নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনযূরুল হক

ভালো আছি

মনযূরুল হক

ভালো আছি

মনযূরুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জব পার্টনারশিপের ব্যবস্থা চালু হোক

০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৭


ফেসবুকে একটা মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটির অ্যাড দেখলাম— Don’t be a jobless graduate ! দেখে ভালো লাগলো । আরো ভালো লাগলো, তারা ঘোষণা করেছে— ওভার অল ৩,৫০০ ইন্ডাস্ট্রি তাদের ভার্সিটির জব পার্টনার ।

কোতায়ে মোতায়ে শিক্ষার ফজিলত যা-ই বয়ান করা হোক, শিক্ষা শেষে একটা নিশ্চিন্ত জব এবং দুটি ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচার ইচ্ছাই যেহেতু আখেরে ছাত্র-শিক্ষক সবার উদ্দেশ্য— তাহলে আর ঘোমটা কেনো ? এর চেয়ে বড় কথা হলো, বছরকে বছর বাপের রক্তসেঁচা গাটের পয়সা খরচ করে পড়ালেখা শেষ করার পরে যদি একটু নুন-ভাত খেয়ে টিকে থাকার মতো পয়সাও কামাই করতে না পারা যায়, তাহলে সে শিক্ষার ফলটাইবা কোন মানকচু? অন্তত উচ্চমাধ্যমিক লেভেল থেকে পড়ার তুলনায় চাকরির চিন্তাই ছাত্ররা বেশি করছে না— এটা হলফ করে বলতে পারবেন ?

সুতরাং অ্যাডটা ভালো । এর দ্বারা অন্যরাও উৎসাহিত হবেন। মাদ্রসাওয়ালাদের এই দিকে বিশেষ নজর দেয়া দরকার । শিক্ষা শেষে একজন ছাত্র যে কী অসহায় পরিস্থিতিতে পড়ে, তা যদি যখন তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়, তখন সে বুঝতে পারতো, তাহলে আমি বিশ্বাস নিয়েই বলতে পারি, শতকরা ৯০ পার্সেন্ট ছেলে বিকল্প ভাবনা করতো ।

বড় হুজুরদের দেখেছি, যে ছেলেরা লেখাপড়া ও আদব-কায়দায় ভালো তাদের কায়দা করে মাদ্রাসা রেখে দেন, যেনো তার দীনের ফায়দা হয় । কিন্তু ছাত্রকে যে বেতনটা তারা ধরিয়ে দেন, সেটা যে তাকে কত বড় বিপদে ফেলে একটি উদাহরণ দিলে বুঝবেন ।

ধরুন— ছেলেটির নাম শফিক । তাকে হুজুর মাদ্রসায় থেকে যেতে বললেন, বেতন দিলেন ২৫০০ টাকা । তার ফায়দা হবে । অথচ আর্থিক অনটনের কারণে ছেলেটার বাবা ও মা বহুবছর এক ঘরে থাকতে পারছেন না । বাবা থাকেন বোনের বাড়িতে আর মা থাকেন ছেলের সঙ্গে । ছেলেটা চাইছে, বাইরের কোনো দেশে গিয়ে কিছু অর্থ উপার্জন করে পরিবারের হাল ফেরাবেন । সে মতে সে এগিয়েও গেলো । তাতে হুজুর বেশ নাখোশ— কেনো সে তকদিরে নির্ভর করে এবং হুজুরের মর্জি রক্ষায় এই কটি টাকাতে সন্তুষ্ট থাকছে না । শেষে তাকে হুজুর এই বলে বিদায় দিলেন— মনে রেখো, বাবা, তোমার জন্যে শুভ কামনা থাকবে, কিন্তু দোয়া থাকবে না ।

অথচ শামসুল হক ফরিদপুরি রহ., যিনি এই সকল হীনমন্য হুজুরদের গুরুজন, তিনি বহু আগেই বলে গেছেন— কর্মহীন ধর্মশিক্ষা ও ধর্মহীন কর্মশিক্ষা উভয়টাই জাতিকে বিপর্যয়ের দিকে টেনে আনে । আমার মনে হয়, তিনিও এই কথা বলেছেন, প্রথম জীবনে তিনি আধুনিক ভার্সিটি লেভেলের পড়াশুনা করেছেন বলে । তিনি জানতেন— ওপারের পুলসিরাত উৎরে যেতে যেমন পুণ্য দরকার, তেমনি এপারের বৈতরণী পার হতে দরকার পয়সা । এবং পুণ্য দিয়ে পয়সা না এলেও পয়সা দিয়ে বহু পুণ্য অর্জনের সুযোগ ধর্মে আছে ।

মাদ্রাসার কথা দিয়ে তুলনা দিলাম, কারণ মাদ্রাসার ছেলেরা যোগ্য ও সৎ বটে, কিন্তু যতই ধামা-চাপা দেয়া হোক, আধুনিক লেভেলের পড়াশুনার অভাব আজকাল সবাই অনুভব করছে এবং একারণেই কেবল তারা সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে । নয়তো নিশ্চিত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তার ক্ষেত্রে গুটিকতক অতিমেধাবী, ধনী ও দলবাজ-তেলবাজ বাদ দিলে মাদ্রাসা বলুন কিংবা ভার্সিটি— হালত সবারই সমান ।

সুতরাং আমি সুপারিশ করবো— আমাদেরে দেশের ভার্সিটিগুলোতে তো বটেই, মাদ্রাসাগুলোতেও সাবজেক্ট মাফিক বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিকে জব পার্টনার হিসেবে যুক্ত করা হোক, যেনো পড়ালেখা শেষ করে প্রত্যেকেই তার যোগ্যতামতো যে কোনো জবে ঢুকে পড়তে পারে । এতে করে নির্ভাবনায় ছেলেরা জ্ঞান ও ইলম শেখায় মনোযোগী হতে পারবে । পয়সার জন্যে তোষামোদি কিংবা দালালি ও দলবাজিতে ব্যস্ত হতে হবে না । হতাশাও ভর করবে না তাদের জীবনে । যোগ্য ও কোয়ালিটি সম্পন্ন ছেলে তৈরি হবে এবং তাতে করে দীন ও দেশ— উভয়ের কল্যাণ হবে, নি:সন্দেহে ।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলছি— You can pay for school, but u can't buy a job. সো, ব্যাপক আবেগী বিনোদন নিয়ে নিজেদের মর্জি পূরণ করার আগে সন্তানের ফিউচারের কথাটা আরো একটু ভাবুন ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৩

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার

০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৫

মনযূরুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামাণিক ভাই...।

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:৩৪

অতঃপর শুভ্র বলেছেন: স্কুলে হতে পারে তবে মাদ্রাসায় হুজুররা করতে চাইবে না কারন ওনারা কর্মহীন ধর্মশিক্ষা থিউরিতে বেশি বিশ্বাসী


ছেলেটির নাম শফিক না হয়ে রফিক হলেও পারতো হা হা

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬

মনযূরুল হক বলেছেন: =============================

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.