নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

মোঃ খুরশীদ আলম

মোঃ খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম

মোঃ খুরশীদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাদ্রাসায় শিক্ষকের বেত্রাঘাত ও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৬

মাদ্রাসায় শিক্ষকের বেত্রাঘাত ও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি
→ →→ মোঃ খুরশীদ আলম

►মানুষ তার জীবনের প্রয়োজনে সাধারন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা এ দুটির যে কোন একটিকে গ্রহণ করে। ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্যান্য বিদ্যার পাশাপাশি নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত তথা ইসলামের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান বিতরন করা হয়ে থাকে। কেননা একথা সকলের জানা দরকার যে, যে আমল (কাজ) ফরয তথা অত্যাবশ্যকীয় তার মাসয়ালা-মাসায়েল তথা নিয়ম পদ্ধতি এবং প্রয়োগবিধি জানাও ফরয। আমাদের দেশের সাধারন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্থাৎ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও যদি প্রত্যেক ধর্মের অত্যাবশ্যকীয় বিধি-বিধান সমূহ যথাযথভাবে বাধ্যতামূলক অনুশীলন করা হয় তাহলে মাদ্রাসায় গিয়ে পড়ার মানসিকতা হয়তো অনেক কমবে। যারা মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি নেতীবাচক ধারনা লালন করে থাকেন তারা পদ্ধতিটি চালু করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়ে দেখতে পারেন।
►বর্তমান সময়ে অনেকেই ছাত্রছাত্রীদের বেত্রাঘাত করাকে দোষের মনে করেন এবং কেউ কেউ আইন কানুনের দোহাই দিয়ে নুন্যতম শাসন করাটাকেও বাধাগ্রস্থ করেন যা মোটেও ঠিক নয়। নিয়মের ভিতরে থেকে শাসন করাতে প্রয়োজনে বেত্রাঘাত করাতে দোষের কিছু নেই। তবে তা যেন শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন না করে সে দিকে ওস্তাদগণের মনোযোগ থাকতে হবে।
►আমার মনে পড়ে আমার মা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহোদয়কে জালি বেত উপহার দিয়ে বলেছেন “স্যার, মাংস যা আছে আপনার আর হাড্ডিগুলো আমার” । শিক্ষকদের শাসন এতো কড়া ছিল যে, আমিতো মনে মনে অভিসাপ দিতাম (আমার মতো অনেকেই দিতো)। আমার শরীরের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে গুরুর বেতের স্পর্শ পায়নি। আমি স্কুল পালাতাম, সিনেমা দেখতাম স্কুল ফাঁকি দিয়ে, মাইলের পর মাইল হেটে গিয়ে মোস্তফা নামক ভিডিও গেইমের নেশায় পড়ে থাকতাম, কচু বাগানের ভিতর বই পুস্তক রেখে দিয়ে আনন্দবাজার সমুদ্র সৈকতে গিয়ে মেতে থাকতাম। এতোই দুষ্টু ছিলাম যে, আমাকে চেইন-তালা দিয়ে খাটের খুটির সাথে বেধে রাখা হত। একদিন আমার মা আমাকে আড্ডা থেকে তুলে এনে উত্তমমাধ্যম দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন। তখন আমি ক্লাশ এইটের ছাত্র। সেই থেকে ক্লাশ পালানো বন্ধ করি। আমার মা মাঝে মাঝে গিয়ে খবর নিয়ে আসতেন। পরিশেষে আমি ক্লাশে আদর্শ ছাত্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করি। আজ মনে হয, আমার মা আমার প্রতি মোটেও অত্যাচার করেননি, শিক্ষকরাও নয়। যা করেছেন তা আমার ভালোর জন্যই করেছেন।
►শিক্ষকদের শাসন যদি বেশি হয়ে যায় এবং সে কারণে অভিভাবকরা যদি বেশী কষ্ট পেয়ে সন্তানকে বিদ্যালয় বা মাদ্রাসা হতে নিয়ে এসে অন্যত্র ভর্তি করান তাতে সন্তানের অমঙ্গল ছাড়া মঙ্গল কামনা করা যায় না। বরং সমস্যাটি সমাধান করতে হবে কৌশলে, আলোচনা করে। নয়ত সাহসী সন্তান নতুন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও এমন অজুহাত খুজতে পারে।
► শাসন বারন প্রহার শিক্ষারই অংশ, জীবনের অংশ। শরিয়াত বর্ণিত পন্থায় তালেবে এলেমদের অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের শাসন করা কর্তব্য। আজ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হত্যা, হানাহানি, সেশনজট, ধর্ষনের সেঞ্চুরী, দলাদলী ইত্যদি কেন হচেছ? শিক্ষকরা কেন প্রহৃত? শিক্ষক কেন ছাত্রীদের নিয়ে নোংরামী খেলায় মেতে উঠে? এসব কোন প্রতিষ্ঠানে হচ্ছে? মাদ্রাসায় না অন্যকোথাও? তবে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কেন আমাদের এতো গা জ্বালা করে তা জানিনা । আসলে যারা চায় জাতির নৈতিকতা ধ্বংস হোক তারাই মুলত মাদ্রাসা শিক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন তোলে। বেত্রাঘাতের অজুহাত, ছুটি না দেওয়ার অজুহাত ইত্যাদি বিভিন্ন অসাড় যুক্তিতে এই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে নেতীবাচক ধারনার জন্ম দেন।
► যা হোক, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে কল্যানমুখী জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। এ অধিকার খর্ব হতে পারে তেমন কোন কথা বা কাজ আমাদের থেকে যেন প্রকাশ না পায় সেদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। নিজের বিবেকের দ্বার সদা উন্মুক্ত রেখে চলা আবশ্যই কর্তব্য বলে মনে করি। কেননা স্বীয় কৃতকর্মের জবাবদিহি প্রত্যেককেই একদিন করতে হবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৮

