নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

মোঃ খুরশীদ আলম

মোঃ খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম

মোঃ খুরশীদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমাজের অসঙ্গতি : দূর করতে সকলের সহযোগিতা চাই (পর্ব : ৪)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:০৬

শিরোনাম দেখে হয়তো বন্ধুরা বুঝতে পারছেন যে, কোন বিশেষ বিষয়ের গুরুত্ব দেবার জন্য উক্ত শিরোনাম দেয়া হয়েছে। আসলেও তাই। আমি আপনি আমরা যারা চাই সমাজ হতে অসঙ্গতিগুলো দূর হয়ে যাক, আমরা সেগুলো দূর করণার্থে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পন্থায় মেধাকে কাজে লাগিয়ে থাকি। লেখালেখি, ব্লগিং, সাহিত্যচর্চা (আবশ্যই নোংরামি নয়), সেমিনার, রাজনীতি, দাওয়াতে তাবলিগ, ওয়াজ-নসিহত ইত্যদি তারই অংশ বলে আমি মনে করি। যে যে পদ্ধতি ভালবাসে সেই পদ্ধতিতেই এগিয়ে যেতে চায় এবং তার পক্ষে সে যুক্তি তুলে ধরে। তবে যে কোন অপশক্তিকে দূর করে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে এককভাবে তা অসম্ভবই বলা চলে। সংঘবদ্ধ হয়ে একটি লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে এগিয়ে গেলে সফলতা একশত ভাগ নিশ্চিত। সংঘবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ পাক নিজেই তাগিদ দিয়েছেন। “ তোমরা আল্লাহর রুজ্জুকে ঐক্যবদ্ধভাবে আকড়ে ধর আর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” বাংলা ভাষাভাষীদের নিকট এই আয়াতের অর্থ ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রখে না। ভাল-মন্দ, মন্দ-ভাল, হীতকর-অহীকর সকল বিষয়েই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাবার তাগিদ রাখে। সমাজের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে আমরা সকলে সেগুলো সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে পারি। পাড়ার পরিচ্ছন্নতার বিষয়, অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার বিষয়ে উৎসাহ প্রদান, শিশুদের খেলার মাঠের সংস্থান ইত্যাদি বিষয়ে আমরা অবদান রাখতে পারি।
ইদানিং ইভটিজিং একটি মারাত্বক ছোঁয়াচে হিসাবে দেখা দিয়েছে। ইভটিজাররা অন্যগ্রহের বাসিন্দা নয়, আমার আপনার ভাই বোন। এদের শুধরানোর জন্য কৌশল বের করতে হবে। আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে যতটা না পরিবার এবং সমাজে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে স্বইচ্ছায় ছেলেমেয়ের প্রণয়, বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক স্থাপন। আমার এলাকায় সন্ধ্যা ৭ টার পরে নির্জন স্থানে আমি প্রায়ই দেখি স্কুল ব্যাগ হাতে মেয়ে এবং ছেলে দাঁড়িয়ে আলাপ করছে। দেখে বুঝতে বাকি নেই যে, ওরা কোচিং শেষে এখানে এসে সময় কাটাচ্ছে অথবা কোচিং ফাকি দিয়ে। নির্জন, অন্ধকারে কেউ দাঁড়িয়ে সংসারের দুঃখ কষ্ট শেয়ার করে না। কি করে তা সবার জানা, আশা করি খুলে বলার দরকার নাই। একদিন, দুদিন করে এ সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারন করে । এক সময় ভালবাসার টানে এই সকল অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলে মেয়ে অজানা গন্তব্যকে বেছে নেয়। সমাজে লোকজন হাসাহাসি করে, লজ্জায় উভয় পরিবারের মুখ দেখানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর মেয়ের বাবা ছেলের পরিবারকে দোষারোপ করে মামলা মোক্দ্দমা পর্যন্ত করে বসে। গ্রেফতার, ভিকটিমের মেডিক্যাল টেষ্ট, হাজহবাস, নিরাপত্তা হেফাজত ইত্যাদি অধ্যায়গুলো একজন ছেলে মেয়ের জীবনে যে কতটুকু অনিশ্চয়তা ডেকে আনে তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। অথচ পরিবারের বড় সদস্যরা যদি একটু সচেতন হোন তাহলে এ সকল সমস্যা হতে দূরে থাকা সম্ভব হবে।
আমাদের দেশের চলচিত্রগুলো বাস্তবতার নিরিখে তৈরী হয়না। প্রত্যেকটি ছবি নাটকের কাহিনী তৈরী হয় প্রেম, ভালবাসাকে কেন্দ্র করে। এখানে প্রেম ভালবাসাকে পবিত্র হিসাবে উপস্থাপন করা হয়। প্রেমিক তার প্রেমিকার জন্য অথবা প্রেমিকা তার প্রেমিকের জন্য জীবন পর্যন্ত দিয়ে দেয়। এই চিত্রগুলো আমাদের সন্তানদের কচি মনে প্রভাব ফেলে। ধীরে ধীরে সে নিজেকে কখনো নায়ক, কখনো নায়িকা ভেবে চরিত্রাভিনয় করতে থাকে। মা বাবার আড়ালে সে অপর কাউকে নিয়ে ভাবে, ভাবতে বাধ্য হয়। নাটক, সিনেমায় যা দেখানো হয় বাস্তবতা সম্পূর্ণ তার বিপরীত। একশত ভাগ সত্য যে বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত।
সন্তান আমার আপনার । তাদের ভবিষ্যত সুন্দর করার দায়িত্ব আপনার আমার । অন্য দেশের সংষ্কৃতি বা অন্য দেশের নাগরিকরা আামার আপনার সন্তানের মঙ্গল কি আপনার আমার চেয়ে বেশি কামনা করে? যদি উত্তর হা হয় তবে আমি বলবো আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। তাই আসুন , যা হয়েছে তো হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন আমার আপনার সন্তান আমার আপনার মতো না হয়ে আরো ভাল, আরো সুন্দর, আরো নির্মল জীবন উপভোগ করতে পারে তার জন্য সচেতন হই।

