নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গানের ভুবন

গানের ভুবনেআমি আজ পথচারি,ক্ষমা করে দিও যদি না তোমায় মনের মত গান শুনাতে পারি....

এম.ডি অভ্র

আমি অভ্র.. ছোট বেলা থেকে আমি একটু দুষ্ট প্রকৃতির ও বিনোদন প্রেমি।ভালোবাসা নিয়ে একটু বেশি ঘাটাঘাটি করি।তাছাড়াও ফোনে নুতন নুতন মুখের সাথে কথা বলতে ভালো লাগে এখন তা ছেলে হোক বা মেয়ে হোক....

এম.ডি অভ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

“আমি নইলে মিথ্যা হত সন্ধ্যাতারা-ওঠা/মিথ্যা হত কাননে ফুল-ফোটা।”

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩

রবি ঠাকুরের “সঞ্চয়িতা”র সাথে আমার পরিচয় অনেক দেরীতে হয়েছে।এটা পড়ে বুঝতে পেরেছি কী দারুণ একটা জিনিসের সাথে আমার পরিচয় ছিলনা এতদিন।কিন্তু নজরুলের “সঞ্চিতা”র সাথে আমার পরিচয় স্কুলের প্রথম দিকে থাকার সময় থেকে।এর কারণ আব্বুর নজরুল প্রিয়তা।”সঞ্চিতা”টা এক মোহময় আবেশে আমি বার বার উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে পড়তাম।”সঞ্চয়িতা” পড়ে দেখি এ জগৎ আরো বিশাল আরো গভীর।এ যেন এক সপ্নময় পুরীতে এসে পড়েছি।এখান থেকে বের হতে মন চায়না ।ইচ্ছে করে ওই সঞ্চয়িতাভূমিতেই বসত গড়ি!:)

“সঞ্চিতা”র কবিতাগুলো বুঝতে কষ্ট হয়না।কিন্তু “সঞ্চয়িতা”র বেশিরভাগ কবিতাই স্যার বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত কিংবা কবিতার সমালোচনা না পড়ে বুঝতে পারিনি।অবশ্যই যেটা বুঝেছি সেটাও কতখানি বুঝেছি তাও একটা কথা।মাথামোটা বলে আমার আবার খ্যাতি আছে কিনা!:)

তো যেটা বলতে চাইছি সেটা হচ্ছে গিয়ে কারণে অকারণে “সঞ্চিতা” ও “সঞ্চয়িতা”র কবিতাগুলো আমাকে যেন আঁকড়ে থাকে।কখনো কোন সাগরের তীরে কিংবা গুবাকতরুর সারির কাছাকাছি হলে ওগুলোকে খুব জীবন্ত মনে হয় আমার কাছে নজরুলের “সিন্ধু” কিংবা “বাতায়ন পাশে গুবাকতরুর সারি”কবিতার কল্যাণে।যতবার সাগরের কাছাকাছি যায় ততবার তার উত্তাল ঢেউয়ের দিকে তাকালে নজরুলের “সিন্ধু” কবিতাটি মনে পড়ে যায়।

“বল বন্ধু, বুকে তব কেন এত বেগ, এত জালা?

কে দিলনা প্রতিদান,কে ছিঁড়িল মালা?

কে সে গরবিনী বালা?”

“বল বন্ধু, বল,

ঐ চাঁদ ঐ সে কি প্রেয়সী তোমার?

ও কি গান ও কি কাঁদা?ওই, মত্ত জল-ছলছল-

ও কি হুহুঙ্কার?

ঐ চাঁদ ঐ সে কি প্রেয়সী তোমার?

টানিয়া সে মেঘের আড়াল

সুদূরিকা সুদূরেই থাকে চিরকাল?”