প্রামানিক বলেছেন: শিক্ষকদের শাসন যদি বেশি হয়ে যায় এবং সে কারণে অভিভাবকরা যদি বেশী কষ্ট পেয়ে সন্তানকে বিদ্যালয় বা মাদ্রাসা হতে নিয়ে এসে অন্যত্র ভর্তি করান তাতে সন্তানের অমঙ্গল ছাড়া মঙ্গল কামনা করা যায় না। বরং সমস্যাটি সমাধান করতে হবে কৌশলে, আলোচনা করে। নয়ত সাহসী সন্তান নতুন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও এমন অজুহাত খুজতে পারে।

আপনার উপরের বক্তব্যের সাথে আমি একমত, তবে কিছু কিছু মাদ্রাসা শিক্ষক ছোট ছোট বাচ্চাদের এমন বেত্রাঘাত করে সেটা বিবেক বর্জিত কাজ হয়ে যায়। শিশুদের বেশি মার ধোর করলে তাদের স্বাভাবিক বাড়ন্ত ব্যাহত হয়। অনেক সময় তারা বাচ্চাদের মাথার মধ্যে ঠাসঠাস করে পেটায়। এতে যে বাচ্চাদের ব্রেনের ক্ষতি হয় সে জ্ঞান ঐ সকল মাদ্রাসা শিক্ষকের নাই। এদেরকে শিক্ষকতা করানোর পাশাপাশি শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। শিশু স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারনা না থাকার কারণেই হয়তো তারা শিশুদের সাথে এমন নিষ্ঠুর আচারণ করে থাকে।

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩৯

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই প্রামাণিক,
আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য। কেউ কেউ হয়তো আপনার বর্ণনার অনুরূপ করেন একথা সত্য । তবে সেটাযে স্কুল - বিদ্যালয়গুলোতে হয়না তাওনা। কোন কোন মাদ্রাসা শিক্ষককে আমি দেখেছি নিজের বেতনের টাকা হতে শিশুদের জন্য চকলেটের প্যাকেট হামেশা নিজের সংগ্রহে রাখেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.