করনীয় : ► ঠিকমতো স্কুলে যাচ্ছে কিনা খবরাখবর রাখতে হবে।
► মাঝে মাঝে শিক্ষকদের সাথে বাচ্চাদের বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।
► কড়া শাসন করা যাবে না,
► তার ভিতরের সত্ত্বাকে জাগাতে হবে। তার ভিতরেই লুকিয়ে আছে হাতেম তাই, বীর রুস্তম, সালাউদ্দিন আইয়ুবি, সুলতান গজনবী আর টিপু সুলতান । সে যদি একবার এটা বুঝতে সক্ষম হয় তাহলে আপনার দু:শ্চিন্তা ১০০ ভাগ নিমূর্ল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
► সন্তানদেরকে ভাল কাজে অংশগ্রহন করার বিষয়ে উৎসাহ দিতে হবে।
► অধিকরাত্র জেগে টিভি দেখা ইত্যদি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা বুঝাতে হবে।
► ধর্মীয় কাজে উৎসাহ দিতে হবে। ধার্মীক জীবন গড়তে হবে।

এভাবে কাজ করা অনেক কঠিন। সমাজের অসঙ্গতিগুলো একদিনে দূর হবে না। দীর্ঘদিন যে রোগ দেহে লালন করে আসছি তা সারতে দীর্ঘদিন লাগবে স্বাভাবিক। তবে ভয় পাবার কারণ নেই। আস্তে আস্তে আগাতে থাকলে জয় নিশ্চিত। অনেকে পাগল বলবে, বোকা বলবে, স্বাধীনতা হরনকারী বলবে । কিন্তু তাদের কথায় কান দেয়া যাবেনা। আমাদের প্রিয়নবী (স:) যখন দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন তখন কাফেররা তাকে পাগল বলেছেন । আপনি আমিতে সামান্যই। “ কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দেবে এবং তারা বলে; সে তো একজন পাগল” (সূরা কলম : ৫১) / আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহে আপনি উন্মাদ নন। “ ( কলম : ০২)
সুন্দর সমাজ বিনির্মানে আসুন আমরা কাজ করি। কাজ করি একা, কাজ করি একত্রে , সকলে মিলে , ঐক্যবদ্ধভাবে। কথায়, লেখনিতে , আলোচনায়, তর্কে ভাল কাজ হয়ে উঠুক উপজীব্য । ধন্যবাদ ।













মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.