কিংবা এতদিন যাদের জেনে এসেছি বোবা নজরুলের “বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি” তাদেরকেই জীবন্ত করে তুলেছে আমার কাছে ।আর তাই প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে আমি বড় আনন্দ পেয়েছি বারবার।হয়তো তার মুখে কোন ভাষা ছিলনা -

“জানি- মুখে মুখে হবেনা মোদের কোনদিন জানাজানি,

বুকে বুকে শুধু বাজাইবে বীণা বেদনার বীণাপাণি।”

তেমনি মেঘমেদুর বরষার প্রকৃতিতে মুখে উঠে এসেছে -

“এমন দিনে তারে বলা যায়

এমন ঘন ঘোর বরিষায়।”

আবার কোন আবেগী মুহূর্তেও রবীঠাকুরের কবিতায় কন্ঠ রেখে বলেছি,

“জাগিয়া উঠেছে প্রাণ ,

ওরে উথলি উঠেছে বারি

ওরে প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি।”

কখনো হয়তো অমাবস্যার আধারে ঢেকে যায় সময়-অনাকাঙ্খিতভাবে।আর তখন আবারো রবিবাবুর কবিতা দিয়েই আশ্রয় খুজি-

“মরণ রে, তুহু মম শ্যাম সমান”

কিন্তু শ্যামসম মরণ না এসে বেজে উঠে আলোময় কোন প্রভাতের আগমণী গান।

“হৃদয় আজি মোর কেমনে গেল খুলি,

জগৎ আসি সেথা করিছে কোলাকুলি।

প্রভাত হল যেই কী জানি হল একি,

আকাশপানে চাই কী জানি কারে দেখি।”

আর তাই –

“মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে

মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।”

যদিও মানবের নীচতা,সার্থপরতা আর হিংস্রতাগুলো দেখে দেখে বড্ড হতাশ।

নজরুলের “সঞ্চিতা”র বুকেই আমি সাম্যতাকে প্রথম উপলদ্ধি করেছি।

“গাহি সাম্যের গান-

যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান।”

কিন্তু বাস্তবতা ঠিক কবিতার মত নয়।কবির মত করে সাম্যের গান কেউ গাইতে পারেনা।এখানে-

“মাটিতে যাদের ঠেকেনা চরণ

মাটির মালিক তাহারাই হন।”

অথবা,

“এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি

রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।”

ফলাফল “দুইবিঘা জমি” র উপেন-

“তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে।”

নজরুল-এর কবিতায় নারী হিসেবে নিজেকে পেয়েছি অনেক মহানরূপে,অবহেলা কিংবা অসম্মানের কোন বস্তু হিসেবে নয়-

“বিশের যা- কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর

অর্ধেক তার আনিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।”

আর এজন্য নারী আমি বলতে পারি-

“আমি নারী, আমি মহীয়সী,

আমার সুরে সুর বেঁধেছে জ্যোৎস্নাবীণায় নিদ্রাবিহীন শশী।

আমি নইলে মিথ্যা হত সন্ধ্যাতারা-ওঠা,

মিথ্যা হত কাননে ফুল-ফোটা।”

পাঠককে একটা কথা না বললেই নয় যে-এটা “সঞ্চিতা” বা “সঞ্চয়িতা”র কোন সমালোচনামূলক কিংবা বিচার-বিশ্লেষণমূলক লেখা নয়।আমি নজরুলের প্রেম,বিরহ,প্রকৃতি,সাম্যবাদীতা প্রভৃতি নিয়ে কিংবা রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি,প্রেম,দার্শনিকতা বা ভূমি ও ভূমা নিয়ে “সঞ্চয়িতা”র যে বিশালতা তা আলোচনা করতে বসিনি।কাব্যগ্রন্থ দুটি আমার অনুভূতির সাথে কীভাবে মিশে গেছে; আমার ভাবনাগুলোকে প্রশস্ত করেছে কিংবা অকৃত্রিম প্রকৃতিকে আমার কতটা কাছে এনে দিয়েছে -এটা শুধু সেই কথার এলোমেলো উপস্থাপনা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৬

হানিফ রাশেদীন বলেছেন: ভালো লাগা রইলো।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২০

এম.ডি অভ্র বলেছেন: ধন্যবাদ হানিফ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.