিজ সম্মান জ্ঞান করাই আসল মুক্তমনার লক্ষণ।
বর্তমানে একশ্রেণীর জ্ঞানী ব্যাক্তিদের আচরণে, লেখালেখীতে চরম ধর্ম্ বিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে। এরা নিজেদেরকে মুক্তমনা দাবী করে থাকেন। এদের হাবভাব এমন যেন মুক্তমনা হতে হলে ধর্ম্ বিদ্বেষী বিশেষ করে ইসলাম বিদ্বেষী হতে হবে। স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য কখনো কখনো এরা শরিয়তের হুকুম আহকামের বিপরীতে মন্তব্য করেন, কখনো কখনো ব্যঙ্গবিদ্রুপ করতেও দ্বিধা করেননা। এদের কথা ও কাজে দৃশ্যমান হয়, ইসলামের নবী নিয়ে, হজ্ব নিয়ে কটুক্তি করাই যেন জনপ্রিয়তা ও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জ্ণ করার মাধ্যম। যেন, ইসলামী হুকুম আহকাম, ইসলামী শরিয়ত মুক্তমনা হওয়ার অন্তরায়। দাড়িটুপিওয়ালা, সুন্নতের অনুসারী ব্যাক্তির্ব্গকে সেকেলে মন্তব্যে ব্যাঙ্গ করা এসকল মুক্তমনাদের বিশ্বাস, তারা খুব মর্ডান অর্থাৎ অতি আধুনিক আর ইসলামের হুকুম আহকাম পালনকারী তথা ইসলামী শরিয়তকে নিদ্বিধায় মেনে নেয়া ব্যক্তিগণ ব্যাকডেটেড বা সেকেলে। আধুনিকতা ও সামাজিকতার দোহাই দিয়ে এসকল মুক্তমনা মানুষগুলো ধর্মীয় বিধিনিষেধের বিপরীতে ব্যাক্তিগত জীবন ও সামাজিকতায় তাদের মন-মর্জিকেই প্রাধান্য দিয়ে সমাজে অবাধ মেলামেশা, খোলামেলা সংস্কৃতি চালু করতে চায়।
এরা দাবী করে থাকেন, “ ধর্ম্ নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়।” বেশ, তবে ধর্মীয় আচার ও নিয়ম সম্পর্কে কটুক্তি কেন? শরিয়ততো কাউকে ধর্ম্ মানতে বাধ্য করেনি। তাহলে, কেউ ধর্মীয় বিধি বিধান অনুযায়ী চললে তাকে নিয়ে কুরুচীপূর্ণ্ মন্তব্য বের হয় কেন? তুমি তোমার উন্মুক্ত বিশ্বাস নিয়ে পড়ে থাক, তোমাকেতো কেউ ইসলাম মানতে বাধ্য করেনি।
মুসলমানরা শুধু তাদের ধর্ম্ বিশ্বাসকেই নয় বরং অন্যান্য ধর্ম্ বিশ্বাসকেও শ্রদ্ধা করে। অন্যেরা যাতে তাদের ধর্ম্কর্ম্ নিরাপদে পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে মুসলমানরা সবদিক থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাইতো বিশ্ববাসীর বিচারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অপ্রতিদন্দ্বি দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। তথাকথিত কতিপয় মুক্তমনারাই এই সম্প্রীতি ন্ষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ্ হসিল করার ধান্দায় ব্যস্ত, তাতে সচেতন মানুষের সন্দেহ নাই। অন্যের ধর্ম্ বিশ্বাসে যারা শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারেন, অন্য ধর্মাবলম্বিকে যারা প্রয়োজনে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারেন, অন্য ধর্মাবলম্বিকে যারা নিজ ভাইয়ের আসনে স্থান দিতে পারেন তারাইতো আসল মুক্তমনা, তারাই পিওর মুক্তমনা। মুক্তমনার সংজ্ঞা আল্লাহ তায়ালা তার কুরআনে দিয়েছেন এভাবে- “ এই সেই কিতাব……. এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছে সে সব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ্ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পুর্ব্বর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ্ হয়েছে আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।” (সূরা বাক্বারাঃ 1-4 নং আয়াত)
সূরা বাক্বারার 1-4 নং আয়াত পর্যালেচনা করলে দেখা যায় যে, এখানে আল্লাহ তায়ালা নবী মুহাম্মদ (সঃ) কে বলেছেন, যারা তার উপর অর্পিত শরিয়ত এবং তার পূর্বে প্রেরিত নবী রাসূলগণের প্রতি এবং তাদের প্রতি যেসকল কিতাব অবতীর্ণ্ হয়েছে সেসকল কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সে সকল বিশ্বাসীদেরকেই পবিত্র কুরআন পথ দেখাবে। তাহলে দেখা গেল, ‍মুসলমানরা শুধু নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কেই নয়, বরং অন্যান্য নবী রাসূলগণ ও তাদের শরিয়তের উপরও শ্রদ্ধা প্রদর্শ্ণ করে এবং এটাই আল্লাহর নির্দেশ। এর বিপরীত করলে সে মুসলমান নয়। এটা আক্বিদার বিষয়। মুসলমানগণ খৃষ্টানদের নবী যীষু খৃষ্টকে শ্রদ্ধাপ্রদর্শ্ণ করে যা খৃষ্টানরাও যথাযথভাবে করতে জানে না। মুসলমানগণ বিশ্বাস করে যীষুখৃষ্ট আল্লাহর নবী এবং তিনি এবং কেয়ামতের পূর্বে তিনি আবার দুনীয়ায় আসবেন। ইয়াহুদীদের নবী মুসা(আঃ) এর প্রতিও মুসলমানগণ শ্রদ্ধা প্রদর্র্শ্ণ করেন। অন্যান্য নবী রাসূল ও তাদের অনুসারীদের প্রতি যাদের শ্রদ্ধা ভালবাসা রয়েছে তারইতো মুক্তমনা। কতিপয় মুক্তমনার বিশ্বাস অন্যান্য নবী ও রাসূল ও তাদের শরিয়তের প্রতি শ্রদ্ধাপ্রদর্শণকারীগণ ব্যাকডেটেড অর্থাৎ সেকেলে আর শরিয়তের হুকুম আহকাম নিয়ে ব্যাঙ্গকারীগণ মুক্তমনা। তাইতো দেখা যায়, আল্লাহকে এরা আল্লাহ না বলে ইশ্বর, গড ইত্যাদি নামে অভিহিত করে। আর নবী রাসূলগণ এদের ভাষায় দেবতা, অবতার ই্ত্যাদি। এই হলো কতিপয় মুক্তমনার স্বরূপ।
ধর্মকে বাদ দিয়ে আমরা মুক্তমনা হতে চাইনা। আমরা মুক্তমনা হতে চাই শরিয়ত প্রর্দ্শীত পন্থায় । আল্লাহপাক আমাদের সকলকে কবুল করুন। আমিন ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

ফারুকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন: সময়ের অভাবে পড়তে পারলাম না । পেন্ডিং তালিকায় রাখলাম । সনয় নিয়ে পড়ব । ধন্যবাদ আপনাকে । ভালবাসা রেখে যাচ্ছি ।

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার , আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত আমি নগন্য । দোয়া করবেন ।

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩০

সাঈদ জামিল বলেছেন: আজকাল মুক্তমনা লেখাটা ব্যবহার করে নাস্তিকরা।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৫৯

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: উন্মুক্ত ভাবনায় দোষের কিছু দেখিনা যদি সেটা শরিয়তের গন্ডির ভেতরে থাকে । কি বলেন ? স্যার সাঈদ জামিল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.